জন রিচার্ড রিড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জন রিড
১৯৬৫ সালের পূর্বেকার সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জন রিড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন রিচার্ড রিড
জন্ম(১৯২৮-০৬-০৩)৩ জুন ১৯২৮
অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু১৪ অক্টোবর ২০২০(2020-10-14) (বয়স ৯২)
অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ডাকনামবোগো
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ-ব্রেক
ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক, ম্যাচ রেফারি
সম্পর্করিচার্ড রিড (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৯)
২৩ জুলাই ১৯৪৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৮ জুলাই ১৯৬৫ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫৮ ২৪৬
রানের সংখ্যা ৩৪২৮ ১৬১২৮
ব্যাটিং গড় ৩৩.২৮ ৪১.৩৫
১০০/৫০ ৬/২২ ৩৯/-
সর্বোচ্চ রান ১৪২ ২৯৬
বল করেছে ৭৭২৫
উইকেট ৮৫ ৪৬৬
বোলিং গড় ৩৩.৩৫ ২২.৬০
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৫
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৬০ ৭/২০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৩/১ ২৪০/৭
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩০ অক্টোবর ২০১৪

জন রিচার্ড রিড, সিএনজেডএম, ওবিই (ইংরেজি: John Richard Reid; জন্ম: ৩ জুন, ১৯২৮ - মৃত্যু: ১৪ অক্টোবর, ২০২০) অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও ক্রিকেট ম্যাচ রেফারি ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪০-এর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। এছাড়াও, জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন।

প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড দলকে নিজ দেশে ও বিদেশে টেস্ট জয়ের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন তিনি। ব্যাট ও বল হাতে খেলোয়াড়ী জীবনে দলের প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন ‘বোগো’ ডাকনামে পরিচিত জন রিড

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়েলিংটনের পক্ষে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে ২৯৬ রান করেন পনেরটি ছক্কার সাহায্যে যা তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড ছিল। আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান রিড একবার কলকাতা টেস্টের সূচনালগ্নে সকালে দশ বল থেকে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে ছিলেন। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে ইংরেজ অধিনায়ক টেড ডেক্সটারের ভাষ্য অনুযায়ী জানা যায়, রিড বলকে সজোরে আঘাত করে মাঠের বাইরে ফেলেছেন ধারাবাহিকভাবে যা তিনি কখনো দেখেননি।

বোলিংয়েও তিনি বেশ দক্ষ ছিলেন। শুরুর দিকে তিনি বেশ দ্রুততার সাথে বোলিং করতেন। পরবর্তীকালে তিনি অফ-কাটার ও স্বল্প দৌঁড়ে স্পিন বোলিং করতেন। স্লিপ ও কভারে ফিল্ডিং করতেন। চূড়ান্ত টেস্টসহ ১৯৪৯ মৌসুমে ইংল্যান্ড সফরে সংরক্ষিত উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন।[১]

রিড তার খেলোয়াড়ী জীবনে কখনো ইংল্যান্ড দলকে পরাজিত করতে পারেননি। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চের ল্যাঙ্কাস্টার পার্কে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে টেড ডেক্সটারের দলকে স্বল্প ব্যবধানে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে রেখেছিলেন। ফ্রেড ট্রুম্যানফ্রেড টিটমাসের বোলিংয়ে তার দল এ সুবিধা নিতে পারেনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৯ রানে অল-আউট হয় তার দল। খেলায় তিনি শতরান করেন ও দলের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান ছিল ২২। অদ্যাবধি, শতরান সহযোগে টেস্ট খেলায় সর্বনিম্ন সংগ্রহ হিসেবে স্বীকৃত।[২]

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন[সম্পাদনা]

১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে তার খারাপ সময় অতিবাহিত হয়। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে সর্বাপেক্ষা সফল ছিলেন জন রিড। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ড্র হওয়া ঐ সিরিজে পাঁচ টেস্টে ৬০.৫৪ গড়ে ৫৪৬ রান করেন।

বিদেশে নিউজিল্যান্ডের প্রথম বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিজ দেশে টেস্ট জয়ের পাঁচ মৌসুম পর দলটি প্রথম জয় দেখে। এ সময়ে দলটি মিশ্রতায় পূর্ণ সময় অতিবাহিত করছিল। পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে নিউজিল্যান্ড দল আবারও জয়ের সন্ধান পায়। নোয়েল ম্যাকগ্রিগরজ্যাক অ্যালাব্যাস্টারের সাথে তিনি নিউজিল্যান্ডের প্রথম তিন টেস্ট জয়ে অংশ নিয়েছিলেন।[৩]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

জন মিহাফি’র জনপ্রিয় ক্রিকেট তারকা ছিলেন জন রিড। তাঁর মতে, ‘রিডের পরিসংখ্যান দলকে সঠিক পরিসংখ্যান প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। যে ব্যক্তি তাঁকে দেখেছেন ক্রিজে কীভাবে আকড়ে থেকে দলকে অগ্রসর করতে চেষ্টা করেছেন। তাঁর ব্যাটিং গড় আরও অর্ধেক বেড়ে যেতো যদি তিনি ১৯৮০-এর দশকে রিচার্ড হ্যাডলিমার্টিন ক্রো’র সাথে একত্রে খেলতেন।’[৪]

৭ আগস্ট, ২০১৫ তারিখে ট্রেভর বারবারের দেহাবসানের পর নিউজিল্যান্ডের বয়োজ্যেষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদা পাচ্ছিলেন তিনি।[৫][৬]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন জন রিচার্ড রিড। ১৯৫১ সালে নর্লি লে ফেভ্রে নামীয় এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। বাতজ্বরে আক্রান্ত হবার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন নর্লি। এখানেই তাদের প্রথম স্বাক্ষাৎপর্ব হয়। এ দম্পতির রিচার্ড রিড নামীয় পুত্র এবং অ্যালিসন ও অ্যান নাম্নী দুই কন্যা ছিল। তন্মধ্যে, রিচার্ড রিড নিউজিল্যান্ডের পক্ষে নয়টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন।

১৪ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে অকল্যান্ড এলাকায় ৯২ বছর বয়সে জন রিচার্ড রিডের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wisden 1950, p. 209.
  2. Tests – Lowest Innings Totals to Include a Century ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০১১ তারিখে, CricketArchive. Retrieved 19 October 2007.
  3. Geoffrey Chettle, "New Zealand in South Africa, 1961-62", Wisden 1963, pp. 899–912.
  4. Mehaffey, John (৩০ মে ২০০৮)। "John Reid, Hit machine – A dashing, attacking batsman, he kept New Zealand cricket shining through its dark days"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১২ 
  5. "List of oldest living Test players"। Stats.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৫ 
  6. "Former New Zealand batsman Trevor Barber dies at 90"ESPNCricinfo। ১০ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৫ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
হ্যারি কেভ
নিউজিল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৫৫/৫৬-১৯৬৫
উত্তরসূরী
ব্যারি সিনক্লেয়ার