জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন চ্যালোনার অ্যালাব্যাস্টার
জন্ম (1930-07-11) ১১ জুলাই ১৯৩০ (বয়স ৯৩)
ইনভারকারগিল, সাউথল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক গুগলি
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কগ্রেন অ্যালাব্যাস্টার (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৭১)
১৩ অক্টোবর ১৯৫৫ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৯ মার্চ ১৯৭২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ১৪৩
রানের সংখ্যা ২৭২ ২৪২৭
ব্যাটিং গড় ৯.৭১ ১৩.৩৩
১০০/৫০ ০/০ ০/৫
সর্বোচ্চ রান ৩৪ ৮২
বল করেছে ৩,৯৯২ ৩০১৪৪
উইকেট ৪৯ ৫০০
বোলিং গড় ৩৮.০২ ২৫.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৫
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৪৬ ৭/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭/- ৯৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

জন চ্যালোনার জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার (ইংরেজি: Jack Alabaster; জন্ম: ১১ জুলাই, ১৯৩০) ইনভারকারগিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৫ থেকে ১৯৭২ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ লেগ ব্রেক গুগলি বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৭১-৭২ মৌসুম পর্যন্ত জ্যাক অ্যালাব্যাস্টারে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা লেগ ব্রেক বোলার হিসেবে চিত্রিত হয়ে আসছেন। এছাড়াও, কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। প্রাদেশিক দল ওতাগোর প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রায়শঃই কনিষ্ঠ ভ্রাতা ও অফস্পিন বোলার গ্রেন অ্যালাব্যাস্টারের সাথে ব্যাটিং জুটি গড়তে নামতেন।

১৯৫৬-৫৭ ও ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে সফলতম ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেন। তন্মধ্যে, ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ১৮.০০ গড়ে ৩৬ উইকেট লাভ করেছিলেন। ডুনেডিনে অকল্যান্ডের বিপক্ষে ৪/৩৫ ও ৬/৪০ নিয়ে দলকে জয় এনে দেন। ওতাগো প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা জয় করে। ১৯৬৮-৬৯ কিংবা ১৯৭০-৭১ মৌসুমে কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি তিনি। তবে, ১৯৭১-৭২ মৌসুমে ১৪.৯৫ গড়ে ২২ উইকেট নিয়ে ওতাগো দলের প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একুশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার। ১৩ অক্টোবর, ১৯৫৫ তারিখে করাচীতে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৯ মার্চ, ১৯৭২ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে ভারত ও পাকিস্তান, ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ড, ১৯৬১-৬২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ১৯৭১-৭২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। তন্মধ্যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় সেরা সময় অতিবাহিত করেন। সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে সেখানে তিনি ৮৬ উইকেট পান। এছাড়াও, ২৯৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। পাঁচ টেস্টে ২২ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ড দলকে প্রথমবারের মতো সিরিজে সমতা আনয়ণে সহযোগিতা করেন।

কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা লাভ করা ছাড়াই ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান ও ভারত গমনের সুযোগ পান। আট টেস্টের পাঁচটিতে অংশ নিয়ে মাত্র দুই উইকেট সংগ্রহে করতে পেরেছিলেন তিনি। তবে, বেঙ্গালোরে দক্ষিণ অঞ্চলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড একাদশের সদস্যরূপে ২/৩০ ও ৫/৯৯ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়লাভে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ঐ মৌসুমের শেষদিকে অকল্যান্ডে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের প্রথমে টেস্ট বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন টেস্ট রান ৭৭ রানে গুটিয়ে ফেলা ইনিংসে তিনি দুই উইকেট পেয়েছিলেন।[১]

১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ড গমনের জন্যে মনোনীত হন। শুরুরদিকের খেলাগুলোয় বেশ ভালো করেন। লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৬/৩৭ ও ৫/৪৩ নিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয় এনে দেন। এজবাস্টনে সিরিজের প্রথমে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪/৪৬ পান। তবে, দ্বিতীয় টেস্টের পর তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। উইজডেনে মন্তব্যে করা হয় যে, বলকে তিনি খুব কমই বাঁক খাওয়াতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। কিন্তু বলে নিখুঁততা ও শূন্যে বল ফেলার ভিন্নতর প্রবণতায় ব্যাটসম্যানদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছিলেন।[২]

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন[সম্পাদনা]

১৯৫৯-৬০ ও ১৯৬০-৬১ মৌসুমে দূর্দান্ত খেলা উপহার দেয়ার পর ১৯৬১-৬২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের জন্যে মনোনীত হন। কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে খেলায় ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ৭৫ ওভারে ১৮০ রান খরচায় ৮ উইকেট লাভ করেন তিনি। এরফলে তার দল বিদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের সন্ধান পায় নিউজিল্যান্ড দল।[৩]

এছাড়াও পূর্ব লন্ডনে দক্ষিণ আফ্রিকান কোল্টস একাদশের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সেরা ৭/৪১ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। পাশাপাশি, পঞ্চম টেস্টে চার উইকেট নিয়ে জন রিডনোয়েল ম্যাকগ্রিগরের সাথে নিউজিল্যান্ডের ঐতিহাসিক বিজয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। তাদের সাথে নিউজিল্যান্ডের প্রথম তিনটি টেস্ট বিজয়ে অংশীদার ছিলেন তিনি।[৪] এ সফরে ১৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৮৬ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, টেস্টগুলোয় ২৮.০৪ গড়ে ২২ উইকেট লাভে করেছিলেন তিনি। জিওফ্রে চেটল উইজডেনে ব্যক্ত করেন যে, ‘আমরা পূর্বেই অ্যালাব্যাস্টারের সেরা লেগ স্পিন বোলিং সম্পর্কে অবগত ছিলাম। প্রকৃতঃই তিনি আঙ্গুলের কারুকাজে দক্ষ ও দেশে তিনি অনেকগুলো বছর দাপুটে ভাব বজায় রেখেছেন।’[৫]

১৯৬২-৬৩ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট লাভ করেন। কিন্তু পরবর্তী মৌসুমগুলোয় কিছুটা অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে সবগুলো খেলায় অংশ নেন। সেরা ছন্দে ফিরে আসেন। ডুনেডিনে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে ৫/৪৩ ও ৫/৭৯ পান। ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ সফররত ভারতীয় দলের বিপক্ষে চার টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের সবকটিতেই অংশ নেন। ডুনেডিনের প্রথম টেস্টে ৩/৬৬ ও ৩/৪৮ পান। এছাড়াও, ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩৪ টেস্ট রান করেন। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে একমাত্র নিউজিল্যান্ডীয় খেলোয়াড় হিসেবে দলের প্রথম চার টেস্ট বিজয়ের স্বাদ আস্বাধন করেন।

অবসর[সম্পাদনা]

৪১ বছর বয়সে ১৯৭২ সালের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনের জন্য নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। কিংস্টনে জ্যামাইকার বিপক্ষে প্রথম খেলায় ৩৭ ওভারে ৫/১৩০ পান। সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে খেলেন। কেবলমাত্র একটি উইকেটের সন্ধান পান। দ্বিতীয় টেস্টে গ্যারি সোবার্সকে বোল্ড করেন। এ সফর শেষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদেয় জানান জ্যাক অ্যালাব্যাস্টার।

১৯৫৪ থেকে ১৯৭৫ সময়কালে সাউথল্যান্ডের সদস্যরূপে হক কাপে খেলেন।[৬] ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে সাউথল্যান্ড চারটি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহুত খেলায় সফলতার সাথে মোকাবেলা করে শিরোপা অক্ষত রাখেন। এ পর্যায়ে ৮.০২ গড়ে ৩৬ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[৭]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৮১ সালে ইনভারকারগিলের সাউথল্যান্ড বয়েজ হাই স্কুলে রেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। এরপূর্বে কিংসওয়েল হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। ষষ্ঠ গ্রেডে গণিত শেখাতেন তিনি। বর্তমানে তিনি আলেকজান্দ্রায় বসবাস করছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wisden 1957, p. 837.
  2. Wisden 1959, p. 232.
  3. Wisden 1963, p. 908-9.
  4. Geoffrey Chettle, "New Zealand in South Africa, 1961-62", Wisden 1963, pp. 899–912.
  5. Wisden 1963, p. 899.
  6. "Hawke Cup Matches played by Jack Alabaster"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৭ 
  7. "Bowling in Hawke Cup 1973-74"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]