বিষয়বস্তুতে চলুন

ইয়েরেভান

স্থানাঙ্ক: ৪০°১০′৫৩″ উত্তর ৪৪°৩০′৫২″ পূর্ব / ৪০.১৮১৩৯° উত্তর ৪৪.৫১৪৪৪° পূর্ব / 40.18139; 44.51444
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Yerevan থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ইয়েরেভান
Երևան
রাজধানী শহর
ইয়েরেভানের পতাকা
পতাকা
ইয়েরেভানের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
ইয়েরেভান আর্মেনিয়া-এ অবস্থিত
ইয়েরেভান
ইয়েরেভান
ইয়েরেভান ইউরোপ-এ অবস্থিত
ইয়েরেভান
ইয়েরেভান
আর্মেনিয়ায় ইয়েরেভানের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৪০°১০′৫৩″ উত্তর ৪৪°৩০′৫২″ পূর্ব / ৪০.১৮১৩৯° উত্তর ৪৪.৫১৪৪৪° পূর্ব / 40.18139; 44.51444
দেশ আর্মেনিয়া
Founded as Erebuni by Argishti I782 BC
City status by Alexander II of Russia1 October 1879[]
Capital of Armenia19 July 1918 (de facto)[]
ইয়েরেভানের জেলা12
সরকার
 • ধরনMayor–Council
 • শাসকCity Council
 • MayorHayk Marutyan
আয়তন
 • রাজধানী শহর২২৩ বর্গকিমি (৮৬ বর্গমাইল)
উচ্চতা৯৯০ মিটার (৩,২৫০ ফুট)
সর্বোচ্চ উচ্চতা১,৩৯০ মিটার (৪,৫৬০ ফুট)
সর্বনিন্ম উচ্চতা৮৬৫ মিটার (২,৮৩৮ ফুট)
জনসংখ্যা (2017)[]
 • রাজধানী শহর১০,৭৫,৮০০
 • আনুমানিক (1 October 2019)১০,৮৩,৬০০[]
 • জনঘনত্ব৪,৮২৪/বর্গকিমি (১২,৪৯০/বর্গমাইল)
 • মহানগর (2001 estimate)[]১৪,২০,০০০
বিশেষণYerevantsi(s),[][] Yerevanite(s)[][]
সময় অঞ্চলAMT (ইউটিসিইউটিসি+০৪:০০)
এলাকা কোড+374 10
International airportZvartnots International Airport
HDI (2018)0.802[১০]
very high · 1st
ওয়েবসাইটwww.yerevan.am

ইয়েরেভান (ইউকে: /ˌjɛrəˈvæn/ YERR-ə-VAN, ইউএস: /-ˈvɑːn/ -⁠VAHN, আর্মেনীয়: Երևան [jɛɾɛˈvɑn] (শুনুন), কখনও কখনও বানান এরেভান) আর্মেনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং একই সাথে এটি বিশ্বের অন্যতম পু্রোনো, সর্বদা জনবসতিপূর্ণ, লোকসমাগম থাকা শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। হ্রাজডেন নদীর তীরে অবস্থিত ইয়েরেভান শহর আর্মেনিয়ার প্রশসনিক, সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র। আর্মেনিয়ার ইতিহাসে চতুর্দশতম এবং এরারাত সমভূমি ও এর আশেপাশের সপ্তম, ইয়েরেভান ১৯১৮ সাল থেকে দেশটির রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শহরটি আর্মেনিয়ার জাতীয়, সবচেয়ে বড় এবং একই সাথে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম পুরনো রিশপগুলোর একটিকে সংরক্ষণ করে রেখেছে।[১৬]

খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতক থেকে ইয়েরেভেনে ইতিহাস পাওয়া যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৭৪২ খ্রিষ্টাব্দে রাজা আরগিস্টি এরারাত সমভূমির পশ্চিমে ইরেবুনি দুর্গ নির্মাণ করেন[১৭] । ইয়েরেভান শব্দটি ইরেবুনি থেকেই এসেছে বলে ধরা হয়ে থাকে। রাজা আরগিস্টি ইরেবুনিকে প্রশাসনিক এবং ধর্মীয় আচার-ব্যবহারের কেন্দ্র হিসেবেই নির্মাণ করেছিলেন, যদিও পরবর্তীকালে শহরটি রাজধানী স্থানান্তরের কারণে তার জৌলুস এবং গুরুত্ন হারিয়ে ফেলে।[১৮] ১৮৫০ থেকে ১৯১৭ সালে ইরানিয়ান এবং রশিয়ান শাসনামলে শহরটি প্রধান প্রশাসনিক শহর হিসেবে ছিলো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইয়েরেভান পুনরায় প্রথম গণপ্রজাতন্ত্রী আর্মেনিয়ার রাজধানী হয়ে উঠে। এসময় অটোমান সম্রাজ্যের গণহত্যা থেকে বেচে যাওয়া হাজার-হাজার আর্মেনিয়ান শহরটিতে বসবাস শুরু করে।[১৯] ২০ শতকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ইয়েরেভান দ্রুত বিস্তার লাভ করতে শুরু করে। অল্প কয়েকদশকের মধ্যে, শহরটি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে সমগ্র আর্মেনিয়ার শিল্প-সংস্কৃতি ও প্রধান প্রশাসনিক শহরে পরিণত হয়।

আর্মেনিয়ার অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে একবিংশ শতকের দোরগোড়া থেকেই ইয়েরেভানের কাঠামোগত উন্নয়ন তরান্বিত হতে থাকে যেটা সোভিয়েত আমলে অনেক কম ছিলো। শহরটি বর্তমানে ইউরোসিটিজ (ইউরোপীয় বড় শহরগুলোর নেটওয়ার্ক) এর অন্তর্ভুক্ত। ২০০১ সালের হিসেবে ইয়েরেভানের জনসংখ্যা ১,০৬০,১৩৮ জন যেটা সমগ্র আর্মেনিয়ার মোট লোকসংখ্যার ৩৫%। ২০১৬ সালের দাপ্তরিক গণনায় শহরটির বর্তমান জনসংখ্যা ১,০৭৩,৭০০[২০] ইউনেস্কো ২০১২ সালে শহরটিকে "ওয়ার্ল্ড বুক ক্যাপিটাল" উপাধি [২১]। ইয়েরেভান ইউরোশহরগুলোর একটি।[২২]

ইরেবুনি দুরগকে ইয়েরেভান শহরের জন্মস্থান হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এই শহরে রয়েছে কাটাঘিকে সিরানাভর, যেটা ইয়েরেভানের সবচেয়ে পুরোনো গীর্জা এবং রয়েছে সবচেয়ে বড় আর্মেনিয়ান ক্যাথিড্রাল- সেইন্ট গ্রেগরি ক্যাথিড্রাল। আর্মেনিয়ান গণহত্যার জন্য নির্মত

সিটসারনাকাবেরড মেমোরিয়াল অবস্থিত এই ইয়েরেভান শহরে। এখানে আরো রয়েছে অনিন্দ্যসুন্দর ইয়েরেভান অপেরা থিয়েটার, সবচেয়ে বড় আর্মেনিয়ান শিল্প জাদুঘর- ন্যাশনাল গ্যালারি অফ আর্মেনিয়া, এবং মেটেনাদারান, যেটা কিনা বিশ্বের অন্যতম বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ বই-দলিলাদির সংগ্রহশালা।

নামের উৎপত্তি এবং প্রতীক

[সম্পাদনা]
ইয়েরেভানের জন্মসনদ - ৭৮২ খ্রিস্টাব্দে ব্যাসাল্ট পাথরে খোদাই করা লিপি
১২২৩ সালে খোদিত ইয়েরেভান (ԵՐԵՒԱՆ)[২৩]

ইয়েরেভান শব্দটির উতপত্তি নিয়ে দু'রকম মিথ চালু আছে। প্রথমটি হল, ওরন্টিড শাসনামলের সর্বশেষ রাজা, ইয়েরভান্ডাসাট শহরের গোড়াপত্তনকারী রাজা ইয়েরভান্ড এর নামানুসারে ইয়েরেভান শহরের নামকরণ করা হয়েছিলো। আর দ্বিতীয়টি হল, রাজা আরগিস্টির প্রতিষ্ঠিত ইরেবুনি দুর্গের নামানুসারে ইয়েরেভান শহরের নাম এসেছে

এরারাত পর্বতকে ইয়েরেভান শহরের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। শহরের অফিসিয়াল সিলটি হল- একটি বেদীর উপর একটি ক্রাউনড, ডানাযুক্ত ইরেবুনি সিংহ যে কিনা একটা শক্তির প্রতীক এবং বরম ধরে আছে। সেপ্টেম্বর ২৭, ২০০৪ থেকে ইয়েরেভানের নিজস্ব সংগীত-"ইরেবুনি-ইয়েরেভান) বিদ্যমান। ইয়েরেভানের নিজস্ব পতাকা আছে। এতে সাদা ব্যাকগ্রাউণ্ডের মাঝখানে শহরটির সিল এবং তার চারপাশে ১২ টি ছোট লাল ত্রিভুজ (যেগুলো কিনা আর্মেনিয়ার ১২ টি ঐতিহাসিক রাজধানীর প্রতীক) অঙ্কিত। পতাকাটিতে দেশটির জাতীয় পতাকার তিনটি রঙ বিদ্যমান।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ইয়েরেভানে খ্রিষ্টপূর্ব চার হাজার সালের দ্বীতিয়ারধ থেকে মানুষের বসবাস হয়ে আসছে। নগরীর দক্ষিণাংশ, শেনগাভিটে কুরা-এরাক্সেসের সময়, তথা ব্রোঞ্জযুগে, খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ সাল থেকে মনুষ্যবসতি ছিলো। শেনগেভিটের প্রথম খনন কাজ শুরু হয় প্রত্নতত্ত্ববিদ জেভগিনি বেবুরডিয়ানের তত্ত্বাবধানে ১৯৩৬ এবং ১৯৩৮ এর মধ্যে। দুই দশক পরে ১৯৫৮ সালে, প্রত্নতত্ত্ববিদ সানড্রো সারডারিয়ানের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয়বারের মত নগরিটির খননকাজ শুরু হয় যেটা ১৯৮৩ সালে শেষ হয়। ২০০০ সালে হেকব সিমোনিয়ানের পরিচালনায় "" দফা পুনঃখনন কাজ শুরু হয়। ২০০৯ সালে উক্ত পুনঃখনন কাজের সাথে যুক্ত হন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার ওয়াইডেনার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিশেল এস. রোথমান। একত্রে তারা তিনধাপে যথাক্রমে ২০০৯, ২০১০ এবং ২০১২ সালে খননকাজ পরিচালনা করেন। তাদের খননকাজের মাধ্যমে প্রাপ্ত ৮/৯ স্তরের পাথুরে কলামগুলো থেকে জানা যায় যে খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ এবং ২৫০০ সালের মধ্যে সেগুলো স্থাপন করা হয়েছিলো। উক্ত গবেষণায় অনেকগুলো বিশালায়তন চক্রাকার দালানের অস্তিত্বও জানা যায় যেগুলোতে বর্গাকার কক্ষ ছিলো এবং একই সাথে বেশ কিছু ছোট ছোট গোলাকার দালানের অস্তিত্বও ধরা পড়ে।

ইরেবুনি

[সম্পাদনা]

খ্রিষ্টপূর্ব নয়শ শতকে রাজা এরামের প্রতিষ্ঠিত ইরেবুনি প্রাচীন উরাতু অঞ্চলের রাজধানী। এটা লেক ভানে তীরে অভস্থিত এবং আধুনিক ইয়েরেভানের সমগ্র অংশ এর অন্তর্ভুক্ত ছিলো। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায়, উত্তর ককেশাস অঞ্চলের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য রাজা আরগিষ্টি খ্রিস্টপূর্ব ৭৪২ সালে ইরেবুনি কেল্লা নির্মাণ করেন। ইউরেশিয়ানদের শৌর্য-বীর্যের সময় ইরেবুনির চারপাশে সেচ খাল এবং জলাধার খনন করা হয়েছিলো। বর্বর সিমেরিয়ান এবং সাইথিয়ানদের হাত থেকে বাঁচার জন্য খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় রুসা ইরবুনি থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে টাইসেবাইনি নামক শহর গড়ে তুলেন, যেটার নির্মাণকাজ শেষ হয় খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকের শেষদিকে তৃতীয় রুসার সময়ে। খননের সময় জায়গাটিতে ৪০,০০০ বর্গমিটার (১০ একর) ১২০ টি কক্ষ পাওয়া যায়। যাহোক, টাইসেবাইনি শহরটি খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫ সালে মিডেস এবং সাইথিয়ানদের সম্মিলিত চেষ্টায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

মিডিয়ান এবং এশেমিনিড শাসনামল

[সম্পাদনা]

খ্রিষ্টপূর্ব ৫৯০ সালে মিডাসদের দ্বারা উরারতু সম্রাজ্যের পতনের পর ইরেবুনিসহ সমগ্র আর্মেনিয়ান উচ্চভূমি ইরানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এটাকে বলা হয় মিডিয়ান রুল। এর চল্লিশ বছর পর খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ শতকে সমগ্র ইরান ও ইরেবুনি অঞ্চল রাজা সাইরাসের কব্জায় আসে, টাকে বলা হয় এশেমিনিড রুল। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩১ শতকে আলেকজান্ডার পার্সিয়াসহ পুরো আর্মেনিয়া দখল করে ফেললে ইরেবুনি তার কদর হারাতে শুরু করে। এসময় আরমাভির, জারেহাভান, বাগারান, ইরেভানদাসাতসহ অন্যান্য শহর গড়ে উঠে। অঞ্চলটি এরপর বিভিন্ন সময় ইরানি, তুর্কিশসহ অন্যান্য আরব সাম্রাজ্যের অধিনে ঘুরেফিরে শাসিত হতে থাকে। তবে ইরানি শাসকদের আধিপত্য ছিলো সবচেয়ে বেশি যেটা উনিশ শতকের আগ পর্যন্ত বজায় ছিলো।

রাশিয়ান রুল এবং আর্মেনীয় স্বাধীনতা

[সম্পাদনা]

১৮২৬ থেকে ১৮২৮ সালে রাশিয়া এবং ইরানের শাসকদের মধ্যে যুদ্ধে রাশিয়া জয়লাভের মাধ্যমে ইয়েরেভানসহ সমগ্র আর্মেনিয়ার দখল নেয়। এর ফলে আর্মেনিয়ায় ৩০০ বছরের ইরানি শাসনের ইতি ঘটে এবং ইয়েরভানসহ আর্মেনিয়ার পূর্বাংশ নিয়ে গঠিত হয় "আর্মেনিয়ান অবলাস্ত"। ১৯১৭ সালে রাশিয়ার পতনের আগ পর্যন্ত এটা টিকে ছিলো।

বিংশ শতকের গোড়ারদিকে ইয়েরেভান ত্রিশহাজার (৩০,০০০) জনসংখ্যার একটা ছোট শহর ছিলো। ১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবে রূশ সাম্রাজ্যের পতনের পর আর্মেনিয়া, জর্জিয়া এবং ট্রান্সককেশীয় শাসকরা একত্রিত হয়ে ট্রান্সককেশীয় ফেডারেশন গঠন করে যদিও এটা সফলতার মুখ দেখেনি।

১৯১৮ সালের ২১ মে তুরকীশাসকরা আর্মেনিয়া দখলের পায়তারা শুরু করলে সমগ্র শক্তি দিয়ে তুর্কীশাসদের প্রিতিরোধ করা হয় এবং ১৯১৮ সালের ২৮ মে ডাসনাক নেতা আরাম মানুকিয়ান আর্মেনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এসময় ইয়েরেভান পশ্চিম আর্মেনিয়ার ৭৫,০০০ রিফিউজি গ্রহণ করে যারা তুর্কী শাসকদের দ্বারা সংঘটিত আর্মেনিয়ান গণহত্যা থেকে বাচতে পেরেছিলো। ১৯২০ সালে "ট্রিটি অব সেভরেস" এ সাক্ষর করার পর আর্মেনিয়া আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো প্রথমে কূটনৈতিক মিশন স্থাপন করে। আর্মেনিয়াও যুক্তরাজ্য, জার্মনি, ইতালি, গ্রীস, সার্বয়া, ইরান এবং জাপানে কূটনৈতিক মিশন স্থাপন করে।

ভূগোল

[সম্পাদনা]

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ইয়েরেভানের গড় উচ্চতা ৯৯০ মিটার, সর্বনিম্ন ৮৬৫ মিটার আর সরবোচ্চ ১৩৯০ মিটার। এটি আরারাত ভ্যালির উত্তরপূর্ব এ হ্রাজডেন নদীর তীর থেকে আর্মেনিয়ার মধ্য-পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত। শহরটির পূর্ব-পশ্চিম এবং উত্তরাংশ পাহাড় ঘেরা। দক্ষিণাংশ ক্রমশ হ্রাজডেন নদীর দিকে ধাবিত। হ্রাজডেন নদী সমগ্র শহরটিকে একটি খালের মাধ্যমে দু'ভাগে ভাগ করেছে। ঐতিহাসিকভাবে ইয়েরেভান আর্মেনিয়ার উচ্চভূমির কেন্দ্রে অবস্থিত।

রাজধানী শহর হিসেবে ইয়েরেভান কোনো মারজ বা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত না। এটি উত্তরপূর্ব এ কাটায়াক, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে আরারাত, পশ্চিমে আরমাভির, উত্তর-পশ্চিমে আরাগাটসটন রাজ্যগুলো দ্বারা বেষ্টিত।

স্থাপত্য

[সম্পাদনা]

ইয়েরেভান টিভি টাওয়ার হল ইয়েরেভান শহরের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং এবং ট্রান্সককেশিয়ান অঞ্চলের অন্যতম উঁচু স্থাপনা। এছাড়াও, রিপাবলিক স্কয়ার, ইয়েরেভান অপেরা থিয়েটার এবং ইয়েরেভান ক্যাসকেড শহরটির ল্যাণ্ডমার্ক স্থাপনা, যেগুলো স্কলার আলেকজান্ডার টামানিয়ানের নিজস্ব ডিজাইন।

২০০০ সাল থেকে ইয়েরেভানের পুনঃসংস্কারের সময় অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয় এবং সেগুলোর জায়গায় নতুন স্থাপনা গড়ে উঠে, যেগুলোর জন্য ইয়েরেভানের অথোরিটি নিন্দিতও হয়েছিলো। একইসাথে শহরটির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ছোট ছোট বিল্ডিংগুলোর জায়গায় বৃহদাকার বিল্ডিং গড়ে উঠতে থাকে। সেইন্ট গ্রেগরি ক্যাথিড্রাল, ইয়েরেভান সিটি কাউন্সিল, ম্যাটেনাডারান ইন্সটিটিউটের নতুন সেকশন, ভারটনটস ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দররের নতুন টার্মিনাল, ক্যাফেসজিয়ান সেন্টার অব আর্টস– এগুলো একুশ শতকের প্রথম দুই দশকে গড়ে উঠা ইয়েরেভানের আধুনিক স্থাপত্যগুলোর উদাহরণ। আরাম স্ট্রিট এবং নরদান এভেনিউ হল যথাক্রমে পুরোনো এবং আধুনিক ইয়েরেভানের স্থাপত্য নিদর্শন।

মে, ২০১৭ এর মতে ইয়েরেভান শহরে ৪৮৮৩ টি এপার্টমেন্ট বিল্ডিং রয়েছে। একই সাথে ৩৯,৭৯৯ টি স্ট্রিট ল্যাম্প পোষ্টে ৬৫,১৯৯ টি স্ট্রিট লাইট রয়েছে। শহরটিতে ১,০৮০ টি রাস্তা রয়েছে, যেগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭৫০ কিলোমিটার।

উদ্যান

[সম্পাদনা]

জনবহুল ইয়েরেভানে কয়েকটি পার্ক রয়েছে। ইরেবুনির পাবলিক পার্কটি ইয়েরেভানের সবচেয়ে পুরোনো বাগান। এই পারকের সাথে একটি ক্রিত্রিম হ্রদও রয়েছে। সতেরো হেক্টর আয়তনের পার্কটি খ্রিষ্টপূর্ব অষ্টম শতকে উরাতু সাম্রাজ্যের রাজা ১ম আরগিস্টি এর সময়ে তৈরি করা। ২০১১ সালে পার্কটি পুনঃসংস্কারের পর লায়ন পার্ক নামকরণ করা হয়। পার্কটির নামকরণ মূলত দু'টি শহর লায়ন এবং ইয়েরেভান- এই দুই শহরের হ্রদ্যতার জন্য করা হয়েছিলো।

উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে বানানো লাভারস পার্ক, মারশাল বাঘরামিয়ান এভেনিউ, এবং শহরের মধ্যস্থলে অবস্থিত ইংলিশ পার্ক ইয়েরেভানের অধিবাসীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। ইয়েরেভান বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩৫ সালে, ভিক্টোরি পার্ক ১৯৫০ সালে এবং সার্কুলার পার্ক হল ইয়েরেভানের বড় সবুজ জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত ইয়েরেভান অপেরা থিয়েটার পার্কটিও অন্যতম সবুজপ্রেমিদের প্রিয়জায়গা। শীতকালে পার্কটির লেকের ধারে পাব্লিক-আইসস্কেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৬৭ সালে খনন করা ইয়েরেভান লেকটি ০.৬৫ স্কয়ার কিলোমিটার।

ইয়েরেভানে প্রত্যেকটি প্রশাসনিক ডিস্ট্রিক্টের নিজস্ব পাব্লিক পার্ক রয়েছে, যেমন আজাপ্নিয়াকের ব্যুয়েনস এয়ারস পার্ক এবং টুমানিয়ান পার্ক; শেনগাভিটের কোমিটাস পার্ক; মালাটিয়া-সেবাস্তিয়ার ভাহান জাটিকিয়ান পার্ক, কানাকার-জেইটানের ডেভিড আনহাগট পার্ক; এভানের ফ্যামিলি পার্ক; নর নরকের ফ্রিটজফ পার্ক ইত্যাদি।

প্রশাসনিক ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]
বাঘ্রামিয়ান এভিনিউতে আর্মেনিয়ার জাতীয় পরিষদ

ইয়েরেভান ১৮৭৯ সালে রাশিয়ার অধিনে থাকা অবস্থায় জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের ডিক্রি জারির মাধ্যমে শহরের মরজাদা লাভ করে। শহরটির প্রথম মেয়র ছিলেন হভহানেস ঘরঘানিয়ান, যিনি শহরটির প্রথম সিটি কাউন্সিলও গঠন করেন।

আর্মেনিয়ার সংবিধানের অনুসারে জুলাই ৫, ১৯৯৫ তারিখে ইয়েরেভান প্রদেশে রূপান্তর কপ্রা হয়। একারণে ইয়েরেভান আর্মেনিয়ার একটি প্রদেশের মত কাজ করে। শহরটির প্রশাসনিক স্তরে রয়েছেন:

১) মেয়র, যিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়োনে রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগ পান।

২) সিটি কাউন্সিল, ডিস্ট্রিক্টগুলোর প্রধানদের মধ্য থেকে গঠিত কমিটি।

৩) বারোটি 'কমিউনিটি ডিস্ট্রিক্ট', যাদের নিজস্ব নেতা এবং নির্বাচিত কাউন্সিল রয়েছে।

২০০৫ সালের ২৭ নভেম্বরের সংবিধানমতে ইয়েরেভান একটি কমিউনিটি এবং এটি একজন সরাসরি বা পরোক্ষ মেয়রের অধিনে থাকবে এবং এর জন্য বিশেষ রুলস অনুমোদন করা হয়। ন্যাশনাল এবং রোড পুলিশের পাশাপাশি, ইয়েরেভানের নিজস্ব মিউনিসিপাল পুলিশ ব্যবস্থা রয়েছে। পুলিশের তিনটি শাখাই সম্মিলিতভাবে শহরটির যাবতীয় বিষয় দেখাশুনা করে থাকে।

প্রশাসনিক জেলাসমূহ

[সম্পাদনা]

ইয়েরেভান বারোটি প্রশাসনিক জেলায় বিভক্ত। প্রতিটি জেলার একজন করে নির্বাচিত প্রধান থাকেন। সবগুলো জেলা মিলে ২২৩ স্কয়ার কিলোমিটার। নিচে ইয়েরেভানের বিভিন্ন জেলা, আয়তন এবং জনসংখ্যার (২০১৬ অনুযায়ী) তালিকা দেখানো হলঃ

ইয়েরেভান
জেলার নাম স্কয়ার কি.মি. জনসংখ্যা
এজাপনায়াক ২৫.৮২ ১০৯,১০০
এরাবকির ১৩.২৯ ১১৫,৮০০
এভান ৭.২৬ ৫৩,১০০
ডাভটাসেন ৬.৪৭ ৪২,৫০০
ইরেবুনি ৪৭.৪৯ ১২৬,৫০০
কানাকের-জেইটান ৭.৭৩ ৭৪,১০০
কেনট্রন ১৩.৩৫ ১২৫,৭০০
মালাটিয়া-সেবাস্তিয়া ২৫.২৬ ১৩৫,৯০০
নরক-মারাশ ৪.৭৬ ১১,৮০০
নর নরক ১৪.১১ ১৩০,৩০০
নুবারাসেন ১৭.২৪ ৯,৮০০
শেনগাভিট ৪০.৬ ১৩৯,১০০

ডেমোগ্রাফি

[সম্পাদনা]

ইয়েরেভানে প্রায় দশ লক্ষ মানুষের বসবাস। সোভিয়েত পতনের আগে শহরটিতে আর্মেনিয়ান্দের সাথে রাশিয়ান, কুর্দিশ, আজারবাইজানিসহ অন্যান্য ইরানিয়ান জাতি বাস করে আসছিলো।কিন্তু ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সালে নাগরনো-কারাবাখ যুদ্ধের সময় আর্মেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যে সংগঠিত জাতি বিনিময় প্রোগামের ফলে প্রায় সব আজারবাইজানি শহরটি থেকে চলে যায়। ১৯৯০ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় রাশিয়ান সংখ্যালঘুদেরও একটা বড় অংশ ইয়েরেভান থেকে পালিয়ে যায়। এখনকার ইয়েরেভানে জনগণ বলতে আর্মেনিয়ানরাই সর্বস্ব।

সোভিয়েত পতনের পর অর্থনৈতিক মন্দায় অনেকেই রাশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপে পাড়ি জমানোর ইয়েরেভানের লোকসংখ্যা ১,২৫০,০০০ (১৯৮৯) থেকে কমে ১,১০৩,৪৮৮ (২০০১) তে নেমে আসে, যেটা ২০০৩ সালে আরো কমে ১,০৯১,২৩৫ হয়। যাহোক, ২০০৭ সাল থেকে ইয়েরেভানের জনসংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ২০০৭ সালে শহরটির মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় ১,১০৭,৮০০ জন।

ভাষাগত দিক দিয়ে ইয়েরেভানের অধিবাসীরা ইয়েরেভানীয় উচ্চারণরীতি ফলো করে, যেটা কিনা তেরো শতকে গড়ে উঠা একটি পূরব আর্মেনীয় উচ্চারণরীতি। এই উচ্চারণরীতিটি রাশিয়ান, ইরানীয়ানসহ বেশ কয়েকটি অন্যান্য ভাষার উচ্চারণশৈলির দ্বারা প্রভাবিত।

উপজাতি

[সম্পাদনা]

পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত ইয়েরেভানের প্রথম অধিবাসী ছিলো আর্মেনীয়রা। ১৫৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ইরিভান দূরগের অধিবাসীরা ছিলো মুসলিল সৈনিক, যারা সংখ্যায় প্রায় দুই থেকে তিন হাজার ছিলো। অন্যদিকে শহরটির প্রধান অধিবাসী ছিলো আর্মেনিয়ানরা। ফেঞ্চ পরিব্রাজক জিয়ান-ব্যাপ্টিস্টে টাভেরনিয়ার ১৬৩১ থেকে ১৬৬৮ সালের মধ্যে ছয়বার ইয়েরেভান ভ্রমণ করেন এবং উল্লেখ করেন যে, ইয়েরেভানের প্রধান অধিবাসী হচ্ছে আর্মেনিয়ানরা। ১৭২০ সালের তূরকী-পারশিয়ান যুদ্ধের সময়েও শহরটিতে আর্মেনিয়ানরা সংখ্যাগুরু ছিলো। কিন্তু অঞ্চলটি নিয়ে তুরস্ক, ইরান আর রাশিয়ার বারবার জুদ্ধের ফলে এর জণগোষ্ঠিগত পরিবরতন হয়েছে অনেকবার। যাহোক, উনিশশতকের গোড়ার দিকে ইয়েরেভানে মুসলমানদের প্রাধান্য ছিলো।

সোভিয়েতদের আর্মেনিয়া দখলের আগ পর্যন্ত শহরটি আর্মেনিয়ান আর ককেশিয়ান তাতারদের সমন্বয়ে একটি বহুসাংস্কৃতিক শহর ছিলো। আর্মেনিয়ান গণহত্যার পর পশ্চিম আর্মেনিয়া (যেটা এখন তুরস্ক নামে পরিচিত) থেকে পূর্ব আর্মেনিয়ায় পালিয়ে আসে। ১৯১৯ সালে প্রায় ৭৫,০০০ আর্মেনিয় তুরস্ক (ভাসপুরাকান অঞ্চল) থেকে ইয়েরেভানে চলে আসে। এই উদ্বাস্তুদের একটা বড় অংশি টাইফাসসহ অন্যান্য রোগে মারা যায়। এছাড়াও ১৯২১ থেকে ১৯৩৬ সালের মধ্যে ৪২,০০০ আর্মেনিয় উপজাতি ইরাক, ইরান, তুরস্ক, গ্রিস, সিরিয়া, ফ্রান্স, বুলগেরিয়া থেকে সোভিয়েত আর্মেনিয়ায় আসে, যাদের বেশিরভাগই ইয়েরেভানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় দফায় বিভিন্ন দেশ থেকে আর্মেনিয়দের পুনঃআগমন ঘটে, এদেরও বেশিরভাগ ইয়েরেভানে স্থায়ী হয়। আশিরদশকে সর্বশেষ ২,০০০ আজারবাইজানির আর্মেনিয়া ত্যাগের মধ্যদিয়ে ইয়েরেভান পুরোপুরিভাবে আর্মেনিয়প্রধান হয়ে উঠে।

আর্মেনিয়ান এপোস্টলিক চার্চ

[সম্পাদনা]

আর্মেনিয়ান এপোস্টলিক চার্চ দেশটির আদিম প্রভাববিস্তারকারী ধর্ম। পঞ্চম শতকের সেইন্ট পাউল এবং পিটার চার্চ ১৯৩০ এর নভেম্বরে সোভিয়েতরা ধ্বংস করে ফেলে। ১৯৩০ এর সোভিয়েত আগ্রাসনের সময় অনেক প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় আর্মেনিয়ান চার্চ ধ্বংস করা হয়েছিলো।

বর্তমানে ইয়েরেভানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্মেনিয়ান চার্চ বিদ্যমান, যেটা ক্যাথিড্রাল অব সেইন্ট গ্রেগরি দ্য ইল্যুমিনেটর নামেও পরিচিত। ২০০১ সালে আর্মেনিয়ান চার্চের ১৭০০ বছর পূর্তি এবং রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে খ্রিস্টান ধর্মকে গ্রহণের উদ্‌যাপন হিসেবে ক্যাথিড্রালটিকে পবিত্রস্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৭ সালে আর্মেনিয়ায় ১৭ টি চার্চ এবং চারটি চ্যাপেল রয়েছে।

রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ

[সম্পাদনা]

১৮২৬-২৮ এর রুশ-ইরানিয়ান যুদ্ধে রাশিয়ার জয়ের পর অনেকগুলো রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ বানানো হয়। বিংশশতকের মাঝামাঝিতে খুলে দেয়া সেইন্ট নিকোলাই ক্যাথিড্রাল শহরটির সবচেয়ে বড় রাশিয়ান চার্চ। যাহোক, বেশিরভাগ চার্চই সোভিয়েতরা ১৯৩০ এর দিকে ধ্বংস করে ফেলেছিলো। ১৯৩১ সালে সেইন্ট নিকোলাই চার্চটি সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করা হয় এবং এর একটা অংশকে সেনাবাহিনীর কাজে লাগানো হয়। ১৯৯১ সালে চার্চটিকে পুনরায় উজ্জিবিত করা হয় এবং ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর রুশ আর্চবিশপ ২য় কেরেকিন এর উপস্থিতিতে চার্চটিকে বিশেষ পবিত্রস্থানের মর্যাদা দেয়া হয়।

অন্যান্য ধর্ম

[সম্পাদনা]

ইভান চপিনের মতে উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে ইয়েরেভানে আটটি মসজিদ ছিলো। ১৯৯০ সালে আঠারো শতকের নীল মসজিদটি ইরানের আর্থিক সহায়তায় পুন:সংস্কারের পর খুলে দেয়া হয়, যেটা কিনা বর্তমানে ইয়েরেভানে একমাত্র মসজিদ। মসজিদটির মূল ব্যবহারকারী হল ইরানি ভ্রমণকারীরা ইয়েরেভানে অল্পকিছু ইয়েজিদি, মলকান, নিওপাগান, বাহাই এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে।

স্বাস্থ্যসেবা

[সম্পাদনা]

ইয়েরেভান অথোরিটি শুধুমাত্র মাতৃত্বকালিন সেবার জন্য ভর্তুকি দিয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতিবছর, দেশের দুস্থ মানুষদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রধান বাজেট থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রাখা হয়। স্বাস্থ্যসেবার জন্য ইয়েরেভান সমগ্রদেশের প্রধান কেন্দ্র। এখানকার বেশকিছু হাসপাতাল অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা এবং গবেষণার সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। যেমন, শেনগাভিট মেডিক্যাল সেন্টার, ইরেবুনি মেডিক্যাল সেন্টার, ইজমিরলিয়ান মেডিক্যাল সেন্টার, সেইন্ট গ্রেগরি ইল্যুমিনেটর মেডিক্যাল সেন্টার, নরক-মারাশ মেডিক্যাল সেন্টার, আর্মেনিয়া রিপাবলিকান মেডিক্যাল সেন্টার, আস্টঘিক মেডিক্যাল সেন্টার, আর্মেনিয়ান-আমেরিকান ওয়েলফেয়ার সেন্টার এবং ইয়েরেভান স্টেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাখিটার হেরাটসি হসপিটাল কমপ্লেক্স হল শহরটির উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও গবেষণাকারী হাসপাতাল। এর বাহিরে এখানে ৩৯ টি মিউনিসিপ্যালিটি পলিক্লিনিক/মেডিক্যাল সেন্টার রয়েছে।

১৯৩৭ সাল থেকে মাত্ব্রিত্ব ও শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে শহরটিতে। এছাড়া, আর্মেনিকাম ক্লিনিক্যাল সেন্টারে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ যেমন এইচ আই ভি, হেপাটাইটিস, জন্মগতসংক্রামক রোগের গবেষণা করা হয়। ১৯৯১ সালে ইয়েরেভানে প্রতিষ্ঠিত লিকভর ফার্মাসিউটিক্যালস ফ্যাক্টরি হল দেশটির সবচেয়ে বড় ওষুধ উদপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Sarukhanyan, Petros (২১ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" Շնորհավո՛ր տոնդ, Երեւան դարձած իմ ԷրեբունիHayastani Hanrapetutyun (আর্মেনিয় ভাষায়)। ২০ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪Պատմական իրադարձությունների բերումով Երեւանին ուշ է հաջողվել քաղաք դառնալ։ Այդ կարգավիճակը նրան տրվել է 1879 թվականին, Ալեքսանդր Երկրորդ ցարի հոկտեմբերի 1—ի հրամանով։ ()
  2. Hovannisian, Richard (১৯৭১)। The Republic of Armenia: The First Year, 1918–1919বিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। University of California Press। পৃষ্ঠা 41আইএসবিএন 9780520018051On July 19 the Armenian cabinet and National Council were greeted at the outskirts of Erevan by Aram, Dro, and General Nazarbekian. Together the entourage rode into the nation's capital. 
  3. https://www.armstat.am/en/?nid=81&id=2209
  4. Armstat
  5. Bell, Imogen (সম্পাদক)। "Armenia"। Eastern Europe, Russia and Central Asia 2003 (3rd সংস্করণ)। London: Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 84আইএসবিএন 9781857431377 
  6. Hartley, Charles W.; Yazicioğlu, G. Bike; Smith, Adam T., সম্পাদকগণ (২০১২)। The Archaeology of Power and Politics in Eurasia: Regimes and Revolutions। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 72। আইএসবিএন 9781107016521...of even the most modern Yerevantsi. 
  7. Ishkhanian, Armine (২০০৫)। Atabaki, Touraj; Mehendale, Sanjyot, সম্পাদকগণ। Central Asia and the Caucasus: Transnationalism and Diaspora। New York: Routledge। পৃষ্ঠা 122আইএসবিএন 9781134319947...Yerevantsis (residents of Yerevan)... 
  8. Connelly, Andrew (১৩ এপ্রিল ২০১৫)। "Syria conflict: A century after the 'genocide', Armenians flee war and return to land of their ancestors"The Independent...cafés as Yerevanites have taken to smoking nargile water pipes. 
  9. Azadian, Edmond Y. (৪ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Armenian Politics in Yerevan Taxicabs"Armenian Mirror-SpectatorMost of Yerevanites are enjoying better living conditions.... 
  10. "Sub-national HDI – Area Database – Global Data Lab"hdi.globaldatalab.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৩ 
  11. Billock, Jennifer (২৮ ডিসেম্বর ২০১৬)। "How Ancient Volcanoes Created Armenia's Pink City"Smithsonian 
  12. Hovasapyan, Zara (১ আগস্ট ২০১২)। "When in Armenia, Go Where the Armenians Go"Armenian National Committee of AmericaMade of local pink tufa stones, it gives Yerevan the nickname of "the Pink City. 
  13. Dunn, Ashley (২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮)। "Pink Rock Comes as Gift From Homeland in Answer to Armenian College's Dreams"Los Angeles TimesTo Armenians, though, the stone is unique. They often refer to Yerevan, the capital of their homeland, as "Vartakouyn Kaghak," or the "Pink City" because of the extensive use of the stone, which can vary from pink to a light purple. 
  14. "Տուֆ [Tuff]"encyclopedia.am (আর্মেনিয় ভাষায়)। ১৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০২০Երևանն անվանում են վարդագույն քաղաք, որովհետև մեր մայրաքաղաքը կառուցապատված է վարդագույն գեղեցիկ տուֆե շենքերով: 
  15. "Old Yerevan"yerevan.am। Yerevan Municipality। Since this construction material gave a unique vividness and specific tint to the city, Yerevan was called "Rosy city". 
  16. History ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে
  17. Katsenelinboĭgen, Aron (১৯৯০)। The Soviet Union: Empire, Nation and Systems। New Brunswick: Transaction Publishers। পৃষ্ঠা 143আইএসবিএন 0-88738-332-7 
  18. R. D. Barnett (১৯৮২)। "Urartu"। John Boardman; I. E. S. Edwards; N. G. L. Hammond; E. Sollberger। The Cambridge Ancient History, Vol. 3, Part 1: The Prehistory of the Balkans, the Aegean World, Tenth to Eighth Centuries BC (2nd সংস্করণ)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 346। আইএসবিএন 978-0521224963 
  19. Hovannisian, Richard G. (১৯৭১)। The Republic of Armenia: The First Year, 1918–1919, Vol. I। Berkeley: University of California Press। পৃষ্ঠা 126–127। আইএসবিএন 0-520-01984-9 
  20. The official estimate of the population in Armenia as of 01.01.2016
  21. "Yerevan named World Book Capital 2012 by UN cultural agency" 
  22. "Members List"eurocities.eu। ৬ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৫ 
  23. Marie-Félicité Brosset. Rapports sur un voyage archéologique dans la Georgie et dans l'Aarménie exécuté en 1847–1848. — Académie Impériale, 1849. — P. 116