ভীষ্মক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কৃষ্ণ এবং বিদর্ভরাজ ভীষ্মকের সাক্ষাৎ

হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ ও মহাকাব্য মহাভারত অনুযায়ী ভীষ্মক (দেবনাগরী:भीष्मक) ছিলেন বিদর্ভের রাজা এবং কৃষ্ণের প্রথমা পত্নী রুক্মিণীর পিতা৷[১]

ভীষ্মকের পুত্র রুক্মী ছিলেন রুক্মিণীর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা৷[২] তাঁর অন্য চার পুত্র হলেন রুক্মরথ, রুক্মবাহু, রুক্মকেশ ও রুক্মমালী৷

পূর্বজন্ম[সম্পাদনা]

একদা একজন শিব ঠাকুরের ভক্ত ও মন্দিরের পূজারী বাস করতেন৷ তিনি প্রত্যেকদিন নিয়ম করে শিবের পদ পূজা করতেন৷ নিজের নিত্যপূজা শেষ করে মন্দির পরিষ্কার করে ও মূলফটক বন্ধ করে শিবের কাছে নিবেদিত ভোগপ্রসাদ নিয়ে সেই পূজারী প্রত্যেকদিন মন্দিরের বাইরে থাকা অপেক্ষারত কুকুরটিকে সেই প্রসাদ খাওয়াতেন৷ কুকুর যেহেতু আনুগত্যের প্রতীক তাই কুকুরটি পূজারির দেওয়া প্রসাদ খেয়ে তিনি ঘরে পৌঁছানো পর্যন্ত তার সঙ্গ দিতো৷ বহুদিন এরকম চলার পর কুকুরটির প্রতি পূজারীর বিশেষ স্নেহ জন্মায়৷

এক অমাবস্যার রাতে পূজারীটির মন্দিরের কাজে দেরি হয় এবং কাজ করে তিনি দ্রুত গতিতেই প্রসাদ নিয়ে মন্দির থেকে বেরিয়ে যান৷ এমতাবস্থায় ভুলবশত পূজারির পা কুকুরের গায়ে আঘাত করে৷ কুকুরে প্রতিবর্ত্মক্রিয়ার দরুন অমাবস্যার অন্ধকারে কোনোকিছু বোঝায় আগেই কুকুরটি পুরোহিতকে আঘাত করে বসে৷ পরে কৃতকার্যের কথা উপলব্ধি করে কুকুরটি লজ্জিত হয় এবং স্বেচ্ছায় দীর্ঘদিন না খেয়ে মন্দির সমূখেই প্রাণত্যাগ করে৷ বেশ কিছু বছর পর কুকুরটির স্মৃতিতে পূজারীও মারা যান৷ পরের জন্মে এই পূজারীই শিবভক্তি ও শ্রদ্ধার কারণে বিদর্ভ রাজ্যের রাজা ভীষ্মক রূপে জন্মলাভ করেন৷[৩]

রুক্মিণীর শিবপাদপূজা[সম্পাদনা]

রাজা ভীষ্মকের পাঁচ পুত্র ও এককন্যা ছিলো, তার মধ্যে রুক্মী ছিলো জ্যেষ্ঠপুত্র৷[৪] সূর্যদেব বিবস্বান পূর্বজন্মের কথা মাথায় রেখে রাজা ভীষ্মকের সাথে সাক্ষাৎ করতে এক ঋষির রূপ ধরে মর্তে অবতরণ করেন৷ রাজা ভীষ্মকও পূর্বজন্মের মতোই ঋষিকে দেখে বেশ আপ্লুত হন এবং সাদরে ঋষিকে স্বাগত জানান৷ রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেলে রাজকন্যা রুক্মিণী ঋষির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করলে ঋষি তাঁকে শিবের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য শিবপাদপূজা করার পরামর্শ দেন৷ রুক্মিণী ঋষির কথা মতো শিবের জন্য মালা গেঁথে গন্ধচন্দন সহযোগে শিবের নিত্যপূজা শুরু করেন৷ পূজায় তুষ্ট হয়ে শিব তাঁকে বিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের সাথে বিবাহ হওয়ার বর দেন৷ রাজা ভীষ্মক এই প্রস্তাবে সম্মতি দিলেও রুক্মী বাঁধ সাধেন, কারণ রাজনৈতিক কারণে তিনি রুক্মিণীর বিবাহ দিতে চান চেদীরাজ শিশুপালের সাথে৷[৫] এখনো শিবের আশীর্বাদধন্য হতে বহু নারী শিব মন্দিরে শিবপাদপূজা করে থাকেন৷

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Who is the father of Rukmini in Mahabharata"Hindu Forum (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-১১ 
  2. Tree, Speaking (২০১৪-১০-০৮)। "THE STORY OF KRISHNA RUKMINI MARRIAGE"Speaking Tree (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-১১ 
  3. http://www.khapre.in/ancestry/showsource.php?sourceID=S65&tree=Hinduism&sitever=standard[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "The King of Vidarbha, Maharaja Bhismaka, was very qualified and devoted. He had five sons and only one daughter. The first son was known as Rukmi - Vaniquotes"vaniquotes.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-১১ 
  5. "King Bhismaka of Vidarbha wanted to offer Krsna his daughter, Rukmini, but Rukmi, the eldest of his five sons, objected. Therefore Bhismaka withdrew his decision and decided to offer Rukmini to the King of Cedi, Sisupala, who was a cousin of Krsna's - Vaniquotes"vaniquotes.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-১১