শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: জনগণের উদ্দ্যেশ্যে নিয়োজিত কোন শিক্ষা প্রদান ও শিক্ষণ কেন্দ্র, সংস্থা বা কর্পোরেশন।
সাধারণ স্তর
[সম্পাদনা]- প্রাথমিক বিদ্যালয়- প্রথম, অষ্টম স্তরের বিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী)।
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়- প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের অন্তর্বর্তী বিদ্যালয়, সাধারণ ভাবে নবম ও দশম স্তর (পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী)।
- উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা উচ্চ বিদ্যালয়- মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী বিদ্যালয়, সাধারণ ভাবে একাদশ ও দ্বাদশ স্তর (পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী)।
- মহাবিদ্যালয় বা কলেজ- উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যার শিক্ষা ব্যবস্থা ডিগ্রি প্রদানের জন্য তৈরী। সাধারণত সেই প্রতিষ্ঠান কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকে।
- বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউনিভার্সিটি- উচ্চ শিক্ষা প্রদান ও গবেষণার ব্যবস্থা সম্পন্ন কোন প্রতিষ্ঠান যেখানে, বিভিন্ন বিষয় ও সমস্ত স্তরের ডিগ্রি প্রদানের ব্যবস্থা থাকে।[১]
- কোচিং সেন্টার - এটি একটি ইংরেজি শব্দ হলেও বাংলা ভাষায় এর বহুল প্রচলন রয়েছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে পাঠ গ্রহণের পাশাপাশি অধিক জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যে এ সকল প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থাকে। গ্রামের তুলনায় শহরেই কোচিং সেন্টারের উপস্হিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়। বলা বাহুল্য যে, কোচিং সেন্টারগুলোর সবগুলোই বেসরকারি অর্থায়নে গড়ে উঠে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি এসকল প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্যও বিশেষ শিক্ষা প্রদান করা হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ
[সম্পাদনা]শিক্ষা পরিচালিত হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে-নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব সর্বাধিক। সামাজিক ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব পালনের প্রধান হলেন শিক্ষক। দেশ ও সমাজের উন্নয়নে শিক্ষকের অবদান সর্বাগ্রে। দেশের উপযুক্ত নাগরিক দেশের সম্পদ। এই মানব সম্পদ বিকাশে শিক্ষকরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন এক মিলন ক্ষেত্র। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ে বলেছেন, "It is where young and old, the teacher and the student sit at the same table to partake of their daily food and the food of their eternal life". শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রবীন্দ্রনাথ খাবার টেবিলের সাথে তুলনা করেছেন। এখানে নবীন ও প্রবীণ শিক্ষক এবং ছাত্র একই টেবিলে বসে খায় প্রতিদিনের খাদ্য গ্রহণের জন্য তথা জ্ঞান আহরণের জন্য। তারা অনাদি ও অনন্ত জীবনের জন্যই খাদ্য গ্রহণ করে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু শিক্ষাদানের কেন্দ্র নয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়কেই সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। যে দায়িত্ব বিদ্যালয় বা অন্য শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান পালন করে তা নিম্নরূপ।
• দেশ ও সমাজের যা ভালো তাকে সুরক্ষা ও সংরক্ষণ করা বিদ্যালয়ের দায়িত্ব।
• শিক্ষার্থী যাতে সামাজিক ভাবে উপযুক্ত হয়, অতীত অভিজ্ঞতা, সংরক্ষিত অভিজ্ঞতা যাতে ঠিক মতো সঞ্চালিত হয় তার কাজ বিদ্যালয় করে।
• সভ্যতার অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নে সাহায্য করা।
• শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক গুণাবলীর সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করা।
• প্রাকৃতিক, কৃত্রিম, সামাজিক পরিবেশে উপযুক্ত অভিযোজনে সাহায্য করা। এছাড়া চিন্তাধারা ও মানসিকতার সমন্বয়সাধন করাও গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
• শিক্ষার্থীর অবাঞ্ছিত আচরণ, কুঅভ্যাস অনেকাংশে সংশোধন করার দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
• শুধুমাত্র শিক্ষামূলক নির্দেশনা নয়, যে কোন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী যাতে সমাজের উপযুক্ত সদস্য হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, ব্যক্তিগত সফলতা আনতে পারে, সে জন্য পথ নির্দেশ অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয় করে থাকে।
• সাক্ষরতা প্রসারে বিদ্যালয়ের গুরুত্ব বিরাট। নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর বাইরেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যৌথ প্রয়াসে নিরক্ষর মানুষ যাতে সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হন তাতে সাহায্য করা। সমাজের কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস দূর করে বিজ্ঞানসম্মত অগ্রগতিতে সাহায্য করা।
• 'জনসংখ্যা শিক্ষায় সাহায্য করাও বিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো, উন্নত জীবনমান প্রবর্তন এবং প্রাকৃতিক, কৃত্রিম পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্যকরা অন্যতম দায়িত্ব।
ব্যক্তি ও সমাজের উন্নয়নের এই গুরু দায়িত্বের গুরু শিক্ষককূল। শিক্ষক সমাজই বর্তমান ও ভবিষ্যতের রূপকার।[২]