ফের্দিনঁ ব্যুইসোঁ
ফের্দিনঁ এদুয়ার ব্যুইসোঁ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ | (বয়স ৯০)
জাতীয়তা | ফরাসি |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
পরিচিতির কারণ | ১৯২৭ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার |
ফের্দিনঁ এদুয়ার ব্যুইসোঁ (ফরাসি: Ferdinand Édouard Buisson; ২০শে ডিসেম্বর, ১৮৪১ - ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২) একজন ফরাসি বামপন্থী সমাজতন্ত্রবাদী রাজনীতিবিদ, শান্তিকর্মী ও শিক্ষাবিদ। ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার লিগ সংস্থাটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি স্মরণীয়। তিনি ১৯১৪ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির প্রধান ছিলেন। এর আগে ১৯০২ থেকে ১৯০৬ পর্যন্ত তিনি শিক্ষা লিগের সভাপতি ছিলেন। তাঁর আমলে ১ম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ব্যুইসোঁ যুদ্ধের পরে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে রফা করে শান্তিরক্ষা করার চেষ্টা করে সফল হয়েছিলেন, যে কারণে জার্মান শান্তিবাদী লুডভিগ কভিডে-র সাথে তাঁকে যৌথভাবে ১৯২৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্যারিসে জন্মগ্রহণকারী ব্যুইসোঁর কর্মজীবনের প্রারম্ভ ছিল সমস্যাসংকুল। তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনে পড়াশোনা করেন। কিন্তু সম্রাট ৩য় নাপোলেওঁ-র কাছে আনুগত্যের শপথ নিতে প্রত্যাখ্যান করার কারণে তিনি ফ্রান্সে কোথাও চাকরি পাননি। পরে তিনি সুইজারল্যন্ডে অধ্যাপনা করে এবং ১৮৬৭ সালে জেনেভাতে অবস্থিত প্রথম শান্তি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন ও সেখানে ইউরোপীয় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বলেন।
৩য় নাপোলেওঁর পরাজয়ের পরে ফ্রান্সে ফিরে ব্যুইসোঁ প্যারিসের সরকারি বিদ্যালয়গুলির মহাপরিদর্শক পদে আসীন হন এবং ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার পক্ষে ওকালতি করা শুরু করেন। লিগ দ্য লঁসেইনমঁ অর্থাৎ শিক্ষা লিগের মাধ্যমে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার জন্য লড়াই করেন। তিনি ফরাসি ভাষায় "লাইসিতে" (laïcité অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা) শব্দটির প্রবর্তক। ১৮৭৯ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ফ্রান্সের প্রাথমিক শিক্ষার জাতীয় পরিচালক হিসেবে ব্যবস্থাটির ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে গির্জার নিয়ন্ত্রণ থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা বিনামূল্য ও বাধ্যতামূলক করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষায়তনে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি প্যারিসের সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৯৬ থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত শিক্ষা বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। এরপর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে দুইবার নির্বাচিত হন (১৯০২-১৯১৪ এবং ১৯১৯-১৯২৩)। ১৯০৫ সালে তিনি গির্জা ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ বাস্তবায়ন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। ব্যুইসোঁ ছিলেন একগুঁয়ে শান্তিবাদী। তিনি প্রথমে ভের্সাই চুক্তির সমালোচনা করলেও পরবর্তীতে চুক্তিতে প্রস্তাবিক সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ব্যাপারে সমর্থন দেন, যাতে আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষার একটি ব্যবহারিক পদ্ধতি থাকে।
১ম বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্যুইসোঁ ফ্রান্স-জার্মানির মিটমাটের ব্যাপারে অবিচল ছিলেন। তিনি জার্মানিতে একটি বক্তৃতা সফরে গমন করেন এবং তাঁর নোবেল পুরস্কারে জেতা অর্থ বিভিন্ন শান্তিবাদী পদক্ষেপের সমর্থনে ব্যয় করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Ferdinand Buisson. nobelprize.org