মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম

স্থানাঙ্ক: ২৪°৫০′৫৫″ উত্তর ৮৯°২২′৩৫″ পূর্ব / ২৪.৮৪৮৪৯২° উত্তর ৮৯.৩৭৬৪২৭° পূর্ব / 24.848492; 89.376427
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(নওয়াব বাড়ী থেকে পুনর্নির্দেশিত)
মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম
মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়ামের চারপাশে খোদাইকৃত নবাবি মনোগ্রাম
মানচিত্র
স্থাপিত৩১ মে ১৯৯৮ (1998-05-31)
অবস্থাননওয়াব বাড়ি রোড, বগুড়া, রাজশাহী, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪°৫০′৫৫″ উত্তর ৮৯°২২′৩৫″ পূর্ব / ২৪.৮৪৮৪৯২° উত্তর ৮৯.৩৭৬৪২৭° পূর্ব / 24.848492; 89.376427
ধরনইতিহাস জাদুঘর
সংগ্রহ
  • প্রত্নতত্ত্ব
  • আলংকারিক এবং সমসাময়িক শিল্প
  • ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক ইতিহাস
  • নৃবিদ্যা
প্রতিষ্ঠাতামোহাম্মাদ আলী
মালিকজেলা প্রশাসন, বগুড়া

মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম (অর্থ: মোহাম্মদ আলী প্রাসাদ জাদুঘর) বগুড়ার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। দেশের উত্তর জনপদের কেন্দ্রস্থল বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র করতোয়া নদীর পশ্চিম তীর ঘেঁষে নবাব প্যালেসের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে এই মিউজিয়াম অ্যান্ড পার্ক। ২০১৬ সালের মে মাসে এটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর[১]

স্থাপনা সমূহ[সম্পাদনা]

জাদুঘরের প্রবেশ দ্বার

নওয়াব বাড়ীর বেশ কয়েকটি ভবন বগুড়া শহরে আছে। তন্মেধ্যে যে দ্বিতল ভবনে নওয়াব পরিবার থাকতেন, তাই এখন নওয়াব বাড়ি বলে পরিচিত। তবে এ ভবনের আশেপাশে একতালা ভবনও আছে দু-একটি। ছোট বড় মিলিয়ে মোট ভবন তিনটি। দ্বিতল ভবন একটি এবং একতালা ভবন দুইটি। দ্বিতল ভবনে ৮টি কক্ষ ৯টি দরজা। একই ভবনের নিচ তালায় ১৬টি কক্ষের ১৩ টি দরজা আছে। কারুভবনের ৪ টি কক্ষে ১১ টি দরজা আছে। এছাড়া অধ:স্তন কর্মচারীর জন্য ব্যবহৃত ৮টি ভবনেরও ৯ টি দরজা আছে। নওয়াব বাড়ীর গেট তিনটি। প্রথম গেট খোলা। দ্বিতীয় গেট লোহার তৈরী। তৃতীয় গেট কাঠের তৈরী। প্রধান গেটের উপর একটি ঘণ্টা ঝুলানো আছে। আরো আছে একটি সার্চ লাইট। গেটের দেওয়ালে নানা ধরনের কারুকাজ করা। বিশাল উঠোনজুড়ে ছোট বড় গাছ আছে ৭১ টি। যা বাসভবনের ছায়াদান সহ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছ। সমুদয় বাসভবনের জন্য ব্যবহৃকত জমির পরিমাণ ১১ একর। কোন কোন সূত্রে ৭.৫০ বলেও উল্লেখ পাওয়া যায়।[২]

অবস্থান[সম্পাদনা]

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ি বর্তমানে মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম। শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা রাস্তার মোড় থেকে যে পাকা সড়ক পূর্ব দিকে কোর্ট ভবনে গিয়ে নওয়াব বাড়ি রোডে যুক্ত হয়েছে সেই রাস্তার পূর্ব ধারেই নওয়াব বাড়ি অবস্থিত। পূর্বাধারে করতোয়া নদী ও দক্ষিণ দিকে কোর্ট কাঁচারী অবস্থিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী বগুড়ার প্রতিকৃতি

১৯৯৮ সালের মে মাসে বগুড়ার নবাব মোহাম্মাদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম অ্যান্ড অ্যামাউজমেন্ট পার্ক বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে। নবাব প্যালেসে প্রবেশ করলে দেখা যাবে তরুণী-কৃষাণী বধূরা অপেক্ষা করছে তার প্রেমিক কৃষাণের জন্য। নবাববাড়ির চারদিকে পাতাঝরা গাছে পাখি বসে আছে। কোনো কোনো গাছে পাখিরা ঠোকাঠুকি করছে। পুরনো প্যালেসটি বিশাল এক জাদুঘর। বিনোদন কেন্দ্র, জোড়া ঘোড়ার গাড়ি, কোচওয়ানদের হাতে চাবুক। বগুড়ার নবাববাড়ির অতীত দিনের নেপালি দারোয়ান, মালী, পালকি, বেহারা, কোচওয়ান, টমটম, সিংহ, বাঘ, কুমির, ময়ূর, রাজহাঁস, বিভিন্ন পাখির প্রতিমূর্তি সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। নবাববাড়ি বিরাট হলরুমের দেয়ালে নবাব সৈয়দ আবদুস সোবাহান চৌধুরী, নবাবজাদা সৈয়দ আলতাফ আলী চৌধুরী, তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মাদ আলী, সৈয়দা তহুরুন নেছা চৌধুরানী, সৈয়দা আলতাফুন নেছা চৌধুরানী।[৩] নবাব আমলের এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শিল্পী আমিনুল করিম দুলাল এগিয়ে আসেন। সৈয়দ ওমর আলী চৌধুরীর উদ্যোগে শিল্পী আমিনুল ইসলাম দুলাল তার সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে ইতিহাসের সূতিকাগার নবাববাড়িকে রক্ষা করেন এবং একে দর্শনীয় স্থানে রূপদানের চেষ্টা করেন। শিল্পী দুলালের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে সৈয়দ ওমর মশগুল, অতিথি আপ্যায়ন, বিলিয়ার্ড খেলা, পড়ার ঘরে বই সাজানো, জলসা ঘরে জলসার দৃশ্য, নায়েবের খাজনা আদায় এমন অনেক দৃশ্য জীবন্ত করে তোলার জন্য ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়।

কার্যক্রম[সম্পাদনা]

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। ৩০ টাকার টিকিট কিনে মূল গেট পার হতে হয়। এরপর ট্রেন, দোলনা, বিমানে চড়া এবং নবাববাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে টিকিট প্রয়োজন হয়। নবাব সৈয়দ আলতাফ আলী চৌধুরীর অবর্তমানে তার ছেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী[৪] সৈয়দ মোহাম্মদ আলী নবাববাড়ীর একমাত্র উত্তরাধিকার ছিলেন। পরবর্তীকালে তার তিন ছেলে সৈয়দ হাম্মদ আলী, সৈয়দ হামদে আলী ও সৈয়দ মাহমুদ আলী এবং মেয়ে সৈয়দা মাহমুদা আলী পিতার উত্তরাধিকার সূত্রে নবাব বাড়ির মালিক হন। বর্তমানে এই জাদুঘরের দেখাশোনা করেন সৈয়দ মোহাম্মাদ আলীর ছেলে সৈয়দ হামদে আলী চৌধুরী।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বগুড়া নওয়াব প্যালেসে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে বগুড়া সদর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  3. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  4. "Muhammad Ali Bogra becomes Prime Minister"। storyofpakistan.com। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]