বাবুর্চি (১৯৭২-এর চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাবুর্চি
বাবুর্চি চলচ্চিত্রের পোষ্টার
পরিচালকহৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়
প্রযোজকহৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়,
এন. সি. সিপ্পি,
রমু এন. সিপ্পি
রচয়িতাতপন সিংহ
শ্রেষ্ঠাংশেরাজেশ খান্না, জয়া ভাদুড়ি, ঊষা কিরণ, হরিন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, এ. কে. হঙ্গল, দুর্গা খোট, আরসানি, কালী ব্যানার্জি
সুরকারমদন মোহন
মুক্তি১৯৭২
দেশভারত
ভাষাহিন্দী

বাবুর্চি (দেবনাগরী : बावर्ची, অনুবাদ : পাচক) ১৯৭২ সালের একটি হিন্দি ভাষায় ভারতীয় চলচ্চিত্র এটি পরিচালনা করেছেন হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, এত অভিনয় করেছেন রাজেশ খান্নাজয়া বধুরী এবং পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসরানী, একে হঙ্গল, উষা কিরণ এবং দুর্গা খোতে। এটি তপন সিংহ পরিচালিত রবি ঘোষ অভিনীত বাংলা চলচ্চিত্র গল্প হলেও সত্যি (১৯৬৬) এর পুনঃনির্মাণ। চলচ্চিত্রটি ১৯৭২ সালের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী চলচ্চিত্রের তালিকায় আট নাম্বারে ছিল।[১]

মুখার্জীর স্টাইলটি এখানে একটি আদর্শ, কারণ ছবিটিতে কোনও হিংস্রতা নেই, ভারতীয় একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারের পারিবারিক সম্পার্কে উপর দৃষ্টি রেখে নির্মাণ করেছিলেন[২] এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাজেশ খান্না সেরা অভিনেতা (হিন্দি) দ্বিতীয় বিএফজেএ পুরস্কার লাভ করেন।

চলচ্চিত্র তপন সিনহার বাংলা চলচ্চিত্র গল্প হলেও সত্যি (১৯৬৬) এর পুনঃনির্মাণ।[৩] ছবিটি তামিল ভাষায় এম কে মুথুর সমলয়করন নামে, কন্নড় ভায়ায় দুইবার প্রথম সাকালা কালা ভাল্লাবা নামে এতে অভিনয় করেছিল শশীকুমার এবং দ্বিতীয় বার নং ৭৩, শান্তি নীবাস নামে সুদীপ পুনঃনির্মাণ করেন। ১৯৯৭ সালের হিন্দি ছবি নায়ক নং ১ এই সিনেমা থেকে অনুপ্রেরণীত ছিল।

সারসংক্ষেপ[সম্পাদনা]

গল্পটি কেন্দ্রবিন্দু শর্মা পরিবারকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে, তাদের পরিবারে প্রধান দাদুজি (হরিন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়), পরিবারের অসন্তুষ্টি এতটুকু ছড়িয়ে পড়ে যে কোনও ব্যক্তি তাদের বাড়িতে রান্না করার বাবুর্চি হিসাবে চাকরি করতে চান না।

তারপরে একদিন রঘু (রাজেশ খান্না) নামে এক যুবক রান্নার কাজ করার প্রস্তাব দেয়, এবং তাকে চাকুরি দেওয়া হয়। রঘু অবশ্য এই চ্যালেঞ্জে টিকি থাকে এবং শান্তি নিবাসের সভার মধ্যমণি হয়ে ওঠে। এমনকি তিনি অভ্যন্তরীণ মনোমালিন্য দূর করেন এবং পরিবারটিকে পুনরায় একত্রিত করেন। তবে রঘুর উদ্দেশ্য কি পরিষ্কার, নাকি তার চরিত্রের আরও কিছু আছে তার কৌতূহলজনক।

পটভূমি[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্রের শুরুটি শান্তির নিবাস এবং এর বাসিন্দাদের পরিচয় বর্ণনা দেন অমিতাভ বচ্চন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে শান্তি নিবাস একটি বিড়ম্বনার পাত্র: এর নামটির অর্থ "শান্তির বাড়ি" হলেও, এখানে কোনও শান্তি নেই। যে বাড়িতে শর্মা পরিবার রয়েছে, সেখানে অজানা কারণে একে অপরকে ঘৃণা করার সদস্য রয়েছে। এমনকি কোন চাকর এক মাসের বেশি সময় ধরে শর্মাদের বাগিতে টিকতে পারে পারে না।

প্রতি মাসে তাদের নতুন চাকরের সন্ধান করতে হয়। তারপর হঠাৎ রঘু নামে এক চাকর আসে। ধীরে ধীরে পুরো বাড়ির লোক টের পায় রঘু কেবল একজন দক্ষ শেফই নয়, বিশেষজ্ঞ গায়ক এবং নৃত্যশিল্পীও।

রঘু বলে বেড়ায় নামীদামী ব্যক্তিদের কাজ করেছেন, এবং তারা তাকে কিছু না কিছু শিখিয়েছিলেন। এমনকি পরিবারের অসন্তুষ্ট পিতৃ দাদুজিও রঘুর প্রতি সেহ্ন প্রকাশ পায়। পরিবার রঘুর উপর এতটা ভরসা রেখেছিল যে তারা তাদের পরিবারের লুকিয়ে রাখা রত্নভান্ডারের বাক্সের অবস্থান জানায়।

কৃষ্ণা (জয়া ভাদুড়ি) দাদুজীর মৃত পুত্র এবং পুত্রবধূর সচ্ছল মেয়ে। রঘু তাকে কাজে কর্মে প্রশিক্ষণ দেয় এবং তার প্রতিভা সামনে তুলে ধরে। দাদুজি ভাবে রঘু আসলে ঈশ্বরের প্রেরিত ত্রাণকর্তা। এদিকে, রঘু পুরো সময় জুয়েলার বাক্সে সন্দেহজনকভাবে নজর রাখে

এদিকে, রঘু জানতে পেরেছিল যে কৃষ্ণ একটি ছেলেকে পছন্দ করে তবে পরিবারের লোকজন তার সাথে কৃষ্ণের মিলনে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। ছেলেটিও কৃষ্ণকে ভালবাসে। সমস্ত জটলা মধ্যে, রঘু হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়। দাদুর বাক্সটি হারিয়ে গেছে জানতে পেরে তার বিস্মিত হয়।

তারা রঘুকে নিশ্চিত সন্দেহ করে কিন্তু যখন একটি ছেলে এস তাদের গহনা বাক্সটি দেখায় তখন তারা হতবাক হয়। ছেলেটি ব্যাখ্যা করে যে, সে বাক্সটি সহ রঘুকে সন্দেহজনক অবস্থায় দেখতে পায়। রঘুকে বাক্সটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, রঘু পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সে রঘুকে থামানোর চেষ্টা করেছিল, এমনকি তাকে মারধরও করেছিল (ছেলেটি কুস্তিগির) ছিল, তবে রঘু বাক্স রেখে পালিয়ে যায়।

বর্ণনা শুনে পরিবারের সবাই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে কৃষ্ণের সাথে তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। পরিবারের লোকজন যখন রঘুকে গালাগালি শুরু করে, কৃষ্ণ তাদের সত্য যা ঘটেছে তা তাদেরকে জানায়।

সে তাদের বলে যে রঘুর সাথে তার নিজের কুস্তির মাঠে দেখা হয়েছিল। রঘুর সাথে তার কিছুটা প্রীতি ম্যাচ হয়েছিল, সেখানে রঘুর কাছ থেকে তিনি সামান্য চোট পেয়েছিলেন। রঘু বাক্সটি দিয়ে বলেছিলেন যে বাক্সটি নিয়ে আসতে এবং তাদের জানাতে বলেছিলেন যে রঘু এটি চুরি করেছে যাতে কৃষ্ণের প্রেমিকার বাড়ির লোকদের মনে জায়গা নিতে পারে।

এদিকে, কৃষ্ণ রঘুকে ঘরের বাইরে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কেন তিনি এই সব করলেন? রঘু তাকে বলেছিলেন যে তাঁর আসল নাম অধ্যাপক প্রভাকর, কিন্তু তিনি রঘুর নকল নামটি নিয়েছিলেন। তিনি শর্মার মতো অনেক পরিবারকে দেখেছিলেন যা ভেঙে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং তাই এটাকে থামানোর জন্য তার জ্ঞানকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

রঘু তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে যদি সে বাক্সটি সম্পর্কে মিথ্যা বলে এবং তার এবং রঘুর মধ্যে যা ঘটেছিল, তবে সে কৃষ্ণকে বিয়ে করতে সক্ষম হবে। রঘু ছেলেটিকে গোপনীয়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু পরে রঘুর প্রতি অব্যবহারের আর রঘুর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেনি। হতবাক শর্মা পরিবার।শান্তি নিবাসের মতো বেশ কয়েকটি বাড়ি বাঁচাতে রঘু তার পথে বেরিয়ে গিয়েছিল।

রঘু তাকে বলে যে এটি তাঁর জীবনের লক্ষ্য এবং এখন তাকে যেতে হবে। তাঁর একটি নতুন গন্তব্যে ভ্রমণ করার একটি দৃশ্য এবং অমিতাভ বচ্চনের ধারাবিবরণী দিয়ে এই ছবিটির সমাপ্তি হয়েছিল যে "রঘু নতুন কোন বাড়িতে যাচ্ছেন। আসুন আশা করি এটি আপনার নয়।"

সিনেমাটি সুপারহিট হয়েছিল। এটি ঐ বছরের ৮ম সবচেয়ে বেশি আয় করা চলচ্চিত্র ছিল।[৪]

শ্রেষ্ঠাংশে[সম্পাদনা]

দল[সম্পাদনা]

সঙ্গীত[সম্পাদনা]

সকল গানের গীতিকার কাইফি আজমি; সকল গানের সুরকার মদন মোহন।

সঙ্গীত
নং.শিরোনামনেপথ্য শিল্পীদৈর্ঘ্য
১."বোল আই গায়া আদিয়ারা a"কিশোর কুমার, মান্না দে, র্নীমলা দেবী, হরিন্দ্রনাথ চট্টপাধ্যায়, লক্সমী শংকর৯:২৯
২."কাহে কানহা করাত বাজুরীi"লক্সমী শংকর৩:৫৩
৩."মাস্ত পাওয়ান দোলে রে"লতা মঙ্গেশকর৪:৫২
৪."মোর নেইনা বাহায়নে নীরr"লতা মঙ্গেশকর৫:০৩
৫."পেহেলে চোরী ফের সানাজোরী"কুমারী ফাইয়াজ৪:০৯
৬."তুম বিন জীবন"মান্না দে৫:৩৩

পুরস্কার[সম্পাদনা]

বছর মনোনয়ন / কাজ পুরস্কার ফলাফল
১৯৭৩ রাজেশ খান্না সোরা অভিনেতার বিএফজেএ আওয়ার্ড (হিন্দী) বিজয়ী
পেন্টাল ফিল্মফেয়ার সেরা কৌতুক অভিনেতা বিজয়ী

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. KOHLI, SURESH। "Bawarchi (1972)" 
  2. Rammesh, Human Cinema: The Films of Hrishikesh Mukherjee (Chennai: Notion Press, 2018), 141-43. আইএসবিএন ১৬৪৩২৪৯৫৫X and https://books.google.com/books?id=azlpDwAAQBAJ&pg=PT141
  3. Narayan, Hari। "The family as a microcosm of the nation" 
  4. Kohli, Suresh (১২ ডিসেম্বর ২০১৩)। "Bawarchi (1972)"The Hindu। ২৩ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]