ফাতিমা বিনতে খাত্তাব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
সংশোধন
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''ফাতিমা বিনতে খাত্তাব''' মুহাম্মাদ(সঃ) একজন সাহাবা ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনে খাত্তাবের]] বোন ও [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদ ইবনে যায়িদের]] স্ত্রী ছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অগ্রগামী ছিলেন।
'''ফাতিমা বিনতে খাত্তাব''' মুহাম্মাদ একজন সাহাবা ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনে খাত্তাবের]] বোন ও [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদ ইবনে যায়িদের]] স্ত্রী ছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অগ্রগামী ছিলেন।


== নাম ও বংশ পরিচয় ==
== নাম ও বংশ পরিচয় ==
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:


== ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত ==
== ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত ==
মক্কায় ইসলামের সূচনা পর্বেই মুহাম্মাদ(সঃ) [[আরকাম ইবনে আবিল আরকাম|আরকাম ইবনে আবিল আরকামে]]<nowiki/>র গৃহে অবস্থান গ্রহণের পূর্বে অল্প কয়েকজন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাইদ ইবনে যায়িদ]] অন্যতম ছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৮/২৬৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[নিসা‘মিন আসর আন-নুবুয়াহ-৪৬২]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> তারা দুইজন একসাথে ইসলাম গ্রহণ করেন। তবে কেও কেও বলেছেন ফাতিমা সাঈদের পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-ইসতীয়াব, আল-ইসাবার পার্শ্বটীকা-৪/৩৮৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> [[ইবনে হিশাম]] বলেন,মক্কায় প্রথম পর্বে ১৮ জন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] ও তার স্ত্রী ফাতিমা বিনতে খাত্তাব ছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সীরাত ইবন হিশাম-১/২৫২-২৫৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> ইসলাম গ্রহণের জন্য তার ভাই [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমরের]] দ্বারা ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] অত্যাচারের স্বীকার হন।
মক্কায় ইসলামের সূচনা পর্বেই মুহাম্মাদ [[আরকাম ইবনে আবিল আরকাম|আরকাম ইবনে আবিল আরকামে]]<nowiki/>র গৃহে অবস্থান গ্রহণের পূর্বে অল্প কয়েকজন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাইদ ইবনে যায়িদ]] অন্যতম ছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৮/২৬৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[নিসা‘মিন আসর আন-নুবুয়াহ-৪৬২]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> তারা দুইজন একসাথে ইসলাম গ্রহণ করেন। তবে কেও কেও বলেছেন ফাতিমা সাঈদের পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-ইসতীয়াব, আল-ইসাবার পার্শ্বটীকা-৪/৩৮৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> [[ইবনে হিশাম]] বলেন,মক্কায় প্রথম পর্বে ১৮ জন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] ও তার স্ত্রী ফাতিমা বিনতে খাত্তাব ছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সীরাত ইবন হিশাম-১/২৫২-২৫৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> ইসলাম গ্রহণের জন্য তার ভাই [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমরের]] দ্বারা ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] অত্যাচারের স্বীকার হন।


মুসলমানদের হিজরত করা শুরু হলেই ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] হিজরতকারীদের সাথে মক্কা থেকে মদিনায় চলে যান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-ইসতীয়াব-২/৫৫৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>
মুসলমানদের হিজরত করা শুরু হলেই ফাতিমা ও তার স্বামী [[সাঈদ ইবনে যায়িদ]] হিজরতকারীদের সাথে মক্কা থেকে মদিনায় চলে যান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-ইসতীয়াব-২/৫৫৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>


== জীবন বৃত্তান্ত ==
== জীবন বৃত্তান্ত ==
ইসলাম অভ্যুদয়ের আগেই ফাতিমার সঙ্গে [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদ ইবনে যায়িদের]] বিবাহ সম্পন্ন হয়। তার স্বামী [[আশারায়ে মুবাশশারা|আশারায়ে মুবাশশিরা]] সাহাবাদের অন্যতন সাহাবা,যিনি [[বদরের যুদ্ধ]]<nowiki/>সহ ইসলামের সকল অভিযানে মুহাম্মাদ(সা) সাথে অংশগ্রহণ করেন। এসকল প্রতিটি কাজে ফাতিমা বিনতে খাত্তাব উৎসাহ যুগিয়েছেন। তার স্বামী ৫১ হিজরিতে মদিনাতে ইন্তেকাল করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-আ‘লাম-৩/১৪৬]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সিয়ারু আ‘লাম আন-নুবালা-১/১২৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>
ইসলাম অভ্যুদয়ের আগেই ফাতিমার সঙ্গে [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদ ইবনে যায়িদের]] বিবাহ সম্পন্ন হয়। তার স্বামী [[আশারায়ে মুবাশশারা|আশারায়ে মুবাশশিরা]] সাহাবাদের অন্যতন সাহাবা,যিনি [[বদরের যুদ্ধ]]<nowiki/>সহ ইসলামের সকল অভিযানে মুহাম্মাদ সাথে অংশগ্রহণ করেন। এসকল প্রতিটি কাজে ফাতিমা বিনতে খাত্তাব উৎসাহ যুগিয়েছেন। তার স্বামী ৫১ হিজরিতে মদিনাতে ইন্তেকাল করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-আ‘লাম-৩/১৪৬]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সিয়ারু আ‘লাম আন-নুবালা-১/১২৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>
তাদের ৪ টি ছিলে ছিলো চার তারা হলেন :
তাদের ৪ টি ছিলে ছিলো চার তারা হলেন :
* আবদুল্লাহ,
* আবদুল্লাহ,
১৮ নং লাইন: ১৮ নং লাইন:


== উমরের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা ==
== উমরের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা ==
নির্ভরযোগ্য প্রাচীন সূত্রমতে, [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনে খাত্তাব]] রুক্ষ মেজাজ ও কঠোর স্বভাবের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সে ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুহাম্মাদ(সঃ) এর প্রতি চরম শত্রু ভাবাপন্ন ছিলো। একদিন কুরাইশদের ঘোষণা মাফিক পুরস্কারের জন্য মুহাম্মাদ(সা) হত্যার উদ্দেশ্যে বের হলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সীরাতু ইবন হিশাম-১/৩৪৩-৩৪৫]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> পথে '''[[নুয়াইম ইবনে আবদুল্লাহ]] আন নাহহামের''' মাধ্যমে জানতে পারলেন তার নিজের আপন বোনই ইসলাম গ্রহণ করেছে। এটা শুনে উমর অত্যন্ত রেগে গেলেন। নিজের গতিপথ পরিবর্তন করে ফাতিমা বিনতে খাত্তাবের বাড়িতে আসলেন। সেই সময় [[খাব্বাব ইবনুল আরাত|খাব্বাব ইবনে আরাত]] ফাতিমা ও [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদকে]] [[সূরা ত্বোয়া-হা]] শেখাচ্ছিলেন। উমরের আসা দেখে সে লুকিয়ে পরে। উমর রুমে প্রবেশ করে রাগান্বিত হয়ে তার ভগ্নিপতি সাঈদকে মারা শুরু করে। একসময় সাঈদের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে উমর নিজেই শান্ত হয়ে তাদের জিজ্ঞেস করে কি পড়ছিল ! তখন তারা উমরকে সুরা পাঠ করতে দিলেন। সুরা ত্বহার ১৪ নং আয়াত তাকে বিবেকে নাড়া দিলো। এরপরে উমর মুহাম্মাদ(সঃ) এর নিকট গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আয-যাহাবী, তারীখ-১/১৭৪-১৭৫]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আ‘লাম আন-নিসা-৪/৫০]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সিফাতুস সাফওয়া-১/২৬৯-২৭১]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[উসুদুল গাবা-৪/৫২-৫৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৩/২৬৭-২৬৮]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>
নির্ভরযোগ্য প্রাচীন সূত্রমতে, [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনে খাত্তাব]] রুক্ষ মেজাজ ও কঠোর স্বভাবের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সে ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুহাম্মাদ এর প্রতি চরম শত্রু ভাবাপন্ন ছিলো। একদিন কুরাইশদের ঘোষণা মাফিক পুরস্কারের জন্য মুহাম্মাদ হত্যার উদ্দেশ্যে বের হলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সীরাতু ইবন হিশাম-১/৩৪৩-৩৪৫]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> পথে '''[[নুয়াইম ইবনে আবদুল্লাহ]] আন নাহহামের''' মাধ্যমে জানতে পারলেন তার নিজের আপন বোনই ইসলাম গ্রহণ করেছে। এটা শুনে উমর অত্যন্ত রেগে গেলেন। নিজের গতিপথ পরিবর্তন করে ফাতিমা বিনতে খাত্তাবের বাড়িতে আসলেন। সেই সময় [[খাব্বাব ইবনুল আরাত|খাব্বাব ইবনে আরাত]] ফাতিমা ও [[সাঈদ ইবনে যায়িদ|সাঈদকে]] [[সূরা ত্বোয়া-হা]] শেখাচ্ছিলেন। উমরের আসা দেখে সে লুকিয়ে পরে। উমর রুমে প্রবেশ করে রাগান্বিত হয়ে তার ভগ্নিপতি সাঈদকে মারা শুরু করে। একসময় সাঈদের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে উমর নিজেই শান্ত হয়ে তাদের জিজ্ঞেস করে কি পড়ছিল ! তখন তারা উমরকে সুরা পাঠ করতে দিলেন। সুরা ত্বহার ১৪ নং আয়াত তাকে বিবেকে নাড়া দিলো। এরপরে উমর মুহাম্মাদ এর নিকট গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আয-যাহাবী, তারীখ-১/১৭৪-১৭৫]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আ‘লাম আন-নিসা-৪/৫০]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সিফাতুস সাফওয়া-১/২৬৯-২৭১]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[উসুদুল গাবা-৪/৫২-৫৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৩/২৬৭-২৬৮]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>
{{cquote|আমিই আল্লাহ! আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার ইবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। '''[http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/20:14 (সুরা ত্বহাঃ 14)]'''}}
{{cquote|আমিই আল্লাহ! আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার ইবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। '''[http://tanzil.net/#trans/bn.bengali/20:14 (সুরা ত্বহাঃ 14)]'''}}



০৮:৪৩, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ফাতিমা বিনতে খাত্তাব মুহাম্মাদ একজন সাহাবা ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনে খাত্তাবের বোন ও সাঈদ ইবনে যায়িদের স্ত্রী ছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অগ্রগামী ছিলেন।

নাম ও বংশ পরিচয়

ফাতিমা বিনতে খাত্তাবের ডাক নাম ছিলো উম্মে জামিল[১][২] ফাতিমা বিনতে খাত্তাবের পিতার নাম খাত্তাব ইবনে নুফাইল,যিনি মক্কার কুরাইশ গোত্রেআল-আদাবী শাখার সন্তান। ফাতিমার মাতার নাম হানতামা বিনতে হাশিম ইবনে আল-মুগীরা, যিনি কুরাইশ গোত্রের আল-মাখযুমী শাখার কন্যা।[৩][৪] ফাতিমা উমর ইবনে আল খাত্তাবের সহোদরা এবং সা‘ঈদ ইবনে যায়েদের সহধর্মিনী ছিলেন।

ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত

মক্কায় ইসলামের সূচনা পর্বেই মুহাম্মাদ আরকাম ইবনে আবিল আরকামের গৃহে অবস্থান গ্রহণের পূর্বে অল্প কয়েকজন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে ফাতিমা ও তার স্বামী সাইদ ইবনে যায়িদ অন্যতম ছিলেন।[৫][৬] তারা দুইজন একসাথে ইসলাম গ্রহণ করেন। তবে কেও কেও বলেছেন ফাতিমা সাঈদের পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন।[৭] ইবনে হিশাম বলেন,মক্কায় প্রথম পর্বে ১৮ জন ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে সাঈদ ইবনে যায়িদ ও তার স্ত্রী ফাতিমা বিনতে খাত্তাব ছিলেন।[৮] ইসলাম গ্রহণের জন্য তার ভাই উমরের দ্বারা ফাতিমা ও তার স্বামী সাঈদ ইবনে যায়িদ অত্যাচারের স্বীকার হন।

মুসলমানদের হিজরত করা শুরু হলেই ফাতিমা ও তার স্বামী সাঈদ ইবনে যায়িদ হিজরতকারীদের সাথে মক্কা থেকে মদিনায় চলে যান।[৯]

জীবন বৃত্তান্ত

ইসলাম অভ্যুদয়ের আগেই ফাতিমার সঙ্গে সাঈদ ইবনে যায়িদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। তার স্বামী আশারায়ে মুবাশশিরা সাহাবাদের অন্যতন সাহাবা,যিনি বদরের যুদ্ধসহ ইসলামের সকল অভিযানে মুহাম্মাদ সাথে অংশগ্রহণ করেন। এসকল প্রতিটি কাজে ফাতিমা বিনতে খাত্তাব উৎসাহ যুগিয়েছেন। তার স্বামী ৫১ হিজরিতে মদিনাতে ইন্তেকাল করেন।[১০][১১] তাদের ৪ টি ছিলে ছিলো চার তারা হলেন :

  • আবদুল্লাহ,
  • আবদুর রহমান,
  • আযইয়াদ ও
  • আসওয়াদ।[১২]

উমরের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা

নির্ভরযোগ্য প্রাচীন সূত্রমতে, উমর ইবনে খাত্তাব রুক্ষ মেজাজ ও কঠোর স্বভাবের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সে ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুহাম্মাদ এর প্রতি চরম শত্রু ভাবাপন্ন ছিলো। একদিন কুরাইশদের ঘোষণা মাফিক পুরস্কারের জন্য মুহাম্মাদ হত্যার উদ্দেশ্যে বের হলেন।[১৩] পথে নুয়াইম ইবনে আবদুল্লাহ আন নাহহামের মাধ্যমে জানতে পারলেন তার নিজের আপন বোনই ইসলাম গ্রহণ করেছে। এটা শুনে উমর অত্যন্ত রেগে গেলেন। নিজের গতিপথ পরিবর্তন করে ফাতিমা বিনতে খাত্তাবের বাড়িতে আসলেন। সেই সময় খাব্বাব ইবনে আরাত ফাতিমা ও সাঈদকে সূরা ত্বোয়া-হা শেখাচ্ছিলেন। উমরের আসা দেখে সে লুকিয়ে পরে। উমর রুমে প্রবেশ করে রাগান্বিত হয়ে তার ভগ্নিপতি সাঈদকে মারা শুরু করে। একসময় সাঈদের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে উমর নিজেই শান্ত হয়ে তাদের জিজ্ঞেস করে কি পড়ছিল ! তখন তারা উমরকে সুরা পাঠ করতে দিলেন। সুরা ত্বহার ১৪ নং আয়াত তাকে বিবেকে নাড়া দিলো। এরপরে উমর মুহাম্মাদ এর নিকট গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে।[১৪][১৫][১৬][১৭][১৮]

চারিত্রিক গুণাবলী

ফাতিমা ছিলেন একজন প্রখর বুদ্ধিমতী,স্বচ্ছ স্বভাব ও পরিচ্ছন্ন স্বভাবের মহিলা।[১৯] তিনি মদিনাতে মুসলিম নারীদের সাথে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের কাজ করতেন।[২০] আদ দুররুল মানসুর গ্রন্থ প্রণেতা বলেছেন, তিনি একজন সুসাহিত্যিক, বিদূষী, বুদ্ধিমতী মহিলা ছিলেন।

মৃত্যু

ফাতিমা বিনতে খাত্তাব তার ভাই উমরের খিলাফতকালে ইন্তেকাল করেন।

তথ্যসূত্র

  1. [আল-ইসতী‘য়াব-৪/৩৭০] 
  2. [উসুদুর গাবা-৫/৫১৯] 
  3. [ইবন সা‘দ, তাবাকাত-৮/২৬৭] 
  4. [আল-ইসাবা-৪/৩৭০] 
  5. [তাবাকাত-৮/২৬৭] 
  6. [নিসা‘মিন আসর আন-নুবুয়াহ-৪৬২] 
  7. [আল-ইসতীয়াব, আল-ইসাবার পার্শ্বটীকা-৪/৩৮৩] 
  8. [সীরাত ইবন হিশাম-১/২৫২-২৫৪] 
  9. [আল-ইসতীয়াব-২/৫৫৩] 
  10. [আল-আ‘লাম-৩/১৪৬] 
  11. [সিয়ারু আ‘লাম আন-নুবালা-১/১২৪] 
  12. [প্রাগুক্ত] 
  13. [সীরাতু ইবন হিশাম-১/৩৪৩-৩৪৫] 
  14. [আয-যাহাবী, তারীখ-১/১৭৪-১৭৫] 
  15. [আ‘লাম আন-নিসা-৪/৫০] 
  16. [সিফাতুস সাফওয়া-১/২৬৯-২৭১] 
  17. [উসুদুল গাবা-৪/৫২-৫৩] 
  18. [তাবাকাত-৩/২৬৭-২৬৮] 
  19. [আল ইসাবা-৪/৩৮১] 
  20. [আদ-দুররুল মানছুর-৩৬৪]