দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Bangali ind (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা |
|||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
'''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ''' ({{lang-en|World War II, Second World War, WWII, WW2}}) মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে [[এশিয়া|এশিয়ায়]] সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। তৎকালীন বিশ্বে সকল [[পরাশক্তি]] এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং দুইটি বিপরীত [[সামরিক জোট|সামরিক জোটের]] সৃষ্টি হয়; [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি|মিত্রশক্তি]] আর [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি|অক্ষশক্তি]]। এই মহাসমরকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে ধরা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুতএকটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করে। এছাড়া বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা, [[হলোকস্ট]] (হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা), পৃথিবীর ইতিহাসে [[হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণ|একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ]] প্রভৃতি ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম যুদ্ধ।<ref name="Sommerville 2008 5">{{Harvnb|Sommerville|2008|p=5}}.</ref> |
'''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ''' ({{lang-en|World War II, Second World War, WWII, WW2}}) মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে [[এশিয়া|এশিয়ায়]] সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। তৎকালীন বিশ্বে সকল [[পরাশক্তি]] এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং দুইটি বিপরীত [[সামরিক জোট|সামরিক জোটের]] সৃষ্টি হয়; [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি|মিত্রশক্তি]] আর [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি|অক্ষশক্তি]]। এই মহাসমরকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে ধরা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুতএকটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করে। এছাড়া বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা, [[হলোকস্ট]] (হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা), পৃথিবীর ইতিহাসে [[হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণ|একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ]] প্রভৃতি ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম যুদ্ধ।<ref name="Sommerville 2008 5">{{Harvnb|Sommerville|2008|p=5}}.</ref> |
||
[[পূর্ব এশিয়া|পূর্ব এশিয়ায়]] একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে [[ |
[[পূর্ব এশিয়া|পূর্ব এশিয়ায়]] একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে [[জাপান]] ইতোমধ্যেই ১৯৩৭ সালে [[প্রজাতন্ত্রী চীন (১৯১২-১৯৪৯)|প্রজাতন্ত্রী চীনে]] [[দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ|আক্রমণ]] করে।<ref>{{Cite book|first1=David P|last1=Barrett|last2=Shyu|title=China in the anti-Japanese War, 1937–1945: politics, culture and society. Volume 1 of Studies in modern Chinese history|publisher=Peter Lang|location=New York|year=2001|isbn=0-8204-4556-8|page=6|first2=Lawrence N|unused_data=first2-Lawrence N}}</ref> পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর [[নাৎসি জার্মানি|জার্মানি]] [[পোল্যান্ড আক্রমণ]] করে এবং তার ফলশ্রুতিতে [[ফ্রান্স]] ও [[যুক্তরাজ্য]] জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ঘটনাটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে গণ্য করা হয়। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪১ পর্যন্ত একনাগাড়ে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা আর চুক্তি সম্পাদনার মাধ্যমে জার্মানি [[ইতালি|ইতালির]] সাথে একটি মিত্রজোট গঠন করে এবং ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল নিজের দখলে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হয়। [[Molotov–Ribbentrop Pact|মলোটভ- রিবেনট্রপ চুক্তি]] অনুসারে জার্মানি আর [[সোভিয়েত ইউনিয়ন]] তাদের দখলিকৃত [[পোল্যান্ড]], [[ফিনল্যান্ড]] ও [[বাল্টিক রাষ্ট্র|বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ]] নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। এই সময় শুধু যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য [[কমনওয়েলথ অফ নেশনস|ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত]] দেশসমূহ অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছিল (যেমন 'উত্তর আফ্ৰিকার যুদ্ধসমূহ’ আর বহুদিন ধরে চলা ‘[[আটলান্টিকের যুদ্ধ]]’)। ১৯৪১ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় অক্ষশক্তি [[অপারেশন বার্বারোসা|সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ]] করে যার ফলশ্রুতিতে সমর ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রণাঙ্গনের অবতারণা ঘটে। এই আক্রমণ অক্ষশক্তির সামরিক বাহিনীর একটা বড় অংশকে মূল যুদ্ধ থেকে আলাদা করে রাখে। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে জাপান অক্ষশক্তিতে যোগদান করে এবং [[প্রশান্ত মহাসাগর|প্রশান্ত মহাসাগরে]] অবস্থিত [[পার্ল হারবার আক্রমণ|যুক্তরাষ্ট্র]] ও ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো আক্রমণ করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে পশ্চিম প্ৰশান্ত মহাসাগরের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করতে সক্ষম হয়। |
||
[[১৯৪১]] সালের [[ডিসেম্বর ৭|৭ ডিসেম্বর]] [[যুক্তরাষ্ট্র]] মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেয়। মূলত জার্মানি এবং [[জাপান]] দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে। অপরদিকে [[চীন|চীনের]] সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা; [[১৯৩০]] সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে [[দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ]] চলছিল। এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে। [[১৯৪৫]] সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। |
[[১৯৪১]] সালের [[ডিসেম্বর ৭|৭ ডিসেম্বর]] [[যুক্তরাষ্ট্র]] মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেয়। মূলত জার্মানি এবং [[জাপান]] দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে। অপরদিকে [[চীন|চীনের]] সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা; [[১৯৩০]] সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে [[দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ]] চলছিল। এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে। [[১৯৪৫]] সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। |
১৬:২০, ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (ইংরেজি: World War II, Second World War, WWII, WW2) মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে এশিয়ায় সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। তৎকালীন বিশ্বে সকল পরাশক্তি এবং বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং দুইটি বিপরীত সামরিক জোটের সৃষ্টি হয়; মিত্রশক্তি আর অক্ষশক্তি। এই মহাসমরকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধ বলে ধরা হয়, যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুতএকটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সামরিক ও বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করে। এছাড়া বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা, হলোকস্ট (হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা), পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ প্রভৃতি ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম যুদ্ধ।[১]
পূর্ব এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে জাপান ইতোমধ্যেই ১৯৩৭ সালে প্রজাতন্ত্রী চীনে আক্রমণ করে।[২] পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ঘটনাটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে গণ্য করা হয়। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪১ পর্যন্ত একনাগাড়ে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা আর চুক্তি সম্পাদনার মাধ্যমে জার্মানি ইতালির সাথে একটি মিত্রজোট গঠন করে এবং ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল নিজের দখলে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হয়। মলোটভ- রিবেনট্রপ চুক্তি অনুসারে জার্মানি আর সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের দখলিকৃত পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। এই সময় শুধু যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহ অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছিল (যেমন 'উত্তর আফ্ৰিকার যুদ্ধসমূহ’ আর বহুদিন ধরে চলা ‘আটলান্টিকের যুদ্ধ’)। ১৯৪১ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় অক্ষশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে যার ফলশ্রুতিতে সমর ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রণাঙ্গনের অবতারণা ঘটে। এই আক্রমণ অক্ষশক্তির সামরিক বাহিনীর একটা বড় অংশকে মূল যুদ্ধ থেকে আলাদা করে রাখে। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে জাপান অক্ষশক্তিতে যোগদান করে এবং প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো আক্রমণ করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে পশ্চিম প্ৰশান্ত মহাসাগরের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করতে সক্ষম হয়।
১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেয়। মূলত জার্মানি এবং জাপান দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে। অপরদিকে চীনের সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা; ১৯৩০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ চলছিল। এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে। ১৯৪৫ সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
এই যুদ্ধে নব্য আবিষ্কৃত অনেক প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ ছিল পারমাণবিক অস্ত্রের। মহাযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই এই মারণাস্ত্র উদ্ভাবিত হয় এবং এর ধ্বংসলীলার মধ্য দিয়েই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। সকল পুণর্গঠন কাজ বাদ দিলে কেবল ১৯৪৫ সালেই মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই যুদ্ধের পরপরই সমগ্র ইউরোপ দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়; এক অংশ হয় পশ্চিম ইউরোপ আর অন্য অংশে অন্তর্ভুক্ত হয় সোভিয়েত রাশিয়া। পরবর্তীতে এই রাশিয়ান ইউনিয়নই ভেঙে অনেকগুলো ছোট ছোট রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহের সমন্বয়ে গঠিত হয় ন্যাটো আর সমগ্র ইউরোপের দেশসমূহের সীমান্তরেখা নির্ধারিত হতে শুরু করে। ওয়ারস প্যাক্টের মাঝে অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহ নিয়ে দানা বেঁধে উঠে স্নায়ুযুদ্ধ। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বমঞ্চে অভিনব এক নাটকের অবতারণা করে।
কারণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। কিন্তু তবে এ নিয়ে একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যা অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য। এই কারণটি যুদ্ধোত্তর সময়ে মিত্রশক্তির দেশসমূহের মধ্যে তোষণ নীতির মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায় যা নির্দেশক শক্তির ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি এবং জাপানের আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদকে দায়ী করে এই কারণটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে যার বিস্তারিত এখানে উল্লেখিত হচ্ছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি তার সম্পদ, সম্মান এবং ক্ষমতার প্রায় সবটুকুই হারিয়ে বসে। এর সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাধারার মূল কারণ ছিল জার্মানির হৃত অর্থনৈতিক, সামরিক এবং ভূমিকেন্দ্রিক সম্পদ পুণরুদ্ধার করা এবং পুণরায় একটি বিশ্বশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। এর পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের সম্পদসমৃদ্ধ ভূমি নিয়ন্ত্রণে আনাও একটি উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করেছে। জার্মানির একটি জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর সম্পাদিত ভার্সাই চুক্তি হতে বেরিয়ে আসার। এরই প্রেক্ষাপটে হিটলার এবং তার নাজি বাহিনীর ধারণা ছিল যে একটি জাতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে সংগঠিত করা সম্ভব হবে।
যুদ্ধ শুরু
পোল্যান্ড যুদ্ধ
নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণএর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিষ্ক্রিয় রাখার জন্য জার্মানী অনাক্রমণ চুক্তি করে। অন্যদিকে ব্রিটেন ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের সাথে সহায়তা চুক্তি করে। ১৯৩৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড অভিযান শুরু হল। ৩রা সেপ্টেম্বর মিত্রবাহিনী জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল এবং শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
প্রথম দিনই জার্মান ঝটিকা বাহিনী পোল্যান্ডকে ছিন্নবিছিন্ন করে দিল। ফরাসি ও ব্রিটিশ বাহিনী সাহায্য করবার সুযোগ পেল না। এটি পশ্চিমের বিশ্বাসভঙ্গতা হিসেবে পরিচিত। ১৭ই সেপ্টেম্বর গোপন সমঝোতা অনুসারে সোভিয়েত বাহিনীও আক্রমণে যোগ দিল। পরদিনই পোলিশ কর্তাব্যক্তিরা দেশ ছাড়লেন। ওয়ারস পতন হলো ২৭শে সেপ্টেম্বর। শেষ সেনাদল কক্ দূর্গে যুদ্ধ করে ৬ই অক্টোবর পর্যন্ত।
সোভিয়েত-ফিনল্যান্ড যুদ্ধ
জার্মানী বনাম মিত্রপক্ষীয় যুদ্ধ চলাকালীন সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে শীতকালীন যুদ্ধের সূচনা করল। এর আগেই লিথুনিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ায় সোভিয়েত সৈন্য প্রবেশ করে ক্ষতিপূরণসহ একটি অনুরূপ প্রস্তাবে ফিনল্যান্ড রাজী না হওয়ায় ৩০শে নভেম্বর ১৯৩৯ সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করল। ফিন লোকবল খুবই কম হলেও তাদের দেশরক্ষার ইচ্ছা ছিল অনেক বেশী। স্তালিন একটি নিজস্ব ঝটিকা যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্ত প্রতিটি ফ্রন্টে তার বাহিনী প্রতিহত হয়। ১৪ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে বহিষ্কার করা হলো।
নতুন বছরের ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে সোভিয়েত বিমান, ট্যাঙ্ক ও স্লেজবাহিত সেনাবাহিনী একযোগে ফিনদের প্রতিরক্ষা রেখায় আক্রমণ চালানো শুরু করে। ১৫ দিন পর অবশেষে তারা একটি ফাঁক তৈরি করতে পারল। ফলে যুদ্ধের ভাগ্য পরিষ্কার হয়ে গেল। ৬ই মার্চ ১৯৪০ ফিনল্যান্ড শান্তির জন্য আবেদন করল। সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের আগের দাবী অনুযায়ী লেলিনগ্র্রাদের কাছাকাছি বেশকিছু এলাকার মালিকানা ছেড়ে দিতে হয় ফিনল্যান্ডকে। এ যুদ্ধে ২ লক্ষ ফিন সৈন্যের মধ্যে ৭০ হাজার সৈন্য মারা যায়। যুদ্ধ থেকে স্তালিনের সেনাদল গুরুত্বপূর্ণ সামরিক শিক্ষা লাভ করলো। অন্যদিকে সোভিয়েত শক্তি সম্পর্কে হিটলারের ভ্রান্ত নিম্ন-ধারণা তৈরি হয়-যা পরবর্তীতে জার্মানীর রাশিয়া আক্রমণে প্রভাব ফেলে।
নরওয়ে ও ডেনমার্ক
নরওয়ে বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তার ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য। সুইডেনের কিরুনা খনি থেকে গরমকালে বাল্টিক সাগর দিয়ে এবং শীতকালে নরওয়ের বরফমুক্ত নারভিক বন্দর ও নরওয়ের রেলপথ দিয়ে লোহা চালান যেত জার্মানীতে। প্রথমে হিটলার নরওয়েকে নিরপেক্ষ থাকতে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওদিকে মিত্রপক্ষ নারভিকের ঠিক বাইরের সমুদ্রে মাইন পেতে রাখার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনাটি ফাঁস হয়ে গেলে হিটলার ফ্রান্স আক্রমণের ইচ্ছা স্থগিত রেখে নরওয়ে অভিযানের নির্দেশ দিল।১৯৪০ সালের ৯ই এপ্রিল একই সাথে নরওয়ে ও ডেনমার্কে আগ্রাসন শুরু হল সুইডেনের সাথে যোগাযোগের সুবিধার্থে ।
একদিকে নারভিকসহ গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলি দখল করে নিল জার্মান বাহিনী। অন্যদিকে বিমানবন্দরগুলিতে অবতরণ করলো প্যারাশ্যুট বাহিনী। এরপর বিমানবন্দর দখল করে সেখান থেকে অতর্কিতে শহরে প্রবেশ করলো জার্মান সেনা। ডেনমার্ক বিনাবাধায় আত্মসমর্পণ করলেও নরওয়ে লড়াই করতে লাগলো। ১৪ই এপ্রিল মিত্রবাহিনী নামলো নরওয়েতে। কিন্ত মে মাসেই পিছু হটলো তারা। নারভিকে জার্মানরা পাঁচগুণ বেশি শত্রুর সাথে লড়াই চালিযে যাচ্ছিল ২৭শে মে পর্যন্ত। কিন্ত ততদিনে ফ্রান্সের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় মিত্রসৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে হল নরওয়ে থেকে। নরওয়ে বাহিনী আত্মসমর্পণ করলো এবং রাজা সপ্তম হাকোন ব্রিটেনে আশ্রয় নিলেন। জার্মানীর জন্য নরওয়ে আর্কটিক সাগর এবং ব্রিটেনের নিকটবর্তী একটি দরকারী নৌ ও বিমান ঘাঁটি হিসেবে কাজে দিল।
ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ
১০ই মে ১৯৪০ একসাথে চারটি দেশ আক্রমণ করে জার্মানী। ফরাসিরা ভেবেছিল আক্রমণ আসবে ফ্রান্স জার্মানী সীমান্তের রণরেখা ম্যাগিনোট লাইনের ওপর। অথবা বেলজিয়ামের ভিতর দিয়ে আরদেন হয়ে। তারা ভেবেছিল জার্মানীর প্যানজার বাহিনী আরদেনের জঙ্গল ভেদ করে আসতে পারবে না। ১৪ই মে নেদারল্যান্ডের পতন ঘটলো। ১৪ই মে আরদেন থেকে জার্মান বাহিনী বেরিয়ে এসে দিশেহারা মিত্র সেনাদের ছিন্নবিছিন্ন করে প্রবল বেগে এগোতে থাকল। ডানকার্ক বন্দর দিয়ে তড়িঘড়ি ফরাসি ও ব্রিটিশ অভিযানবাহিনীর সেনা পশ্চাদপসরণ শুরু হলো। ২৬শে মে থেকে ৪ঠা জুন ইতিহাসের বৃহত্তম সেনা অপসারণের কাজ শেষ হলো। তবে ফেলে আসতে হলো বেশীরভাগ যন্ত্রাদি। এরমাঝে ২৭শে মে বেলজিয়ামের পতন হলো।
১০ই জুন ইতালিও যুদ্ধ ঘোষণা করল। তবে তারা আক্রমণ শুরু করে ২০শে জুন থেকে। ফরাসি সরকার প্রথমে তুর ও পরে বোর্দোতে সরে গেল। ১৪ই জুন প্যারিসের পতন ঘটল। ১৬ই জুন প্রধানমন্ত্রী রেনো পদত্যাগ করলেন ও তার বদলে এলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নায়ক পেত্যাঁ। ২২শে জুন জার্মান-ফরাসি এবং ২৪শে জুন জার্মান-ইতালীয় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ফ্রান্সের বেশিরভাগ এলাকা জার্মানী নিয়ে নেয়। অল্প কিছু জায়গা জুড়ে পেঁত্যা একটি নিরপেক্ষ কিন্তু জার্মানীর প্রভাবাধীন সরকার গঠন করেন। এটি ভিশি ফ্রান্স নামে পরিচিত হয়।
বাল্টিক অঞ্চল
পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের জন্য রুমানিয়ার প্লোইস্তি তেলের খনি হিটলারের প্রয়োজন ছিল। ১৯৪০ সালে জার্মানী-রুমানিয়া তেল-অস্ত্র চুক্তি হল। হাঙ্গেরি ও রুমানিয়ার মতবিরোধ ঘটায় জার্মানী মধ্যস্থতা করে। রুমানিয়ার জনগণ এতে আন্দোলন শুরু করায় রাজা ২য় ক্যারল ছেলে মাইকেলের কাছে মুকুট হস্তান্তর করলেন ও সেনাপ্রধান আন্তনেস্কু জার্মান সেনা আহ্বান করলেন। ১২ই অক্টোবর ১৯৪০ বুখারেস্টে জার্মান সৈন্য অবতরণ করে। এতে কুটনৈতিক ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিরক্ত মুসোলিনি ২৮শে অক্টোবর, ১৯৪০ খ্রীষ্টাব্দে আলবেনিয়া থেকে গ্রীস আক্রমণ করলেন। কিন্তু গ্রীকরা যে শুধু প্রতিহত করল তাই না, উল্টো ডিসেম্বরের মধ্যে আলবেনিয়ার এক-তৃতীয়াংশ দখল করে ফেলল। উপরন্তু ক্রীটে ব্রিটিশ সৈন্য নামল। তুরস্কও সৈন্যসমাবেশ করে রাখল। আপাত-নিরপেক্ষ বুলগেরিয়া এবং যুগোস্লাভিয়াও বেঁকে বসল।
হিটলার দ্রুত হাঙ্গেরি, রুমানিয়া ও স্লোভাকিয়াকে অক্ষচুক্তিতে টেনে নিল। বুলগেরিয়ায় জার্মান সৈন্য নামল ২রা মার্চ। যুগোস্লাভিয়ার যুবরাজ পল অক্ষে যোগ দিলেন ২৭শে মার্চ। দু'দিন পর জেনারেল সিমোভিচের নেতৃত্বে রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটে এবং সিংহাসনে আরোহন করেন ১৭ বছর বয়সী রাজা ২য় পিটার। রাষ্ট্রীয় নীতিরও পরিবর্তন ঘটে। ৬ই এপ্রিল একই দিনে আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ এবং বুলগেরিয়া ও অস্ট্রিয়া দিয়ে সৈন্য পাঠিয়ে জার্মানী গ্রিস ও যুগোস্লাভিয়া আক্রমণ করল। ১৭ই এপ্রিল যুগোস্লাভিয়া ও ২২শে এপ্রিল গ্রিস আত্মসমর্পণ করে। এরপর ক্রীট দখল করা হয়। যুগোস্লাভিয়াকে খন্ড-বিখন্ড করে অক্ষশক্তিরা ভাগ করে নেয়। তবে পুরো যুদ্ধ জুড়ে দ্রজা হিমাজলোচির নেতৃত্বে সেন্টিক দল এবং জোসেফ টিটো'র নেতৃত্বে কমিউনিস্ট দল গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে যায়।
উত্তর আফ্রিকা
প্রধান নিবন্ধসমূহ
শরণার্থী সমস্যা
সংঘর্ষ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে এ সময়ে অগণিতসংখ্যক লোক শরণার্থী হয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে একমাত্র ইউরোপেই ৪০ মিলিয়নেরও অধিক লোক শরণার্থী ছিল।[৩] ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি জাতিসংঘ ত্রাণ ও পুণর্বাসন প্রশাসন (ইউএনআরআরএ) গঠন করে। যার প্রধান কাজ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দেশসহ ইউরোপ ও চীন থেকে আগত শরণার্থীদেরকে সহায়তা করা। তাদের নিয়ন্ত্রণে ও প্রত্যক্ষ সহায়তায় ৭ মিলিয়ন লোক নিজ বাসভূমিতে ফিরে যায়। কিন্তু উদ্বাস্তু এক মিলিয়ন লোক মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ মাসে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন জার্মান বেসামরিক নাগরিক পূর্ব প্রুশিয়া, পোমারানিয়া এবং সিলেসিয়া রাজ্য থেকে রেড আর্মির প্রচণ্ড আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ম্যাকলেনবার্গ, ব্রান্ডেনবার্গ এবং স্যাক্সনিতে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেয়।
পটসড্যাম সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মিত্রশক্তি অনুমোদন না করায় যুগোস্লাভিয়া এবং রোমানিয়ায় অবস্থানরত হাজার হাজার জাতিগত জার্মানদেরকে সোভিয়েত ইউনিয়নে দাস শ্রমের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। বিশ্বের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশী শরণার্থী স্থানান্তর প্রক্রিয়া। ১৫ মিলিয়ন জার্মানদের সবাই এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এছাড়াও, দুই মিলিয়নেরও অধিক জার্মান বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বিতাড়িত হয়ে প্রাণ হারান।[৪][৫][৬][৭][৮]
আরও দেখুন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘটনাপঞ্জি
টীকা
- ↑ ১৯৩৯ সালে মলোটভ-রিবেনট্রপ চুক্তি অনুসারে সোভিয়েত ইউনিয়ন জার্মানির সাথে একত্রে পোল্যান্ড আক্রমণ করে। ১৯৩৯-৪০-এর শীতে দেশটি আবারো নিরপেক্ষ ফিনল্যান্ড দখল করে নেয়। ঘটনা দুইটির কোনটিই তৎকালীন বিশ্বনেতৃত্বে কোনরকম সাড়া ফেলতে পারে নি।
- ↑ ১৯৩৭ সাল থেকেই চীন ও জাপান একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল।
- ↑ ১৯৪০ এর জুন মাসে ফ্রান্সের পতন হলে সমগ্র ফ্রান্স দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; একদিকে ভিশি সরকার (যেটা কাগজপত্রে নিজেদের একটি নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে ঘোষণা করে) ও অন্যদিকে "মুক্ত ফ্রান্স" (যা অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যায়)। মিত্রশক্তি মুক্ত ফ্রান্স সরকারকে আইনগত স্বীকৃতি দেয় এবং স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করে।
- ↑ ১৯৩৯ সালের মার্চ মাসে জার্মান শক্তির হাতে চেকোস্লোভাকিয়ার পতন হয়। ১৯৪১ সালে লন্ডনে চেকোস্লোভাক প্রবাসী সরকার গঠিত হয় এবং যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি লাভ করে। যুক্তরাজ্যের রণসজ্জায় এই সরকার সেনাসহায়তা প্রদান করে।
- ↑ ১৯৩৬ সালে ইতালি ইথিওপিয়া দখল করে। ১৯৪১ সালে মিত্রবাহিনীর সহায়তায় দেশটি মুক্ত হয় এবং এর সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
- ↑ ১৯৪০ সালের এপ্রিল মাসে জার্মানি ডেনমার্ক দখল করে। তৎকালীন ডেনমার্ক সরকারকে জার্মানীর আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করা হয় এবং ১৯৪৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকে।
- ↑ ১৯৩৭ সাল থেকেই চীন ও জাপান একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল।
- ↑ ১৯৪৩-এর সেপ্টেম্বরে ইতালি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সাক্ষর করে এবং সেই চুক্তি অনুসারে রাজকীয় সরকার মিত্রশক্তির পক্ষে লড়াই করা শুরু করে। তবে উত্তরে প্রতিষ্ঠিত প্রজাতন্ত্র সরকার অক্ষশক্তির পক্ষে যুদ্ধ করা চালিয়ে যায়।
তথ্যসূত্র
- ↑ Sommerville 2008, পৃ. 5.
- ↑ Barrett, David P; Shyu, Lawrence N (২০০১)। China in the anti-Japanese War, 1937–1945: politics, culture and society. Volume 1 of Studies in modern Chinese history। New York: Peter Lang। পৃষ্ঠা 6। আইএসবিএন 0-8204-4556-8। অজানা প্যারামিটার
|unused_data=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "Refugees: Save Us! Save Us!"। Time। ৯ জুলাই ১৯৭৯।
- ↑ Statistisches Bundesamt, Die Deutschen Vertreibungsverluste। Wiesbaden। ১৯৫৮।
- ↑ Forced Resettlement", "Population, Expulsion and Transfer", "Repatriation"। Encyclopaedia of Public International Law (Volumes 1–5 সংস্করণ)। Amsterdam: North Holland Publishers। ১৯৯৩–২০০৩।
- ↑ Norman Naimark (১৯৯৫)। The Russians in Germany। Harvard University Press।
- ↑ Alfred de Zayas (১৯৭৭)। Nemesis at Potsdam। London and Boston: Routledge।
- ↑ Alfred de Zayas (২০০৬)। A Terrible Revenge। Palgrave/Macmillan।
গ্রন্থপঞ্জি
- Sommerville, Donald (২০০৮)। The Complete Illustrated History of World War Two: An Authoritative Account of the Deadliest Conflict in Human History with Analysis of Decisive Encounters and Landmark Engagements। Leicester: Lorenz Books। আইএসবিএন 978-0-7548-1898-4। templatestyles stripmarker in
|last=
at position 1 (সাহায্য); templatestyles stripmarker in|first=
at position 1 (সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
- West Point Maps of the European War
- West Point Maps of the Asian-Pacific War
- Radio News From 1938 to 1945
- World War II Propaganda Leaflet Archive
- The Art of War Online Exhibition at the UK National Archive
- Deutsche Welle special section on World War II created by a German public broadcaster on both the war and the world 60 years after.
এই নিবন্ধটি বাংলায় অনুবাদ করা প্রয়োজন। এই নিবন্ধটি বাংলা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় লেখা হয়েছে। নিবন্ধটি যদি ঐ নির্দিষ্ট ভাষা ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়ে থাকে তবে, অনুগ্রহ করে নিবন্ধটি ঐ নির্দিষ্ট ভাষার উইকিপিডিয়াতে তৈরি করুন। অন্যান্য ভাষার উইকিপিডিয়ার তালিকা দেখুন এখানে। এই নিবন্ধটি পড়ার জন্য আপনি গুগল অনুবাদ ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম দ্বারা অনুবাদকৃত লেখা উইকিপিডিয়াতে সংযোজন করবেন না, কারণ সাধারণত এই সরঞ্জামগুলোর অনুবাদ মানসম্পন্ন হয় না। |
এই নিবন্ধটি অন্য একটি ভাষা থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
- অনুবাদের পর নিরীক্ষণ জরুরি নিবন্ধসমূহ
- ১৯৩৯-এ সৃষ্ট সংঘর্ষ
- বিশ্বযুদ্ধ
- যুদ্ধ
- পারমাণবিক যুদ্ধ
- বৈশ্বিক সংঘর্ষ
- সমসাময়িক জার্মান ইতিহাস
- সমসাময়িক ফরাসী ইতিহাস
- সমসাময়িক ইতালীর ইতিহাস
- ব্রিটিশ ভারতের যুদ্ধে অংশগ্রহণ
- সোভিয়েত ইউনিয়ন ও সোভিয়েত রাশিয়ার ইতিহাস
- যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস (১৯১৮-১৯৪৫)
- আধুনিক ইউরোপ
- আধুনিক ইতিহাস
- বিশ্বব্যাপী সংঘাত