ভুটান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
TjBot (আলোচনা | অবদান)
r2.7.2) (বট যোগ করছে: zea:Bhutan
Rubinbot (আলোচনা | অবদান)
r2.5.4) (বট যোগ করছে: pa:ਭੂਟਾਨ
২৩৬ নং লাইন: ২৩৬ নং লাইন:
[[or:ଭୁଟାନ]]
[[or:ଭୁଟାନ]]
[[os:Бутан (паддзахад)]]
[[os:Бутан (паддзахад)]]
[[pa:ਭੂਟਾਨ]]
[[pam:Butan]]
[[pam:Butan]]
[[pih:Buuten]]
[[pih:Buuten]]

০৮:৩১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ভুটান সম্রাজ্য

འབྲུག་ རྒྱལ་ཁབ་
Brug Rgyal-khab
Dru Gäkhap
ভুটানের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় সঙ্গীত: ভূটানী ভাষায়: Druk tsendhen
(অনুবাদ: "বাজ ড্রাগন রাজ্য")
ভুটানের অবস্থান
রাজধানীথিম্পু
সরকারি ভাষাঝোংঘা, ইংরেজি
সরকারসাংবিধানিক রাজতন্ত্র
জিগমে ওয়াংচুক
কান্‌ধু ওয়াংচুক
গঠন 
সপ্তদশ ধতাব্দীর প্রথম দিকে
• ওয়াংচুক রাজবংশ
ডিসেম্বর ১৭ ১৯০৭
• পানি (%)
নগণ্য
জনসংখ্যা
• ২০০৯ আনুমানিক
৬৯৭,০০০[১]
জিডিপি (পিপিপি)২০০৯ আনুমানিক
• মোট
$৩.৮৪৬ বিলিয়ন[২]
• মাথাপিছু
$৫,৭৯২[২]
মানব উন্নয়ন সূচক (২০০৭)বৃদ্ধি ০.৬১৯[৩]
ত্রুটি: মানব উন্নয়ন সূচক-এর মান অকার্যকর · ১৩২তম
মুদ্রাগুলট্রাম (BTN)
সময় অঞ্চলইউটিসি+৬:০০ (BTT)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+৬:০০ (পর্যবেক্ষণ করা হয়নি)
কলিং কোড৯৭৫
আইএসও ৩১৬৬ কোডBT
ইন্টারনেট টিএলডি.bt

ভূটান (ইংরেজি: Bhutan ইংরেজি উচ্চারণ: /buːˈtɑːn/ (অসমর্থিত টেমপ্লেট)) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাজতন্ত্র। দেশটি ভারতীয় উপমহাদেশে হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটানের উত্তরে চীনের তিব্বত অঞ্চল, এবং দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারত। ভূটান শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ "ভূ-উত্থান" থেকে যার অর্থ "উঁচু ভূমি"। ভূটান সার্কের (SARRC) একটি সদস্য রাষ্ট্র। ভুটানের রাজধানীর নাম থিম্পু

অতীতে ভুটান পাহাড়ের উপত্যকায় অবস্থিত অনেকগুলি আলাদা আলাদা রাজ্য ছিল। ১৬শ শতকে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে এর আবির্ভাব ঘটে। ১৯০৭ সাল থেকে ওয়াংচুক বংশ দেশটি শাসন করে আসছেন। ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত ভূটান একটি বিচ্ছিন্ন দেশ ছিল। ১৯৬০-এর দশকে ভারতের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য নিয়ে দেশটি একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। তবে এখনও এটি বিশ্বের সবচেয়ে অনুন্নত দেশগুলির একটি। ভুটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা জংকা ভাষায় দ্রুক ইয়ুল বা বজ্র ড্রাগনের দেশ নামে ডাকে।

নামকরণ

ভুটানের নাম এসেছে সংস্কৃত শব্দ "ভূ-উত্থান" (উচ্চভূমি) হতে। অন্য মতে, ভুটান এসেছে ভোটস-আন্ত, অর্থাৎ "তিব্বতের শেষ সীমানা" হতে, যেহেতু ভুটান তিব্বতের ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত।

ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন সময়ে ভুটান বিভিন্ন নামে খ্যাত ছিলো। যেমন, লো মন (দক্ষিণের অন্ধকারাচ্ছন্ন রাজ্য), লো সেন্দেঞ্জং (সেন্দেন সাইপ্রেস বৃক্ষমন্ডিত দক্ষিণের রাজ্য), লোমেন খাঝি (দক্ষিণের রাজ্য যাতে চারটি প্রবেশ পথ রয়েছে), ও লো মেন জং (দক্ষিণের রাজ্য যেখানে ওষধি বৃক্ষ পাওয়া যায়। [৪]

ইতিহাস

ভুটানের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে সেখানে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনীর চেয়ে বেশি সুস্পষ্ট কিছু জানা যায় না। এখানে হয়ত খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দেও বসতি ছিল, তবে ৯ম শতকে এখানে তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের প্রচলনের পরেই এলাকাটির সম্পর্কে আরও জানা যায়। সেসময় বহু তিব্বতি বৌদ্ধ ভিক্ষু পালিয়ে ভুটানে চলে আসেন। ১২শ শতকে এখানে দ্রুকপা কাগিউপা নামের বৌদ্ধধর্মের একটি ধারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটিই বর্তমানে ভুটানের বৌদ্ধধর্মের প্রধান রূপ। ভুটানের বৌদ্ধ মন্দির ও ধর্মশিক্ষালয় দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসের উপর সবসময় প্রভাব ফেলেছে।

১৬১৬ সালে নগাওয়ানা নামগিয়াল নামের এক তিব্বতি লামা তিনবার ভুটানের উপর তিব্বতের আক্রমণ প্রতিহত করলে ভুটান এলাকাটি একটি সংঘবদ্ধ দেশে পরিণত হতে শুরু করে। নামগিয়াল বিরোধী ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলিকে পদানত করেন, একটি ব্যাপক ও সুক্ষ্ম বিবরণসমৃদ্ধ আইন ব্যবস্থা প্রচলন করেন এবং একটি ধর্মীয় ও সিভিল প্রশাসনের উপর নিজেকে একনায়ক বা শাবদ্রুং হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর অন্তর্কোন্দল ও গৃহযুদ্ধের কারণে পরবর্তী ২০০ বছর শাবদ্রুঙের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে। ১৮৮৫ সালে উগিয়েন ওয়াংচুক শক্ত হাতে ক্ষমতা প্রয়োগে সক্ষম হন এবং ভারতের ব্রিটিশ প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন।

১৯০৭ সালে উগিয়েন ওয়াংচুক ভুটানের রাজা নির্বাচিত হন এবং ঐ বছর ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার উপাধি ছিল দ্রুক গিয়ালপো বা ড্রাগন রাজা। ১৯১০ সালে রাজা উগিয়েন ও ব্রিটিশ শক্তি পুনাখার চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ব্রিটিশ ভারত ভুটানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। উগিয়েন ওয়াংচুক ১৯২৬ সালে মারা গেলে তার পুত্র জিগমে ওয়াংচুক পরবর্তী শাসক হন। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পর ভুটানকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে গণ্য করে। ১৯৪৯ সালে ভুটান ও ভারত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ভুটান ভারতের কাছ থেকে বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারে পথনির্দেশনা নেবার ব্যাপারে সম্মত হয় এবং পরিবর্তে ভারত ভুটানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ১৯৫২ সালে জিগমে ওয়াংচুকের ছেলে জিগমে দর্জি ওয়াংচুক ক্ষমতায় আসেন। তাঁর আমলে ভুটান পরিকল্পিত উন্নয়নের পথে এগোতে থাকে এবং ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়। তাঁর সময়েই ভুটানে একটি জাতীয় সংসদ, নতুন আইন ব্যবস্থা, রাজকীয় ভুটানি সেনাবাহিনী এবং একটি উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৯৭২ সালে ১৬ বছর বয়সে জিগমে সিঙিয়ে ওয়াংচুক ক্ষমতায় আসেন। তিনি আধুনিক শিক্ষা, সরকারের বিকেন্দ্রীকরণ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, পর্যটন এবং পল্লী উন্নয়নের মত ব্যাপারগুলির উপর জোর দেন। তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি জনগণের সামগ্রিক সুখের একজন প্রবক্তা; উন্নয়ন সম্পর্কে তাঁর দর্শন কিছুটা ভিন্ন এবং এই ভিন্নতার কারণে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিত পেয়েছেন। তার আমলে ধীরে ধীরে ভুটান গণতন্ত্রায়নের পথে এগোতে থাকে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি রাজার পদ ছেড়ে দেন এবং তাঁর ছেলে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ভুটানের রাজা হন। ২০০৮ সালের ১৮ই জুলাই ভুটানের সংসদ একটি নতুন সংবিধান গ্রহণ করে। এই ঐতিহাসিক দিন থেকে ভুটানে পরম রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে এবং ভুটান একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্রে পরিণত হয়।

রাজনীতি

ভুটান হল একটি রাজতন্ত্র বিশিষ্ট দেশ। এখানে বরতমানে রাজতন্ত্র বিদ্যমান। ভুটানে অতীতে একটি পরম রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। ভুটানের রাজা, যার উপাধি ড্রাগন রাজা, হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। মন্ত্রীদের একটি কাউন্সিল রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনা করে। সরকার ও জাতীয় সংসদ উভয়ের হাতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ন্যস্ত। এছাড়াও যে খেনপো উপাধিবিশিষ্ট দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা রাজার সবচেয়ে কাছের পরামর্শদাতার একজন। ২০০৭ সালে একটি রাজকীয় আদেশবলে রাজনৈতিক দল নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়। বর্তমান সংবিধানে দেশটিতে একটি দুই-দলবিশিষ্ট গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক বর্তমানে ভুটানের রাজা।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

ভূগোল

ভুটানের মানচিত্র (২০১০ সাল অনুযায়ী)

ভুটানের আয়তন ৪৬,৫০০ বর্গকিলোমিটার। থিম্পু এর রাজধানী শহর এবং এটি দেশের মধ্য-পশ্চিম অংশে অবস্থিত। অন্যান্য শহরের পারো, ফোয়েন্ত্‌শোলিং, পুনাখা ও বুমথং উল্লেখযোগ্য। ভুটানের ভূপ্রকৃতি পর্বতময়। উত্তরে সুউচ্চ হিমালয় পর্বতমালা, মধ্য ও দক্ষিণভাগে নিচু পাহাড় ও মালভূমি এবং দক্ষিণ প্রান্তসীমায় সামান্য কিছু সাভানা তৃণভূমি ও সমভূমি আছে। মধ্যভাগের মালভূমির মধ্যকার উপত্যকাগুলিতেই বেশির ভাগ লোকের বাস। ভুটানের জলবায়ু উত্তরে আল্পীয়, মধ্যে নাতিশীতোষ্ণ এবং দক্ষিণে উপক্রান্তীয়; জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। স্থলবেষ্টিত দেশ ভুটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি সুইজারল্যান্ডের সদৃশ বলে দেশটিকে অনেক সময় এশিয়ার সুইজারল্যান্ড ডাকা হয়।

বহির্বিশ্ব থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ভুটান প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অভয়ারণ্য। এখানে বহু হাজার দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। ভুটানের প্রায় ৭০% এলাকা অরণ্যাবৃত।

অর্থনীতি

ভূটানের রাষ্ট্রীয় মুদ্রা গুলট্রাম এবং এর বিনিময় হার ভারতীয় রুপীর সাথে সম্পর্কিত । ভূটানের অর্থনীতি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র অর্থনীতিগুলির একটি। এটি মূলত কৃষি ও বনজ সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি। ভুটানের জনসংখ্যার প্রায় ৬০% এই দুই ধরনের পেশায় জড়িত।

জনসংখ্যা

ওয়াংদি ফোদ্রাং উৎসবে জাতীয় পোষাকে ভুটানিরা

ভুটানের অধিবাসীরা ভুটানি নামে পরিচিত। ২০০৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভুটানে ৬,৭২,৪২৫ জনের বাস। প্রতি বছর জনসংখ্যা ২% হারে বাড়ছে। জনঘনত্ব প্রতিবর্গকিলোমিটারে ৪৫ জন। ভুটানে দ্রুপকা জাতির লোক প্রায় ৫০%। এর পরেই আছে নেপালি (৩৫%) এবং অন্যান্য আদিবাসী বা অভিবাসী জাতি। দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ লোক লামাবাদী বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী। বাকীরা ভারত ও নেপালি ধারার হিন্দু ধর্ম পালন করে। জোংখা ভুটানের সরকারী ভাষা। এছাড়া বুমথাং-খা, শারচোপ-খা ও নেপালি ভাষা প্রচলিত। ইংরেজি ভাষাতে শিক্ষা দেওয়া হয়। ভুটানের সাক্ষরতার হার প্রায় ৬০%। জনগণের প্রায় ৯৪% শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত। বেকারত্বের হার ৩.১% (২০০৫ সালের প্রাক্কলন)।জংখা ভাষা বা ভুটানি ভাষা ভুটানের সরকারী ভাষা। এছাড়াও এখানে আরও প্রায় ১০টি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে বহু লক্ষাধিক বক্তাবিশিষ্ট নেপালি ভাষা অন্যতম। আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

সংস্কৃতি

ভুটানের বাসিন্দারা মূলত বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিষয়ক জনসংখ্যা বিভাগের দপ্তর (২০০৯). "পৃথিবী জনসংখ্যা উন্নতির, টেবিল এ.১" (.PDF). ২০০৮ পরিমার্জিত. জাতিসংঘ. Retrieved on ২০০৯-০৩-১২.
  2. "Bhutan"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০১ 
  3. "মানুষ উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০০৯। মানুষ উন্নয়ন সূচক প্রবণতা: টেবিল জি" (পিডিএফ)। জাতিসংঘ। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০৫ 
  4. www.loc.gov

বহিঃসংযোগ


টেমপ্লেট:Link FA