তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সোয়ার্জশিল্ড ওয়ার্মহোলের কাল্পনিক দৃশ্য। ওয়ার্মহোল অদ্যাবধি পর্যবেক্ষণ করা না গেলেও এদের অস্তিত্ব গাণিতিক মডেল এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মাধ্যমে প্রমাণ করা হয়েছে।

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান পদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা যা পার্থিব বস্তু এবং সিস্টেমের গাণিতিক মডেলতত্ত্বীয় ধারণাকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান প্রাকৃতিক ঘটনার ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎদ্বাণী করে থাকে। এই শাখা পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞান থেকে ভিন্নতর, যেখানে এইসব ঘটনা প্রমাণের লক্ষ্যে পরীক্ষামূলক যন্ত্রের প্রয়োজন পড়ে।

বিজ্ঞানের উন্নতি মূলত পরীক্ষামূলক এবং তাত্ত্বিক — দুইপ্রকার বিজ্ঞানের সমন্বয়ের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান গাণিতিক প্রমাণের উপর অনেক বেশি জোর দিয়ে থাকে, আর পরীক্ষামূলক কিংবা পর্যবেক্ষণের উপর কম গুরুত্ব দেয়।[ক] উদাহরণস্বরূপ, আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব উন্নয়নের সময় আলবার্ট আইনস্টাইন লরেঞ্জ রূপান্তর নিয়ে চিন্তিত ছিলেন (যা কিনা ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণকে অপরিবর্তিত অবস্থায় রাখে); কিন্তু লুমিনিফেরাস ইথারের সাপেক্ষে পৃথিবীর বেগ নিয়ে মাইকেলসন-মর্লি পরীক্ষা নিয়ে কম চিন্তিত ছিলেন। পরবর্তীতে আইনস্টাইন আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া ব্যাখ্যার জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, যার মূল ভিত্তি ছিল পরীক্ষামূলক ফলাফল, শুধুমাত্র তাত্ত্বিক গঠন নয়।[১]

বিবরণ[সম্পাদনা]

পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে তত্ত্ব হল কোনো পার্থিব ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত মডেল। পর্যবেক্ষণের সাথে এই তাত্ত্বিক ধারণার কতটা সঙ্গতি রয়েছে তা বিচারের মাধ্যমে এর যৌক্তিকতা যাচাই করা হয়। নতুন পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করার সক্ষমতার উপরও একটি তত্ত্বকে বিচার করা হয়। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র আর গাণিতিক সূত্রের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যদিও উভয়ই কিছু নির্দিষ্ট স্বতঃসিদ্ধ মেনে চলে, গাণিতিক সূত্র কোনো পরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে পাওয়া যুক্তির উপর গড়ে ওঠে না।[২][৩] পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব একইভাবে গাণিতিক তত্ত্ব থেকে ভিন্নতর। এখানে "তত্ত্ব" শব্দটি গাণিতিক পরিভাষায় অন্য অর্থ লাভ করেছে।.[খ]