পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ

পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ, ১৪ ই জানুয়ারী, ১৭৬১,হাফিজ রহমত খান, আহমেদ শাহ আবদালি এর ডানদিকে দাঁড়িয়ে , যাকে বাদামী ঘোড়ায় বসা দেখানো হয়েছে।
তারিখ১৪ জানুয়ারি ১৭৬১
অবস্থান২৯°২৩′ উত্তর ৭৬°৫৮′ পূর্ব / ২৯.৩৯° উত্তর ৭৬.৯৭° পূর্ব / 29.39; 76.97
ফলাফল দুরানির জয়[১]
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
মারাঠারা পানিপথের উপর প্রভাব এবং দিল্লি সহ পানিপথের দক্ষিণে ডুরানিদের কাছে হেরে যায়। আহমাদ শাহ দুরানি যুদ্ধের পরপরই দিল্লি খালি করে দেন।
বিবাদমান পক্ষ

দুরানী সাম্রাজ্য

সমর্থিত:
মারাঠা সাম্রাজ্য
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী

আহমাদ শাহ দুরানি
ফার্সি কর্মকর্তা
তিমুর শাহ দুরানি
ওয়াজির ওয়ালি খান[১]
শাহ পাসান্দ খান[১]
বারখুরদার খান[২]
ওয়াজিরউল্লাহ খান[২]
রোহিলা অফিসার
শুজা-উদ দৌলা[৩]
নাজিব-উদ দৌলা[৪]
আমির বেগ[২]
জাহান খান[১]
জাইন খান সিরহিন্দী
মুরাদ খান[২]
সুজা কুলি খান
হাফিজ রহমত খান[১]
দুন্দি খান[১]
বঙ্গস খান[১]
নাসির খান বালুচ[২]

আহমাদ খান বাঙ্গাশ[২]

সদাশিব রাও ভাউ (মারাঠা সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি) 
বিশ্বাসরাও ভট্ট 
মালহাররাও হোলকার
মাহাদজি শিন্ডে
ইব্রাহিম খান গার্দি 
জানকোজি শিন্ডে যু. বন্দী
শমশের বাহাদুর  আহত অবস্থায় মৃত
দামাজি গায়কোয়াড়
যশবন্ত রাও পাওয়ার  
শ্রী আরভান্দেকর

সিদোজি ঘার্গে
শক্তি
৪১,৮০০ আফগান অশ্বারোহী[৫]

৩২০০০রোহিলা পদাতিক যার মধ্যে ২৮০০০ নিয়মিত অশ্বারোহী ছিল [৫]

৫০০০০ মারাঠা অশ্বারোহী যার মধ্যে ১১০০০ নিয়মিত অশ্বারোহী ছিল[৫]
৯০০০ গার্ডি পদাতিক[৫]

এই বাহিনীর সাথে ছিল২০০,০০০ অ-যোদ্ধা (তীর্থযাত্রী এবং শিবির অনুসারী).[৬]
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
১৫,০০০ রোহিলারা নিহত এবং ৫০০০ আফগান।[৫]

যুদ্ধে ৩০০০০ নিহত[৫]

পিছু হটানোর সময় ১০,০০০ নিহত ।[৫]

১০,০০০ নিখোঁজ।[৫]

১১,০০০ ভয়ে জর্জরিত সেনারা গোয়ালিয়র দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিল[৫]
যুদ্ধের পরে আরও ৪০০০০-৭০০০০ অ-যোদ্ধার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।[৭][৮]

পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ ১৪ই জানুয়ারি ১৭৬১ সালে দিল্লির ৯৭ কিলোমিটার উত্তরে পানিপথ নামক স্থানে মারাঠাদের সাথে দোয়াবের আফগান রোহিলা ও আয়ুব এর সম্রাট সুজা-উদ-দৌল্লার যৌথ সমর্থনে আফগানিস্থানের সম্রাট আহমেদ শাহ আবদালির মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধটি মারাঠা অশ্বারোহী ও গোলন্দাজ বাহিনীর সাথে আবদালি এবং নাজিব-উদ-দৌলাহের নেতৃত্বে আফগান ও রোহিলাদের (যারা উভয় জাতিগত আফগান) অশ্বারোহী ও পর্বতারোহী গোলন্দাজ বাহিনীর মধ্যে ভয়ঙ্কর রুপে সংঘটিত হয়। যুদ্ধটি ১৮ শতকের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে বিবেচিত হয়। এবং মৃত্যুর সংখ্যা ধরলে সম্ভবত দুটি বাহিনী মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধে একটি একক দিনে মৃত্যুর বৃহত্তম সংখ্যা।

যুদ্ধটির প্রকৃত স্থান নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে, কিন্তু অধিকাংশ ঐতিহাসিক এর সংঘটনের স্থান হিসাবে বর্তমানে কালা আম্ব এবং সানাউলির রোডের কাছাকাছি স্থানকেই বিবেচনা করেছেন। যুদ্ধ কয়েক দিনের জন্য স্থায়ী হয় এবং ১২৫,০০০ সৈন্য এতে অংশগ্রহণ করেন। উভয় পক্ষের লাভ এবং ক্ষতির পরে শত্রু মারাঠা সেনাবাহিনীর উপর বেশ কিছু দুর্দান্ত আক্রমণ দ্বারা ধ্বংস করার পর আহমদ শাহ দুরানি পরিচালিত আফগান বাহিনী বিজয় লাভ করে।উভয় পক্ষের ক্ষতির পরিমাণ ঐতিহাসিকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে বিতর্কিত, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে ৬০,০০০-৭০,০০০ এর কাছাকাছি সেনা যুদ্ধে নিহত হয়, কিন্তু আহত ও বন্দীদের সংখ্যা বিভিন্ন ঐতিহাসিক দ্বারা বিতর্কিত। কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী সুজা-উদ-দৌল্লার দিওয়ান কাশি রাজ বখর-যুদ্ধের পর প্রায় ৪০,০০০ মারাঠা কয়েদীকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছিলেন।[৯] গ্রান্ট ডাফ তার ইতিহাসে এই গণহত্যা থেকে বেঁচে ফেরা এক মারাঠা সৈনিকের একটি সাক্ষাতকার দ্বারা এই সংখ্যাকে সমর্থন করেছেন। সেজওয়ালকর যার "১৭৬১, পানিপথ প্রকরণ গ্রন্থ" যেটি এই যুদ্ধের একক সেরা মাধ্যমিক উৎস হিসেবে গণ্য হয়, তাতে তিনি বলেন, "যুদ্ধের সমযে এবং পরে ১০০,০০০ এরও বেশি মারাঠা (সৈন্য ও অযোদ্ধা) ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।"[১০]

এইযুদ্ধের ফলে উত্তরে মারাঠা অগ্রগতি হ্রাস পায় এবং প্রায় দশ বছর ধরে তাদের শাসনাধীন অঞ্চলগুলিতে অস্থিতিশীলতার আবির্ভাব ঘটে। এই সময়টি পেশোয়া মাধবরাওএর শাসন দ্বারা চিহ্নিত হয়, যিনি পানিপথের যুদ্ধে পরাজয়ের পর মারাঠা শাসনের পুনর্জাগরণ ঘটান। ১৭৭১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের দশ বছর পর, তিনি একটি অভিযানে ভারতের উত্তরাঞ্চলে একটি বৃহৎ মারাঠা সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন যার অর্থ এই অঞ্চলে মারাঠা শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং রোহিলাদের মতো আফগানিস্তানের পক্ষাবলম্বনকারী অযৌক্তিক শক্তিকে শাস্তি দেওয়া যাদের কারণে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের পর মারাঠা শাসনের অবসান ঘটেছিল। এই প্রচারাভিযানের সফলতা পানিপথের দীর্ঘ গল্পের শেষ কাহিনী হিসেবে দেখা যায়।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kaushik Roy, India's Historic Battles: From Alexander the Great to Kargil, (Orient Longman, 2004), 90.
  2. Sharma, Suresh K. (২০০৬)। Haryana: Past and Presentআইএসবিএন 9788183240468 
  3. Kulke, Hermann; Rothermund, Dietmar (২০০৪)। A History of Indiaআইএসবিএন 9780415329194 
  4. Historyআইএসবিএন 9788187139690। ৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  5. Roy, Kaushik (২০০৪)। India's Historic Battles: From Alexander the Great to Kargil। পৃষ্ঠা 84–85–93। 
  6. "Third Battle of Panipat (1761) | Panipat, Haryana" 
  7. James Grant Duff "History of the Mahrattas, Vol II (Ch. 5), Printed for Longman, Rees, Orme, Brown, and Green, 1826"
  8. T. S. Shejwalkar, "Panipat 1761" (in Marathi and English) Deccan College Monograph Series. I., Pune (1946)
  9. Shankar, Shejwalkar, Tryambak (১৯৪৬)। Panipat: 1761। Deccan College Postgraduate and Research Inst। ওসিএলসি 255604521 
  10. author. (১৮২৬)। A history of the Mahrattas.। Longman, Rees। আইএসবিএন 978-1-78289-235-9ওসিএলসি 983465283 
  11. https://www.risingbd.com। "মহাশ্মশানের মহাকবি"Risingbd Online Bangla News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-০১ 
  12. "বলিউড বক্স অফিসে কমেডির জয়!"চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৮