নেয়ামাল বাসির

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নেয়ামাল বাসির
জন্মসৈয়দ মোহাম্মদ নেয়ামাল বাসির
২৬ এপ্রিল ১৯৩২
তালিবপুর, মুর্শিদাবাদ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৩০ নভেম্বর ১৯৮৫(1985-11-30) (বয়স ৫৩)
ঢাকা, বাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানফেরদৌসী বিশ্ববিদ্যালয়,
করাচি বিশ্ববিদ্যালয়,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
জগন্নাথ কলেজ
সময়কাল১৯৫৫ — ১৯৮৫
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারবাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৮০

নেয়ামাল বাসির (২৬ এপ্রিল ১৯৩২ — ৩০ নভেম্বর ১৯৮৫) ছিলেন বাংলাদেশি অনুবাদ সাহিত্যিক, সাংবাদিকরাজনীতিবিদঅনুবাদ সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[১][২]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

সৈয়দ মোহাম্মদ নেয়ামাল বাসির ২৬ এপ্রিল ১৯৩২ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মুর্শিদাবাদের তালিবপুরের এক রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তালিবপুর এইচ এ স্কুলে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। ১৯৪৭ সাল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ঢাকায় আগমন করেন। ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকার প্রিয়নাথ হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ থেকে আই এ করেন।[৩]

এর পর করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৬২ সালে বিএ ও একই বিষয়ে ১৯৬৩ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।[৩]

১৯৭১ ও ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাক্রমে সাংবাদিকতা ও ফারসি বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন। ইরানের মাশহাদ নগরীর ফেরদৌসী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষার উপর পিএইচডি লাভ করেন।[৪][৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

নেয়ামাল বাসিরের কর্মজীবনের শুরু সাংবাদিকতা দিয়ে। তিনি ‘নতুন দিন’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে ১৯৫৫-১৯৫৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সহ সম্পাদক হিসেবে ১৯৫৮-১৯৫৯ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

১৯৫৯ সালে করাচিতে রেডিও পাকিস্তানের সংবাদ অনুবাদকের কাজে যোগদান করে। রেডিও পাকিস্তান করাচিত কেন্দ্রে বাংলা সংবাদ পাঠক হিসেবে ১৯৫৯-১৯৬৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। রেডিও পাকিস্তানের সংবাদ ভাষ্য রচনা ও পাঠক হিসেবে ১৯৬৫-১৯৬৬ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

করাচির ইসলামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বাংলা মুখপত্র মাসিক সন্ধানের সম্পাদক হিসেবে ১৯৬৪-১৯৬৫ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে জাতীয় পরিষদের অনুবাদক নিযুক্ত হন। অক্টোবর ১৯৬৬ সালে ঢাকায় বদলি হয়ে ঢাকা টেলিভিশন কেন্দ্রের উর্দুশিক্ষা আসর পরিচালনা করে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত।[৩]

পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লির বাংলা-উর্দু-ইংলিশ দোভাষী ছিলেন।[১]

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিতর্ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ভাষা ইনস্টিটিউটে ফারসি ভাষার খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেন।[১]

উর্দু সাহিত্যের বঙ্গানুবাদ করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধের রচয়িতা হিসেবেও পরিচিতি ছিল তার।[৩]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

নেয়ামাল বাসির ১৯৫১ সালে যুবলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর বিভিন্ন আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালনের কারণে কারাভোগ করেন। তিনি ১৯৫২ সালে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা নগর শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩][৪]

গ্রন্থ[সম্পাদনা]

নেয়ামাল বাসিরের উল্লেখযোগ্য অনুবাদগ্রন্থ:[৩]

  • ‘লন্ডনে এক রাত’ (১৯৫৬) [উপন্যাস];
  • সাজ্জাদ জহিরের লন্দকী একরাত; ‘দুপছায়া’ (১৯৬৯) [ছোটগল্প],
  • কুদরতুল্লাহ শাহাবের মাজী; ‘বানরের শ্বেত-অস্থি ডাইনী দমন’ (১৯৭৬) [শিশুতোষ লোকগল্প],
  • চীনা ভাষার ইংরেজি অনুবাদ থেকে ভাষান্তরিত, মূল : ওয়াং সিং পেই; ‘যোগাযোগ-প্রক্রিয়া’ (১৯৭৭) [তত্ত্বমূলক আলোচনাগ্রন্থ]
  • আতোয়ার রহমানের সহযোগে উর্দু ছোটগল্প’ (১৯৭০)

সম্মাননা[সম্পাদনা]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

নেয়ামাল বাসির ৩০ নভেম্বর ১৯৮৫ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নেয়ামাল বাসির (২০০৭)। উর্দু সাহিত্য সঙ্কলন (বাংলা ভাষায়)। বাংলাদেশ: দিব্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ২০৮। আইএসবিএন 9844832683 
  2. ডক্টর আবুল আহসান চৌধুরীর সাহিত্যিক, শিল্প ও সংগীত ব্যক্তিত্ব বিষয়ক বই 'নেয়ামাল বাসির'
  3. "জীবন কথা নেয়ামাল বাসির"দৈনিক পূর্বকোণ। ২২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৪ 
  4. "২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পুকুরপাড়ে রচিত হয়েছিল যে ইতিহাস"দৈনিক ইত্তেফাক। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ২২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০২৪