তৌফিক উমর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তৌফিক উমর
توفیق عمر
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামতৌফিক উমর
জন্ম (1981-06-20) ২০ জুন ১৯৮১ (বয়স ৪২)
লাহোর, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
উচ্চতা১.৭৫ মিটার (৫ ফুট ৯ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষক
সম্পর্কপারভেজ আখতার (চাচা), ওসমান (চাচাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৭০)
২৯ আগস্ট ২০০১ বনাম বাংলাদেশ
শেষ টেস্ট১৭ নভেম্বর ২০১৪ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৩৯)
২৭ অক্টোবর ২০০১ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই৩০ মে ২০১১ বনাম আয়ারল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৩ ২২ ১৪৫ ১২৬
রানের সংখ্যা ২,৯৪৩ ৫০৪ ৮,৯৫৭ ৪,৪৩১
ব্যাটিং গড় ৩৮.৭২ ২৪.০০ ৩৭.৩২ ৩৯.৯১
১০০/৫০ ৭/১৪ ০/৩ ১৮/৪৮ ১০/২১
সর্বোচ্চ রান ২৩৬ ৮১* ২৩৬ ১৫১*
বল করেছে ৭৮ ৭২ ৮৮০ ১,৪৫১
উইকেট ১৪ ৩৪
বোলিং গড় ৮৫.০০ ৩৪.৩৫ ৩৬.৯৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ১/৪৯ ৩/৩৩ ৫/৩৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৭/– ৯/– ১৪২/– ৮১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ মে ২০২০

তৌফিক উমর (পাঞ্জাবি: توفیق عمر; জন্ম: ২০ জুন, ১৯৮১) লাহোর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০১ থেকে ২০১৪ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, আইসিএল পাকিস্তান একাদশ, লাহোর, লাহোর বাদশাহজ, পাকিস্তান রিজার্ভস এবং ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই চ্যাম্পস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

লাহোরের বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তৌফিক উমর ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের লম্বার্ড বিশ্ব অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় প্রথম খেলেন। সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৭ রান করেন। এরপর, চূড়ান্তে খেলায় ভারতের বিপক্ষে হাসান রাজাকে নিয়ে খেলেন। তবে, ঐ খেলায় তার দল পরাজিত হয়েছিল। সম্মুখের পায়ের উপর ভর করে খেলতে অভ্যস্ত তিনি। তবুও বেশ ভালোমানের কাট করতে পারতেন। এছাড়াও, কার্যকরী অফ স্পিন বোলার হিসেবে আবির্ভূত হতেন। হাসান রাজাকে খুব সহজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে সুযোগ দেয়া হলেও তাকে খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুম থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তৌফিক ওমরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। পাকিস্তানি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্বকীয়তা বজায় রেখে দীর্ঘ সময় ক্রিজে অবস্থান করাসহ ইনিংসকে ভিত্তি এনে দিতে সচেষ্ট ছিলেন। উইকেটের উভয় দিকে ড্রাইভ মারায় কুশলতা দেখিয়েছেন। কাট ও পুল শট যথোচিত সময়ে সমন্বয় ঘটাতেন তিনি।

২০০৫-০৬ মৌসুমে সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে পাকিস্তান এ দলের সদস্যরূপে বেশ ভালো খেলেন। এরপরই তিনি পাকিস্তানের দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন।[১]

পাকিস্তানের ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় লাহোর রবি ও হাবিব ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। তার খাঁটিমানের ক্রীড়াশৈলীর দিকে দল নির্বাচকমণ্ডলী মনোনিবেশ ঘটিয়েছেন ও টেস্ট দলে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার প্রত্যাশা করছেন। এছাড়াও, অনুমোদনহীন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে লাহোর বাদশার প্রতিনিধিত্ব করে বিতর্কের কবলে পড়েন। ইংল্যান্ডের নর্দার্ন লীগে ল্যাঙ্কাশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে পেশাদারী পর্যায়ে এক গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তেতাল্লিশটি টেস্ট ও বাইশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন তৌফিক ওমর। ২৯ আগস্ট, ২০০১ তারিখে মুলতানে সফরকারী বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৭ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

অপ্রত্যাশিতভাবে পাকিস্তানি খেলোয়াড় হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিকের তুলনায় টেস্ট খেলেছেন বেশি। ২০০৩ সালের পূর্ব-পর্যন্ত ওডিআই দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পাননি। তবে, ঐ বছর তিনি একাধারে আটটি ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। কেবলমাত্র আগস্ট, ২০০১ থেকে এপ্রিল, ২০০৪ সালের মধ্যে মাত্র দুইটি টেস্ট বাদে চব্বিশ টেস্ট খেলতে পেরেছেন। ১৭ টেস্ট শেষে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৪৮.০৩। তন্মধ্যে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে চারটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন।[২]

২০০১ সালে মুলতানে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তানের পক্ষে অষ্টম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। এরপর, বিশ্বমানের অস্ট্রেলীয় বোলিং আক্রমণ মোকাবেলান্তে ৮৮ রান তুলেন।

২০০৩ সালে কেপটাউনে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিখুঁত ১৩৫ রান করেন। এ ধরনের বাউন্সি পিচে তৌফিক সিমারদেরকে এক চোট তুলে নেন। ২০০৩ সালে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকান বোলিং আক্রমণ মোকাবেলার মাধ্যমে দল নির্বাচকমণ্ডলীর আস্থা অর্জন করেন। তাসত্ত্বেও বিশ্বকাপের আসরে তাকে রাখা হয়নি। তবে, পরবর্তীতে নিজ দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবারও তিনি নিজেকে দলের অমূল্য সম্পদ হিসেবে আবির্ভূত করেন। চার ইনিংসে একটি শতরান ও তিনটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন।

দলে প্রত্যাখ্যান[সম্পাদনা]

দল নির্বাচকমণ্ডলী উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের উপর আস্থা রাখতে পারেননি। কিছুটা দূর্বলমানের খেলার ফলে কয়েক টেস্ট বাদে তাকে বাদ দেয়া হয়। ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে দূর্বলমানের ক্রীড়াশৈলীর কারণে স্থানচ্যূত হতে হয়। এছাড়াও, ব্যাটিংয়েও তার আস্থা কমে যায়। এ সময়ে দলে তিনি আসা-যাওয়ার পালায় থাকতেন। তবে, ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে চার বছর তিনি টেস্ট দলের বাইরে ছিলেন।

২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেয়ার জন্যে পুনরায় তাকে পাকিস্তান দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৩] দলে প্রত্যাবর্তনের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কিছু ভালোমানের ইনিংস খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দূর্দান্ত দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেন। ২০১১ সালে আবুধাবিতে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন ও ধৈর্য্যের ফসল হিসেবে ২৩৬ রান করেন। এরফলে, পাকিস্তানের সপ্তম উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও ১৯৯২ সালের পর প্রথম পাকিস্তানি হিসেবে টেস্টে দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলতে সমর্থ হন। আবারও তাকে টেস্ট দলে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ দেয়া হয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে খেলেন। এ সিরিজ শেষে পুনরায় তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। এরপর, ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি টেস্ট খেলেন। দুই ইনিংসে ১৬ ও ৪ রান তোলার পর দল থেকে বাদ পড়েন।

পরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

টেস্ট শতক
তৌফিক উমরের টেস্ট শতক
ক্রমিক রান খেলা প্রতিপক্ষ শহর/দেশ মাঠ তারিখ ফলাফল
[১] ১০৪  বাংলাদেশ মুলতান, পাকিস্তান মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়াম ২৯ আগস্ট, ২০০১ জয়
[২] ১১১ ১০  জিম্বাবুয়ে হারারে, জিম্বাবুয়ে হারারে স্পোর্ট ক্লাব ৯ নভেম্বর, ২০০২ জয়
[৩] ১৩৫ ১৩  দক্ষিণ আফ্রিকা কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা নিউল্যান্ডস ২ জানুয়ারি, ২০০৩ পরাজয়
[৪] ১১১ ১৬  দক্ষিণ আফ্রিকা লাহোর, পাকিস্তান গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ১৭ অক্টোবর, ২০০৩ জয়
[৫] ১৩৫ ৩১  ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাসেতেরে, সেন্ট কিটস ওয়ার্নার পার্ক ২০ মে, ২০১১ জয়
[৬] ২৩৬ ৩৩  শ্রীলঙ্কা আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ১৮ অক্টোবর, ২০১১ ড্র
[৭] ১৩০ ৩৭  বাংলাদেশ ঢাকা, বাংলাদেশ শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম ১৬ ডিসেম্বর, ২০১১ জয়
ওডিআইয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ
ক্রমিক প্রতিপক্ষ মাঠ তারিখ অবদান ফলাফল
জিম্বাবুয়ে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শারজাহ ১০ এপ্রিল, ২০০৩ ৮১ (১২৪ বল, ১০x৪)  পাকিস্তান ৮ উইকেটে বিজয়ী[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  1. Send for Taufeeq Umar by Kamran Abbasi, published 23 March 2004.
  2. Pakistan pay for failures across the board by Kamran Abbasi, published 22 April 2004
  3. 2nd Final: Australia v Pakistan at Sydney, 6 Feb 2005 scorecard from Cricinfo, retrieved 14 December 2005
  4. Pakistan's stars in the ascendancy by Osman Samiuddin, published on Cricinfo 29 March 2005
  5. Second Test v India 16–20 Mar 2005 and Third Test v India 24–28 Mar 2005, both from Cricinfo, retrieved 14 December 2005