আল্ফ গোভার
![]() আনুমানিক ১৯৩৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে আল্ফ গোভার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | আলফ্রেড রিচার্ড গোভার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | এপসম, সারে, ইংল্যান্ড | ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৭ অক্টোবর ২০০১ লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স ৯৩)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৯৩) | ২৫ জুলাই ১৯৩৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৭ আগস্ট ১৯৪৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ |
আলফ্রেড রিচার্ড গোভার, এমবিই (ইংরেজি: Alf Gover; জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৮ - মৃত্যু: ৭ অক্টোবর, ২০০১) সারের এপসম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৭ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলারের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এছাড়াও ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকরী ব্যাটিং করেছেন আল্ফ গোভার।
১৯৩০-এর দশকে সারে দলের প্রধান বোলিং আক্রমণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে ও পরে চার টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। এছাড়াও ওয়ার্ডসওয়ার্থে ক্রিকেট বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
আল্ফ গোভারের দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যানের মতে, 'এ খেলার অন্যতম মহৎ ব্যক্তি হিসেবে ভালোমানের ক্রিকেট প্রদর্শন যুদ্ধের সমতুল্য ছিল'।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]১৯০৮ সালে সারের এপসম এলাকায় আল্ফ গ্রোভারের জন্ম। মৃত্যুদূতসম আউটসুইঙ্গার সহযোগে ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন তিনি। ধূর্ততার সাথে নিজেকে সামলে নিতে পারতেন তিনি। কিশোর বয়স থেকেই বোলিং করতে শুরু করেন। জুলাই, ১৯২৬ সালে এসেক্সের পক্ষে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রথম প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নেন। ঘেরা আবদ্ধ জালে অনুশীলনকালে বেশ কয়েকবার জনি ডগলাসকে পরিষ্কার বোল্ড করেন।
১৯২৭ সালে ওভালে অনুষ্ঠেয় খেলায় দলের দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে এসেক্স দলের সদস্যরূপে ভ্রমণ করেন তিনি। সারের সেরা উইকেট-রক্ষক হার্বার্ট স্ট্রাডউইকের সাথে আলাপের সুযোগ আসে। স্ট্রাডউইকের পরামর্শক্রমে অনাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে গোভার কাউন্টি ত্যাগ করেন ও সারে দলে যোগ দেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]জুন, ১৯২৮ সালে সাসেক্সের বিপক্ষে প্রথম কাউন্টি খেলায় অংশ নেন। তবে, ১৯৩০ সালের পূর্ব-পর্যন্ত দলে স্থায়ীভাবে আসন গড়তে পারেননি তিনি। ১৯৩২ সাল পর্যন্ত দলে ফ্রেডি ব্রাউন, পার্সি ফেন্ডার ও মরিস অলমের ন্যায় খ্যাতনামা বোলারের উপস্থিতি ছিল। ফলে আল্ফ গোভার দলে তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারছিলেন না। কিন্তু, ব্রাউন ও অলমের ব্যবসায় সম্পৃক্ততার ফলে ১৯৩৩ সালের গ্রীষ্মের শুষ্ক মৌসুমে গোভারের কাঁধে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে। দায়িত্ব পাবার পর ৯৮টি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের উইকেট লাভ করেন তিনি। তবে, ক্রিজে এগিয়ে যাবার ন্যায় বোলিং প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় তার মধ্যে। টেস্ট দলে অংশগ্রহণের জন্য বিল বোস, কেন ফার্নেস, নবি ক্লার্ক ও বিল কপসনের সাথে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অবতীর্ণ হতে হয়েছিল।
১৯৩৫ সালে স্বল্প দূরত্ব থেকে বোলিং করার উপদেশ দেয়া হয় যাতে যথেচ্ছ রান না দেন ও শক্তির অপচয় না করেন। কিন্তু, ১৯৩৬ সালে পূর্ণাঙ্গ গতিতে দৌঁড়ানোর বিষয়ে ছাড় দেয়া হলে তার শক্তিমত্তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। ওভালের পিচে মে মাসে ৫৪ উইকেট পান। অনেক পিচে ভেজা থাকলেও ১৫.৪২ গড়ে ১৭১ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের উইকেট লাভ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
[সম্পাদনা]ওল্ড ট্রাফোর্ডে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে খেললেও উইকেট চমৎকার ছিল। এমনকি তার উজ্জ্বীবিত বোলিংও কোন ফলপ্রসূ হয়নি। পরের বছর ১৯৩৭ সালে আল্ফ গোভার আবারও ভালো খেলা উপহার দেন। আবারো তিনি ২০১ উইকেট লাভ করেন। একমাত্র ফাস্ট বোলার হিসেবে তিনি এক মৌসুমে এতোগুলো উইকেটের সন্ধান পান যা কেবলমাত্র ১৮৯৭ সালে টম রিচার্ডসন সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।[২]
আঘাতের কারণে ভারতেই গোভারের দৌঁড়ানোর সফলতা শেষ করে দেয়। ১৯৩৮ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে ও জুনের শুরুতে তিনি তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে খেলায় ব্যক্তিগত সেরা ১৪/৮৫ পান। পর্যাপ্ত বিশ্রামে থাকা স্বত্ত্বেও গোভারের শারীরিক সুস্থতার বিপরীত চিত্র ফুঁটে উঠে। এ সময়ে তিনি মাত্র ৮৬ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯৩৯ সালে তিনি পুনরায় স্ব-মূর্তি ধারণ করেন। তবে, তিনি তার সেরা দুই বছরের মতো গতি ফিরে পাবার জন্য প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর খেলা পুনরায় শুরু হলে গোভারের বয়স এসে দাঁড়ায় ৩৮। বয়সের ভারে ন্যূহ অবস্থায়ও তিনি এতোটাই চমৎকার বোলিং করেন যে, ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের জন্য তাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়েছিল। প্রচণ্ড উদ্যম থাকা স্বত্ত্বেও আশ্চর্য্যজনকভাবে ১৯৩৬-৩৭ কিংবা ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে অ্যাশেজ সফরের জন্য তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। ১৯৪৭ সালে সর্বশেষবারের মতো কাউন্টি ক্রিকেট খেলার কথা ঘোষণা করেন। তাস্বত্ত্বেও গোভারকে ইংল্যান্ডের সেরা ফাস্ট বোলাররূপে বিবেচনা করা হতো। এ অবস্থাতে শেষ টেস্টে হ্যারল্ড বাটলার নিজের নাম প্রত্যাহার করেন ও অ্যালেক বেডসারের খেলার মান পড়তির দিকে থাকলে তাকে আবারো খেলার জন্য নির্বাচিত করা হয়।

কোচিংয়ে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর ১৯৪৮ সালে বেডফোর্ডশায়ারের পক্ষে মাইনর কাউন্টিজ প্রতিযোগিতার কয়েকটি খেলায় অংশ নেন আল্ফ গোভার। নয় রানের কিছুটা বেশি দিয়ে ২৫ উইকেট লাভ করেন তিনি। ওয়ান্ডসওয়ার্থে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট বিদ্যালয়কে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালান। এ বিদ্যালয় থেকেই ইতোমধ্যে প্রশিক্ষিত একদল ভবিষ্যতের টেস্ট খেলোয়াড়ের সাথে সারের পক্ষে শেষ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। পরবর্তী দশকগুলোয় বিদ্যালয়টির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটান ও সর্বাপেক্ষা সেরা বিদ্যালয়ের আসনে নিয়ে যান।
ফ্রাঙ্ক টাইসন, ভিভ রিচার্ডস, অ্যান্ডি রবার্টস ও ইয়ান বিশপের ন্যায় বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড় গোভারের প্রশিক্ষণে উপকৃত হয়েছেন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমের অ্যাশেজ সফরে সাংবাদিক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। তিনি টাইসনকে কম দূরত্ব বজায় রেখে বোলিং করার পরামর্শ দেন যা সিরিজের গতিধারা পরিবর্তন করেছিল।[৩] ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে কাজ করতে থাকেন।
অর্জনসমূহ
[সম্পাদনা]মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত ক্রিকেট নিয়ে ব্যাপক লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন। ৭ অক্টোবর, ২০০১ তারিখে ৯৩ বছর বয়সে লন্ডনে তার দেহাবসান ঘটে। এ সময়ে তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন। তার মৃত্যুর ফলে বব এপলইয়ার্ড এ মর্যাদার অধিকারী হন যিনি একমাত্র জীবিত বোলার হিসেবে এক ইংরেজ মৌসুমে দুইশত উইকেট লাভ করেছেন।
১৯৩৭ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে নামাঙ্কিত হন।[৪] ১৯৭৪ সালে লর্ডস টেভার্নার্সের সভাপতি হন। এছাড়াও, ১৯৮০ সালে সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন আল্ফ গোভার। ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৪০-এর দশক পর্যন্ত সারে দলের সদস্যতার তুলনায় ক্রিকেট প্রশিক্ষণে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে তাকে এমবিই উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 73। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
- ↑ Frindall, Bill (২০০৯)। Ask Bearders। BBC Books। পৃষ্ঠা 182। আইএসবিএন 978-1-84607-880-4।
- ↑ Frank Tyson, In the Eye of the Typhoon, The Parrs Wood Press, 2004
- ↑ Full List on Cricinfo, Retrieved 11 July, 2017.
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- বিল কপসন
- ফজল মাহমুদ
- জোনাথন অ্যাগ্নিউ
- সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব
- ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটারদের তালিকা
- অ্যাশেজ সিরিজের তালিকা
- বর্ষীয়ান ক্রিকেটারদের তালিকা
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে আল্ফ গোভার (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে আল্ফ গোভার (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- First-class bowling
- Cricinfo obituary
- Wisden obituary
- Frank Tyson, In the Eye of the Typhoon, The Parrs Wood Press, 2004
পূর্বসূরী লিওনেল বার্কেট |
বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার ১৬ জানুয়ারি, ১৯৯৮ – ৭ অক্টোবর, ২০০১ |
উত্তরসূরী লিন্ডসে উইয়ার |
- ১৯০৮-এ জন্ম
- ২০০১-এ মৃত্যু
- ১৯১৯ থেকে ১৯৪৫ সময়কালীন ইংরেজ ক্রিকেটার
- অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার পদক বিজয়ী
- ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটার
- ইংরেজ ক্রিকেটার
- ইংরেজ ক্রিকেট কোচ
- উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার
- এইচ. ডি. জি. লেভেসন গাওয়ার একাদশের ক্রিকেটার
- এল. এইচ. টেনিসন একাদশের ক্রিকেটার
- নর্থ ভার্সাস সাউথের ক্রিকেটার
- প্লেয়ার্সের ক্রিকেটার
- বেডফোর্ডশায়ারের ক্রিকেটার
- লন্ডন কাউন্টিজের ক্রিকেটার
- সারের ক্রিকেটার
- সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি