মোহাম্মদ শামশাদ আলী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মোহাম্মদ শামশাদ আলী
জন্ম৯ মার্চ ১৯৩৮
মৃত্যু৯ মার্চ ১৯৭১(1971-03-09) (বয়স ৫৮)
মাতৃশিক্ষায়তনস্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
পেশা
  • চিকিৎসক
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী
পিতা-মাতা
  • ক্যাপ্টেন আবুল হোসেন (পিতা)
  • আনোয়ারী বেগম (মাতা)

মোহাম্মদ শামশাদ আলী (জন্ম: ৯ মার্চ ১৯৩৪ – মৃত্যু: ১৮ এপ্রিল ১৯৭১) একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক ও শহীদ বুদ্ধিজীবী। ছিলেন সংস্কৃতি, ক্রীড়াবিদ ও গায়ক। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।[১][২]

জন্ম ও প্রথমিক জীবন[সম্পাদনা]

মোহাম্মদ শামশাদ আলী ৯ মার্চ ১৯৩৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিহারের এলাহাবাদে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক বাড়ি ছিল বগুড়ার সোনাতলায়। তার পিতা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আবুল হোসেনও একজন চিকিৎসক ছিলেন। চাকরি থেকে অবসরের পর দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মুজাফফরনগরে বসতি স্থাপন করেন। মাতা আনোয়ারী বেগম নবাব মুর্শিদকুলি খানের বংশধর।[২]

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

মোহাম্মদ শামশাদ আলী প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরেরাজশাহী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্স শুরু করে বিশেষ কারণে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৬৩ সালে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করেন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকারের মেডিক্যাল সার্ভিসে যোগ দেন। কুমিল্লা থানা হেলথ কমপ্লেক্সে দুই বছর চাকরির পর সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে পার্বতীপুরের নতুন বাজারে ব্যক্তিগত ফার্মেসি ও চেম্বার প্রতিষ্ঠা করেন। পার্বতীপুরের অঞ্চলটি ছিল বিহারী সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং তাদের এবং বাঙালির মধ্যে ঘন ঘন দ্বন্দ্বের জায়গা ছিল। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছিলেন।[২]

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও হত্যা[সম্পাদনা]

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শামশাদ আলীর অগ্রণী ভূমিকার জন্য এলাকার অবাঙালিদের আক্রোশের শিকার হন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনীর বাঙালি হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে তিনি পরিবার নিয়ে নিজ বাড়িতে অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ৮ এপ্রিল ১৯৭১ সালে রাত ১১টায় নয় জন পাকসেনার একটি দল কয়েকজন রাজাকারসহ তার বাড়িতে বাড়ীতে হানা দেয়। তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং গুলি করে হত্যার পর তার দেহ কেটে টুকরা টুকরা করে জ্বলন্ত ট্রেন ইঞ্জিনের মধ্যে ফেলে পোড়ানো হয়।[৩]

স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পার্বতীপুরের নতুন বাজারে একটি রাস্তার নামকরণ হয় শহীদ ডাঃ শামশাদ আলী রোড। বাংলাদেশ ডাকবিভাগ স্বীকৃতিস্বরূপ ১৪ ডিসেম্বর ২০০০ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তার নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।[২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ বুকলেট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: Bangladesh Study Group, Kean University, New Jersy, USA। ১৮ অক্টোবর ২০০৯। পৃষ্ঠা ১০। 
  2. মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান (২০১২)। "আলী, মোহাম্মদ শামশাদ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. রশীদ হায়দার। "ইতিহাসের বিচার মাটি ফুঁড়ে বেরোয় | কালের কণ্ঠ"Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৪