সূরা তাকাসুর
শ্রেণী | মাক্কী |
---|---|
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ১০২ |
আয়াতের সংখ্যা | ৮ |
পারার ক্রম | ৩০ |
রুকুর সংখ্যা | ১ |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা ক্বারিয়াহ |
পরবর্তী সূরা → | সূরা আছর |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
সূরা আত তাকাসুর মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১০২ তম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৮ টি এবং রূকুর সংখ্যা ১। আত তাকাসুর সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
তাকাসুর শব্দটি আরবি: كثرة থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর অর্থ প্রচুর ধন-সম্পদ সঞ্চয় করা। হযরত ইবনে আব্বাস ও হাসান বসরী তফসীর করেছেন। এ শব্দটি প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা অর্থেও ব্যবহৃত হয়। কাতাদাহ্ এ অর্থই করেছেন। হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্ একবার এ আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এর অর্থ অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা এবং আল্লাহ্র নির্ধারিত খাতে ব্যয় না করা।[১][২]
নাযিল হওয়ার সময়কাল
[সম্পাদনা]আবু হাইয়ান ও শওকানী বলেন, সকল তাফসীরকার একে মক্কী সূরা গণ্য করেছেন। এ ব্যাপারে ইমাম সুয়ুতির বক্তব্য হচ্ছে, মক্কী সূরা হিসেবেই এটি বেশি খ্যাতি অর্জন করেছে। কিন্তু কিছু কিছু বর্ণনায় একে মাদানী সূরা বলা হয়েছে।এছাড়া রসুলল্লাহ (সঃ) মক্কী সূরার যে বৈশিষ্ট্যর কথা বলছিলেন তার সাথে অধিক পরিমাণ মিল তাই এটি মাক্কী সূরা
শানে নুযূল
[সম্পাদনা]ইবনে আবু হাতেম আবু বুরাইদার রেওয়ায়েত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছেঃ বনী হারেসা ও বনিল হারস নামক আনসারদের দুটি গোত্রের ব্যপারে এ সূরাটি নাযিল হয়। উভয় গোত্র পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে প্রথমে নিজেদের জীবিত লোকদের গৌরবগাঁথা বর্ণনা করে। তারপর কবরস্থানে গিয়ে মৃত লোকদের গৌরবগাঁথা বর্ণনা করে। তাদের এই আচরণের ফলে আল্লাহ্র এই বাণী নাযিল হয়। কিন্তু শানে নূযুলের জন্য সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণ যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন তাকে এই সূরা নাযিলের উপলক্ষ বলে মেনে নেবার সপক্ষে প্রমাণ হিসাবে গ্রহণ করা যায় না।
ইমাম বুখারী ও ইবনে জারীর হযরত উবাই ইবনে কা'বের একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছেনঃ তাতে তিনি বলেছেনঃ "আমরা রসূলে করীম এর এ বাণীটিকে
“ | বনি আদমের কাছে যদি দুই উপত্যকা সমান সম্পদ থাকে তারপরও সে তৃতীয় একটি উপত্যকার আকাঙ্খা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া আর কিছু দিয়ে ভরে না। | ” |
কুরআনের মধ্যে মনে করতাম। এমন কি শেষ পর্যন্ত আলহাকুমুত্ তাকাসুর সূরাটি নাযিল হয়।"[৩]
বিষয়বস্তুর বিবরণ
[সম্পাদনা]এ সূরার মুল বিষয়বস্তু হলো আখিরাত। আখিরাত সম্পর্কে সজাগ এবং আখিরাতে যে অর্জিত সম্পদের হিসাব নেওয়া হবে সে বিষয়েই সতর্ক করা হয়েছে।
আলোচ্য বিষয় : দুনিয়া পাওয়ার ধান্দায় পরিণাম।
আয়াতসমূহ
[সম্পাদনা]উচ্চারণ:সূরা তাকাসুর আরবী উচ্চারণ
أَلْهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ حَتَّىٰ زُرْتُمُ ٱلْمَقَابِرَ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ ٱلْيَقِينِ لَتَرَوُنَّ ٱلْجَحِيمَ ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ ٱلْيَقِينِ ثُمَّ لَتُسْـَٔلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ ٱلنَّعِيمِ
بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
أَلْهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ
1 আলহা-কুমুত্তাকা-ছু র
حَتَّىٰ زُرْتُمُ ٱلْمَقَابِرَ
2 হাত্তা-ঝুরতুমুল মাকা-বির
كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
3 কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন
ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
4 ছু ম্মা কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন
كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ ٱلْيَقِينِ
5 কাল্লা-লাও তা‘লামূনা ‘ইলমাল ইয়াকীন
لَتَرَوُنَّ ٱلْجَحِيمَ
6 লাতারাউন্নাল জাহীম(আ)
ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ ٱلْيَقِينِ
7 ছু ম্মা লাতারাউন্নাহা-‘আইনাল ইয়াকীন
ثُمَّ لَتُسْـَٔلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ ٱلنَّعِيمِ
8 ছু ম্মা লাতুছআলুন্না ইয়াওমাইযিন ‘আনিন্না‘ঈম
সরল অর্থঃ
১) প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
২) এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
৩) এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
৪) অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
৫) কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
৬) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে,
৭) অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য প্রত্যয়ে,
৮) এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
ফযীলত
[সম্পাদনা]রসূলে করীম একবার সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমাদের মধ্যে কারও এমন ক্ষমতা নেই যে, এক হাজার আয়াত পাঠ করবে। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেনঃ হাঁ, এক হাজার আয়াত পাঠ করার শক্তি কয়জনের আছে। তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ কি সূরা তাকাছুর পাঠ করতে পারবে না? উল্লেখ্য এই যে, দৈনিক এই সূরা পাঠ করা এক হাজার আয়াত পাঠ করার সমান।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ডিজিটাল 'আল কোরআন' - ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ।
- অনলাইন বাংলা কোরআন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে
- কোরআন শরীফ.অর্গ।