ফিদেল কাস্ত্রো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফিদেল কাস্ত্রো
১৯৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফররত কাস্ত্রো
১৫তম কিউবার রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
২রা ডিসেম্বর, ১৯৭৬ – ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ (৩১শে জুলাই, ২০০৬ সাল থেকে চিকিৎসার ছুটি)
প্রধানমন্ত্রীনিজে
উপরাষ্ট্রপতিরাউল কাস্ত্রো
পূর্বসূরীঅসভাল্দো ডর্টিকস তোরাদো
উত্তরসূরীরাউল কাস্ত্রো
কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সচিব
কাজের মেয়াদ
২৪শে জুন, ১৯৬১ – ১৯শে এপ্রিল, ২০১১
ডেপুটিরাউল কাস্ত্রো
পূর্বসূরীBlas Roca Calderio
উত্তরসূরীরাউল কাস্ত্রো
কিউবার মন্ত্রী পরিষদের সভাপতি
কাজের মেয়াদ
২রা ডিসেম্বর, ১৯৭৬ – ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ (৩১শে জুলাই, ২০০৬ সাল থেকে চিকিৎসার ছুটি)
রাষ্ট্রপতিনিজে
পূর্বসূরীনিজে (প্রধানমন্ত্রী হিসেবে)
উত্তরসূরীরাউল কাস্ত্রো
১৬তম কিউবার প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৯ – ২রা ডিসেম্বর, ১৯৭৬
রাষ্ট্রপতিManuel Urrutia Lleó
Osvaldo Dorticós Torrado
পূর্বসূরীজোস মিরো কারদেনা
উত্তরসূরীনিজে (মন্ত্রী পরিষদের সভাপতি হিসেবে)
৭ম ও ২৩তম জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের মহাসচিব
কাজের মেয়াদ
১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০০৬ – ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮
পূর্বসূরীআবদুল্লাহ আহমেদ বাদাবি
উত্তরসূরীরাউল কাস্ত্রো
কাজের মেয়াদ
১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯ – ৬ই মার্চ, ১৯৮৩
পূর্বসূরীজুনিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধন
উত্তরসূরীনীলম সঞ্জীব রেড্ডি
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মফিদেল আলেজান্দ্রো ক্যাস্ত্রো রুজ
১৩ই অগাস্ট, ১৯২৬
Birán, হলগুিন প্রদেশ, কিউবা
মৃত্যু২৫ নভেম্বর ২০১৬(2016-11-25) (বয়স ৯০)
হাভানা,কিউবা
রাজনৈতিক দলঅর্থডক্স পার্টি
(১৯৪৬–৫২)
২৬শে জুলাই এর বিপ্লব
(১৯৫৩–৬৫)
কিউবার কমিউনিস্ট পার্টি
(১৯৬৫–২০১৬)
দাম্পত্য সঙ্গীমির্তা ডিয়াজ​-মালার্ট (১৯৪৮–৫৫)
ডালিয়া সোটো দেল ভাল্লে (১৯৮০–২০১৬; তার মৃত্যু)
সম্পর্করাউল কাস্ত্রো, রামন, হুয়ানিতা
সন্তান১১জন, আলিনা ফার্নান্দেজ সহ
বাসস্থানসাঁতিয়াগো দে কিউবা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীহাভানা বিশ্ববিদ্যালয়
জীবিকাআইনজীবী
স্বাক্ষর
  • রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ৩১শে জুলাই, ২০০৬ সাল থেকে রাউল কাস্ত্রো স্থানান্তর করা হয়েছিল।

ফিদেল আলেজান্দ্রো কাস্ত্রো রুজ (আমেরিকান স্পেনীয়: [fiˈðel aleˈhandɾo ˈkastɾo ˈrus] audio; জন্মঃ আগস্ট ১৩, ১৯২৬ - মৃত্যুঃ নভেম্বর ২৫, ২০১৬) যিনি ফিদেল কাস্ত্রো বা শুধুই কাস্ত্রো নামে পরিচিত; তিনি একজন কিউবান রাজনৈতিক নেতা ও সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী। কিউবা বিপ্লবের প্রধান নেতা ফিদেল ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ থেকে ডিসেম্বর ১৯৭৬ পর্যন্ত কিউবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এরপর ফেব্রুয়ারি ২০০৮-এ তার স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত কিউবার মন্ত্রী পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালে কিউবা কমিউনিস্ট দলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রধান হিসেবে ছিলেন। এর আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০৮ সালে তিনি তার দায়িত্ব ভাই রাউল কাস্ত্রোর কাছে অর্পণ করেছিলেন।

রাউল বর্তমানে কমিউনিস্ট পার্টির সহকারী প্রধান এবং মন্ত্রী পরিষদের প্রধান হিসেবে আছেন। এর আগে তিনি ১৯৫৯-২০০৮ পর্যন্ত ফিদেলের মন্ত্রী সভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ার সময়, ফিদেল কাস্ত্রো তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর কিউবার রাজনীতিতে একজন বিখ্যাত ব্যক্তিতে পরিণত হন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় প্রেসিডেন্ট ফুলহেনসিও বাতিস্তা এবং কিউবার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাবের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী সমালোচনা নিবন্ধ লিখে। তিনি এ ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন। অবশেষে তিনি ১৯৫৩ সালে মনকাডা ব্যারাকে একটি ব্যর্থ আক্রমণ করেন, এবং তারপর কারারুদ্ধ হন ও পরে ছাড়া পান। এরপর তিনি বাতিস্তার সরকার উৎখাতের জন্য সংগঠিত হওয়ার জন্য মেক্সিকো যান। ফিরে এসে ১৯৫৬’র ডিসেম্বরে সরকার উৎখাতে নামেন।

বিপ্লবী কাস্ত্রো[সম্পাদনা]

পরবর্তীকালে কাস্ত্রো কিউবান বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন যা যুক্তরাষ্ট্রের মদতে চলা বাতিস্তার স্বৈরশাসনকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর কিছুদিন পরই কাস্ত্রো কিউবার প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৬৫ সালে তিনি কিউবা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হন এবং কিউবাকে একদলীয় সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে রূপ দেন। ১৯৭৬ সালে তিনি রাষ্ট্র ও মন্ত্রী পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি কিউবার সর্বোচ্চ সামরিক পদ Comandante en Jefe ("Commander in Chief") এও আসীন হন।

২০১৬ সালের ২৫ই নভেম্বর এই মহান বিপ্লবী হাভানায় মৃত্যুবরণ করেন।[১]

ফিদেল কাস্ত্রো

চে গেভারার সাথে সাক্ষাৎ[সম্পাদনা]

১৯৫৫ সালের জুন মাসে রাউল কাস্ত্রোর সাথে নিকো লোপেজের মাধ্যমে চে গেভারার পরিচয় হয় এবং পরে তার মাধ্যমে ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে পরিচিত হন চে।কাস্ত্রোর সাথে চে'র প্রথম সাক্ষাতে দীর্ঘ আলাপচারিতা হয় এবং চে বলেন যে কিউবার সমস্যা নিয়ে তিনি চিন্তিত। সেই সময় চে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদের ঘোর বিরোধী ছিলেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন এই আগ্রাসি তৎপরতার আশু সমাপ্তি প্রয়োজন। তারপর চে ফিদেল কাস্ত্রোর ২৬শে জুলাই আন্দোলন দলের সদস্য হন।

কিউবা বিপ্লব[সম্পাদনা]

বিপ্লবের পরিকল্পনায় কাস্ত্রের প্রথম পদক্ষেপ ছিল মেক্সিকো হতে কিউবায় আক্রমণ চালান। ১৯৫৬ সালের ২৫শে নভেম্বর তারা কিউবার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পৌছানোর সাথে সাথেই বাতিস্তার সেনাবাহিনী কর্তৃক আক্রন্ত হন। তার ৮২ জন সহচরী মারা যান অথবা কারাবন্দী হয়, মাত্র ২২জন এ যাত্রায় বেঁচে যায়। চে গুয়েভারা তার বইয়ে লিখে ছিলেন সেটা ছিল সেই রক্তক্ষয়ী মুখামুখি সংঘর্ষের সময় যখন তিনি তার চিকিৎসা সামগ্রীর সাথে একজন কমরেডের ফেলে যাওয়া এক বাক্স গোলাবারুদ নিয়ে ছিলেন, যা তাকে পরিশেষে চিকিৎসক থেকে বিপ্লবীতে পরিনত করে।

সিয়েরা মস্ত্রা পর্বত মালায় বিদ্রোহীদের ছোট্ট একটা অংশ পুনরায় সংঘবদ্ধ হতে পেরেছিল। সেখানে তারা ২৬ শে জুলাই আন্দোলনের গেরিলা এবং স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতা লাভ করে ছিলেন। সিয়েরা থেকে দল উঠেয়ে দেবার সময় কাস্ত্রোর একটি সাক্ষাতকার নিউয়র্ক টাইমসে প্রকাশ করা হয়। যার আগে ১৯৫৭ পর্যন্ত সারা পৃথিবীর মানুষ জানত না তিনি বেঁচে আছেন কি না! সেই নিবন্ধে কাস্ত্রো ও বিপ্লবীদের কাল্পনিক ছবি ছিল।

ফিদেল কাস্ত্রোকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, কূটনীতি এবং অধ্যবসায়ের কথা জানিয়ে ছিলেন চে। যুদ্ধ চলাকালীন চে বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর অখণ্ড অংশ হয়ে গিয়ে ছিলেন। ফিদেল কাস্ত্রো গেভারাকে গ্রেনেড তৈরির কারখানা, রুটি সেকানোর জন্য চুল্লি প্রস্তুত এবং নিরক্ষর সঙ্গীদের লেখাপড়ার জন্য পাঠশালা তৈরির দায়িত্ব দেন। তাছাড়াও একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, সামরিক প্রশিক্ষনের কর্মশালা আয়োজন এবং তথ্য সরবরাহের জন্য পত্রিকা প্রচার করার দায়ীত্ব প্রদান করেন। বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন তিন বছর পর চে গেভারাকে ’’কাস্ত্রোর মস্তিষ্ক’’’ বলে আখ্যায়িত করেছিল।

কিউবার প্রধানমন্ত্রী (১৯৫৯-১৯৭৬)[সম্পাদনা]

কিউবার প্রেসিডেন্ট (১৯৭৬-২০০৮)[সম্পাদনা]

অবসর[সম্পাদনা]

একটানা দীর্ঘ পাঁচ দশক কিউবা শাসন করার পর ২০০৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কিউবার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্বে থাকা বিশ্ব নেতাদের মধ্যে যেখানে তিনি তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছেন। বিশ্বের লক্ষ বছরের ইতিহাসে সেরা দশজন নেতার মধ্যে তিনি একজন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Cuba's former leader Fidel Castro dead at 90"। Al Jazeera। নভেম্বর ২৬, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৫, ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]