বিষয়বস্তুতে চলুন

ইসলাম ও হস্তমৈথুন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Islam and masturbation থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ইসলামী ধর্মগ্রন্থ কুরআনে বিশেষভাবে "হস্তমৈথুন" এ কথা উল্লেখ করা হয়নি তবে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ-

“যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে।” (সূরা নুর ৩৩ আয়াত)।

[][] [] সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের মত হল, হস্তমৈথুন স্বাভাবিক অবস্থায় হারাম, কিন্তু শুধুমাত্র যিনার আশঙ্কা থাকলে তা উক্ত প্রেক্ষাপটে অস্থায়ীভাবে জায়েজ হতে পারে।

কুরআন

[সম্পাদনা]

ইবনে কাছিরের মতে, ইমাম শাফেয়ি এবং যারা তার সাথে একমত পোষণ করেছেন তারা সবাই এ আয়াত দিয়ে হস্তমৈথুন হারাম হওয়ার পক্ষে দলিল দিয়েছন।[]

“আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে হেফাযত করে। নিজেদের স্ত্রী বা মালিকানাভুক্ত দাসীগণ ছাড়া; এক্ষেত্রে (স্ত্রী ও দাসীর ক্ষেত্রে) অবশ্যই তারা নিন্দিত নয়। যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।”

— [সূরা মুমিনুন, আয়াত: ৫-৬]

ইমাম শাফেয়ি ‘নিকাহ অধ্যায়ে’ বলেন:

‘স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য সবার থেকে লজ্জাস্থান হেফাযত করা’ উল্লেখ করার মাধ্যমে স্ত্রী ও দাসী ছাড়া অন্য কেউ হারাম হওয়ার ব্যাপারে আয়াতটি সুস্পষ্ট। এরপরও আয়াতটিকে তাগিদ করতে গিয়ে আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন (ভাবানুবাদ): “যারা এর বাইরে কিছু কামনা করবে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।” সুতরাং স্ত্রী বা দাসী ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গ ব্যবহার করা বৈধ হবে না, হস্তমৈথুনও বৈধ হবে না। আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

— [ইমাম শাফেয়ি রচিত ‘কিতাবুল উম্ম’]

কোন কোন আলেম এ আয়াত দিয়ে দলিল দেন:

“যারা বিবাহে সক্ষম নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।”

— [সূরা নূর, আয়াত: ৩৩]

সালাফি ফকিহ সালিহ আল-মুনাজজিদের মতে, এ আয়াতে সংযমের নির্দেশ দেয়ার দাবী হচ্ছে– অন্য সবকিছু থেকে ধৈর্য ধারণ করা।

তবে ৪ মাঝহাবের বাকি তিন ইমামের মত ভিন্ন ছিল।

হাদিস

[সম্পাদনা]

সালাফি ফিকাহবিদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেন, আলেমগণ এ ব্যাপারে সাহাবী আব্দুল্লাহ্‌ বিন মাসউদ এর নিম্নোক্ত হাদিস দিয়ে দলিল দেন:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে আমরা এমন কিছু যুবকে ছিলাম যাদের কিছু ছিল না। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যার باءة (বিয়ের খরচ বহন ও শারীরিক সামর্থ্য) রয়েছে সে যেন বিয়ে করে ফেলে। কেননা, তা তার দৃষ্টি নিম্নগামী রাখতে ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করায় সহায়ক হয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন রোজা রাখে। কারণ তা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।”

— [সহীহ বুখারী (৫০৬৬)]

উক্ত আলেমদের মতে, "উক্ত হাদিসে নবী বিয়ে করতে অক্ষম হলে কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও রোযা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন, হস্তমৈথুন করার পরামর্শ দেননি। যদিও হস্তমৈথুনের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে, হস্তমৈথুন করা রোযা রাখার চেয়ে সহজ; কিন্তু তদুপরি তিনি সে অনুমতি দেননি।"[]


নবী (সাঃ) বললেন,

"নিশ্চয়ই আল্লাহর কিতাবে যা হালাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা হালাল আর আল্লাহর কিতাবে যা হারাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে তা হারাম।

আর যে সব বিষয়ে অনুল্লেখিত রয়েছে সেগুলো তার ভুলে যাওয়া নয়, সেগুলো তার ক্ষমা। সেগুলো নিয়ে তর্ক করো না।"

- আল বায়হাকি ১০/১২২ এবং দারে কুতনি ৪/১৯৯, ইবনে মাজাহ ৩৩৬৭[]

হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ

আন-নু'মান বিন বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, 'হালাল ও হারাম উভয় বিষয়ই স্পষ্ট, কিন্তু এর মাঝখানে সন্দেহজনক (সন্দেহজনক) বিষয় রয়েছে এবং অধিকাংশ লোকই এ সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না। সুতরাং যে ব্যক্তি এই সন্দেহজনক বিষয়গুলি থেকে নিজেকে রক্ষা করে সে তার দ্বীন ও সম্মান রক্ষা করে। আর যে ব্যক্তি এই সন্দেহজনক বিষয়গুলিতে লিপ্ত হয় সে যেন একজন রাখালের মতো যে অন্যের সীহিমা (ব্যক্তিগত চারণভূমি) কাছে (তার পশু) চরে বেড়ায় এবং যে কোনও মুহূর্তে সে তাতে প্রবেশ করতে পারে। (হে মানুষ!) সাবধান! প্রত্যেক রাজারই হিমা থাকে এবং পৃথিবীতে আল্লাহর হিমা হল তার অবৈধ (নিষিদ্ধ) জিনিস। সাবধান! শরীরে একটি মাংসের টুকরো আছে যদি তা সুস্থ (সংস্কারিত) হয় তাহলে পুরো শরীর সুস্থ হয়ে ওঠে, কিন্তু যদি তা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পুরো শরীর নষ্ট হয়ে যায় এবং তা হল হৃদয়।

— বুখারী ৫২, মুসলিম ১৫৯৯, তিরমিযী ১২০৫, আবু দাউদ ৩৩৩০, আহমদ ১৮৩৭৪, মিশকাত ২৭৬২, দারিমি ২৫৭৩, তারগিবে সহীহ ১৭৩১

আল-হাসান বিন 'আলী বলেন: "আমার মনে আছে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন: 'যা তোমাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে তা ত্যাগ করো যা তোমাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে না। সত্য প্রশান্তি আনে আর মিথ্যা সন্দেহের বীজ বপন করে।'"

— তিরমিযী ২৫১৮, এরওয়া (১২, ২০৭৪), আযিলাল (১৭৯), এবং রাউন নায়ের (১৫২) (গ্রেড: সহীহ)

ইবনে উমর (আল্লাহ্‌) বলেন, "আল্লাহর একজন বান্দা প্রকৃত তাকওয়া (তাকওয়া) অর্জন করতে পারে না যতক্ষণ না সে তার মনে সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।" "[]

— —সহীহ বুখারীঃ ৮

"সালমান আল-ফারিসি থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: "রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে ঘি, পনির এবং বন্য গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বললেন: 'যা হালাল তা-ই যা আল্লাহ তাঁর কিতাবে বৈধ করেছেন এবং যা হারাম তা-ই যা আল্লাহ তাঁর কিতাবে নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি যা সম্পর্কে নীরব ছিলেন তা হল ক্ষমাপ্রাপ্ত।'"

— ইবনে মাজাহ ৩৩৬৭, তিরমিযী ১৭২৬, গায়াতুল মারাম ২, ৩, মিশকাত ৪২২৮, সহীহ আল-জামি' ৩১৯৫, আল মু'জামুল কাবীর লিল তাবারানী ৬০৩৬, আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ২০২১৫ (গ্রেড: হাসান)

আবু সা’লাবাহ আল-কুশানী - জুরথুম বিন নাশির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা (ফরযীদ) নির্ধারণ করেছেন, তাই সেগুলোকে অবহেলা করো না; তিনি সীমা নির্ধারণ করেছেন, তাই সেগুলো লঙ্ঘন করো না; তিনি কিছু জিনিস নিষিদ্ধ করেছেন, তাই সেগুলো লঙ্ঘন করো না; এবং তিনি কিছু জিনিস সম্পর্কে নীরবতা অবলম্বন করেছেন, তোমাদের প্রতি করুণা থেকে, ভুলে যাওয়ার কারণে নয় - তাই সেগুলোর পিছনে তাড়া করো না।

— আদ-দারকুতনী: ৪/১৮৪, চল্লিশ হাদিস: ৩০, রিয়াদ আস-সালিহিন ১৮৩২, এবং বলেছেন যে দারাকুতনী তার সুনানে (৪:১৮৩-৮৪,

২৯৮) এটি লিপিবদ্ধ করেছেন। এছাড়াও হাকিম তার মুসতাদরাক (4:115, যাহাবী অনুসারে সহীহ), তাবরানী তার গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন মুজাম কবির (22:222), মুজাম আল-আওসাত (7:265-66 #7461, 8:381 #8938), এবং মুসনাদ শামিয়্যিন (#3483), এবং

বায়হাকী (সুনান, ১০:১২-১৩)। হায়থামী বলেছেন এটি সহীহ (মাজমা আয-জাওয়ায়েদ, 1:117)। গ্রেড: হাসান/যঈফ[]

আলেমদের অভিমত

[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেন, "হস্তমৈথুনের সাধারণ বিধান হল- তা হারাম। তবে যদি কেউ যিনায় লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কাবোধ করে তবে তার কথা ভিন্ন, সে ক্ষেত্রে জায়েয। মুহাম্মাদ ইবনে সালেহ আল-উসাইমিন বলেন, হস্তমৈথুনের বিষয়টি অধিক আলোচনার দাবি রাখে, হাত ব্যবহার করা হলে সে ক্ষেত্রে আপত্তি আছে, তবে সংক্ষেপে বলা যায়, হস্তমৈথুন কেবল তখনই বৈধ যখন কোনো ব্যক্তির যিনায় লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যিনাতে লিপ্ত হওয়ার আশংকা ব্যতিরেকে হাত ব্যবহার করা জায়েয হবে না।"[][]

ইউসুফ আল-কারযাভি তার ইসলামে হালাল ও হারামের বিধান বইয়ে বলেন, আহমদ বিন হাম্বল বলেছেন, ব্যভিচারের আশঙ্কা থালে হস্তমৈথুন অনুমদিত, তবে সর্বোত্তম হলো সুন্নাহসম্মত আমল রোজা রাখা, সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা উত্তম।

বাংলাদেশের ইসলামিক আলোচক আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছেন "হস্তমৈথুন সম্পর্কে হাদীসে সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি, যার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই, সেটি চুড়ান্ত হারাম"।

জাকির নায়েক বলেন, হস্তমৈথুন জিনার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না, এবং তার নিজস্ব মতে স্বাভাবিক অবস্থায় হস্তমৈথুন হারাম নয় বরং মাকরুহ অথবা অপছন্দনীয়, তবে তা স্বাভাবিকের তুলনায় বারবার করা হলে অথবা পর্নোগ্রাফির সাথে করা হলে তা হারাম।[১০]

আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া বলেন, হস্তমৈথুন স্বাভাবিকভাবে হারাম, এর থেকে বাচার সর্বোত্তম উপায় বিয়ে করা, আর অপারগ হলে রোজা রাখা, কিন্তু তা স্বাভাবিক জিনার সমতুল্য নয়, যা শরিয়তে শাস্তিযোগ্য, বরং একে ছোট জিনা বলা হয়। হস্তমৈথুন স্বাভাবিক অবস্থায় হারাম হলেও, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মতানুসারে, কেউ উস্কানিমূলকভাবে জিনা করতে বাধ্য করলে অথবা ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যভিচার করার উপক্রম হলে হস্তমৈথুন করে যদি তা থেকে বাঁচা যায়, আর কোন বিকল্প না থাকে, তবে তখন আল্লাহকে ভয় করে জিনা থেকে বাচার জন্য তা করা হলে সাময়িকভাবে আল্লাহ ব্যক্তির উদ্দেশ্য যাচাই করে হস্তমৈথুনকে জায়েজ বলে গণ্য করতে পারেন ও ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিতে পারেন, তবে তা কখনই সর্বাবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থায় জায়েজের আওতায় পড়বে না।[১১][১২]

ফকিহগণ হস্তমৈথুন প্রতিরোধে বিবাহ অক্ষম মুসলিম ব্যক্তিকে আল্লাহভীতি বৃদ্ধি করা ও আল্লাহর আদেশনিষেধ অধিক মেনে চলা, দ্রত বিবাহ করা, দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ, জীবন্ত কিংবা আঁকা উভয়প্রকার অশ্লীল দৃশ্যতে দৃষ্টিপাত হতে বিরত থাকা, রোজা রাখা, গায়রে মাহরামের সঙ্গ ত্যাগ, অসৎসঙ্গ ত্যাগ ও সৎসঙ্গ বৃদ্ধি, একাকি রাত্রিযাপন ত্যাগ, যৌনচিন্তা ত্যাগ, ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণময় চিন্তা বৃদ্ধি, হস্তমৈথুনের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া, শয়নের ইসলামী আদব অনুসরণ ও আল্লাহর কাছে ধের্য্য, সংযম ও সতীত্ব রক্ষার প্রার্থনা এবং ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এ কাজ করে ফেললে তওবা, ইস্তিগফার ও অধিক ভালো কাজ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।[] তবে হস্তমৈথুন নিয়ে কতক ইসলামী পণ্ডিতের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।[১৩] তাদের মতে, কুরআনে হস্তমৈথুন নিয়ে সরাসরি কিছু বলা হয় নি, এবং হস্তমৈথুন বিষয়ক বলে গণ্য হাদিসগুলোতে সরাসরি হস্তমৈথুনের কোন উল্লেখ না থাকায় তারা এ ব্যাপারে হাদিসগুলোর অবস্থান অনির্দিষ্ট ও অস্পষ্ট বলে মনে করেন, এ কারণে হস্তমৈথুন সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তাদের অভিমতে পার্থক্য রয়েছে। আদদিন-তারবিয়াহ অবিবাহিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সকল প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের পরও আত্মনিয়ন্ত্রণে পূর্ণ অপারগ হয়ে ব্যভিচারের আশঙ্কা থাকলে ব্যভিচারের বিকল্প হিসেবে এর অনুমতি দিয়েছেন।[১৪] হানাফি ও হাম্বলি মাজহাব অনুসারে, বৈধ যৌনসঙ্গীর অভাবে সমস্যায় ভুগছেন এমন নারী পুরুষ, মুসাফির ও বন্দীদের জন্য ব্যভিচারের ন্যায় তুলনামুলক বড় পাপ থেকে বেঁচে থাকার প্রয়োজনের ক্ষেত্রে তা বৈধ।[১৫] আবার শাফেয়ী, মালেকি মাজহাব ও শিয়া আইনে এটি সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। সালাফি অভিমত অনুসারে তা সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ এবং সালাফি আলেমগণ ক্ষেত্রবিশেষে হস্তমৈথুন বৈধ হওয়া বিষয়ক মতবাদকে বিভ্রান্তিমূলক দাবি করে এর কঠোর বিরোধিতা করে থাকেন, তাদের মতে, হস্তমৈথুন ত্যাগে অন্যতম করণনীয় হল "ভুল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পরিতুষ্টি দূর করা। কারণ কিছু কিছু যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার ধুয়া তুলে এই কু-অভ্যাসকে জায়েয মনে করে। অথচ হতে পারে সে যুবক ব্যভিচার ও সমকামিতার নিকটবর্তী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই"। [] পূর্ব থেকেই একটি অভিমত প্রচলিত ছিল যে, ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে বিকল্প হিসেবে হস্তমৈথুনের অণুমতি দেয়া যেতে পারে।[১৬] প্রাথমিক ইসলামী যুগের কিছু ইসলামী পণ্ডিত এর সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধতার বিষয়ে একমত পোষণ করেন নি। স্বল্পসংখ্যক ফিকহবিদগণ যারা বিবেচনাস্বাপেক্ষে হস্তমৈথুনের অনুমোদন দাবি করেন, তারা হস্তমৈথুনকারীদের মধ্যে যারা নিজ সতীত্ব রক্ষার জন্য হস্তমৈথুন করে এবং যারা সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও আকাঙ্ক্ষাকে তৃপ্ত করতে হস্তমৈথুন করে, তাদের উভয়কে আলাদা দৃষ্টিতে বিচার করে থাকেন।[১৩][১৭]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "(24:33) An-Nur | (২৪:৩৩) আন-নূর এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২১ 
  2. "হস্তমৈথুন | যুব-সমস্যা ও তার শরয়ী সমাধান"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২১ 
  3. "হস্তমৈথুন"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২১ 
  4. "Ruling on masturbation and how to cure the problem - Islam Question & Answer"islamqa.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  5. "সুনান ইবনু মাজাহ | হাদিস: ৩৩৬৭ [ ]"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৫ 
  6. قَالَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يَبْلُغُ الْعَبْدُ حَقِيقَةَ التَّقْوَى حَتَّى يَدَعَ مَا حَاكَ فِي الصَّدْرِ
  7. ash-Shaghouri, Ibrahim Muhammad Hakim (মার্চ ২০০৯)। Durkee, Hajja Noura, সম্পাদক। The Defense of the Sunnah: An Analysis of the Theory and Practices Of Tasawwuf (Sufism)। Muftisays.com। পৃষ্ঠা 102। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২৪ 
  8. "ইন্টারনেটে স্ত্রীর সাথে চ্যাট করে তৃপ্ত হওয়া - ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব"Islam-QA। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫ 
  9. সালিহ আল মুনাজ্জিদ, মুহাম্মদ; আহমেদো, সানাউল্লাহ নজির; যাকারিয়া, আবু বকর মুহাম্মাদ। স্ত্রীর সাথে ইন্টারনেটে চ্যাট করে পুলকিত হওয়া প্রসঙ্গে (পিডিএফ)। ইসলামহাউজ ডট কম। পৃষ্ঠা ১। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫ 
  10. "Masturbation is not Haraam or Sinful but Makrooh and Discouraged in Islam - Dr Zakir Naik"। জাকির নায়েক দাপ্তরিক ইউটিউব পাতা। ১৭ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০২৫ 
  11. "হস্তমৈথুন করা কি জায়েজ? #abubakarzakaria #সালাফী_মানহাজ #salafimanhaz #shorts" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৫ 
  12. "প্রশ্ন : হস্তমৈথুনের বিধান? শাইখ প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৫ 
  13. Omar, Sara। "Oxford Islamic Studies Online" (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। 
  14. Islam, Gender, and Social Change - Page 28, Yvonne Yazbeck Haddad, John L. Esposito - 1998
  15. The New Arab Man: Emergent Masculinities, Technologies, and Islam in the Middle East, p 168, Marcia C.: Inhorn - 2012
  16. Inhorn, Marcia (২০০৭)। "Masturbation, Semen Collection and Men's IVF Experiences: Anxieties in"। Body & Society (ইংরেজি ভাষায়)। 13 (37)। 
  17. http://www.abdurrazzaqbinyousuf.com/?p=372 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে (ইংরেজি ভাষায়)