লেস অ্যামিস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লেস অ্যামিস
আনুমানিক ১৯৩০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে লেস অ্যামিস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলেসলি ইথেলবার্ট জর্জ অ্যামিস
জন্ম(১৯০৫-১২-০৩)৩ ডিসেম্বর ১৯০৫
এলহাম, কেন্ট, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০(1990-02-27) (বয়স ৮৪)
ক্যান্টারবারি, কেন্ট, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৪৪)
১৭ আগস্ট ১৯২৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩ মার্চ ১৯৩৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৬-১৯৫১কেন্ট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৭ ৫৯৩
রানের সংখ্যা ২,৪৩৪ ৩৭,২৪৮
ব্যাটিং গড় ৪০.৫৬ ৪৩.৫১
১০০/৫০ ৮/৭ ১০২/১৭৬
সর্বোচ্চ রান ১৪৯ ২৯৫
বল করেছে ১,৩৮৩
উইকেট ২৪
বোলিং গড় ৩৩.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/২৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭৪/২৩ ৭০৩/৪১৮
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ আগস্ট ২০১৬

লেসলি ইথেলবার্ট জর্জ অ্যামিস, সিবিই (ইংরেজি: Les Ames; জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৯০৫ - মৃত্যু: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০) কেন্টের ইলহামে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংসহ লেগ ব্রেক বোলিং করতেন লেস অ্যামিস। ১৯৯১ সালে তার প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, তিনি সর্বকালের সেরা উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

নিজ গ্রাম ইলহামে জন্মগ্রহণকারী সাবেক কাউন্টি খেলোয়াড় এফ এ ম্যাককিননের অনুপ্রেরণায় ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটান। ফোকস্টোনের হার্ভে গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন শেষে তৎকালীন কাউন্টি কোচ জেরি উইগলের কাছ থেকে উইকেট-রক্ষণে শিক্ষা নেন। এরফলে খুব সহজেই কাউন্টি ক্রিকেটে অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলার সুযোগ লাভ করেন।[১]

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

ওয়েস্ট মলিংয়ে খেলতে থাকাবস্থায় কেন্টের পক্ষ থেকে খেলার জন্য আমন্ত্রণ বার্তা পান। রয়্যাল টানব্রিজ ওয়েলসের নেভিল গ্রাউন্ডে ৭ জুলাই, ১৯২৬ তারিখে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে তার অভিষেক ঘটে। ঐ খেলায় নিয়মিত উইকেট-রক্ষক জ্যাক হাবল থাকলেও তিনি ৩৫ রানসহ ৪টি ক্যাচ নেন। ঐ মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি আরও একটি খেলায় অংশ নেন। এরপর ১৯২৭ মৌসুম থেকে দলের নিয়মিত সদস্য মনোনীত হন।[২]

১৯২৮-২৯ মৌসুম থেকে ১৯৩৮-৩৯ মৌসুম পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[৩][৪] এ সময়ে তিনি এমসিসি দলের সদস্যরূপে ১৯২৮-২৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া; ১৯২৯-৩০ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ; ১৯৩২-৩৩ ও ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এবং ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯২৮-২৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। কেবলমাত্র বেশ কয়েকটি রাজ্য দলের বিপক্ষে খেলেন। অতঃপর ১৭ আগস্ট, ১৯২৯ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত ৫ম টেস্টে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। খেলায় তিনি শূন্য রান সংগ্রহ করেন ও ২টি ক্যাচ নেন।[৫] ইংল্যান্ডের পক্ষে ২৪৪তম ক্যাপ লাভ করেন তিনি।[৬]

অ্যামিস তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪৭ টেস্টে অংশ নিয়ে ৪০.৫৬ গড়ে ২,৪৩৪ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ৭৪ ক্যাচসহ ২৩ স্ট্যাম্পিং করেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৩.৫১ গড়ে ৩৭,২৪৮ রান করেন। তন্মধ্যে, ১০২টি সেঞ্চুরি ও ১৭৬টি অর্ধ-শতক ছিল। উইকেট-রক্ষণের বাইরে প্রায় দুই শতাধিক ওভার বোলিং করে ৩৩.৩৭ গড়ে ২৪টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান।

১৯৩৫ সালে সর্বশেষ ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই টেস্টে শতাধিক রান করেন। পরবর্তীতে প্রায় সত্তর বছর পর ২০০৫ সালে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে ইয়ান বেল তার এ রেকর্ডের সাথে সম্পৃক্ত হন। এছাড়াও, ঐ অধিবেশনে ১২৩ রান তোলেন যা টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক রান সংগ্রহের রেকর্ড। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৮ম উইকেট জুটিতে গাবি অ্যালেনের সাথে ২৪৬ রানের জুটি গড়েন। ১৯৩১ সালে লর্ডসে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ রেকর্ডটি পরবর্তীকালে ২৮ আগস্ট, ২০১০ তারিখে জোনাথন ট্রট - স্টুয়ার্ট ব্রড পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ৪র্থ টেস্টে ৩৩২ রানের নতুন রেকর্ড গড়েন।

১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অগৌরবজনক বডিলাইন সফরে উইকেট-রক্ষক ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবন বাঁধাগ্রস্ত হয়। বিশ্বযুদ্ধকালীন তিনি রয়্যাল এয়ার ফোর্সে স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন। যুদ্ধের পর তিনি পুনরায় কেন্টের পক্ষে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন।

অর্জনসমূহ[সম্পাদনা]

লেস অ্যামিসের স্থিরচিত্র

আইসিসি টেস্ট প্লেয়ার ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬ জুলাই, ১৯৩৪ তারিখে সর্বোচ্চ ৬১৯ রেটিংধারী ছিলেন।[৭] ১৪ মার্চ, ১৯৩৫ তারিখে তার সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্ক ছিল ৭ম। ১৯২৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[৮]

মাত্র দুইজন উইকেট-রক্ষকের একজন হিসেবে এক মৌসুমে এক হাজার বা ততোধিক রান ও একশত বা ততোধিক ডিসমিসালের ‘উইকেট-রক্ষকের ডাবলে’ স্বীয় নামকে সমুজ্জ্বল করে রেখেছেন স্ব-মহিমায়। তিনি তিনবার ও জন মারে একবার এ কৃতিত্ব প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখিয়েছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Close of Play by Les Ames – Published in 1953 by Stanley Paul
  2. Cricketer of my time – Heroes to Remember by E W Swanton আইএসবিএন ০-২৩৩-৯৯৯৪০-X
  3. ACS (১৯৮২)। A Guide to First-Class Cricket Matches Played in the British Isles। Nottingham: ACS। 
  4. "Marylebone Cricket Club Players"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. Kent Cricket Archive – cricketarchive.com/Kent/index.html
  6. "England Players – Test Caps"ESPNCricinfo 
  7. "Les Ames – Test Championship Batting Rankings"। ICC। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১২ 
  8. "Wisden Cricketers of the Year" (English ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]