মার্ক ল্যাথওয়েল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মার্ক ল্যাথওয়েল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমার্ক নিকোলাস ল্যাথওয়েল
জন্ম (1971-12-26) ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (বয়স ৫২)
ব্লেচলি, বাকিংহামশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামলেদার্স, রোডি, ট্রাফ
উচ্চতা৫ ফুট ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাশীর্ষসারির ব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৬২)
১ জুলাই ১৯৯৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২২ জুলাই ১৯৯৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯০ - ২০০১সমারসেট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৫৬ ১৬৭
রানের সংখ্যা ৭৮ ৮,৭২৭ ৪,৪০৯
ব্যাটিং গড় ১৯.৫০ ৩৩.৪৩ ২৮.২৬
১০০/৫০ ০/০ ১২/৫৭ ৫/২৬
সর্বোচ্চ রান ৩৩ ২০৬ ১২১
বল করেছে ১,১৪৪ ২৩৫
উইকেট ১৩
বোলিং গড় ৫৫.৪৬ ১৯৩.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২১ ১/২৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০৫/– ৪৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ জানুয়ারি ২০২১

মার্ক নিকোলাস ল্যাথওয়েল (ইংরেজি: Mark Lathwell; জন্ম: ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১) বাকিংহামশায়ারের ব্লেচলি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘লেদার্স’ ডাকনামে পরিচিত মার্ক ল্যাথওয়েল

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

মিল্টন কেইন্সের ব্লেচলি এলাকায় মার্ক ল্যাথওয়েলের জন্ম। ব্রন্টন কমিউনিটি কলেজে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। ১৯৯০ সালে আঠারো বছর বয়সে সমারসেট দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। গ্ল্যামারগন দ্বিতীয় একাদশের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত সীমিত ওভারের খেলায় তিনি প্রথম অংশ নেন। ব্যাট হাতে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ও সাত ওভার বোলিং করে ২৫ রান খরচ করেন।[১] এরপর প্রতিনিধিত্বমূলক তিন-দিনের খেলায় অংশ নেন তিনি। ১৭ ও ১০ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি। ঐ খেলায় সমারসেট বিশাল ব্যবধানে পরাভূত হয়।

জুন, ১৯৯০ সালে সাসেক্স দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। এ সময়েই তিনি সকলের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হন। ১৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে নিক প্রিঙ্গলের সাথে ২৩৫ রানের জুটি গড়েন। সাসেক্সের প্রথম ইনিংসে এক উইকেটে ইনিংস ঘোষণা করে ও তিনি ঐ উইকেটটি পান। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৩৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন।[২] এরপর, লিচেস্টারশায়ার দ্বিতীয় একাদশের বিপক্ষে খেলায় তিনি ৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পরবর্তীতে, সফররত শ্রীলঙ্কান একাদশের বিপক্ষে লিস্ট এ খেলায় অভিষেক হয় তার ও তিনি সাত ওভার বোলিং করেছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মার্ক ল্যাথওয়েলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের পুরোটা সময়ই সমারসেট দলে অতিবাহিত করেছেন। শক্তিশালী কব্জির মোচড়ের অধিকারী ও সহজাত ব্যাটসম্যান ছিলেন মার্ক ল্যাথওয়েল। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে তার মাঝে বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতার লক্ষণ দেখা যায়। কিন্তু, পরবর্তীকালে এ ধারাকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বব কটাম তাকে তার দেখা সর্বাপেক্ষা উদীয়মান খেলোয়াড় হিসেবে চিত্রিত করেছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে ইংল্যান্ডের এ দলের সদস্যরূপে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন।

১৯৯১ সালের শুরুতে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি মাত্র দুই রান করে রান আউটের শিকার হন। সাসেক্সের বিপক্ষে পূর্ববর্তী গ্রীষ্মে আশাতীত ভালো খেলা উপহার দিয়েছিলেন তিনি। ঐ গ্রীষ্মে আট অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন।[৩] এরপর, সমারসেটের প্রথম একাদশের পক্ষে প্রথমবারের মতো ৪০-ওভারের প্রতিযোগিতায় খেলেন। মৌসুমের শেষদিকে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ইংল্যান্ডের ইয়ং ক্রিকেটার্সদের সদস্যরূপে অস্ট্রেলীয় ইয়ং ক্রিকেটার্সদের বিপক্ষে দুইটি যুবদের ওডিআই ও তিনটি টেস্ট খেলেন। ৩২.৭৫ গড়ে ২৬২ রান তুলেন। সর্বোচ্চ করেন ৬৬ রান।[৪]

১৯৯২ সালে মার্ক ল্যাথওয়েল দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলেন। তবে, প্রথম একাদশের পক্ষে একদিনের ক্রিকেটে অংশ নিতে শুরু করেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুইটি খেলায় ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় খেলায় ৫২ রান তুলেছিলেন। ঐ মৌসুমে সানডে লীগে কেন্টের বিপক্ষে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। খেলায় তার দল ৪ উইকেটে জয় পায়। দুই দিন পর আবারও বেনসন এন্ড হেজেস কাপে কেন্টের মুখোমুখি হয়। অপ্রত্যাশিতভাবে নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি ও খেলায় তার দল শোচনীয়ভাবে পরাভূত হয়।[৫] দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে আরও একটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেললে তাকে মৌসুমের বাদ-বাকী সময়ে কার্যত প্রথম একাদশে রাখা হয়। অভিষেক মৌসুমটি চমৎকারভাবে অতিবাহিত করেন। এগারোটি অর্ধ-শতরানের ইনিংসসহ সারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১১৪ রানের শতরান হাঁকান। তবে, মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে উপর্যুপরী ১, ২, ৩, ০ ও ৪ রান তুলে রান খরায় ভুগেন। তাসত্ত্বেও, ঐ ইনিংসগুলোর মাঝে ৪৫ ও ৭২ রান তুলেছিলেন। ঐ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মানানসই ৩৬.৭৫ গড়ে রান তুলতে সক্ষম হন।[৬] ক্রমেই তিনি প্রতিষ্ঠিত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ও মাঝে-মধ্যে বোলার হিসেবেও ভূমিকা রাখতেন। ঐ মৌসুমে একটি উইকেটও লাভ করেন তিনি। লিস্ট এ ক্রিকেটেও ভালো করেন। তবে, কোন রানকেই তিন অঙ্কে নিতে পারেননি। ৮৫, ৯৩ ও ৯৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[৭] এর স্বীকৃতিস্বরূপ সমারসেটের পক্ষ থেকে কাউন্টি ক্যাপ লাভের অধিকারী হন। তাকে অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে ইংল্যান্ড এ দলের পক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

১৯৯৩ সালের শেষে তাকে ক্রিকেট রাইটার্স কর্তৃক বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত করা হয়। তবে, ঐ মৌসুমের শীতকালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এ দলের সফরে বেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হন। মাত্র ১৭ গড়ে রান তুলতে পেরেছিলেন তিনি। পরবর্তী মৌসুমগুলোয় তার মাঝে আত্মবিশ্বাসের অভাব লক্ষ্য করা যায়। ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে সমারসেট দলে তার অবস্থান বেশ টালমাটাল হয়ে পড়ে। তার ব্যাটিং কৌশলেও নিম্নতর ভাব পরিলক্ষিত হওয়াসহ ১৯৯৯ ও ২০০০ সালের অধিকাংশ সময় আঘাতের কারণে মাঠের বাইরে থাকতে হয়। ২০০১ সালে ৩৫.১০ গড়ে ৭০২ রান তুলে পুনরায় খেলার জগতে ফিরে আসেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মার্ক ল্যাথওয়েল। সবগুলো টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১ জুলাই, ১৯৯৩ তারিখে নটিংহামে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২২ জুলাই, ১৯৯৩ তারিখে লিডসে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়ার কাছে বেশ নাকানিচুবানি খায়। ১ জুলাই, ১৯৯৩ তারিখে ট্রেন্ট ব্রিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। প্রথম ইনিংসে ২০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ রান তুলেন তিনি। শুরুটা তুলনামূলকভাবে ভালো করায় হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও তাকে রাখা হয়। প্রথম ইনিংসে তৃতীয় বলেই বিদেয় নেন ও দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ ধীরলয়ে ২৫ রান তুলে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন।

প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখলেও তাকে আর জাতীয় দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অধিকাংশ ক্রিকেটবোদ্ধাদের ধারণা ছিল যে, তাকে হয়তোবা দলে ফিরিয়ে আনা হবে ও অভিজ্ঞতায় পুষ্ট করতে সহায়তা করবে। ২০০১ সালে পরিবারে অধিক সময় দেয়ার লক্ষ্যে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Glamorgan Second XI v Somerset Second XI, 1990-05-15, CricketArchive. Retrieved on 6 August 2008.
  2. Sussex Second XI v Somerset Second XI, 1990-06-29, CricketArchive. Retrieved on 6 August 2008.
  3. Summary of Lathwell's performances for Somerset Second XI, 1991, CricketArchive. Retrieved on 6 August 2008.
  4. Summary of Lathwell's performances for England Young Cricketers, CricketArchive. Retrieved on 6 August 2008.
  5. Kent v Somerset in 1992, 1992-04-21, CricketArchive. Retrieved on 7 August 2008.
  6. Lathwell in first-class cricket in 1992, CricketArchive. Retrieved on 7 August 2008.
  7. Lathwell in List A matches in 1992, Crit JulycketArchive. Retrieved on 7 August 2008.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]