মাগুরা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা
ধরন | এমপিও ভুক্ত |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৩৯/০৭/০১ |
প্রতিষ্ঠাতা | পীর খন্দকার আব্দুল হামিদ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (২০০৬- ২০১৬) ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান) |
অধ্যক্ষ | মুফতি মোহাম্মদ ওবাইয়দুল্লাহ |
পরিচালক | মো.সাজ্জাদ হোসেন |
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তি | বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড |
অবস্থান | , , |
EIIN সংখ্যা | ১১৭৯৭২ |
ওয়েবসাইট | http://117972.ebmeb.gov.bd/ |
মাগুরা সিদ্দীকিয়া কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসা খুলনা বিভাগের মাগুরা জেলার একটি উল্লেখযোগ্য আলিয়া কামিল মাদ্রাসা।[১] এটি ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত অনার্স মাদ্রাসার বিশেষ মর্যাদা লাভ করে।[২] এটি ১৯৩৯ সালে মাগুরা জেলার সদর উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো।[৩][৪] মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মুফতি মোহাম্মদ ওবাইয়দুল্লাহ এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নাম মো.সাজ্জাদ হোসেন।[৫] বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায় ইবতেদায়ী থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় কামিল পর্যন্ত সব শ্রেণী এই মাদ্রাসায় রয়েছে। ফলাফলের দিক থেকে এটি খুলনা বিভাগের মধ্যে সুনাম অর্জন করেছে।[৬]
প্রতিষ্ঠা
[সম্পাদনা]১লা জুলাই ১৯৩৯
১৯৩৯ সালে মাগুরা জেলার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের নিয়ে পীর আলহাজ্জ খন্দকার আব্দুল হামিদ (রহ.) এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ধীরে ধীরে মাদ্রাসাটিতে দাখিল ও আলিম সেকশন চালু করা হয়। পরবর্তীতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি ও পড়াশোনার মানোন্নয়ন হলে এটিতে ফাজিল ও কামিল সেকশন চালু করা হয়।
১৯৩৯ সাল । অমুসলিম নেতৃত্বের ভ্রান্তি এবং বেদনা দায়ক পদস্খলনের কারণে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব তখন বৃটিশ সাম্রাজ্য বাদের ভয়াবহ পরাধীনতার শৃংখলে বিপর্যন্ত ও বিদ্ধস্ত । পাক ভারত উপমহাদেশে ২৫০ বছরের মর্মন্তদ পরাধীনতার কবলে খৃষ্টীয় ইংরেজ এবং তাদের পদলেহী চানক্য ভ্রাহ্মাণ্যবাদীদের মৌন ষড়যন্ত্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের চিত্রানামের পূর্বে 'শ্রী' সংযুক্ত, ধুতি পরা লক্ষ্মী ও মনষা পুজায় অভ্যস্ত একটি কিম্ভুতকিমাকর মানব সমাজ। দিক দশর্ন হীন ঐতিহ্য বিস্মৃত সর্বহারা এ মুসলিম সমাজকে আল কুরআন ও আল হাদীসের শিক্ষার আলোকে জাগ্রত করে প্রকৃত ইসলাম অনুসারী আল্লাহর বান্দা তৈরী করার এক পবিত্র মিশন নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দেদে জামান আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ সূফী আবু বকর সিদ্দীকী অল কুরাইশী (র:) । দৃঢ় ইমানী প্রত্যয় ও আল্লাহ প্রদত্ত এক অলৌকিক রূহানী শক্তি দিয়ে গড়ে তুলেন তারই স্বীয় রূহানী শক্তি সম্পন্ন একটি বিরাট কাফেলা। “মাগুরার হাজী সাহেব হুজুর" (র:) নামে খ্যাত সর্বজন শ্রদ্বেয় প্রিয় মুর্শিদ আল হাজ্জ শাহ সূফী খন্দকার আব্দুল হামীদ (র:) এই পবিত্র কাফেলার একজন সুযোগ সদস্য এবং মুজাদ্দেদে জামান আবু বকর সিদ্দীকী অল কুরাইশী (র:) এর রূহানী ফায়েজ প্রাপ্ত প্রিয় খলিফা । প্রিয় মুর্শিদের স্মৃতিকে পৃথিবীতে চির অম্লান করে রাখার জন্য সেই ১৯৩৯সালেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন স্বীয় মুর্শিদের নামে "সিদ্দীকিয়া মাদরাসা”। কালক্রমে মাগুরা সিদ্দীকিয়া ওল্ড স্কীম মাদরাসা। বর্তমানে সেই প্রতিষ্ঠানেই পূর্ণাঙ্গ রূপ মাগুরা সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা।হাজী সাহেব হুজুর (র:) মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করবেন, দোয়া ও বরকত লাভের উদ্দেশ্যে মাগুরা থেকে তিনখানা ইট নিয়ে ফুরফুরা শরীফে গমন করেন। তখন মুজাদ্দীদে জামান আর ইহজগতে নেই। তিন খানা ইট নিয়ে তিনি তার বড় সাহেব জাদা শাহ সূফী আঃ হাই সিদ্দীকি এর মাধ্যমে পীর আম্মার নিকট থেকে দোয়া করিয়ে উহার একখানা দ্বারা মাদরাসার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন যা আজও স্বমহিমায় বিধ্যমান।
বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত
[সম্পাদনা]২০০৬ সালের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী আইন, ২০০৬ মোতাবেক আলিয়া মাদ্রাসার ফাযিল (স্নাতক ডিগ্রি) ৩ বছর এবং কামিল (স্নাতকোত্তর) ২ বছর মোট ৫ বছরের কোর্স চালু হয় এবং বাংলাদেশের ১,০৮৬টি ফাযিল (স্নাতক) ও ১৯৮টি কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।[৮] এরফলে এই মাদ্রাসাটিও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়। এরপরে ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে,[৯] মাদ্রাসাটি আরো ২১টি মাদ্রাসার সাথে অনার্স ডিগ্রির অন্তর্ভুক্ত হয়।[১০]
শিক্ষা কার্যক্রম
[সম্পাদনা]মাদ্রাসাটিতে ইবতেদায়ী থেকে শুরু করে আলিয়া মাদ্রাসার সর্বোচ্চ পর্যায় কামিল শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে। এই মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক উভয় শাখা রয়েছে। এবং ফাজিল ও পর্যায়ে আল কুরআন ও ইসলামি অধ্যয়ন, আল হাদিস ও ইসলামি অধ্যয়ন, দাওয়াহ প্রভৃতি বিভাগ চালু আছে।[২] এছাড়াও কামিল পর্যায়ে আল কুরআন ও আল হাদিস নিয়ে উচ্চ পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
সুযোগ-সুবিধা
[সম্পাদনা]এই মাদ্রাসা আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি মাদ্রাসা। ছাত্রদের খেলার মাঠ, পড়াশোনার জন্য লাইব্রেরী, মেয়েদের অবসর কাটানোর জন্য কমন রুম সহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।
খেলার মাঠ
[সম্পাদনা]মাদ্রাসার চারিদিকে দেয়ালের মাঝখানে শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য সুবিশাল মাঠ রয়েছে। এখানে অবসর সময়ে ও পাঠদান শেষে মাদ্রাসার ছাত্ররা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখানে খেলা-ধুলা করে থাকে। এই মাদ্রাসার ছাত্ররা খেলা-ধুলায় অগ্রগণ্য। বেশিরভাগ সময় ছাত্ররা ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল খেলে থাকে। প্রতিবছর মাদ্রাসাটিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।[১১]
গ্রন্থাগার
[সম্পাদনা]মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত লাইব্রেরী রয়েছে। দাখিল থেকে শুরু করে কামিল পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বই ধার নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। ফাজিল ও কামিল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উচ্চতর গবেষণাধর্মী বই রয়েছে।
বিজ্ঞানাগার
[সম্পাদনা]মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের গবেষণা ও ল্যাব ক্লাস করার জন্য মাদ্রাসায় বিজ্ঞানানার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে ছাত্ররা পাঠদান সময়ে ও অবসর সময়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে।
- মৌজা নং-৯৬ (মাগুরা)
- বোড কোর্ড- ১৬১৩৩
- MPO- 5701012401
- Eiin - 117972 ২৭৫
- হোল্ডিং নং ৩/গজ Road
- মোট জমি- ১০একর ৭৯ শতক
- ক্যাম্পাস- ১.৫২ একর
- অন্যত্র- ৯.২৭ একর
- মোট ভবন- ৭টি
- কম্পিউটার - ৫টি
- লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা- ৩০০০টি
- ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা- ২২০০ জন
- Email-maskm06@gmail.com
দাখিল | ০১/০৬/১৯৪৯ | ০১/০৬/১৯৮৬ |
আলিম | ০১/০৬/১৯৮৪ | ০১/০৬/১৯৮৬ |
ফাযিল | ০১/০৮/১৯৯৪ | ০১/০৮/১৯৯৪ |
কামিল | ০১/০৭/১৯৯৬ | ০১/০৫/২০০২ |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Magura Siddiquia Kamil Madrasah - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ ক খ News, Magura (২০১৬-১১-১৮)। "মাগুরা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালুর অনুমতি"। Magura News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ "মাগুরা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী | জাতীয়"। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ zahid (২০২২-০৭-১১)। "মাগুরা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার ৮০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপন"। মাগুরা প্রতিদিন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Solution, Expert IT। "মাগুরা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী"। cni24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ "মাগুরা জেলার শীর্ষে বিহারী লাল কলেজ"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ মো.মামুনার, রশীদ। ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে পীর খন্দকার আব্দুল হামীদ (রহ.) এর অবদান (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.ফিল ডিগ্রীর জন্য উপস্থাপিত)।
- ↑ "আলিয়া মাদরাসার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ"। lekhapora24.net। ২০২১-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৭।
- ↑ "মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে প্রত্যাশা"। SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১০।
- ↑ "অনার্স কোর্স চালু হচ্ছে আরও ২১ মাদ্রাসায়"। Bangla Tribune। ২০২১-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৬।
- ↑ কক্ষ, বার্তা। "ঝিনাইদহে সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রিড়া ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত"। Torrongo News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২৪।
- ↑ ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে পীর খন্দকার আব্দুল হামীদ (রহ.) এর অবদান (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.ফিল ডিগ্রীর জন্য উপস্থাপিত)।
- ↑ ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশে পীর খন্দকার আব্দুল হামীদ (রহ.) এর অবদান (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.ফিল ডিগ্রীর জন্য উপস্থাপিত)।