ভারাণ ভাই গুরদাশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভরণ ভাই গুরদাশ
ਵਾਰਾਂ ਭਾਈ ਗੁਰਦਾਸ
১৮শ বা ১৯শ শতকের ভরণ ভাই গুরদাশের একটি ম্যানুস্ক্রিপ্টের ফোলিও
তথ্য
ধর্মশিখধর্ম
রচয়িতাভাই গুরদাশ
যুগআনুমানিক ১৬শ শতকের শেষ দিকে
অধ্যায়৪০ vaar

ভারাণ ভাই গুরদাশ (গুরুমুখী: ਵਾਰਾਂ ਭਾਈ ਗੁਰਦਾਸ; ভারাম ভাই গুরাদাশা; অর্থ: "ভাই গুরদাশের চারণগীতি"), যা ভারাণ জ্ঞান রাত্নাভালি (পাঞ্জাবি: ਵਾਰ ਗਿਆਨ ਰਤਨਾਵਲੀ, প্রতিবর্ণী. ভারা গিয়ানা রাতানাভালি, অনুবাদ 'জ্ঞানের রত্নের চারণগীতি'),[১] নামেও পরিচিত, হলো ৪০টি ভারের একটি সংকলন যা ঐতিহ্যগতভাবে ভাই গুরদাশ রচিত বলে গণ্য করা হয়।[২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পটভূমি[সম্পাদনা]

ভাই গুরুদাস ছিলেন গুরু অর্জন দেবের মাতা মাতা ভানির চাচাতো ভাই। তিনি ছিলেন গুরু গ্রন্থ সাহিবের প্রথম লেখক এবং প্রখ্যাত খ্যাতিসম্পন্ন পণ্ডিত। তার কাজ থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে তিনি বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা আয়ত্ত্ব করেছিলেন এবং বহু প্রাচীন ভারতীয় ধর্মীয় শাস্ত্র অধ্যয়ন করেছিলেন। কথিত আছে যে, গুরু অর্জন তাকে গুরু নানকের জীবনী বর্ণনা ও সাহিত্যের একটি প্রামাণিক কাজ সম্পূর্ণ করার অনুরোধ করায় গুরুদাস প্রথম গাঁথা লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।[১]

গুরু অর্জন আমাকে আদেশ করলেন

৪০টি ভার রচনা করতে

যাতে আমার উপর শান্তি নেমে আসে।

— ভাই গুরুদাস ভাল্লা, গুরবিলাস পাতশাহী ছেভিন (১৭১৮)[১]

সংকলন[সম্পাদনা]

ভাই গুরুদাস ১৬শ শতকের শেষের দিকে গাঁথাটি রচনা করেন।[৪] তিনি এটি সংকলন করার সময় বাবা বুদ্ধের (যিনি গুরু নানকের জীবদ্দশায় তার পাশে ছিলেন, তখন জীবিত ছিলেন) সাথে পরামর্শ করেননি।[৩]

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

শিরোনাম[সম্পাদনা]

১৭৮২ সালের একটি পাণ্ডুলিপিতে দেওয়া রচনাটির সম্পূর্ণ শিরোনাম হলো:ভারাণ গিয়ান রত্নাবলী ভাই গুরদাস ভাল্লে কা বোলান, যার অর্থ "গাঁথা [শিরোনাম করা] গিয়ান রত্নাবলী। এইভাবে ভাই গুরদাস ভাল্লা কথা বলেছেন।"[১] আরেকটি পাণ্ডুলিপি (কমপক্ষে ১৭৩২ বা তার আগের প্রকাশণা) শিরোনাম করা হয়েছে এইভাবে: বাণী ভাই গুরুদাস ভাল্লে জি কি। ভারাণ।[১] একটি শিরোনামের অংশ হিসাবে গিয়ান রত্নাবলী শব্দগুলি সাহিত্যের সম্পূর্ণতা বর্ণনা করার জন্য শিরোনামের অংশ না হয়ে চল্লিশটি গাঁথার প্রথমটিতে একবার মাত্র প্রযোজ্য হতে পারে।[১] মূলত, কাজের সমগ্রতাকে কেবল ভারাণ বলা হয়েছিল।[১] শিরোমানি গুরুদ্বার পারবান্ধক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে তার রচনাটির প্রকাশনার নাম দিয়েছে ভারাণ জ্ঞান রাত্নাভালি[১]

গঠন[সম্পাদনা]

ভারাণ ভাই গুরদাশের ৪০টি অধ্যায়ের প্রতিটি ভিন্ন সংখ্যক পাউরিস (ভাগ, খণ্ড) নিয়ে গঠিত। সংকলনটির পুরো বিবরণের বক্তব্য ধারাভাষ্য আকারে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে যা শিখ ধর্মতত্ত্ব, বিশ্বাস ও নীতির আলোকে গুরুদের দেয়া রূপরেখায় বিধৃত। এতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে শিখ পরিভাষাসমূহের, যেমন সনগত, হউমাই, গুণ, গুরমুখ এবং মানমুখ, সাত, নাম প্রভৃতি। শিখধর্মের অসংখ্য আদর্শ ও নীতি সাধারণ পরিভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন ভাই গুরদাশ এবং সময়ে সময়ে বিভিন্ন উপায়ে।

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

ভাই মানি সিংয়ের মতে, রচনার প্রথম গাঁথাটিই গুরু নানকের জীবনকে উজ্জেবিত করে একমাত্র প্রকৃত ও প্রত্যয়িত জনমসাখী ঐতিহ্য।[১] ভাই মণি সিং ভারাণ ভাই গুরুদাসের প্রথম গাঁথার উপর ভিত্তি করে একটি জনমসাখী রচনা করেন, যা জ্ঞান-রত্নাবলী বা ভাই মণি সিং জনমসাখী নামে পরিচিত।[৪]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Singh, Pritam (১৯৯২)। Bhai Gurdas। Makers of Indian literature (1st সংস্করণ)। New Delhi: Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 33–40। আইএসবিএন 978-81-7201-218-2 
  2. Singh, Pritama (১৯৯২)। Bhai Gurdas। পৃষ্ঠা 33–36। আইএসবিএন 9788172012182 
  3. Singh, Bhupender (২৩ ডিসেম্বর ২০২২)। Baba Nanak Shah Fakir (1st সংস্করণ)। Blue Rose Publishers। পৃষ্ঠা 22–23। আইএসবিএন 97893570466023. Vars of Bhai Gurdas (1551-1636): Bhai Gurdas, a contemporary of Guru Arjan and Guru Hargobind, was the son of Bhai Ishar Das Bhalla (one of Guru Amar Das's cousins) and Mai Jivani. The entire text of the sacred volume (Guru Granth Sahib) was inscribed by Bhai Gurdas, the nephew of Guru Amar Das under the direction and supervision of Guru Arjun. The thirty-nine Vars (heroic odes or ballads) of Bhai Gurdas, written fifty to seventy years after the demise of Guru Nanak, only briefly mention some of the events of the Guru's life; the rest is all eulogy (writing in praise of someone). Var 1 contains information on Guru Nanak. When Bhai Gurdas was composing his Vars, many people who personally knew the Guru were alive, particularly Baba Buddha who, was well known to the author, as well. Unfortunately, Bhai Gurdas did not avail of his knowledge. Nevertheless, whatever reference he makes in the Vars must be taken to be authentic. 
  4. Dhillon, Dalbir Singh (১৯৮৮)। Sikhism: Origin and Development। Atlantic Publishers & Distributors। পৃষ্ঠা 346। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]