মূল মন্ত্র

মূল মন্ত্র (গুরুমুখী: ਮੂਲ ਮੰਤਰ, আধ্বব: [muːlᵊ mən̪t̪əɾᵊ]) হলো শিখ ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থ সাহিব-এর সূচনা স্তোত্র। পাঞ্জাবি ভাষায় এতে ১২টি শব্দ রয়েছে, যা গুরুমুখী লিপিতে লিখিত এবং অধিকাংশ শিখের নিকট জ্ঞাত।^[৩]^[৪] এটি গুরু নানকের অত্যাবশ্যকীয় শিক্ষার সার-সংক্ষেপ^[৩] বলে এভাবেই তা শিখধর্মের একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে।^[৫]

বিশেষ করে প্রথম দুটি শব্দের বিভিন্নরূপ ব্যাখ্যা সহ এটিকে বিভিন্নভাবে অনুবাদ করা হয়েছে।^[৬] এগুলোর মধ্যে "একজন ঈশ্বর আছেন", "একটিই বাস্তবতা", "এই সত্ত্বা একক" এবং এধরণের আরও অন্যান্য ভাবে। এসব মতপার্থক্যের মধ্যে রয়েছে কখনও কখনও "god" লিখার ক্ষেত্রে g অক্ষরটিকে, বা, "reality" লিখার ক্ষেত্রে r অক্ষরটিকে বড়হাতের অক্ষর হিসেবে (capitalizing) লিখা, যা ইংরেজিতে এর অন্তর্নিহিত অর্থকে প্রভাবিত করে থাকে।^[৩] কেউ কেউ একে একেশ্বরবাদী মনে করেন, কেউ কেউ অদ্বৈতবাদী। সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে এটিকে একেশ্বরবাদী হিসাবে ব্যাখ্যা করার পক্ষেই জনমত অধিক; তবে তা একেশ্বরবাদের সেমেটিক ধারণার অনুরূপ নয়। এটি বরং "গুরু নানকের একক সম্পর্কিত রহস্যময় সচেতনতা যা অনেকের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।"^[৩] প্রথম দুটি শব্দের পরের অবশিষ্ট দশটি শব্দকে আক্ষরিক অর্থে অনুবাদ করা হয় সত্যিকারের নাম, স্রষ্টা, ভয়হীন, ঘৃণা বিহীন, নিরবধি আকারের, জন্মের বাহিরে, স্ব-অস্তিত্বশীল, গুরুর কৃপা (লাভ করে জ্ঞাত হয়)।^[৩]^[৬]

শ্লোকটি শিখ ধর্মগ্রন্থে অসংখ্য শব্দ বা স্তোত্রের আগে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে।^[৭] ১৭দশ শতকে গুরু অর্জন কর্তৃক চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার আগে এটি ১৬দশ শতকে অনেক সংস্করণে বিদ্যমান ছিল।^[৮] মন্ত্র-এর অপরিহার্য উপাদানগুলি গুরু নানকের রচনায় পাওয়া যায়, তিনি আকাল পুরাখ (চূড়ান্ত বাস্তবতা) গ্রন্থটির জন্য তিনি বিভিন্ন বিশেষণ ব্যবহার করেন।

ব্যুৎপত্তি

মন্ত্র অর্থ "সূত্র, সংক্ষিপ্ত মতবাদ বা আধ্যাত্মিক অর্থ সহ পবিত্র শব্দ।"^[৯]^[১০] মূল শব্দের অর্থ "প্রকৃত, প্রধান বা মৌলিক।" ফলে, মূল মন্ত্র অর্থ "মূল সূত্র",^[৯] বা, "শিখধর্মের মূল বক্তব্য।"^[৩]

বিবরণ

মূল মন্ত্র হলো:^[৬]

গুরুমুখী	আক্ষরিক অনুবাদ	অনুবাদ ১ (Eleanor Nesbitt)^[৩]	অনুবাদ ২ (Eleanor Nesbitt)^[১১]	অনুবাদ ৩ (Pashaura Singh)^[১২]
ੴ ਸਤਿ ਨਾਮੁ ਕਰਤਾ ਪੁਰਖੁ ਨਿਰਭਉ ਨਿਰਵੈਰੁ ਅਕਾਲ ਮੂਰਤਿ ਅਜੂਨੀ ਸੈਭੰ ਗੁਰ ਪ੍ਰਸਾਦਿ॥	এক(উ) ওঙ্কার(উ) সাত(ই)-নাম(উ) করতা পুরাখ(উ) নিরূপা'উ নিরভয়ির(উ) আকল(আ) মুরাত(ই) অজুনি সাইপান গুর(এ)-প্রাসাদ(ই)॥	There is one god, named truth, the creator, without fear, without hate, timeless in form, beyond birth, self-existent, (known by) the grace of the Guru.	This Being is one, truth by name, creator, fearless, without hatred, of timeless form, unborn, self-existent, and known by the Guru's grace.	There is one supreme being, the eternal reality (true name), the creator, without fear, devoid of enmity, immortal, never incarnated, self-existent, (known by) the grace of the Guru.

জাপ শ্লোক সহ বর্ধিত সংস্করণ:^[১৩]^[১৪]^[১৫]

গুরুমুখী	আক্ষরিক অনুবাদ	অনুবাদ
ੴ ਸਤਿ ਨਾਮੁ ਕਰਤਾ ਪੁਰਖੁ ਨਿਰਭਉ ਨਿਰਵੈਰੁ ਅਕਾਲ ਮੂਰਤਿ ਅਜੂਨੀ ਸੈਭੰ ਗੁਰ ਪ੍ਰਸਾਦਿ॥ ॥ ਜਪੁ॥ ਆਦਿ ਸਚੁ ਜੁਗਾਦਿ ਸਚੁ॥ ਹੈ ਭੀ ਸਚੁ ਨਾਨਕ ਹੋਸੀ ਭੀ ਸਚੁ॥੧॥	এক(উ) ওঙ্কার(উ) সাত(ই)-নাম(উ) করতা পুরাখ(উ) নিরূপা'উ নিরভয়ির(উ) আকল(আ) মুরাত(ই) অজুনি সাইপান গুর(এ)-প্রাসাদ(ই)॥ ॥ জপ(উ)॥ আদ(ই) সাচ(উ) জুগাদ(ই) সাচ(উ)॥ হাই পি সাচ(উ)॥ নানাক(আ) হোসি পি সাচ(উ)॥১॥	One creator, name is truth, agentive (doer) being, without fear, without hatred, timeless form, unbegotten, self-existent, known by the Guru's grace. Recite: True at the beginning, true through the ages, is yet true, O Nanak, and will be true.

তথ্যসূত্র

↑ Nesbitt, Eleanor M. (২০১৬)। Sikhism : a very short introduction (2nd সংস্করণ)। Oxford, United Kingdom। পৃ. ৩৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৮৭৪৫৫৭-০। ওসিএলসি 919186894।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অবস্থানে প্রকাশক অনুপস্থিত (লিঙ্ক)
↑ Singh, Kavi Santokh। Sri Jap Sahib Stik Garab Ganjini Tika (পাঞ্জাবী ভাষায়)। Giani Khazan Singh Pardhan। পৃ. ৬।
1 2 3 4 5 6 7 Eleanor Nesbitt, "Sikhism: a very short introduction", আইএসবিএন ০-১৯-২৮০৬০১-৭, Oxford University Press, pp. 22-24
↑ Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৮–৮৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।
↑ Pashaura Singh (২০০৬)। Life and Work of Guru Arjan: History, Memory, and Biography in the Sikh Tradition। Oxford University Press। পৃ. ২৪৬। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৭৯২১-২।
1 2 3 Pashaura Singh (২০০৬)। Life and Work of Guru Arjan: History, Memory, and Biography in the Sikh Tradition। Oxford University Press। পৃ. ২৪৫–২৫৮। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৭৯২১-২।
↑ Kalsi, Sewa Singh; Marty, Martin E. (মার্চ ২০০৫)। Sikhism। Chelsea House Publishers। পৃ. ৪৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৯১০-৮৩৫৬-৭। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১০।
↑ Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৮–৮৯, earlier versions of Mūl Mantar and context: ৮২–৯০। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।
1 2 Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৪। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।
↑ Jan Gonda (1963), The Indian Mantra, Oriens, Volume 16, pages 244–247
↑ Nesbitt, Eleanor (২০১৮), "Sikhism", The International Encyclopedia of Anthropology, Oxford, UK: Wiley Blackwell, পৃ. ১–১২, ডিওআই:10.1002/9781118924396.wbiea2186, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৪৭০-৬৫৭২২-৫
↑ Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৫–৮৯ (the final version: ৮৮–৮৯)। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।
↑ Rahi, Hakim Singh (১৯৯৯)। Sri Guru Granth Sahib Discovered: A Reference Book of Quotations from the Adi Granth। Delhi, India: Motilal Banarsidass Publishers। পৃ. ৮। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৬১৩৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।
↑ Chauhan, G. S. (২০০৫)। Sri Guru Nanak Dev's Japji। New Delhi, India: Hemkunt Press। পৃ. ৪৪–৫১। আইএসবিএন ৯৭৮৮১৭০১০৩১৪১। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।
↑ Beck, Guy (২০০৬)। Sacred Sound: Experiencing Music in World Religions। Waterloo, Canada: Wilfrid Laurier University Press। পৃ. ১৪৬–১৪৭। আইএসবিএন ৯৭৮০৮৮৯২০৪২১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।

বহিঃসংযোগ

[1] Nesbitt, Eleanor M. (২০১৬)। Sikhism : a very short introduction (2nd সংস্করণ)। Oxford, United Kingdom। পৃ. ৩৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৮৭৪৫৫৭-০। ওসিএলসি 919186894।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অবস্থানে প্রকাশক অনুপস্থিত (লিঙ্ক)

[2] Singh, Kavi Santokh। Sri Jap Sahib Stik Garab Ganjini Tika (পাঞ্জাবী ভাষায়)। Giani Khazan Singh Pardhan। পৃ. ৬।

[nesbitt22-3] 1 2 3 4 5 6 7 Eleanor Nesbitt, "Sikhism: a very short introduction", আইএসবিএন ০-১৯-২৮০৬০১-৭, Oxford University Press, pp. 22-24

[4] Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৮–৮৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।

[Singh2006p246-5] Pashaura Singh (২০০৬)। Life and Work of Guru Arjan: History, Memory, and Biography in the Sikh Tradition। Oxford University Press। পৃ. ২৪৬। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৭৯২১-২।

[singhp245-6] 1 2 3 Pashaura Singh (২০০৬)। Life and Work of Guru Arjan: History, Memory, and Biography in the Sikh Tradition। Oxford University Press। পৃ. ২৪৫–২৫৮। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৭৯২১-২।

[7] Kalsi, Sewa Singh; Marty, Martin E. (মার্চ ২০০৫)। Sikhism। Chelsea House Publishers। পৃ. ৪৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৯১০-৮৩৫৬-৭। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১০।

[Singh2000p88-8] Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৮–৮৯, earlier versions of Mūl Mantar and context: ৮২–৯০। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।

[Singh2000p84-9] 1 2 Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৪। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।

[10] Jan Gonda (1963), The Indian Mantra, Oriens, Volume 16, pages 244–247

[11] Nesbitt, Eleanor (২০১৮), "Sikhism", The International Encyclopedia of Anthropology, Oxford, UK: Wiley Blackwell, পৃ. ১–১২, ডিওআই:10.1002/9781118924396.wbiea2186, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৪৭০-৬৫৭২২-৫

[12] Pashaura Singh (২০০০)। The Guru Granth Sahib: Canon, Meaning and Authority। Oxford University Press। পৃ. ৮৫–৮৯ (the final version: ৮৮–৮৯)। আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৪৮৯৪-২।

[13] Rahi, Hakim Singh (১৯৯৯)। Sri Guru Granth Sahib Discovered: A Reference Book of Quotations from the Adi Granth। Delhi, India: Motilal Banarsidass Publishers। পৃ. ৮। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৬১৩৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।

[14] Chauhan, G. S. (২০০৫)। Sri Guru Nanak Dev's Japji। New Delhi, India: Hemkunt Press। পৃ. ৪৪–৫১। আইএসবিএন ৯৭৮৮১৭০১০৩১৪১। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।

[15] Beck, Guy (২০০৬)। Sacred Sound: Experiencing Music in World Religions। Waterloo, Canada: Wilfrid Laurier University Press। পৃ. ১৪৬–১৪৭। আইএসবিএন ৯৭৮০৮৮৯২০৪২১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৯।

[১]

[২]

[৩]

[৪]

[৫]

[৬]

[৭]

[৮]

[৯]

[১০]

[১১]

[১২]

[১৩]

[১৪]

[১৫]