দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ

স্থানাঙ্ক: ২৭°০২′ উত্তর ৮৮°১০′ পূর্ব / ২৭.০৩° উত্তর ৮৮.১৬° পূর্ব / 27.03; 88.16
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ
আঞ্চলিক পরিষদ
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ ভারত-এ অবস্থিত
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ
দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৭°০২′ উত্তর ৮৮°১০′ পূর্ব / ২৭.০৩° উত্তর ৮৮.১৬° পূর্ব / 27.03; 88.16
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
প্রতিষ্ঠা১৯৮৮
সদরদার্জিলিং
ভাষা
 • সরকারিনেপালি, ইংরেজি
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০)
যানবাহন নিবন্ধনডব্লিউবি
ওয়েবসাইটwb.gov.in

দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ (১৯৮৮-২০১২); এটি অল্প কিছুকাল দার্জিলিং গোর্খা স্বশাসিত পার্বত্য পরিষদ নামেও পরিচিত ছিল বা সংক্ষেপে ডিজিএইচসি, ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অবিভক্ত দার্জিলিং জেলার পার্বত্য অঞ্চলের প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি আধা-স্বশাসিত সংস্থা। তদনীন্তন দার্জিলিং জেলার দার্জিলিং সদর, কালিম্পং (অধুনা কালিম্পং জেলার অন্তর্গত) ও কার্শিয়াং মহকুমার অন্তর্গত সমগ্র এলাকা এবং শিলিগুড়ি মহকুমার কয়েকটি অঞ্চল ডিজিএইচসি-র এক্তিয়ারভুক্ত ছিল।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

সুভাষ ঘিসিঙের নেতৃত্বে গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্ট দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চল এবং দার্জিলিং-সন্নিহিত ডুয়ার্স ও শিলিগুড়ি তরাইয়ের কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার অধীনে পৃথক গোর্খাল্যান্ড নামে এক রাজ্য স্থাপনের দাবি উত্থাপন করে।[১] ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এক সহিংস রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। এই দাঙ্গায় ১২০০ মানুষ প্রাণ হারান।

প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]

১৯৮৮ সালের ২২ অগস্ট কলকাতায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্টের মধ্যে সাক্ষরিত একটি চুক্তিবলে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ গঠিত হয়। সকাল দশটার সময় রাজভবনের ব্যাঙ্কোয়েট হলে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল। এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তির সাক্ষরকারীরা ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব সি. জি. সোমাইহ (ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে), রাজ্য স্বরাষ্ট্র সচিব আর. এন. সেনগুপ্ত (পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে) ও সুভাষ ঘিসিং (দার্জিলিং জেলার জনসাধারণের প্রতিনিধি গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্টের পক্ষে)। তদনীন্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বুটা সিং ও পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও এই চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হওয়া দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ আইন, ১৯৮৮-এ (১৯৮৮ সালের পশ্চিমবঙ্গ ত্রয়োদশ আইন) ভারতের রাষ্ট্রপতি সম্মতিসূচক সাক্ষরদান করেন এবং ক্যালকাটা গেজেট, এক্সট্রাঅর্ডিনারি অফ ১৫ অক্টোবর ১৯৮৮-এ সেটি প্রথম প্রকাশিত হয়।[২]

মেয়াদকাল[সম্পাদনা]

১৯৮৮ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পর পর তিনটি মেয়াদে সুভাষ ঘিসিঙের সভাপতিত্বে ডিজিএইচসি পরিচালনা করে গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্ট। ২০০৫ সালে ডিজিএইচসি-র চতুর্থ নির্বাচনটি মুলতুবি হয়ে যায়। যদিও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন ছাড়াই সুভাষ ঘিসিং এককভাবে ডিজিএইচসি-র তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসক নিযুক্ত হন।[৩] ২০০৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিজিএইচসি-র স্থলে গোর্খা হিল কাউন্সিল নামে একটি ষষ্ঠ তফসিল আদিবাসী পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে সুভাষ ঘিসিং ও সরকারের মধ্যে একটি মেমোর্যা্ন্ডাম অফ সেটলমেন্ট সাক্ষরিত হয়।[৪][৫] কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও জনসাধারণের বিরোধিতার ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হতে পারেনি।

এরপর দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলের জনসমর্থন বিমল গুরুঙের নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দিকে চলে গেলে ২০০৮ সালের মার্চ মাসে সুভাষ ঘিসিং পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।[৬] ওই সময় থেকে ২০১২ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত ভারতীয় প্রশাসনিক কৃত্যকের আধিকারিকবৃন্দ ডিজিএইচসি-র প্রশাসক হিসেবে কাজকর্ম পরিচালনা করেন। এই সময়কালের মধ্যে পরিষদে কোনও নির্বাচনও আয়োজিত হয়নি।[৭]

গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন[সম্পাদনা]

২০১১ সালের ১৮ জুলাই দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ) গঠনের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়।[৮] আনুষ্ঠানিকভাবে জিটিএ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত একটি প্রশাসক বোর্ডের অধীনে ডিজিএইচসি-র কাজকর্ম চলতে থাকে। এই বোর্ডের সদস্য ছিলেন দার্জিলিং, কার্শিয়াংকালিম্পং বিধানসভা কেন্দ্রের তিন বিধায়ক, দার্জিলিঙের জেলাশাসক এবং ডিজিএইচসি-র প্রশাসক।[৯] পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পাস হওয়া একটি আইনবলে ২০১২ সালের অগস্ট মাসে ডিজিএইচসি-র পরিবর্তে দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে জিটিএ গঠিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Gorkhaland an unfinished mission" (ইংরেজি ভাষায়)। The Times of India। ১৮ জানুয়ারি ২০১০। ৪ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  2. "DGHC - Its shortcomings" (ইংরেজি ভাষায়)। Darjeeling Times। ১৯ মে ২০১০। ৩১ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  3. "Differences over Gorkha Hill Council" (ইংরেজি ভাষায়)। The Hindu। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ৪ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  4. "Gorkha council may get special status" (ইংরেজি ভাষায়)। The Times of India। ১৫ এপ্রিল ২০০৫। ৭ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  5. "Memorandum of Settlement - Gorkha Hill Council (Sixth Schedule)" (ইংরেজি ভাষায়)। Darjeeling Times। ২৯ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  6. "Ghisingh quits DGHC hill districts celebrate" (ইংরেজি ভাষায়)। The Indian Express। ১১ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  7. "New DGHC administrator to take charge on March 2011" (ইংরেজি ভাষায়)। Zee News। ১০ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ 
  8. "Darjeeling issue solved: Mamata" (ইংরেজি ভাষায়)। The New Indian Express। ৮ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "Memorandum of Agreement - GTA" (পিডিএফ)Press Information Bureau (ইংরেজি ভাষায়)। Government of India। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]