দানিশ কানেরিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দানিশ কানেরিয়া
২০০৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে দানিশ কানেরিয়া
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামদানিশ প্রভা শঙ্কর কানেরিয়া
জন্ম (1980-12-16) ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮০ (বয়স ৪৩)
করাচি, সিন্ধু, পাকিস্তান
ডাকনাম"ন্যানী-ড্যানি"[১]
উচ্চতা৬ ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ ব্রেক
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কঅনিল দলপত (কাকাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৩)
২৯ নভেম্বর ২০০০ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৩ জানুয়ারি ২০১০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪০)
৩১ অক্টোবর ২০০১ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই২১ মার্চ ২০০৭ বনাম জিম্বাবুয়ে
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৮ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন
১৯৯৯-২০০২করাচি হোয়াইটস
১৯৯৯পাকিস্তান রিজার্ভস
১৯৯৯-২০১২হাবিব ব্যাংক লিমিটেড
২০০৪করাচি
২০০৪-২০১০এসেক্স
২০০৪করাচি ব্লুজ
২০০৫-২০১০করাচি জেব্রাজ
২০০৭করাচি হারবার
২০০৮সিন্ধু
২০০৮বালুচিস্তান বিয়ার্স
২০১০সিন্ধু ডলফিন্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৬১ ১৮ ২০৬ ১৬৭
রানের সংখ্যা ৩৬০ ১২ ১,৯১১ ৩৭৯
ব্যাটিং গড় ৭.০৫ ৬.০০ ১০.৬৭ ৯.২৪
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/১ ০/১
সর্বোচ্চ রান ২৯ * ৬৫ ৬৪
বল করেছে ১৭,৬৯৭ ৮৫৪ ৫৩,৮৩৭ ৮,২৮০
উইকেট ২৬১ ১৫ ১,০২৩ ২৬২
বোলিং গড় ৩৪.৭৯ ৪৫.৫৩ ২৬.১৮ ২২.৬৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৫ ৭১
ম্যাচে ১০ উইকেট - ১২
সেরা বোলিং ৭/৭৭ ৩/৩১ ৮/৫৯ ৭/৩৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৮/- ২/- ৭১/- ৩৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ জানুয়ারি ২০১৭

দানিশ প্রভা শঙ্কর কানেরিয়া (১৬ ডিসেম্বর, ১৯৮০) সিন্ধু প্রদেশের করাচিতে জন্মগ্রহণকারী ও মারোয়াড়ি হিন্দু বংশোদ্ভূত সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার। ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যবর্তী সময়কালে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দানিশ কানেরিয়া[২]

সেরা পাকিস্তানি লেগ স্পিন বোলারদের মধ্যে তিনি অন্যতম। গুগলি বল নিক্ষেপ করে সুনাম কুড়িয়েছেন। পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট লাভকারী স্পিন বোলার তিনি। এছাড়াও, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুসইমরান খানের পর চতুর্থ সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেট লাভকারী তিনি।[৩]

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

পাকিস্তান ক্রিকেট দলে দ্বিতীয় হিন্দু হিসেবে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। অনিল দলপতের পর দ্বিতীয় ও সর্বমোট সাত অ-মুসলিম ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে তার ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ।[৪][৫]

১৯ বছর বয়সে নভেম্বর, ২০০০ সালে ফয়সালাবাদে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে।[৬] ২০০১-০২ মৌসুমে অনুষ্ঠিত এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে পাকিস্তানে বাংলাদেশ দলের সফরকালীন দুইবার ৬ উইকেট পান। তার অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্যে দল খেলায় জয় পায় ও তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[৭][৮] জানুয়ারি, ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭/৭৭ লাভ করে দলকে জয় এনে দেন ও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[৯] এটিই তার নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান। অক্টোবর, ২০০৪ সালে করাচিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলায় ১০ উইকেট শিকার করেন।[১০] তন্মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭/১০৯ নিলে পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয় পায়।[১১] এছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড এবং ভারতের বিপক্ষে টেস্ট জয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ডিসেম্বর, ২০০৯ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষ প্রথম ইনিংসে ৭/১৬৮ লাভ করেন। তবে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।[১২] এরপর থেকে পাকিস্তানের পক্ষে খেলার সুযোগ পাননি।

একদিনের আন্তর্জাতিকে তেমন সফলতা লাভ করেননি কানেরিয়া। একদিনের আন্তর্জাতিকে ওভার প্রতি ৪.৮-এর কম প্রদান করেছেন।[২] ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি তার সেরা বোলিং করেন।[১৩] এর পরপরই শারজায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাফল্য লাভ করেছিলেন।

কাউন্টি ক্রিকেট[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্সের পক্ষে খেলেন। চ্যাম্পিয়নশীপের সাত খেলায় ৩২ উইকেট পান। কিন্তু ২০০৬ সালে পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরের জন্য কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নিতে পারেননি। পরের মৌসুমেই ২০০৭ সালে সকল ধরনের ক্রিকেটে এসেক্সের পক্ষে ১০৭ উইকেট পান।[১৪] ২০০৮ সালেও তিনি এসেক্সের হয়ে খেলেন। কিন্তু স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের কারণে আর খেলতে পারেননি।

বিতর্ক[সম্পাদনা]

মে, ২০১০ সালে খেলা গড়াপেটার সাথে জড়িত থাকার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সালে ন্যাটওয়েস্ট প্রো৪০ প্রতিযোগিতায় এসেক্সের জয়ের সাথে গড়াপেটার যোগসূত্র ছিল বলে জানা যায়।[১৫] সেপ্টেম্বর, ২০১০ সালে পুলিশের কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদনে তার সম্পর্কহীনতার কথা জানানো হয়।[১৬][১৭] দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে খেলার জন্য মনোনীত হলেও পিসিবি তার নাম প্রত্যাহার করে নেয়। এরজন্য তারা কোন কারণ উপস্থাপন করেনি।

ক্রিকেট খেলায় পাতানো খেলার অভিযোগে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।[১৮] পরবর্তীতে এ নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে আবেদন করলেও জুলাই, ২০১৩ সালে তার এ আবেদন নাকচ হয়ে যায়।[১৯]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। ২০০৯ সালে ‘ধর্মিতা কানেরিয়া’র সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাদের সংসারে পরিসা কানেরিয়া নাম্নী কন্যা ও দানিশ কানেরিয়া জুনিয়র নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে।[২][২০]

পাকিস্তানি টেস্ট দলের সাবেক উইকেট-রক্ষক অনিল দলপত সম্পর্কে তার কাকাতো ভাই হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Danish Kaneria player profile – ESPNcricinfo. Retrieved 21 February 2014.
  2. "Danish Kaneria"। Espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৩ 
  3. "Pakistan / Records / Test matches / Most wickets"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৩ 
  4. "No country for Pakistan Hindus: On 66th Independence Day, Mail Today gives a ground report on those stuck in No Man's Land" 
  5. http://www.cricketcountry.com/articles/7-non-muslim-cricketers-who-played-for-pakistan-117618
  6. Etheridge, John। "Second Test Match – Pakistan v England 2000–2001"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  7. Hasan, Samiul। "Wisden – Pakistan v Bangladesh 2000–2001"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  8. "Asian Test Championship, 2001/02 – 1st match"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  9. "Pakistan in Bangladesh Test Series – 1st Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  10. "Sri Lanka in Pakistan Test Series – 2nd Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  11. Murgatroyd, Brian। "Wisden – second Test – Sri Lanka in Pakistan"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  12. "Pakistan in New Zealand Test Series – 3rd Test"। cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  13. "Bank Alfalah Cup – 6th match"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১২ 
  14. "Danish Kaneria" (পিডিএফ)। Essex CCC। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  15. "Kaneria and Westfield arrested in fraud probe"। BBC News। ২০১০-০৫-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-০২ 
  16. "Kaneira cleared of wrong-doing in Spot-fixing scandal"। Espncricinfo.com। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  17. "Kaneria cleared by Essex police in cricket match probe"। BBC.co.uk। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  18. "Kaneria to appeal ECB life ban"। Wisden India। ১২ জুলাই ২০১২। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  19. "Danish Kaneria fails to overturn his life ban from cricket"। BBC Sport। ৩ জুলাই ২০১৩। 
  20. "Bigstar Players : Danish Kaneria : About Me"bigstarcricket.com। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৮। ২১ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]