জুলাই গণহত্যা
জুলাই গণহত্যা | |
---|---|
ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থান-এর অংশ | |
স্থান | বাংলাদেশ |
তারিখ | ১৬ জুলাই — ৫ আগস্ট ২০২৪ (২ সপ্তাহ ও ৬ দিন) |
নিহত | ৬৫০[১] (ওএইচসিএইচআর-এর অনুমান) |
ভুক্তভোগী |
|
অপরাধী | |
সন্দেহভাজন হামলাকারী দল | টেমপ্লেট:Tree list/start |
কারণ | আন্দোলন দমন |
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান |
---|
বিষয়ক ধারাবাহিক নিবন্ধশ্রেণীর অংশ |
জুলাই গণহত্যা[ক] বলতে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র–জনতার গণঅভুত্থানের সময় সরকারের চালানো দমনপীড়ন ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডকে বোঝায়। বিতর্কিত কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল ও ব্যাপক গণঅসন্তোষের জের ধরে এই দমন অভিযান পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ সরকার, এর অঙ্গসংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করে, যার ফলে জুলাইয়ের শুরুতে কোটা সংস্কার আন্দোলন পুনরায় জোরদার হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের পর, ১৫ জুলাই আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর উত্তেজনা বেড়ে যায়। পরবর্তী দিনগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যার মধ্যে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি, সেইসাথে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র, যুব ও স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের সাথে সহিংস সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষের ফলে অসংখ্য মানুষ নিহত হয়, যার মধ্যে রয়েছে আন্দোলনকারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, দলীয় সদস্য, পথচারী ও শিশুরাও। আগস্টের শুরুর দিকে এই সহিংসতার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে, প্রাণহানির সংখ্যা দুইশ থেকে ছয়শ পর্যন্ত অনুমান করা হয় এবং আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার।
এতো ব্যাপক প্রাণহানি সত্ত্বেও হাসিনা সরকার এই গণহত্যার দায় অস্বীকার করে এবং সহিংসতার জন্য অন্যান্য কারণকে দায়ী করে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ঘটনাবলি তখন থেকে ব্যাপকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
পটভূমি
[সম্পাদনা]২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, তারই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল এই গণহত্যা।[১১] এই অস্থিরতার সূত্রপাত ঘটে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের মাধ্যমে, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০% চাকরির কোটা পুনর্বহাল করা হয়। এর আগে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এই কোটা সংস্কার করা হয়েছিল।[১২] এই সিদ্ধান্ত জনসাধারণ, বিশেষ করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি করে, কারণ তারা মনে করেছিল যে কোটা পদ্ধতি মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
প্রথমে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্রুত দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।[১৩] জনগণের মধ্যে সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতির অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের পথের অভাব নিয়ে যে উদ্বেগ ছিল, তা এই আন্দোলন আরও বেগবান করে।[১৪]
আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়[১৫] এবং সারাদেশে নিরাপত্তা বাহিনী, যেমন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে।[১৬] এর পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী ও সদস্য দলের অঙ্গসংগঠনগুলো,[১৭] যেমন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রভাবিত করেছে বলে খবরে প্রকাশিত হয়।[১৮][১৯] এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগও ছিল এবং প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দলগুলোর সদস্যরা বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীদের হত্যা করার ঘটনায় জড়িত ছিল, যাদের অনেকেই ছাত্র ছিল।[২০]
পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সরকার সারা দেশে গুলি করে হত্যা করার নির্দেশ দিয়ে কারফিউ জারি করে[২১] এবং ইন্টারনেট ও মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়,[২২] যা কার্যকরভাবে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আন্দোলনকারীদের সংগঠিত হওয়া ও যোগাযোগ করার ক্ষমতা ব্যাহত করতে ফেসবুক, টিকটক ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।[২৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Preliminary Analysis of Recent Protests and Unrest in Bangladesh (প্রতিবেদন)। Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights। ২০২৪-০৮-১৬। পৃষ্ঠা 6–7।
According to available public reports by media and the protest movement itself, between 16 July and 11 August, more than 600 people were killed. Of these, nearly 400 deaths were reported from 16 July to 4 August, while around 250 people were reportedly killed following the new wave of protests between 5 and 6 August. [...] The reported death toll is likely an underestimate, as information collection has been hindered by restrictions on movement due to the curfew and the internet shutdown. Furthermore, hospitals were reportedly prevented by State authorities from providing details of those killed and injured. The majority of deaths and injuries have been attributed to the security forces and the student wing affiliated with the Awami League.
- ↑ গুহ, উত্তম (১ সেপ্টেম্বর ২০২৪)। "'র' ও হাসিনার পরবর্তী পরিকল্পনা কী?"। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Justice, legal accountability needed for July massacre"। New Age। ৬ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;i
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;nd
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;sylhet
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;itv
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;tbp
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;bbc
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;termed
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Student protests in Bangladesh over job quotas escalate into violence"। Nikkei Asia। ১৮ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Verdict on quota reinstatement in government jobs"। Dhaka Tribune। ১৪ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh students clash in job quota protests, at least 100 injured"। Reuters। ১৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Student protests in Bangladesh pose serious challenge for Hasina's government"। Voice of America। ১৯ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh shuts down educational institutions after 6 students killed, dozens injured in protests"। Anadolu Ajansi। ১৬ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh government says ready to hold talks with quota protesters; Army deployed nationwide"। The Economic Times। ১৮ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Chhatra League ready to respond to audacity on campus: Obaidul Quader"। Prothom Alo। ১৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Quota protestors clash with BCL-Jubo League in Chankharpool, 4 shot"। Prothom Alo। ১৬ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "BCL, quota protesters clash"। The Daily Star। ১৫ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "5 protesters shot, over 100 injured in clash with BCL, Jubo League men at Science Lab"। Prothom Alo। ১৬ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh imposes curfew as protests continue"। BBC। ১৯ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh wakes to TV, internet blackout as deadly protests spike"। France 24। ১৯ জুলাই ২০২৪।
- ↑ "Bangladesh's internet shutdown isolates citizens, disrupts business"। Reuters। ২৬ জুলাই ২০২৪।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি