তাহির জামান প্রিয়
তাহির জামান প্রিয় | |
---|---|
জন্ম | রংপুর, বাংলাদেশ | ৭ মার্চ ১৯৯৭
মৃত্যু | ১৯ জুলাই ২০২৪ সেন্ট্রাল রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা | (বয়স ২৭)
মৃতদেহ আবিস্কার | ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | পাঠশালা সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট |
পেশা | সাংবাদিকতা |
পরিচিতির কারণ | কোটা সংস্কার আন্দোলন |
সন্তান | সাদিরা জামান |
পিতা-মাতা |
|
তাহির জামান প্রিয় (৭ মার্চ, ১৯৯৭ – ১৯ জুলাই, ২০২৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ভিডিওগ্রাফার। তিনি দ্য রিপোর্ট ২৪ নামক অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ভিডিও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন। ১৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংবাদ কভার করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন। তার মৃত্যুর ঘটনাটি বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের জন্ম দেয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই হত্যাকান্ডের প্রতি নিন্দা জানানো হয়।[১][২][৩]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]তাহির জামান প্রিয় ছিলেন একজন বাংলাদেশি শিল্পী, যিনি চিত্রকলা, ফটোগ্রাফি এবং চলচ্চিত্র সমালোচনার জন্য পরিচিত। তিনি বাংলাদেশের রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ছোটবেলা থেকেই বিশেষ করে চিত্রকলা ও ফটোগ্রাফিতে প্রতিভার পরিচয় দেন। কলেজের পাঠ শেষ করার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরিবর্তে পাঠশালা-সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি (পেশাদার আলোকচিত্র) কোর্সে ডিপ্লোমা অধ্যয়ন করেন তিনি। প্রিয় তার একমাত্র মেয়েকে জীবনের অন্যতম বড় সম্পদ হিসেবে দেখতেন। বাবা হয়েও তিনি মেয়ের প্রতি তার মায়ের ভূমিকাও পালন করতেন। শিল্পচর্চার পাশাপাশি তিনি তার পেশাগত কাজ এবং পারিবারিক দায়িত্বের মধ্যে সমতা বজায় রেখেছিলেন।[৪] [৫] [৬]
২০২৪ এর কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার ভূমিকা
[সম্পাদনা]তাহির জামান প্রিয় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ভিডিওগ্রাফার হলেও তিনি ছিলেন ২০২৪ সালের বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন আন্দোলনকারী। তার মায়ের প্রবল বাধার মুখেও তিনি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আন্দোলনের শুরুতেই প্রিয়র মা তাকে এতে অংশ নিতে না করেছিলেন। কিন্তু জবাবে প্রিয় বলেছিলেন, 'এটা ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন এবং এতে অংশ নেওয়া আমার দায়িত্ব।[৭]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকেল ৫ টার দিকে ধানমন্ডি সেন্ট্রাল রোডে কোটা সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনে অবস্থানরত ছাত্র-জনতার মাঝে তাহির জামান প্রিয় তার সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার উপর অনবরত গুলি ছুঁড়তে থাকে পুলিশ। হঠাৎ একটি একটি বুলেট এসে প্রিয়’র মাথায় আঘাত হানলে লুটিয়ে পড়েন প্রিয়। প্রিয়র বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে হসপিটালে নিয়ে চাইলেও পুলিশের অনবরত গুলির কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে সেদিন রাত দশটায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে তার লাশ পাওয়া যায়।[৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "UNESCO Director-General condemns killing of journalist Tahir Zaman Priyo in Bangladesh"। www.unesco.org।
- ↑ ডেস্ক, জীবনযাপন (২০২৪-০৭-২৭)। "আমার মানিক আর নেই"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৩।
- ↑ "'আমার প্রিয়-বাবা'র অপেক্ষায় মর্গে একদিন"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৯-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৩।
- ↑ "'বাবা কেন আমায় ফোন করছে না?'"। Daily Star। ৩১ জুলাই ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ "তাহির জামান প্রিয়: এক স্বপ্নবাজ তরুণের অকাল মৃত্যু"। The Report। ২৫ জুলাই ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ Abbas, Md (জুলাই ৩০, ২০২৪)। "'Why isn't father calling me'"। The Daily Star।
- ↑ "প্রিয়'র রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়েছিল দীর্ঘ সময় ॥ কেউ ওকে হাসপাতালে নিতে পারেনি"। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ "প্রিয়'র রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে ছিল দীর্ঘসময়, কেউ ওকে হাসপাতালে নিতে পারেনি"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৩।