বিষয়বস্তুতে চলুন

জিম হিগস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিম হিগস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জেমস ডোনাল্ড হিগস
জন্ম (1950-07-11) ১১ জুলাই ১৯৫০ (বয়স ৭৪)
কিয়াব্রাম, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক গুগলি
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৯৫)
৩ মার্চ ১৯৭৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২২ ১২২
রানের সংখ্যা ১১১ ৩৮৪
ব্যাটিং গড় ৫.৫৪ ৫.৪০
১০০/৫০ -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ১৬ ২১
বল করেছে ৪৭৫২ ২৪৮৩৭
উইকেট ৬৬ ৩৯৯
বোলিং গড় ৩১.১৬ ২৯.৬৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৯
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৭/১৪৩ ৮/৬৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/- ৪৩/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

জেমস ডোনাল্ড হিগস, ওএএম (ইংরেজি: Jim Higgs; জন্ম: ১১ জুলাই, ১৯৫০) ভিক্টোরিয়ার কিয়াব্রাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলত লেগ ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন জিম হিগস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত জিম হিগসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরকৌশল বিষয়ে পড়াশুনো করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নকালীন জেলা ক্রিকেটে অংশ নেন। ১৯৭২ সালে রিচমন্ডের সদস্যরূপে চলে যাবার পূর্বে জেলা ক্রিকেটে ১৩২ উইকেট পান।

১৯৭০-৭১ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি চার উইকেট দখল করেন।[] ঐ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে খেলায় সেরা বোলিংশৈলী প্রদর্শন করেন।[] নভেম্বরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করায় কিছু সময় ক্রিকেটের বাইরে অবস্থান করেন। ফলে, সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।[]

১৯৭১-৭২ মৌসুমে জিম হিগস প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি ৫/১৬২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[] ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আট উইকেট[] ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার উইকেট পান তিনি।[]

১৯৭২-৭৩ মৌসুমের শুরুতে জিম হিগসকে নিয়ে ঐ গ্রীষ্মের শেষদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কিছু কথাবার্তা হয়। তবে, খেলার মান নিচের দিকে যেতে থাকে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয় উইকেট বাদে তেমন সফলতা পাননি।[] ফলশ্রুতিতে, ভিক্টোরিয়া দল থেকে তাকে বাদ দেয়া হয় ও রে ব্রাইটকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।[][]

পরবর্তী গ্রীষ্মের শুরুতে বেশ ভালোভাবে সূচনা করেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে সাত উইকেট পান।[১০] তবে, আর এ ধরনের সফলতা পাননি। এছাড়াও, বেশ কয়েকটি খেলায় দ্বাদশ ব্যক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।[১১] তাসত্ত্বেও, রিচমন্ড বনাম নর্থকোটের খেলায় ৮/১৯ পেয়েছিলেন তিনি।

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে দূর্দান্ত সময় কাটান। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮/৬৬ ও ৩/৫২ পান।[১২] সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ৩/১০৭,[১৩] কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ,[১৪] এনএসডব্লিউ’র বিপক্ষে আট[১৫] ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয় উইকেট দখল করেন।[১৬] ঐ গ্রীষ্মে ২১.৯২ গড়ে ৪২ উইকেট লাভ করেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ সফরের জন্যে মনোনয়ন লাভ করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে বাইশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জিম হিগস। ৩ মার্চ, ১৯৭৮ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে মেলবোর্নে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়া দলে অ্যাশলে মলেটের ন্যায় স্পিনারের উপস্থিতি থাকায় হিগসকে ইংল্যান্ড সফরের কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে পুরো সফরে কোন রান না করায় আলোচিত হন। দুইবার ব্যাট হাতে মাঠে নামেন। লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে একটি বল মোকাবেলা করে বোল্ড হন।[১৭]

কেন্টের বিপক্ষে চার উইকেট,[১৮] এমসিসি’র বিপক্ষে ছয়[১৯]সমারসেটের বিপক্ষে সাত উইকেট পান।[২০] ৩২ গড়ে ২৭ উইকেট লাভ করলেও[২১] প্রথম-শ্রেণীর ব্যাটিং গড় ছিল ০.০০।[২২] এ সফর চলাকালে আঙ্গুলে ব্যথা পান। তাসত্ত্বেও, খেলা চালিয়ে যান।[২৩]

রিচি রবিনসনের সাথে তিনিও ১৯৭৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ১৪-সদস্যের অস্ট্রেলীয় দলে স্থান পাননি।[২৪] সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/৮৬ বাদে ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে তেমন সুবিধে করতে পারেননি তিনি।[২৫] টেস্ট দলে তাকে পাশ কাটিয়ে টেরি জেনারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/৯০[২৬] ও জেলা ক্রিকেটের চূড়ান্ত খেলায় ৫/৯০ লাভ করেন। ফলশ্রুতিতে, রিচমন্ড দল প্রিমিয়ারশীপের শিরোপা জয় করে ও ৩০ বছর পর এ সাফল্য পায়। এ পর্যায়ে কেরি ও’কিফ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান লেগ স্পিনারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ও রে ব্রাইটকে তার পরই স্থান দেয়া হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন

[সম্পাদনা]

ক্যারি প্যাকারের ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা প্রবর্তনের ফলে অস্ট্রেলিয়া দলে শূন্যতা দেখা দেয়। বিশেষতঃ স্পিন বোলিংয়ের সাথে জড়িত কেরি ও’কিফ, অ্যাশলে মলেট ও রে ব্রাইটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং তাদের দলে ফেরার নিশ্চয়তা ছিল না। সফররত ভারতীয় একাদশের বিপক্ষে ৬/১৩১ পাবার ফলে অস্ট্রেলিয়া দলে তার স্থান নিশ্চিত হয়।[২৭] পাশাপাশি, টনি মানকে দলে রাখা হয়। টনি মান প্রথম চার টেস্টে খেলেন। সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ব্রুস ইয়ার্ডলিকে টনি মানের স্থলাভিষিক্ত করা হয়। উভয়েই হিগসের চেয়ে ভালোমানের ব্যাটসম্যান ছিলেন। ঐ গ্রীষ্মে ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ-উইকেট লাভই তার সেরা বোলিংশৈলী ছিল।[২৮] তাসত্ত্বেও, জিম হিগসকে ইয়ার্ডলি’র সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে রাখা হয়।

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। সফরের শুরুতেই দর্শনীয়ভাবে খেলা উপহার দেন। লিওয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬/৯১ ও ৬/৭১ লাভ করেন।[২৯][৩০] ফলশ্রুতিতে, ব্রুস ইয়ার্ডলি’র সাথে তাকেও প্রথম টেস্টে দলে রাখা হয়। হিগস ৪/৯১ পান। এ বোলিং পরিসংখ্যান অস্ট্রেলীয়দের মধ্যে সেরা ছিল। তবে, খেলায় তার দল ইনিংস ব্যবধানে পরাভূত হয়।[৩১] দ্বিতীয় টেস্টে ১/৩৪ লাভ করেন।[৩২] তৃতীয় টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়নি। চতুর্থ টেস্টে চার উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের অবস্থানে নিয়ে যান। কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার চিত্র ফুঁটে উঠে ও অস্ট্রেলিয়া দল পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়।[৩৩]

জ্যামাইকায় তিনি ৫/৭৩ ও ৪/৪৩ পান।[৩৪][৩৫] সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে পাঁচ উইকেট পান। ২/৪৭ ও ৩/৬৭ বোলিং পরিসংখ্যানের পাশাপাশি ইয়ার্ডলি’র বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া জয়ের প্রান্তে অবস্থান করে। তবে, উত্তেজিত দর্শকদের কারণে খেলা পরিত্যক্ত হয়ে যায়।[৩৬] এ সফরে ২২ গড়ে ৪২টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভ করেন।

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি

[সম্পাদনা]

ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফিরে আসার পর খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন। সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ৩/৮২ পান।[৩৭] ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/৭২ লাভ করেন।[৩৮] ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে স্পিনার হিসেবে হিগস ও ইয়ার্ডলিকে রাখা হয়। তবে, ইংরেজদের সহজ বিজয়ে প্রতিবন্ধকতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেননি তিনি। ০/৯ ও ০/৪৩ পান।[৩৯] দ্বিতীয় টেস্টে তাকে খেলানো হয়নি। তবে, এনএসডব্লিউ’র বিপক্ষে ৪/৮৬ করার পর[৪০] একই দলের বিপক্ষে আরেকটি খেলায় ৬/৮৫ পান।[৪১]

তৃতীয় টেস্টে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরিয়ে আনা হয়। তিন উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দুষ্প্রাপ্য বিজয়ে অবদান রাখেন।[৪২] ঐ গ্রীষ্মের চতুর্থ টেস্টে হিগস তার সেরা ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। খেলায় তিনি আট উইকেট পান। তন্মধ্যে, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/১৪৮ লাভ করেন। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০৫ রান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু, ব্যাটিংয়ে ধ্স নামলে অস্ট্রেলিয়া পরাজয়বরণ করে।[৪৩]

অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টে জিম হিগস তিন উইকেট পান।[৪৪] ষষ্ঠ টেস্টে পান পাঁচ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪/৬৯ ও ১/১২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[৪৫] তবে, উভয় টেস্টেই স্বাগতিক দল পরাজিত হয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বাদ পড়েন ও ব্রুস ইয়ার্ডলি তার পরিবর্তে দলে আসেন।[৪৬]

ঐ গ্রীষ্মে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৫/৩৫ ও ২/২৩ পান।[৪৭] ভিক্টোরিয়া দল ঐ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জয় করে। ৫১টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট নিয়ে বেশ ভূমিকা রাখেন।

ভারত গমন

[সম্পাদনা]

১৯৭৯ সালে ভারত গমনার্থে তাকে দলে নেয়া হয়। তার সাথে ব্রুস ইয়ার্ডলি ও পিটার স্লিপকে রাখা হয়। দক্ষিণ অঞ্চলের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে সফরের শুরুটা দূর্দান্ত করেন।[৪৮][৪৯] ড্র হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে ৭/১৪৩ পান।[৫০][৫১]

সিরিজের বাদ-বাকী সময়টুকু তার জন্যে বেশ কঠিন ছিল। দ্বিতীয় টেস্টে ১/৯৫[৫২] ও তৃতীয় টেস্টে তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি।[৫৩] ৩/৬৩ ও ৩/২২ নিয়ে নিজের উপর আস্থা ভাব ফিরিয়ে আনেন।[৫৪] চতুর্থ টেস্টে ৩/১৫০ লাভ করলেও পিটার স্লিপ বেশ সফলতা পান।[৫৫] পঞ্চম টেস্টে ১/১০৭ [৫৬] ও ষষ্ঠ টেস্টে ২/১১৬ লাভ করেন।[৫৭]

১৯৭৯-৮০ মৌসুম থেকে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দেরকে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলার জন্যে মনোনীত করা হতে থাকে। এ মৌসুমের শুরুটা বেশ ভালোভাবে সূচনা করেন। ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫/৫০ ও ৭/৪৯ পান।[৫৮] এনএসডব্লিউ’র বিপক্ষে পান ৪/৭৯ ও ৪/৭৮।[৫৯] এরফলে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে জেফ থমসনের পরিবর্তে তাকে দল অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৬০] কিন্তু, পরাজিত হওয়া ঐ খেলায় তিনি ৩/১২২ পান।[৬১] ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় তাকে দলে রাখা হলেও মাত্র এক ওভার বোলিং করানো হয়।[৬২]

ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে সুন্দর খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪/৯০,[৬৩] তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৪/১৮[৬৪] ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬/৫৭ পান।[৬৫] এ ধরনের বোলিংয়ের কল্যাণে ভিক্টোরিয়া দল আরও একবার শেফিল্ড শিল্ড জয় করে। ২০ গড়ে ৪১ উইকেট নিয়ে মৌসুমের সেরা রেকর্ড গড়েন।

১৯৮০ সালে পাকিস্তান গমনার্থে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে রাখা হলেও পরবর্তী তাকে এ সফরে রাখা হয়নি।[৬৬] এরফলে শিল্ডের শেষ সময় পর্যন্ত খেলার সুযোগ পান।[৬৭] এছাড়াও, ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে নিজের অনুপস্থিতির কথা ঘোষণা করেন।[৬৮]

নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি

[সম্পাদনা]

১৯৮০-৮১ মৌসুমের শুরুটা বেশ ধীরলয়ে যাত্রা করেন। সফররত নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার সদস্যরূপে তিন উইকেট পান।[৬৯] ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২/৬৫ ও ৪/৬৭ বোলিং পরিসংখ্যানের স্বীকৃতিস্বরূপ[৭০] নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে রাখা হয়।

প্রথম ইনিংসে ৪/৫৯ পান। ফলে, অস্ট্রেলিয়া দল নিউজিল্যান্ডকে পরাভূত করে।[৭১] এরপর, দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/২৫ নিয়ে দলের জয়ে আবারও ভূমিকা রাখেন।[৭২] তৃতীয় টেস্টে ৩ উইকেট পান। এ খেলায় তিনি তার ব্যাটিংয়ের জন্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। দলের সংগ্রহ ২৭৯/৯ থাকা অবস্থায় ব্যাটিং করতে মাঠে নামেন। ১ রানে থাকা অবস্থায় ল্যান্স কেয়ার্নসের বাউন্সারে আম্পায়ার রবিন বেইলাস অবৈধ আখ্যায়িত করেন। ৭৭ রানে অপরাজিত থাকা ডগ ওয়াল্টার্স সেঞ্চুরি করতে সমর্থ হন ও হিগস ৬৯ রানে ৬ রান তুলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দল ৩২১ তুলে খেলায় জয়ী হয়।[৭৩][৭৪]

ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/২৫ নিয়ে দলকে জয়ী করেন।[৭৫] তৃতীয় টেস্টে তিনি কোন উইকেট পাননি। ০/৬৫ ও ০/৪১ করেন। খেলায় তার দল পরাজিত হয়।[৭৬] এটিই তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে রিচমন্ডের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। তবে, আর তাকে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাসত্ত্বেও, শিল্ডের খেলায় তাসমানিয়ার বিপক্ষে ছয় উইকেট[৭৭] ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাত উইকেট দখল করেন।[৭৮] ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আবারও ৫/৬৮ পান।[৭৯]

১৯৮২-৮৩ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন জিম হিগস। খেলায় তিনি ০/৯০ ও ২/২৪ পান।[৮০] ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে রিচমন্ডের প্রিমিয়ারশীপে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুম শেষে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এ পর্যায়ে ক্রমাগত পিঠের আঘাতে জর্জরিত ছিলেন তিনি।

প্রশাসনে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৮৮-৮৯ মৌসুম পর্যন্ত ভিক্টোরিয়া দলের নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলের নির্বাচক হিসেবে মনোনীত হন। এছাড়াও, ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত রিচমন্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ভিক্টোরিয়া ক্রিকেট বোর্ডের সাথেও যুক্ত ছিলেন জিম হিগস।

বর্তমানে তিনি মেলবোর্নভিত্তিক টিটিএম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। ড্যামিয়েন হ্যানকক্সের সাথে ঐ প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম পরিচালক তিনি।[৮১]

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

১৯৭৭ সালে জিম হিগস প্রসঙ্গে ইয়ান চ্যাপেল এক নিবন্ধে উল্লেখ করেন যে, ‘আমার দৃষ্টিতে সতীর্থ স্পিনার ডেভিড হোর্নসহ তিনি প্রকৃত ক্রিকেটার নন। আমি বলতে চাচ্ছি যে, তারা কেবল বোলার, ক্রিকেটার নন। ফিল্ডার ও ব্যাটসম্যান হিসেবে তাদের মান অত্যন্ত নিম্নমানের।’[৮২]

গিডিওন হেইয়ের অভিমত, রিচি বেনো ও শেন ওয়ার্নের মাঝামাঝি পর্যায়ের অন্যতম সেরা অস্ট্রেলীয় লেগ স্পিনার ছিলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে বিলুপ্ত হতে যাওয়া রিস্ট স্পিন বোলিংয়ের মাঝে দল নির্বাচকমণ্ডলী ও অধিনায়কগণ খুব কমই সাড়া দিয়েছিলেন।[৮৩] তরুণ শেন ওয়ার্নকে কীভাবে ‘ফ্লিপার’ মারতে হয় তা শিখিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. [১]
  2. [২]
  3. "Possibility of a rain-affected wicket."The Canberra Times। National Library of Australia। ৬ নভেম্বর ১৯৭০। পৃষ্ঠা 22। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  4. [৩]
  5. [৪]
  6. [৫]
  7. [৬]
  8. "Higgs Out of Team", The Age, Jan 16, 1973 accessed 4 December 2013
  9. "WEST INDIES TOUR Test hopes have days left."The Canberra Times। National Library of Australia। ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭২। পৃষ্ঠা 22। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  10. [৭]
  11. "SURPRISES APLENTY IN MELBOURNE."The Canberra Times। National Library of Australia। ৮ ডিসেম্বর ১৯৭৩। পৃষ্ঠা 38। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  12. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  13. [৮]
  14. [৯]
  15. [১০]
  16. [১১]
  17. [১২]
  18. [১৩]
  19. [১৪]
  20. [১৫]
  21. [১৬]
  22. [১৭]
  23. "Higgs to ignore advice."The Canberra Times। National Library of Australia। ২৩ আগস্ট ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 38। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  24. "Robinson, Higgs dropped for World Cup."The Canberra Times। National Library of Australia। ৬ জুন ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 1 Section: SPORTING SECTION। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  25. [১৮]
  26. [১৯]
  27. [২০]
  28. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  29. [২১]
  30. "Higgs' six wickets in Test trial."The Canberra Times। National Library of Australia। ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮। পৃষ্ঠা 1 Section: SPORTS SECTION। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  31. [২২]
  32. [২৩]
  33. [২৪]
  34. [২৫]
  35. "Higgs to rescue after Yardley called chucker."The Canberra Times। National Library of Australia। ২৪ এপ্রিল ১৯৭৮। পৃষ্ঠা 1 Section: SPORTS SECTION। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  36. [২৬]
  37. [২৭]
  38. [২৮]
  39. Australia vs England 1st test 1978-79 at Cricinfo
  40. [২৯]
  41. [৩০]
  42. [৩১]
  43. [৩২]
  44. [৩৩]
  45. [৩৪]
  46. "Four dropped from Australia's team."The Canberra Times। National Library of Australia। ১৭ মার্চ ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 41। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  47. [৩৫]
  48. [৩৬]
  49. "OVERSEAS SPORT CRICKET Test worry."The Canberra Times। National Library of Australia। ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 14। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  50. [৩৭]
  51. "CRICKET HIGGS 7-143 TO NO AVAIL."The Canberra Times। National Library of Australia। ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 30। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  52. [৩৮]
  53. [৩৯]
  54. [৪০]
  55. [৪১]
  56. [৪২]
  57. [৪৩]
  58. [৪৪]
  59. [৪৫]
  60. "Jeff Thomson out, Jim Higgs in."The Canberra Times। National Library of Australia। ২১ ডিসেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  61. [৪৬]
  62. [৪৭]
  63. [৪৮]
  64. [৪৯]
  65. [৫০]
  66. "Four decline to tour Pakistan."The Canberra Times। National Library of Australia। ১০ জানুয়ারি ১৯৮০। পৃষ্ঠা 18। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  67. "Higgs leads Victoria to Shield title."The Canberra Times। National Library of Australia। ১১ মার্চ ১৯৮০। পৃষ্ঠা 20। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  68. "CRICKET Surprises in England tour squad selection."The Canberra Times। National Library of Australia। ২ মে ১৯৮০। পৃষ্ঠা 24। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  69. [৫১]
  70. [৫২]
  71. [৫৩]
  72. [৫৪]
  73. [৫৫]
  74. Cliip of dismissal at YouTube
  75. [৫৬]
  76. [৫৭]
  77. [৫৮]
  78. [৫৯]
  79. [৬০]
  80. [৬১]
  81. TTM Consulting website accessed 4 December 2014
  82. Chappell, Ian (জানুয়ারি ১৯৭৭)। "England 1977... Ian Chappell Predicts"। Cricketer। পৃষ্ঠা 21। 
  83. Gideon Haigh, "Jim Higgs" at Cricinfo

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]