কচু
কচু Colocasia esculenta | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
(শ্রেণীবিহীন): | Angiosperms |
(শ্রেণীবিহীন): | Monocots |
বর্গ: | Alismatales |
পরিবার: | Araceae |
উপপরিবার: | Aroideae |
গোত্র: | Colocasieae |
গণ: | Colocasia |
প্রজাতি: | C. esculenta |
দ্বিপদী নাম | |
Colocasia esculenta (L.) Schott | |
প্রতিশব্দ[১][২][৩] | |
|
কচু Araceae গোত্রভুক্ত একধরনের কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ। কচু মানুষের চাষকৃত প্রাচীন উদ্ভিদগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় কম বেশি কচু দেখতে পাওয়া যায়। রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনাদরে-অবহেলায় অনেক সময় কচু জন্মাতে দেখা যায়। কচু বহু জাতের হয়ে থাকে। কয়েকটি জাতের কচুর প্রচুর পরিচর্যা দাবী করে।[৪]
বনে জঙ্গলে যেসব কচু আপনা আপনি জন্মায় সেগুলকে সাধারণত “বুনো কচু” বলা হয়। এ ধরনের কচুর অনেকগুলো জাত মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী জাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মুখীকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখী কচু, পাইদনাইল, ওলকচু, দুধকচু, মানকচু, শোলাকচু ইত্যাদি। সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সৌন্দর্যের কারণে কিছু কিছু প্রজাতির কচু টবে ও বাগানে চাষ করা হয়। এদের মধ্যে কতগুলোর রয়েছে বেশ বাহারী পাতা, আবার কতগুলোর রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ফুল।
কচুর উৎপত্তি[সম্পাদনা]
অনুমান করা হয়, কচুর উৎপত্তি ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। প্রায় দু'হাজার বছর আগেও কচুর চাষ হত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্থলভূমি ও জলভুমি উভয়রূপ স্থানে কচু জন্মাতে পারে। তবে স্থলভাগে জন্মানো কচুর সংখ্যাই বেশি। কচুর বহু আয়ূর্বেদীয় গুনাগুন আছে বলে দাবি করা হয়। প্রজাতিভেদে কচুর মুল, শিকড় বা লতি, পাতা ও ডাটা সবই মানুষের খাদ্য। কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত উপকারী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
উৎপাদন[সম্পাদনা]
নাইজেরিয়া বিশ্বের বৃহত্তম কচু উৎপাদনকারী দেশ। এই দেশটি প্রতি বছর প্রায় ৩৩লক্ষ মেট্রিক টন কচু উৎপাদন করে। বিশ্বব্যাপী কচুর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৬.২ টন তবে এর ফলন অঞ্চল অনুসারে পরিবর্তিত হয়। এশিয়ায় গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ১২.৬ টন।[৫]
দেশ | উৎপাদন |
---|---|
![]() |
৩৩ |
![]() |
১৯ |
![]() |
১৮ |
![]() |
১২ |
![]() |
০.৩ |
সারা বিশ্বে | ১০.২ |
বিভিন্ন রকম কচু[সম্পাদনা]
বনে জঙ্গলে যেসব কচু আপনাআপনি জন্মায় সেগুলোকে সাধারণত বুনো কচু বলা হয়। এর সবগুলো মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী জাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মুখীকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখী কচু, ওলকচু, দুধকচু, মানকচু, শোলাকচু ইত্যাদি।
মুখী কচু[সম্পাদনা]
মুখী কচু একটি সুস্বাদু সবজি । এ সবজি খরিফ মৌসুমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষ হয়। মুখী কচু বাংলাদেশের গুড়া কচু, কুড়ি কচু, ছড়া কচু, দুলি কচু, বিন্নি কচু, ইত্যাদি নামে ও পরিচিত।মুখী কচুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘এ’ এবং লৌহ থাকে।
ওল কচু[সম্পাদনা]
এতে পুষ্টি ও ঔষধি মূল্য উভয়ই বিদ্যমান এবং সাধারণত রান্না করে তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। বাংলাদেশে এটি গ্রীষ্ম মৌসুমে জন্মে যখন বাজারে সবজির খুব ঘাটতি থাকে। ওল কচুর রস, উচ্চরক্তচাপের রোগীকে প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে এর আবাদ হয়।
মান কচু[সম্পাদনা]
মান কচুর ডগা ও পাতা বাতের রোগীকে খাওয়ানোর প্রথা এ দেশের ঘরে ঘরে প্রচলিত রয়েছে। কচু শাকে পর্যাপ্ত আঁশ থাকায় এটি দেহের হজমের কাজে সহায়তা করে।
পাইন্যা কচু[সম্পাদনা]
যে সমস্ত কচু দাড়াঁনো পানিতে চাষ করা যায় তাকে পানি কচু বলে।পানিতে হয় বলে সম্ভবতই এর নাম পানি কচু। তবে বেশির ভাগ মানুষের কাছে পাইন্যা কচু হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে পানি কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন নারিকেল কচু, জাত কচু, বাশঁ কচু ইত্যাদি। পানি কচুই হোক কিংবা পাইন্যা কচুই হোক সব্জি হিসেবে এর গুরুত্ব ব্যাপকভাবে সমাদৃত। বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি একটি জনপ্রিয সব্জি। কারণ এর স্বাদ এবং পুষ্টিমান ও অত্যধিক, রান্না করাও সহজ।
কচু দিয়ে রান্না[সম্পাদনা]
প্রজাতিভেদে কচুর মুল, শিকড় বা লতি, পাতা ও ডাটা সবই মানুষের খাদ্য। কচুর লতি দিয়ে চিংড়ি মাছ অনেকেরই খাদ্য তালিকায় পছন্দের মধ্যে আছে। এছাড়াও কচুর লতি চচ্চড়ি, কচুর লতির ভুনা, কচুর লতির ইলিশ, কচুর লতির কোরমা, সরিষা বাটায় কচুর লতি আরও কত রকমের খাবার যে রান্না করা যায় তার ইয়ত্তা নেই।
কচুর চাষাবাদ[সম্পাদনা]
উপযুক্ত জমি ও মাটি[সম্পাদনা]
পলি দোআঁশ ও এটেল মাটি পানি কচু চাষের জন্য উপযুক্ত ।
জাত পরিচিতি:[সম্পাদনা]
জাতের নাম/লতিরাজ
বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]
লতি লম্বায় ৯০-১০০ সেমি. সামান্য চেপ্টা, সবুজ । লতি সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ এবং গলা চুলকানি মুক্ত হয়। বোঁটা এবং পাতার সংযোগস্থলের উপরিভাগের রং বেগুনি। জীবনকাল ১৮০-২১০ দিন। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষাবাদ করা যায়।
ফলন(টন/হেক্টর)[সম্পাদনা]
লতি ২৫-৩০, কান্ড : ১৮-২
চারা রোপণ[সম্পাদনা]
আগাম ফসলের জন্য কার্তিক (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেস্বর)| নাবী ফসলের জন্য মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে লাগানো যায়। দক্ষিণাঞ্চলে বৎসরের যেকোন সময় লাগানো যায়। প্রতি শতকে প্রায় ১৫০টি লতা রোপণের জন্য প্রয়োজন। জমি ভালভাবে তৈরি করে লাইন থেকে লাইন ২ ফুট (৬০ সে.মি) এবং গাছ থেকে গাছ ১.৫ ফুট (৪৫ সে.মি) রাখতে হবে।
সার ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]
সারের নাম সারের পরিমাণ ( প্রতি শতকে) ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম টিএসপি ৫০০ গ্রাম এমওপি ৭৫০ গ্রাম গোবর ৫০ কেজি গোবর, টিএসপি এবং এমওপি সার জমি তৈরির শেষ সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ২-৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়, তবে প্রথম কিস্তি রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করা দরকার।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]
কচুর গোড়ায় দাড়াঁনো পানি রাখতে হবে এবং দাঁড়ানো পানি মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে। লতিরাজ জাতের জন্য দাঁড়ানো পানির গভীরতা ৮-১০ সে.মি হওয়া দরকার।
রোগ ব্যবস্থাপনা:[সম্পাদনা]
কচুর পাতার মড়ক রোগ
ক্ষতির নমুনা[সম্পাদনা]
পাতার উপর বেগুনি থেকে বাদামি রংয়ের গোলাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে এ সমস্ত দাগ আকারে বেড়ে একত্রিত হয়ে যায় এবং পাতা ঝলসে যায়। পরে তা কচু ও কন্দে বিস্তার লাভ করে।
অনুকূল পরিবেশ[সম্পাদনা]
উচ্চ তাপমাত্রা, আর্দ্র আবহাওয়া ও পর পর ৩-৪ দিন বৃষ্টি থাকলে এ রোগের মাত্রা খুব বেড়ে যায়।
ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]
রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রিডোমিল এম জেড-৭২ ডব্লিউ অথবা ডাইথেন এম ৪৫ মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োগ করার আগে ট্রিকস মিশিয়ে নিতে হয়।
ফসল সংগ্রহ[সম্পাদনা]
রোপণের ২ মাস পর থেকে ৭ মাস পর্যন্ত লতি হয়ে থাকে।
উপকারিতা[সম্পাদনা]
কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে “ভিটামিন এ” থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত উপকারী। কচু আঁশ জাতীয় হওয়ায় এটি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে। কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় শক্ত করতে সহায়তা করে। চুলের ভঙ্গুরতাও বন্ধতেও কচুর উপকারিতা অনেক। কচুতে আয়োডিনের পরিমাণও অনেক। যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি রয়েছে তাদের জন্য কচু অনেক উপকারী। কচুর লতিতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন এটি।
গুণাগুণ[সম্পাদনা]
কচুর শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ,বি,সি,ক্যালসিয়াম ও লৌহ। ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য রাতকানা প্রতিরোধ করে আর ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচুর শাক খাওয়ানো উচিত। কচুতে আছে আয়রন,যা রক্ত শূন্যতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যাদের রক্ত শূন্যতা আছে তারা নিয়মিত কচু খেলে উপকার পাবেন। কচুতে আছে নানা রকমের ভিটামিন যা গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য দারুন উপকারি। কচু দামেও বেশ সস্তা, তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু খেতে পারেন। কচুর ডাঁটায় প্রচুর পরিমানে পানি থাকে,তাই গরমের সময় কচুর ডাঁটায় রান্না করে খেলে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হয়। কচুর শাকে পর্যাপ্ত পরিমানে আঁশ থাকে যা হজমে সহায়তা করে। জ্বরের সময় রোগীকে দুধ কচু রান্না করে খাওয়ালে জ্বর দ্রুত ভাল হয়। কচুতে আছে প্রচুর ফাইবার, ফোলেট ও থায়ামিন যা মানব শরীরের জন্য অনেক দরকারি উপাদান। কচু খেলে রক্তের কোলেস্টরল কমে তাই উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের জন্য ওল কচুর রস বেশ উপকারী। নিয়মিত কচু খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। কচুতে আছে অক্সলেট নামক উপাদান। তাই কচু শাক বা কচু খেলে অনেক সময় গলা চুলকায়। তাই কচু রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা ব্যবহার করা উচিত। তবে যাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের কচু না খাওয়াই ভালো। কচু খেলে শরীর পুষ্ট হয় এবং শুক্র বৃদ্ধি পায়। কান ও গলার রুক্ষতা বা সুড়সুড়ি দূর করে। এটি আমাশয় রোগে বিশেষ উপকারী।[৭]
খাদ্য উপাদান[সম্পাদনা]
কচুর মূল উপাদান হলো আয়রন (Fe),যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ ঠিক রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে ৩৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ১৫ গ্রাম চর্বি, ২২৭ মিলি গ্রাম ক্যালশিয়াম, ১০ মিলি গ্রাম আয়রন ও ৫৬ মিলিগ্রাম খাদ্যশক্তি থাকে। কচুতে অক্সালিক এসিডের উপস্থিতি থাকায় খাবার পর মাঝে মাঝে গলা চুলকায়। [৮]
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান | |
---|---|
শক্তি | ৫৯৪ কিজু (১৪২ kcal) |
34.6 g | |
চিনি | 0.49 |
খাদ্যে ফাইবার | 5.1 g |
0.11 g | |
0.52 g | |
ভিটামিনসমূহ | |
থায়ামিন (বি১) | (9%) 0.107 mg |
রিবোফ্লাভিন (বি২) | (2%) 0.028 mg |
ন্যায়েসেন (বি৪) | (3%) 0.51 mg |
(7%) 0.336 mg | |
ভিটামিন বি৬ | (25%) 0.331 mg |
ফোলেট (বি৯) | (5%) 19 μg |
ভিটামিন সি | (6%) 5 mg |
ভিটামিন ডি | (8%) 1.2 μg |
ভিটামিন ই | (20%) 2.93 mg |
চিহ্ন ধাতুসমুহ | |
ক্যালসিয়াম | (2%) 18 mg |
লোহা | (6%) 0.72 mg |
ম্যাগনেসিয়াম | (8%) 30 mg |
ম্যাঙ্গানিজ | (21%) 0.449 mg |
ফসফরাস | (11%) 76 mg |
পটাশিয়াম | (10%) 484 mg |
দস্তা | (3%) 0.27 mg |
| |
Percentages are roughly approximated using US recommendations for adults. Source: USDA Nutrient Database |
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান | |
---|---|
শক্তি | ১৭৭ কিজু (৪২ kcal) |
6.7 g | |
চিনি | 3 g |
খাদ্যে ফাইবার | 3.7 g |
0.74 g | |
5 g | |
ভিটামিনসমূহ | |
ভিটামিন এ সমতুল্য | (30%) 241 μg(27%) 2895 μg1932 μg |
থায়ামিন (বি১) | (18%) 0.209 mg |
রিবোফ্লাভিন (বি২) | (38%) 0.456 mg |
ন্যায়েসেন (বি৪) | (10%) 1.513 mg |
ভিটামিন বি৬ | (11%) 0.146 mg |
ফোলেট (বি৯) | (32%) 126 μg |
ভিটামিন সি | (63%) 52 mg |
ভিটামিন ই | (13%) 2.02 mg |
ভিটামিন কে | (103%) 108.6 μg |
চিহ্ন ধাতুসমুহ | |
ক্যালসিয়াম | (11%) 107 mg |
লোহা | (17%) 2.25 mg |
ম্যাগনেসিয়াম | (13%) 45 mg |
ম্যাঙ্গানিজ | (34%) 0.714 mg |
ফসফরাস | (9%) 60 mg |
পটাশিয়াম | (14%) 648 mg |
দস্তা | (4%) 0.41 mg |
| |
Percentages are roughly approximated using US recommendations for adults. Source: USDA Nutrient Database |
বিদেশের বাজারে কচুর লতি[সম্পাদনা]
কচুর লতির জন্য প্রখ্যাত জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলা।সারাবছর এ অঞ্চল প্রচুর কচুর লতি উৎপাদন করে এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে।দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে কচুর লতি। কচুর লতি ঢাকা, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ গত ক'বছর ধরে গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকা, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের বাজারে এ লতি বাজারজাত করা হচ্ছে। সকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে বিদেশের বাজারে এই লতির লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব।
কচুপাতা[সম্পাদনা]
![]() | এই অনুচ্ছেদটির নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। |
বনে জঙ্গলে যেসব কচু আপনাআপনি জন্মায় সেগুলকে সাধারণত বুনো কচু বলা হয়। এরা সবগুলো মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী জাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মুখীকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখী কচু, পাইদনাইল, ওলকচু, দুধকচু, মানকচু, শোলাকচু ইত্যাদি। সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সৌন্দর্যের কারণে কিছু কিছু প্রজাতির কচু টবে ও বাগানে চাষ করা হয়। এদের মধ্যে কতগুলোর রয়েছে বেশ বাহারী পাতা, আবার কতগুলোর রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ফুল।
আমাদের দেশে তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় কম-বেশি কচু জন্মে। রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে-কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনেক সময় অনাদরে-অবহেলায় কচু হয়ে থাকতে দেখা যায়। বন-জঙ্গলেও জন্মে বুনো কচু। স্থলভূমি ও জলভুমি উভয় স্থানে কচু জন্মাতে পারে। তবে স্থলভাগে জন্মানো কচুর সংখ্যাই বেশি। বুনো কচু মানুষ খায় না।
প্রজাতিভেদে কচুর মূল, শেকড় বা লতি, পাতা ও ডাঁটা সবই মানুষের খাদ্য। আমাদের দেশে সবজি হিসেবে কচুর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বহুদিন ধরে। ছোট চিংড়ি অথবা ইলিশ মাছের কাঁটা দিয়ে রান্না করা কচুশাক অত্যন্ত মুখরোচক ও সুস্বাদু। অন্যদিকে কচু তরকারি হিসেবে কিংবা ডালের সঙ্গেও খাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কচুর চেয়ে কচুশাকে বেশি পুষ্টিমান লক্ষ্য করা যায়। কচুশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন 'এ' থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত উপকারী। তাছাড়া এতে লালশাক ও পুঁইশাকের চেয়ে খাদ্যশক্তি, চর্বি, শর্করা, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম ও লৌহ বেশি থাকে। রক্তশূন্যতা এবং গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকরা সহজে আয়রন বা লৌহ পাওয়ার জন্য বেশি করে কচু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ক্যালসিয়াম ও লৌহের চাহিদা কচুশাক সহজেই মেটাতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সবুজ কচুর চেয়ে কালো কচুতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি বেশি থাকে। অনেক সময় কচু খেলে গলা চুলকায়। এর কারণ হচ্ছে কচুতে অপালেটের যে দানা থাকে, তা খাওয়ার সময় গলায় কাঁটার মতো বিঁধে যায়। তাই বলে কচু কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
রান্নার আগে কচুকে ভালোভাবে ধুলে এবং পুরো করে ওপরের অংশ কেটে বাদ দিলে অথবা রান্না করার সময় কিছু পরিমাণ লেবুর রস, ভিনেগার অথবা তেঁতুল গোলা পানি দিলে অপালেটের দানা দূর করা যায়। আর এই অপালেটের দানা দূর হওয়ার কারণে কচু খেলেও গলায় ধরবে না।
সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সৌন্দর্যের কারণে কিছু প্রজাতির কচু টবে ও বাগানে চাষ করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যে কতগুলোর রয়েছে বাহারি পাতা আবার কতগুলোর রয়েছে বেশ সুন্দর ফুল। কচুর আছে ভেষজ গুণ। সুতরাং নানা রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। প্রজাতিভেদে কচুর মুল, শিকড় বা লতি, পাতা ও ডাটা সবই মানুষের খাদ্য।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ T. K. Lim (৩ ডিসেম্বর ২০১৪)। Edible Medicinal and Non Medicinal Plants: Volume 9, Modified Stems, Roots, Bulbs। Springer। পৃষ্ঠা 454–460। আইএসবিএন 978-94-017-9511-1।
- ↑ "Colocasia esculenta (L. ) Schott"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ Umberto Quattrocchi (১৯ এপ্রিল ২০১৬)। CRC World Dictionary of Medicinal and Poisonous Plants: Common Names, Scientific Names, Eponyms, Synonyms, and Etymology। CRC Press। পৃষ্ঠা 1060–1061। আইএসবিএন 978-1-4822-5064-0।
- ↑ Wang, W. et al. The Spirodela polyrhiza genome reveals insights into its neotenous reduction fast growth and aquatic lifestyle. Nat. Commun. 5:3311 doi: 10.1038/ncomms4311 (2014).
- ↑ "FAO: Taro cultivation in Asia and the Pacific, 1999" (PDF)। ২০১১-০৮-০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১১।
- ↑ "Crops"। faostat.fao.org। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ আঃ খালেক মোল্লা সম্পাদিত;লোকমান হেকিমের কবিরাজী চিকিৎসা; আক্টোবর ২০০৯; পৃষ্ঠা- ৭৯
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১৫-১১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৯-১০।