আন্তর্জাতিক যোগ দিবস
আন্তর্জাতিক যোগ দিবস | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | আন্তর্জাতিক যোগ দিবস – আইওয়াইডি |
অন্য নাম | যোগ দিবস, বিশ্ব যোগ দিবস |
পালনকারী | বিশ্বব্যাপী |
ধরন | রাষ্ট্রসংঘ |
তাৎপর্য | বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য, সাদৃশ্য এবং শান্তির জন্য জাতিসংঘ-এর সরকারি প্রচার |
উদযাপন | যোগ, ধ্যান, সম্মেলন, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান |
তারিখ | ২১ জুন |
সংঘটন | বার্ষিক |
সর্বপ্রথম | ২১ জুন ২০১৫ |
আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হল যোগব্যায়ামের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি দিন, যা ২০১৪ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্বজুড়ে পালিত হয়।[১][২] যোগ হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা বা যোগব্যায়াম। এর উদ্দেশ্য মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাবিধান। এই প্রথা ভারতে আজও প্রচলিত আছে।
২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন।[৩][৪][৫][৬] জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক মুখোপাধ্যায় ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ১২৪ নম্বর আলোচ্য বিষয়ের উপর - প্রতি বছর ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের খসড়া সিদ্ধান্ত (এ/৬৯/এল ১৭) উপস্থাপন করেন। ১৭৫ দেশের উপস্থিত প্রতিনিধির সভায় প্রস্তাবটি ভোটাভুটি ছাড়াই গৃহীত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২১ জুন হতে এই বৈশ্বিক দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।[৭][৮][৯]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জাতিসংঘের ভাষণে ২১ জুন বার্ষিক যোগ দিবস পালনের পরামর্শ দিয়েছিলেন, কারণ এটি উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম দিন এবং বিশ্বের অনেক অংশে এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।[১০][১১] প্রাথমিক প্রস্তাবের পর, জাতিসংঘ ২০১৪ সালে "যোগ দিবস" শিরোনামে একটি খসড়া প্রস্তাব গ্রহণ করে।
কথিত আছে, সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় আধ্যাত্মিক কৃতিত্ব অর্জনে অত্যন্ত খুব উপকারী বলে প্রমাণিত। এছাড়া এর জেরে পরিবেশ দূষিত হয়, জীবাণু উৎপন্ন হয় সবচেয়ে বেশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এদিন। এই কারণেই এদিন যোগাব্যায়াম করে শরীর ও মন থাকে সুস্থ ও মজবুত।[১২]
জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র
[সম্পাদনা]২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর, ভারতের জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক মুখার্জি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক ঐতিহাসিক খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই প্রস্তাবটি ব্যাপক সাড়া ফেলে—মোট ১৭৭টি সদস্য রাষ্ট্র এতে সহ-সমর্থন জানায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রস্তাবটি কোনো ভোট ছাড়াই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এই বিপুল সংখ্যক সমর্থন জাতিসংঘে এ ধরণের প্রস্তাবের জন্য এক নতুন রেকর্ড স্থাপন করে। বিশ্বের বহু রাষ্ট্রনেতা এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকেও এই উদ্যোগটি ব্যাপক সমর্থন পায়।[১৩]
এই প্রস্তাবে ২১ জুন দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব ছিল। এই দিনটি উত্তর গোলার্ধে বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ দিন, আর দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন হিসেবে পরিচিত। অনেক সংস্কৃতিতেই এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভারতীয় ক্যালেন্ডারে, এটি গ্রীষ্মকালীন অয়নান্তের পর দক্ষিণায়নের সূচনা চিহ্নিত করে। এর পরবর্তী দ্বিতীয় পূর্ণিমাকে[১৪] 'গুরু পূর্ণিমা' বলা হয়। হিন্দু ধর্মমতে, এই দিনেই আদিযোগী শিব মানবজাতিকে যোগবিদ্যার জ্ঞান দান করতে শুরু করেন এবং তিনিই প্রথম গুরু হিসেবে পরিচিত হন।[১৫]
জাতিসংঘে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর, ভারতের বিভিন্ন আধ্যাত্মিক সংগঠনের নেতা ও সাধকরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ‘আর্ট অফ লিভিং’-এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর বলেন, “রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া কোনো দর্শন, ধর্ম কিংবা সংস্কৃতির পক্ষে টিকে থাকা কঠিন। এতদিন যোগব্যায়াম ছিল প্রায় অনাথের মতো। জাতিসংঘের স্বীকৃতির ফলে এর উপকারিতা এখন বিশ্বব্যাপী আরও ছড়িয়ে পড়বে।”[১৬]
বাস্তবে
[সম্পাদনা]২১ জুন ২০১৫ তারিখে বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপিত হয়। ভারতে এই দিনটি সফলভাবে পালন করার জন্য ভারতের আয়ুষ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এই ঐতিহাসিক দিনে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ ৮৪টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মোট ৩৫,৯৮৫ জন মানুষ নতুন দিল্লির রাজপথে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা একসঙ্গে ৩৫ মিনিট ধরে ২১টি যোগ আসন (যোগব্যায়াম) অনুশীলন করেন। এটি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যোগব্যায়াম ক্লাস হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পায়। অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যাও (৮৪টি) ছিল নজিরবিহীন।
এই দিনটি সফলভাবে পালনের পর, প্রতি বছর ২১ জুন তারিখে ভারত সহ বিশ্বের বহু শহরে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
[সম্পাদনা]২০১৫ সালের প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে[১৭] জানানো হয়, দিল্লির রাজপথ বিশাল ব্যায়ামের মাঠে পরিণত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাও যোগচর্চায় অংশ নেন। মোদী যখন “শান্তি ও সম্প্রীতির” কথা বলেন, তখন কিছু সমালোচক মনে করেন এই উদ্যোগটি হিন্দুধর্মের পক্ষপাতদুষ্ট প্রচার হতে পারে।
সমালোচনার অংশ হিসেবে বলা হয়, সূর্য নমস্কার বাদ দেওয়া হয়েছিল কারণ মুসলিম সম্প্রদায় সূর্যকে দেবতা হিসেবে উপস্থাপন করার বিরোধিতা করেছিল। একইভাবে হিন্দুদের পবিত্র শব্দ “ওম” জপও বাদ দেওয়া হয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এই আয়োজনের বিপুল ব্যয় বরং দিল্লির রাস্তা ও পরিষেবা উন্নয়নে ব্যবহার করা যেত।[১৭]
২০১৬ সালে ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর উল্লেখ করে যে জাতিসংঘে ভারতের প্রস্তাব অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও[১৮] যোগকে শুধুমাত্র শারীরিক ব্যায়াম হিসেবে নয়, মানসিক ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিস ২০১৫ সালে একটি বক্তব্যে সতর্ক করেন যে, যোগব্যায়াম ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর পথ হতে পারে—এই ভাবনা খ্রিস্টানদের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এর জবাবে মোদী বলেন, “যোগব্যায়াম অন্য জীবনের বিষয়ে নয়, তাই এটি কোনো ধর্মীয় অনুশীলন নয়।”[১৮]
দ্য উইক ম্যাগাজিন ২০১৫ সালে জানায়, ভারতের উদ্দেশ্য ছিল যোগকে “ভারতের সাংস্কৃতিক সম্পদ” হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া। ভারতের যোগমন্ত্রী শ্রীপাদ নায়েক বলেন, “আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই এটি আমাদের।”[১৯]
তবে, পশ্চিমা বিশ্বে ইতিমধ্যেই যোগ ব্যাপকভাবে প্রচলিত এবং তা অনেকটাই ধর্মনিরপেক্ষ রূপে বিকশিত হয়েছে। ধর্মবিশারদ অ্যান গ্লেগ মন্তব্য করেন, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হিন্দু ও খ্রিস্টানদের উদ্বেগ “ঐতিহাসিকভাবে সঠিক নয়”, কারণ পশ্চিমা যোগ মূলত শারীরিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ রূপে রূপান্তরিত হয়েছে।[১৯]
- বিশ্বজুড়ে যোগ দিবস
প্রতিপাদ্য বিষয় বা থিম
[সম্পাদনা]- ২০২৫: 'এক পৃথিবী, এক স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম' এই বছর এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ১১তম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত সুস্থতা এবং গ্রহের স্বাস্থ্য অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত এই গুরুত্বপূর্ণ সত্যের প্রতিধ্বনি করে। যোগব্যায়াম শরীরকে শক্তিশালী করে, মনকে শান্ত করে এবং দৈনন্দিন জীবনে সচেতনতা এবং দায়িত্ববোধের একটি উচ্চতর অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এই সচেতনতা একজনকে স্বাস্থ্যকর এবং আরও টেকসই জীবনধারা বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। নিজেদের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে, আমরা পৃথিবীর যত্ন নিতে শুরু করি, যা "বসুধৈব কুটুম্বকম" - বিশ্ব একটি পরিবার - এর স্থায়ী ভারতীয় নীতি প্রতিফলিত করে।[২০]
- ২০২৪: নিজের এবং সমাজের জন্য যোগব্যায়াম
- ২০২৩: যোগা ফর বসুধৈব কুটুম্বকম অর্থাৎ যোগব্যায়ামে সারা বিশ্ব এক পরিবার
- ২০২২: যোগা ফর হিউম্যানিটি তথা মানবতার জন্য যোগব্যায়াম
- ২০২১: যোগা ফর ওয়েলবিইং বা সুস্থতার জন্য যোগব্যায়াম
- ২০১৯:যোগা ফর হার্ট - হৃদরোগ জন্য যোগব্যায়াম
- ২০১৮: যোগা ফর পিস - শান্তির জন্য যোগব্যায়াম
- ২০১৭: যোগা ফর হেল্থ - স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম
- ২০১৬: যোগা ফর দ্য অ্যাচিভমেন্ট অফ দ্য সাসটেইনঅ্যাবেল ডেভেলপমেন্ট গোল্স - টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে যোগব্যায়াম
- ২০১৫: যোগা ফর হারমোনি অ্যান্ড পিস - সম্প্রীতি ও শান্তির জন্য যোগব্যায়াম
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ UN Declared 21 June as International Day of Yoga ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০১৬ তারিখে
- ↑ "Hindu Lawmaker Introduces Resolution In US Congress To Celebrate International Yoga Day"। NDTV। জুন ২৩, ২০১৭।
- ↑ UN should adopt an International Yoga Day: Modi
- ↑ "India leader proposes International Yoga Day"। ৭ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৫।
- ↑ "PM Modi asks world leaders to adopt International Yoga Day"। ২০১৫-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৬-১৮।
- ↑ Narendra Modi asks world leaders to adopt International Yoga Day
- ↑ "Welcome to Permanent Mission of India to the UN, New York"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২১।
- ↑ "UN Declared 21st June as International Day of Yoga"। ৯ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৫।
- ↑ "আন্তর্জাতিক যোগ দিবস:কেন এই দিবস পালন করা হয়"। ১৮ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।
- ↑ "Hindu Lawmaker Introduces Resolution In US Congress To Celebrate International Yoga Day"। NDTV। জুন ২৩, ২০১৭।
- ↑ "UN declares June 21 as 'International Day of Yoga'"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ১১ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "যোগ দিবস পালনের জন্য ২১ জুন তারিখ নির্ধারিত হল কেন?"। tv9 bangla। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০২৫।
- ↑ "United Nations General Assembly adopts Resolution on International Day of Yoga with a record number of 177 country co-sponsors"। ৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Guru Purnima 2018"।
- ↑ Sadhguru, J. (৩ জুলাই ২০১২)। "The first Guru is born"। The Times of India। Times News Service। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Sri Sri Ravi Shankar Speaks on International Yoga Day"। ১২ ডিসেম্বর ২০১৪। ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ Associated Press (২১ জুন ২০১৫)। "Yoga fans around world take to their mats for first International Yoga Day"। The Guardian।
- ↑ ক খ McCarthy, Simone (২১ জুন ২০১৬)। "Why is the United Nations promoting yoga?"।
- ↑ ক খ The Week Staff (৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Does yoga belong to India?"। The Week।
- ↑ "২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য বিষয়"। un.org। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০২৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
- International Day Of Yoga Theme
- International Yoga Day Website
- Sadhguru's Message on International Yoga Day
- Nine activities for the celebration of The International day of Yoga
- UN General Assembly Resolution
- Celebrations of International Yoga Day in San Francisco, California, USA
- International Yoga Day Quotes