অহিংসার মূর্তি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অহিংসার মূর্তি
वृषभदेव मूर्ती[১]
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিজৈনধর্ম
জেলানাসিক
ঈশ্বরঋষভনাথ
উৎসবমহামস্তকাভিষেক
অবস্থান
অবস্থানতাহরাবাদ
রাজ্যমহারাষ্ট্র
স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীজ্ঞানমতী মাতাজি
উচ্চতা১,৩২৪ মি (৪,৩৪৪ ফু)[২]
ওয়েবসাইট
www.mangitungi.highestjainidolinworld.com/en_US

অহিংসার মূর্তি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিকের কাছে মাঙ্গি-টুঙ্গিতে অবস্থিত। এটি বিশ্বের উচ্চতম জৈন মূর্তি। মূর্তিটি প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভনাথের[৩] এটার উচ্চতা ১০৮ ফুট।[৩][৪] জৈনদের পবিত্র পাহাড় মাঙ্গি-টুঙ্গির গায়ে খোদাই করে এই মূর্তিটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি বিশ্বের উচ্চতম জৈন মূর্তি হিসেবে গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে নাম নথিভুক্ত করেছে। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ বিশ্ব রেকর্ডের শংসাপত্র জ্ঞানিনী জ্ঞানমতী মাতাজি, চন্দনামতী মাতাজি ও স্বামী রবীন্দ্রকীর্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়।[৫]

জৈন সন্ন্যাসিনী আর্যিকা জ্ঞানমতী মাতাজি ও আর্যিকা চন্দনামতী মাতাজির তত্ত্বাবধানে এই মূর্তিটি নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পটির সভাপতি ছিলেন স্বামী রবীন্দ্রকীর্তি। ২০০২ সালে প্রধান সচিব ড. পান্নালাল পাপড়িওয়ালের তত্ত্বাবধানে মূর্তি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছিল। নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয় ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি। অন্যান্য ভক্তেরা ছিলেন প্রধান বাস্তুকার সি. আর. পাটিল, আশিষ নাহাতা ও সচিব সঞ্জয় পাপড়িওয়াল।[৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালে জ্ঞানমতী মাতাজি এই মূর্তিটি নির্মাণের অণুপ্রেরণা প্রদান করেন।[২] ২০০২ সালে ‘শিলাপূজন’ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।[২] পাহাড় খোদাই করতে গিয়ে দশ হাজারেরও বেশি ট্রাকবোঝাই পাথর খোদিত হয়।[২]

মাঙ্গি-টুঙ্গি পাহাড় মহারাষ্ট্রের জৈন সমাজের কাছে পরিচিত চারটি সিদ্ধক্ষেত্রের অন্যতম (অপর তিনটি সিদ্ধক্ষেত্র হল গজপন্থ, কুন্থলগিরিমুক্তগিরি)।[৭] জৈন সমাজের কাছে এটি একটি তীর্থস্থান। বিশেষত স্থানীয় মারাঠি জৈনকন্নড়গা জৈনদের কাছে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি তীর্থস্থান।[৮] এই পাহাড়ের চূড়ায় ও পাদদেশে অনেকগুলি জৈন মন্দিরআছে[৯] জৈনরা বিশ্বাস করেন, ৯৯ কোটি জৈন মুনি এই পাহাড়ে মোক্ষ লাভ করেছিলেন।

মূর্তি[সম্পাদনা]

ঋষভনাথের মূর্তিটি একটি মাত্র পাথর খোদাই করে নির্মাণ করা হয়েছে। এটির উচ্চতা ১০৮ feet[রূপান্তর: অনির্ধারিত একক] (পাদপীঠ সহ ১২৭ feet[রূপান্তর: অনির্ধারিত একক])। ১৮৪০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে এই মূর্তিটি অবস্থান করছে। এটি বিশ্বের উচ্চতম জৈন মূর্তি।[১০] মূর্তিটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৩৪৩ feet[রূপান্তর: অনির্ধারিত একক] উচ্চতায়[২] বাগলান তালুকের মাঙ্গি-টুঙ্গি পাহাড়ে অবস্থিত।[৩][১১] গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের আধিকারিকরা মাঙ্গি-টুঙ্গিতে এসেছিলেন এবং মূর্তিটির স্থপতি সি. আর. পাটিলের হাতে বিশ্বের উচ্চতম জৈন মূর্তির শংসাপত্রটি তুলে দিয়েছিলেন।[১২][১৩]

চত্বর[সম্পাদনা]

মহারাষ্ট্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী পঙ্কজা মুন্ডে প্রাথমিকভাবে ১০০ একর জমির উপর মন্দির নির্মাণের জন্য  ১৮.৫ কোটি (US$ ২.২৬ মিলিয়ন) তহবিল মঞ্জুর করেন।[৪]

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এগুলি সম্ভবত মহারাষ্ট্র পর্যটন উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃক সম্পাদিত হবে। হারানবারি বাঁধ থেকে জল আনার কিছু সমস্যা ছিল। এই কাজের আনুমানিক ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে ৩ কোটি (US$ ৩,৬৬,৬৯৯)[১১]

পঞ্চ কল্যাণক মহোৎসব[সম্পাদনা]

২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি তারিখের মধ্যে মাঙ্গি-টুঙ্গিতে এই মূর্তিটির পঞ্চ কল্যাণক প্রতিষ্ঠা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় প্রশাসন তীর্থযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির কথা অনুমান করে জায়গাটি পরিমাপ করে।[৩]

২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি উৎসবের দিনে ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি অমিত শাহ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাড়নবিশ ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী পঙ্কজা মুন্ডে উপস্থিত ছিলেন।[১৩][১৪][১৫]

প্রায় ৫০০০ ইন্দ্র-ইন্দ্রাণী ও তাদের পরিবারের সদস্যেরা পঞ্চ কল্যাণক মহোৎসবের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। একশোরও বেশি জৈন মুনি ও আর্যিকা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।[১৬]

ছবি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. "मांगी-तुंगीतील कामांच्या संथपणाबद्दल मुख्यमंत्र्यांकडे तक्रार", Loksatta, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  2. Balajiwale, Vaishali (১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬), Vinaya Patil, সম্পাদক, "World's tallest statue of Lord Rishabhdeva consecrated at Mangi Tungi in Nashik", DNA, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬ 
  3. "Preparations on for mega religious ceremony of Jains", Business Standard, Nashik, PTI, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  4. "Rs 18.5 crore state nod for infra work at Nashik hills", DNA, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  5. "108-Ft Tall Jain Teerthankar Idol Enters 'Guinness Records'", NDTV, ৭ মার্চ ২০১৬ 
  6. Mangitungi Panchakalyanak, ৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬ 
  7. Sangave 2001, পৃ. 178।
  8. People of India 
  9. Trek the Sahyadris 
  10. "Amit Shah felicitated by Jain community", The Statesman, Nashik, PTI, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬ 
  11. Botekar, Abhilash (৪ ডিসেম্বর ২০১৫), "70-crore plan for idol installation at Mangi-Tungi", The Times of India, Nashik, TNN 
  12. "Guinness Book to certify Mangi Tungi idol", The Times of India, ৬ মার্চ ২০১৬ 
  13. "108-feet Jain Teerthankar idol enters "Guinness book of records"", The Hindu, ৭ মার্চ ২০১৬ 
  14. "Rs 27-crore development plan for Mangi Tungi: Devendra Fadnavis", The Economic Times, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  15. "Amit Shah to visit twin-pinnacled Mangi Tungi hills today", The Times of India, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  16. "Towering idol draws thousands to Mangi Tungi", The Times of India, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]