ভারতীয় মানব মহাকাশ যাত্রা কর্মসূচি
দেশ | ভারত |
---|---|
সংস্থা | মানব মহাশূন্য উড়ান কেন্দ্র (ইসরো) |
উদ্দেশ্য | মানব মহাকাশ যাত্রা |
অবস্থা | সক্রিয় |
কার্যক্রমের ইতিহাস | |
অর্থব্যয় | প্রথম ক্রু অভিযানের জন্য ₹১০,০০০ কোটি (ইউএস$ ১.২২ বিলিয়ন) |
স্থায়িত্বকাল | ২০০৬–বর্তমান[১]
২০১৮–বর্তমান[২] |
প্রথম উড্ডয়ন | গগনযান ১ (২০২২) |
প্রথম মানববাহী উড্ডয়ন | গগনযান ৩ (২০২৩) |
উৎক্ষেপণ কেন্দ্র(সমূহ) |
|
যানের তথ্য | |
উৎক্ষেপক যান(গুলি) |
|
ইন্ডিয়ান হিউম্যান স্পেসফ্লাইট প্রোগ্রাম (এইচএসপি[৩]) ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) দ্বারা পৃথিবী নিন্ম কক্ষপথে মানববাহী মহাকাশযান প্রেরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি বিকাশের জন্য তৈরি হয়েছিল।[৪] জিএসএলভি-২ রকেট দ্বারা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে[৫] গগনযান নামে একটি মনুষ্যবাহী মহাকাশযান মহাকাশে প্রেরণ করা হবে।[৬][৭][৮]
পূর্বে, এই প্রকল্পে "মানব মহাকাশ উড়ান" অগ্রাধিকার পায়নি, যদিও এর জন্য সর্বাধিক ক্ষমতা অর্জন করা হয়েছিল।[৯] প্রকল্পটি ইতিমধ্যে "মানব মহাকাশ উড়ান"-এর জন্য বেশিরভাগ প্রযুক্তি বিকশিত করেছে এবং এটি একটি ক্রু মডিউলের বায়ুমণ্ডলীয় পুনপ্রবেশ পরীক্ষা এবং মিশনের জন্য প্যাড এবার্ট পরীক্ষা করেছে।[১০] প্রকল্পের খরচ হবে ₹১০,০০০ কোটি টাকারও কম।[১১][১২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]৯ আগস্ট ২০০৭ সালে ইসরোর তৎকালীন চেয়ারম্যান জি. মাধবান নায়ার নির্দেশ দেন যে সংস্থাটি "হিউম্যান স্পেসফ্লাইট প্রোগ্রাম" তৈরির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। তিনি আরো একটি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, এক বছরের মধ্যে ইসরো তার নতুন 'স্পেস ক্যাপসুল প্রযুক্তি'র বিষয়ে রিপোর্ট করবে।[১৩]
মহাকাশচারী প্রশিক্ষণ
[সম্পাদনা]২০০৮ সালের মার্চ মাসে ভারতীয় অভিযানের প্রস্তুতির জন্য রাশিয়া সয়ুজ ক্যাপসুলে ক্রু নির্বাচন এবং প্রশিক্ষণের জন্য সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দেয়। তবে, অক্টোবর ২০১০ সালে এই প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়েছিল।[১৪]
সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্রের পরিচালক এমসি দাথন বলেন, ইসরো মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বেঙ্গালুরুতে একটি কেন্দ্র স্থাপনকরবে। ইসরো মহাকাশচারীদের ক্যাপসুলে প্রবেশ এবং নির্গমনের মতো অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে শ্রীহরিকোটায় তৃতীয় উৎক্ষেপন মঞ্চ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।[১৫] কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ১৪০ একর (০.৫৭ কিলোমিটার) একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ₹১,০০০ কোটি (১৩৯.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচে নির্মিতে কেন্দ্রে উদ্ধার এবং পুনরুদ্ধারের অভিযানগুলিতে নির্বাচিত মহাকাশচারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া এই কেন্দ্রটিতে শূন্য মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশ তৈরি করা হবে এবং বিকিরণ পরিবেশের পর্যবেক্ষণ করা হবে।
২০০৯ সালের মহাকাশচারীদের জন্য পূর্ণ মাপের ক্যাপসুলের পূর্ণ নির্মিত হয়েছিল এবং মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্রে পেরন করা হয়েছিল। এই উদ্দেশ্যে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ২০০ জন বিমানচালকের সংক্ষিপ্ত তালিকা দেওয়া হবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হবে প্রার্থীদের একটি ইসরোর প্রশ্নাবলী সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে, যার পরে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিশ্লেষণের আওতায় আনা হবে। অভিযানের প্রশিক্ষণের জন্য ২০০ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৪ জন প্রথম স্থানে নির্বাচিত হবে। দুই জন মহাকাশ যাত্রায় অংশ নেবে এবং দুজন অতিরিক্ত মহাকাশচারী হিসাবে কাজ করবে।[১৬][১৭] ক্রু এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা উন্নয়নের মানসিক ও শারীরিক চাহিদা সম্পর্কে প্রাথমিক গবেষণা পরিচালনা করার জন্য ইসরো এয়ারস্পেস মেডিসিন ইনস্টিটিউটের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।[১৮][১৯]
মহাকাশযান উন্নয়ন
[সম্পাদনা]উড়ানের প্রকার | প্রস্তাবিত মাস ও বছর | নাবিকদল |
---|---|---|
পরীক্ষামূলক উড়ান ০১ | ২০২৪ | না |
পরীক্ষামূলক উড়ান ০২ | ২০২৪ | না |
গগণযান | ২০২৫[৫] | হ্যাঁ |
এই কার্যক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য গগনযান নামে ৩.৭-টন ওজনের মহাকাশযানের বিকাশ ও মহাকাশে পাড়ি দেওয়া। মহাকাশযানটি কমপক্ষে ৩-সদস্যের একটি মহাকাশচারী দলকে পৃথিবী নিন্ম কক্ষপথে নিয়ে যাবে এবং কয়েকটি কক্ষপথে অভিযান সম্পূর্ণ করে দুই দিনের মধ্যে নিরাপদে ফিরে আসবে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে।[৫] মহাকাশযানটির বর্ধিত সংস্করণটি মহাকাশ স্টেশনগুলির সাথে বা একটি কক্ষপথ প্ল্যাটফর্মের সাথে সাত দিন পর্যন্ত যাত্রা এবং ডকিংয়ের ক্ষমতাগুলি অনুমোদন করবে।
৭ অক্টোবর ২০১৬ সালে বিক্রম সারাহাই মহাকাশ কেন্দ্রের পরিচালক কে. সিভান বলেন যে ইসরো ইসরো প্যাড আবর্ট টেস্ট নামে একটি সমালোচক 'ক্রু বেলআউট পরীক্ষা' পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, যাতে জরুরী সময়ে ক্রু মডিউলটি দ্রুততার সাথে নিরাপদে মুক্তি পেতে পারে। ২০১৫ সালের ৫ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে পরীক্ষাটি সফলভাবে পরিচালিত হয়। মহাকাশচারীদের মডিউল থেকে দ্রুত বাইরে বেরকরে আনার প্রযুক্তি অর্জনের জন্য এটি ধারাবাহিক পরীক্ষার প্রথম পরীক্ষা।[১০] জীবন সহায়তা ব্যবস্থা পরীক্ষার জন্য ভারত কোন প্রাণী ব্যবহার করবে না।[২০]
২০১৮ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে ইসরো একটি জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল এমকে-৩ (জিএসএলভি এমকে তৃতীয়) -এর উপরে তার ক্রুবোর্ড অরবিটার গগনযান চালু করার পরিকল্পনা করছে।[৬][৭][১১][১২] উড়ান বন্ধের প্রায় ১৬ মিনিট পরে, রকেটটি পৃথিবী থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ কিমি উচ্চতার একটি কক্ষপথে মহাকাশযানকে স্থাপন করবে। ক্যাপসুলকে সমুদ্র-অবতরেরণ দ্বরা প্রাথমিক পুনরুদ্ধার করা হবে গুজরাত উপকূলে আরব সাগরে।[২১]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Scientists Discuss Indian Manned Space Mission"। ১৩ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অগাস্ট ২০২১।
- ↑ Singh, Surendra (২৯ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Rs 10,000 crore plan to send 3 Indians to space by 2022"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অগাস্ট ২০২১।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Kadursrinivas 2017
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Gaganyan: How to send an Indian into space"।
- ↑ ক খ গ ঘ "Isro sets December 2021 target for human mission; no decision on number of Gaganauts or days in space: Sivan"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-২৯।
- ↑ ক খ Gaganyaan mission to take Indian astronaut to space by 2022: PM Modi. The Hindu. 15 August 2018.
- ↑ ক খ "Gaganyaan mission to take Indian astronaut to space by 2022: PM Modi"। The Hindu। ১৫ আগস্ট ২০১৮।
- ↑ "Independence Day 2018 Live Updates: 'We will put an Indian on space before 2022,' says Narendra Modi at Red Fort"। Firstpost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৫।
- ↑ "Satellites Are Our Priority Now, Not Human Space Flight"। Outlook। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৭-২১।
- ↑ ক খ "ISRO's first 'pad abort' test, critical for future human space mission, successful"। The Hindu। ৫ জুলাই ২০১৮।
- ↑ ক খ "Indian Astronaut Will Be In Space For 7 Days, Confirms ISRO Chairman"।
- ↑ ক খ Suresh, Haripriya (১৫ আগস্ট ২০১৮)। "JFK in 1961, Modi in 2018: PM announces 'Indian in space by 2022,' but is ISRO ready?"। The News Minute।
- ↑ "ISRO considering manned space mission: Nair"। The Hindu। Chennai, India। ৯ আগস্ট ২০০৭। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Indian Cosmonauts will not Fly in Russian Soyuz"। roscosmos.ru। ১০ অক্টোবর ২০১০। ১ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১০।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;bs2
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Model of space crew module ready ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মে ২০০৯ তারিখে, The Hindu, 2 May 2009
- ↑ "IAF developing parameters for India's manned space mission"। The Economic Times। ২৮ ডিসেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ "The Space Review: Prospects for the Indian human spaceflight program"। www.thespacereview.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৮।
- ↑ "Isro unit to start building space capsule for manned mission"। Livemint.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-১৮।
- ↑ "ISRO Not To Fly Living Being Before Actual Manned Space Mission: Official"। NDTV.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১৬।
- ↑ Peri, Dinakar (২০১৮-০৮-২৮)। "Manned space mission before 75th I-Day: ISRO chief"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-২৯।