রানওয়ে (২০১০-এর চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রানওয়ে
রানওয়ে (২০১০) পোস্টার.jpg
চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক পোস্টার
পরিচালকতারেক মাসুদ
প্রযোজকক্যাথরিন মাসুদ
রচয়িতাতারেক মাসুদ
ক্যাথরিন মাসুদ
শ্রেষ্ঠাংশেজয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
নাজমুল হুদা বাচ্চু
মোসলেম উদ্দিন
নাসরিন আক্তার
রিকিতা নন্দিনী শিমু
সুরকারতারেক মাসুদ
ক্যাথরিন মাসুদ
চিত্রগ্রাহকমিশুক মুনীর
সম্পাদকক্যাথরিন মাসুদ
পরিবেশকজিঙ্গু ফিল্ম্‌স, অডিওভিশন
মুক্তি২০১০
দৈর্ঘ্য৯০ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

রানওয়ে বাংলাদেশের বিখ্যাত বিকল্পধারার চলচ্চিত্র। একটি তারেক মাসুদ পরিচালিত ছবি । ছবিটির কাজ শুরু হয় ২০০৮ সালের অক্টোবরে, আর তা শেষ হয় ২০০৯ সালের এপ্রিলে। ক্যাথরিন মাসুদ প্রযোজিত কাহিনিচিত্রটির পটভূমি ২০০৫-০৬ সালে সংঘটিত বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তজার্তিক ইস্যু। তারেক মাসুদ পরিচালিত রানওয়ে ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মুক্তি পায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর বেতিলের স্বপ্নপুরী সিনেমা হলে।[১]
'রানওয়ে'র উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০সালের গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে।[২]

অভিনয় শিল্পী[সম্পাদনা]

রানওয়ে ছবির বেশির ভাগ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন নতুন শিল্পী। যাদের মধ্যে ফজলুল হক রুহুল চরিত্রে , রাবেয়া আক্তার মনি রহিমা চরিত্রে, আলী আহসান আরিফ চরিত্রে উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, নাজমুল হুদা বাচ্চু, মোসলেম উদ্দিন, নাসরিন আক্তার ও রিকিতা নন্দিনী শিমু। অতিথি শিল্পী হিসেবে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা[৩]

নিমার্তা সহকারী[সম্পাদনা]

ক্যাথরিন মাসুদের সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত চিত্রনাট্যের গল্প ও সংলাপ লিখেছেন তারেক মাসুদ। ছবিটির চিত্রায়ণে ছিলেন নির্মাতার দীর্ঘদিনের সহকর্মী বন্ধু মিশুক মুনীর। শব্দগ্রহণ করেছেন মাসরুর রহমান, শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন শহীদ আহমেদ মিঠু, ছবিটি সম্পাদনা করেছেন ক্যাথরিন মাসুদ। তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদের সংগীত পরিচালনায় মূল আবহ সুর করেছেন তানভীর আলম সজীব এবং এর ডলবি ডিজিটাল শব্দ মিশ্রণের কাজটি করেছেন নিউইয়র্কের প্রখ্যাত শব্দগ্রাহক অ্যালেক্স নয়েজ।

কাহিনী সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

গ্রামে নায়ক রুহুল মাদরাসায় পড়ত। রুহুলের বাপ এখন আরব দেশে। রুহুলের বাবা নিজের আশা নিয়ে অসহায় দিন যাপন করতে থাকে। পরিবার ঢাকায়। বোন ফাতেমা গার্মেন্টসে চাকুরি করে।পোশাক কারখানায় বোন শোষণের শিকার। গন্ডগোলের কারণে দুই মাস বেতন পায় না। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সংলগ্ন একচালা ঘরে রুহুল ও তার পরিবার বসবাস করে। তার মা রহিমা ক্ষুদ্র ঋণ সমিতির মাধ্যমে একটি গাভী কিনে দুধ বিক্রি করে সংসার চালায়। রুহুলের বোন ফাতেমা পোশাক রপ্তানি কারখানায় কাজ করে। এক মাস হলো তার বাবা মধ্যপ্রাচ্যে চাকরির সন্ধানে গিয়ে নিরুদ্দেশ। বেকার, কিছুটা হতাশ অথচ আদর্শবাদী রুহুল চাকরি খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করে এবং উড়োজাহাজের ছায়ায় দিন কাটায়। মাঝেমধ্যে সে মামাকে সাইবার ক্যাফের ব্যবসায় সাহায্য করে এবং ইন্টারনেট শেখার চেষ্টা করে। সেখানে দৃঢ় অথচ শান্ত মেজাজের কম্পিউটার দক্ষ আরিফের সঙ্গে তার ক্রমশ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আরিফ উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির মধ্যে জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে রুহুলকে উদ্বুদ্ধ করে। আফগানিস্তান-ফেরত মুজাহিদ দলনেতার জঙ্গি শিবিরে শরিক হয় সে। নতুন আদর্শে উজ্জীবিত রুহুল বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অবশেষে জীবনের গভীরতর অভিজ্ঞতা উপলব্ধির দিকে এগিয়ে যায়। সিনেমা হলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় আরিফের স্কোয়াড। আরিফ আত্মঘাতি হামলায় আহত হয়ে মেডিকেলে ঢুকে। দ্বীন রক্ষার্থে গৃহত্যাগী রুহুল তখন নিজের বিবেকের সঙ্গে আরেক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। নান্দনিক জীবনের কক্ষচ্যুত রুহুল মায়ের দুধ মাখা হাতের আশ্রয়ে চলে আসে।
আরিফের চরিত্রটি আগাগোড়াই মুগ্ধ করে দর্শকদের। দর্শক এখানে নির্মল আনন্দ পায় যমুনা বিহারের সময় জঙ্গি নেতার বিজ্ঞপনী মানসিকতা দেখে, বাংলাদেশের সনাতনী সিনেমায় নিম্নবর্গের দর্শকদের অংশগ্রহণ, রুহুলের মামার শুদ্ধ ইংরেজি বলার ধরন, পাথরকে মাঝে রেখে রুহুলের প্রেমালাপ, উড়ন্ত বিমানকে মাটিতে ফেলে দেয়ার ক্রোধে গুলতি ছুড়ে মারার ইমেজগুলো।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দৈনিক প্রথম আলোঃ প্রেক্ষাগৃহে 'রানওয়ে'"। ২০১৯-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১১ 
  2. "দৈনিক প্রথম আলোঃ তারেক মাসুদের নতুন চলচ্চিত্র 'রানওয়ে'"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "মুক্ত রানওয়ে"। সংগ্রহের তারিখ ১৬আগস্ট ২০১১  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. "মুক্ত রানওয়ে"। সংগ্রহের তারিখ ১৬আগস্ট ২০১১  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]