ভিমের পান্টি
![]() | এই নিবন্ধটি উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। মূল সমস্যা হল: রচনাশৈলী। (ডিসেম্বর ২০২১) |
ভিমের পান্টি | |
---|---|
![]() | |
![]() | |
বিকল্প নাম | গড়ুর স্তম্ভ[১] ভিমের লাঠি |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | স্তম্ভ |
ঠিকানা | জাহানপুর ইউনিয়ন, ধামইরহাট উপজেলা, নওগাঁ জেলা |
শহর | নওগাঁ |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৫°০৬′১৯.৩″ উত্তর ৮৮°৫৬′০৪.৩″ পূর্ব / ২৫.১০৫৩৬১° উত্তর ৮৮.৯৩৪৫২৮° পূর্ব |
আনুমানিক সম্পূর্ণকরণ | দশম শতাব্দী |
স্বত্বাধিকারী | বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর |
জমির মালিক | ভটুগুরুভ |
উচ্চতা | ৩.৭৯ মিটার |
মাত্রা | |
ব্যাস | ১.৮০ মিটার |
কারিগরী বিবরণ | |
পদার্থ | কালো পাথর |
ভিমের পান্টি নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীন একটি স্তম্ভ ও সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। এটি উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।
অবস্থান[সম্পাদনা]
নওগাঁ জেলা সদর থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরত্বে ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত। ধামইরহাট উপজেলা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে উপজেলার একেবারে পূর্বপ্রান্তে জয়পুরহাট জেলার সীমানা ঘেঁষা জাহানপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর-হরগৌরী একালায় ভিমের পান্টি অবস্থিত।[২][৩][৪]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
১৭শ শতকের কোন একসময় জাহানপুর ইউনিয়নের আশেপাশে বেশ কিছু মন্দির ও অন্য স্থাপনার অস্তিত্ত্ব পাওয়া গিয়েছিল। তবে সেগুলো কে বা কারা তৈরি করেছিলেন সে ব্যাপারে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। জনশ্রুতি অনুসারে, বীরেশ্বর-ব্রহ্মচারী নামক একজন সাধক এখানে এসে বসবাস শুরু করেন ও তিনি বেশ কয়েকটি ঢিবি পরিষ্কার করেন। অনেক স্থাপনাই বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না তবে ১৯৭৮ সালের দিকে একটি স্থানে কালো পাথরের তৈরি একটি মূর্তি পাওয়া যায়। বীরেশ্বর-ব্রহ্মচারী কোন একটি ঢিবির উপর ছোট আকারের ৪ টি মন্দির নির্মাণ করে উক্ত মূর্তিটি স্থাপন করেছিলেন বলে জানা যায়।[৫][৬][৭]
ঢিবির পাশেই একটি ভাঙা দেয়াল ছিল বলে ধারণা করা হয়। দেয়ালে উত্তরাংশে বর্তমানে ফসলি জমির মাঝে একটি কালো পাথরের লম্বা খন্ড হেলানোভাবে রয়েছে, সেটিই ভিমের পান্টি নামে পরিচিত।[৪][৮]
ভিমের পান্টি সম্পর্কে স্থানীয় জনশ্রুতি হল, মহাভারতের ভীমের সাথে স্তম্ভটির সম্পর্ক আছে। ভীম রাতভর জমিতে হাল চাষ করতেন। সূর্য উঠার আগেই তার ফিরে যাওয়ার নিয়ম ছিল। কোন এক রাতে হাল চাষ দেরিতে শেষ হওয়ায়, তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় ভীম হাতের পান্টিটি ফেলে যান। সেটিই বর্তমানের স্তম্ভ।[১][৯]
অবকাঠামো[সম্পাদনা]
ভিমের পান্টি পাথরের লম্বা খন্ডটি বীরেশ্বর-ব্রহ্মচারী ঢিবি থেকে দক্ষিণে ৮১ দূরত্বে অবস্থিত। ভিমের পান্টির আকৃতি অনেকটা প্রলম্বিত মোচার ন্যায়। মসৃণ এ খণ্ডটির ৩.৭৯ মিটার উঁচু ও গোড়ার দিকে এর ব্যাস ১.৮০ মিটার। পূর্বে এই খণ্ডটির মাথায় একটি পাখির মূর্তি বসানো ছিল। বজ্রপাতের ফলে মূর্তিটি উপর থেকে ভেঙে গিয়েছিল এবং স্তম্ভটি একদিকে একটু হেলে গিয়েছিল।[৩][৪][৫]
ভিমের পান্টির উপরের দিকে সংস্কৃত ভাষায় ২৮ লাইনের একটি লিপি খোদাই করা রয়েছে।[১] প্রত্নতত্ত্ববিদগণদের মতে, পাল সাম্রাজ্যের নারায়ণ পালের মন্ত্রী ভটুগুরুভ(৮৯৬-৯৫০) এই পাথর খন্ডটি স্থাপন করেন।[৫][১০]
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পরবর্তীতে ভিমের পান্টির চারিদিকে ইট দিয়ে বাধিয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ (৪ জুন ২০১৯)। "ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন প্রাচীন বাংলায়"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ "ধামইরহাট উপজেলার দর্শনীয় স্থান"। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২০২০-০৬-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ ক খ বাবুল আখতার রানা (২ জানুয়ারি ২০১৬)। "নওগাঁর ঐতিহাসিক ভিমের পান্টি"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২০।
- ↑ ক খ গ অরিন্দম মাহমুদ (১৫ মে ২০২০)। "ভীমের পান্টি কি হারিয়েই যাবে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৭।
- ↑ ক খ গ "ধামইরহাটে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক নিদর্শন"। ইত্তেফাক। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ "নওগাঁর ঐতিহাসিক নিদর্শন ভিমের পান্টি"। ডেলটা টাইমস্। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ "কী লেখা আছে হাজার বছরের পুরনো ভিমের পান্টিতে?"। সময়ের আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ কাজী আনিছুর রহমান (২০১৯-০২-০৯)। "ধামইরহাটের ভিমের পান্টি অযত্ন অবহেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে"। গ্রামের কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ "বাংলাদেশে পুরাতত্ত্ব সমৃদ্ধ জেলা নওগাঁ"। নওগাঁ দর্পন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
- ↑ "২শত বছরের প্রাচীন ভিমের পান্টি অযত্নে অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে"। BDTodays। ২০২০-১২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১১।
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে ভিমের পান্টি সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
১) বাংলাদেশের প্রত্ন সম্পদ, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, তৃতীয় মুদ্রণ,২০১১ ২)বাংলায় ভ্রমণ, (১ম,২য়) খন্ড, নির্মাল্য সিংহ,এডিশন,২০০৯ ৩)বাংলায় ভ্রমণ ১ম,২য় খন্ড,অমিয় বসু,প্রকাশকাল,১৯৪০ ৪)বাংলাদেশে এবং বাঙ্গালীর ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রেজাউল ইসলাম,প্রকাশকাল ২০১৫ ৫) বাংলার পথে- ৩ , মঙ্গলবাড়ির প্রাচীন মন্দির এবং গরুড় স্তম্ভ,সচলায়তন, Onu Tareq ৬)বৌদ্ধ পুরাকীর্তি, ড. জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া ৭) বাংলাদেশের প্রত্নবস্তু : প্রাচীন যুগ, এ কে এম শাহনাওয়াজ ও দিলরুবা শারমিন ৮) বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি (১ম খণ্ড), (২য় খণ্ড) আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ৯) প্রশ্নোত্তরে বাংলাদেশের প্রত্নকীর্তি (১ম খণ্ড), (২য় খণ্ড) আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ১০) ভীমের জাঙ্গাল – বাংলাপিডিয়া ১১)বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস,শ্রীনগেন্দ্রনাথ বসু, সিদ্ধান্ত বারিধি ১২) The illustrated encyclopedia of Hinduism by James G. Lochtefeld,2002 ১৩) ভিমের পান্টি – উইকিপিডিয়া ১৪) নওগাঁর ঐতিহাসিক ভিমের পান্টি,বাংলাদেশ প্রতিদিন,১ জানুয়ারি,২০১৬ ১৫) ধামইরহাটের ২শত বছরের পুরনো কালের সাক্ষী ভিমের পান্টি,বাংলার চোখ,০৯ই ফেব্রুয়ারি,২০১৯ ১৬)ভিমের পান্টি,জাহানপুর ইউনিয়ন,সরকারি পোর্টাল ১৭) পিতৃগণ উপন্যাসের সন্ধ্যানে,জাকির তালুকদার,বাংলা নিউজ ২৪,১৩ নভেম্বর,২০১০ ১৮) গৌড়লেখমালা,শ্রী অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়