ভাটিয়ালি গান
বাংলাদেশ-এর সঙ্গীত | ||||||
ধরন | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
সুনির্দিষ্ট প্রকার | ||||||
|
||||||
মাধ্যম ও পরিবেশন | ||||||
|
||||||
জাতীয়তাবাদী ও দেশাত্মবোধক গান | ||||||
|
||||||
আঞ্চলিক সঙ্গীত | ||||||
|
||||||
ভাটিয়ালি বাংলাদেশ এবং ভারতের ভাটি অঞ্চলের জনপ্রিয় গান। বাংলাদেশে বিশেষ করে নদ-নদী পূর্ণ ময়মনসিংহ অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর-পূর্ব দিকের অঞ্চলগুলোতে ভাটিয়ালী গানের মূল সৃষ্টি, চর্চাস্থল এবং সেখানেই এই লোকসঙ্গীতের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বাউলদের মতে ভাটিয়ালী গান হলো তাদের প্রকৃতিতত্ত্ব ভাগের গান।[১] ভাটিয়ালী গানের মূল বৈশিষ্টা হলো এ গানগুলো রচিত হয় মূলত মাঝি, নৌকা, দাড়, গুন ইত্যাদি বিষয়ে। সাথে থাকে গ্রামীণ জীবন, গ্রামীণ নারীর প্রেমপ্রীতি, ভালোবাসা, বিরহ, আকুলতা ইত্যাদির সম্মিলন। যেমন -
আষাড় মাসে ভাসা পানি
পূবালি বাতাসে,
বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি,
আমার নি কেউ আসে।
কিংবা,
নাই বাইয়া যাও ভাটিয়ালী নাইয়া
ভাটিয়ালী নদী দিয়া
আমার বন্ধুর খবর কইয়ো
আমি যাইতেছি মরিয়া।
প্রেক্ষাপট
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ এক নদীমাতৃক দেশ। নদীর সাথে এই দেশের মানুষের যোগসূত্র অত্যন্ত নিবিড়। তাই, ভাটিয়ালী গানও এ দেশের প্রাণের গভীর চেতনা থেকে উৎসারিত একটি বিশিষ্ট সম্পদ। নদীর মাঝি বা নদী পাড়ের জনজীবনে এই গানের প্রচলন অত্যধিক। ভাটিয়ালী অর্থাৎ নদীর স্রোতের টানে ভাটিয়ে যাওয়ার সুর এই গানে বিদ্যমান। নদীর স্রোতের সাথে আছে জীবনের চলার এক অপূর্ব সাদৃশ্য - স্রোত সমুদ্রের দিকে চলেছে, উজানগামী সে কখনই নয়। জীবনও পরিণতির পথে এমনি প্রবহমান যে, যে মুহূর্ত সে অতিক্রম করে সেটি আর ফিরে আসে না। বাংলার ভাটিয়ালী গানের কবি তাই বলেন,
তরী ভাট্যায় পথ আর উজান না
মন মাঝি তোর বৈঠা নে'রে
আমি আর বাইতে পারলাম না।
এ গান কবে, কে রচনা করেছিলেন তা আর হাজার মাথা কুটেও জানবার উপায় নেই। কিন্তু এ গানে বাংলার মানুষের, নদীমাতৃক দেশের মানুষের প্রাণের বাণীই ধরা পড়েছে।[২] বাংলাদেশের লোককবির কণ্ঠেই আমরা তাই শুনিঃ
কূলে কূলে ঘুরিয়া বেড়াই আমি
পাইনা ঘাটের ঠিকানা
ডুব দিলাম না।
বর্তমান ভাবনা
[সম্পাদনা]কিন্তু আধুনিক ভাটিয়ালী লোকসঙ্গীতে ঠিক এই মরমিয়া চেতনা এমনভাবে ধরা পড়তে দেখা যায় না। আধুনিক ভাটিয়ালী গান অনেকটা বস্তুমূখী চেতনায় সমৃদ্ধ - জীবনের সব সমস্যার ঊর্ধ্বে যে খাওয়া-পরার সমস্যা তাই প্রাধান্য লাভ করেছে। এখন নদীর মাঝি উজান কোন বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে ভাটির দেশে যাবার সময় চিন্তা করে তার ক্রীত পণ্য নিয়ে ভাটির বন্দরে বিক্রি করে সে কত লাভ করবে। এমনকি নদীর মাঝি অথবা নৌকায় নৌকায় ব্যবসারত সওদাগরের মনেও আজ এমনি লাভ-লোকসানের হিসাব প্রাধান্য লাভ করেছে। এই হিসাব ভাটিয়ালী গানেও প্রতিবিম্বিত ও নতুন সুরে ঝংকৃত।[২]
সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব
[সম্পাদনা]বাংলাদেশে ভাটিয়ালী গানের শিল্পী, রচয়িতা, সংগ্রাহক ও গীতিকারদের মধ্যে অন্যতম হলেন - কবি নিবারণ পণ্ডিত, মিরাজ আলী, উকিল মুন্সী, রশিদ উদ্দিন, জালাল খাঁ, জং বাহাদুর, শাহ আবদুল করিম, উমেদ আলী প্রমূখ।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ""বাংলার গান", ছুটির দিন, দৈনিক প্রথম আলো, ১৯শে এপ্রিল, ২০০৮, পৃ ৮।
- ↑ ক খ প্রবন্ধ সংগ্রহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সম্পাদনাঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও সৈয়দ আকরম হোসেন, ১ম সংস্করণ, ১৯৯২, পৃষ্ঠাঃ ৪৩৬
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |