হাপু গান
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত | |
---|---|
বীরভূমে বাউল গানের একটি অনুষ্ঠান | |
ধারা | |
| |
নির্দিষ্ট ফর্ম | |
ধর্মীয় সঙ্গীত | |
জাতিগত সঙ্গীত | |
ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত | |
গণমাধ্যম ও অনুষ্ঠান | |
সঙ্গীত মাধ্যম | বেতার
টেলিভিশন ইন্টারনেট |
অঞ্চলিক সঙ্গীত | |
সম্পর্কিত এলাকা | |
অন্যান্য অঞ্চল | |
হাপু গান পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম-বাঁকুড়া-মুর্শিদাবাদ জেলার একটি প্রাচীন গান। এই গানের প্রসার ব্যাপক না হলেও এর গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। সাধারণভাবে একে দুঃখ-বেদনার ও হাহাকারের গান বলা হলেও গভীরভাবে শুনলে বোঝা যায় হাপু গানে যে মূল সুরটি ধ্বনিত হয় তা হল প্রতিবাদী সুর।
নামকরণ[সম্পাদনা]
বিভিন্ন অঞ্চলে এই গান বিভিন্ন নাম পরিচিত। অঞ্চলভেদে এটি ‘হাপু’, ‘হাবু’ অথবা ‘হাফু’ নাম পরিচিত। তবে সর্বজনীনভাবে 'হাপু' নামটিই যথার্থ। ‘হাপু’ শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় ‘হা’ এবং ‘পু’। 'হা' এবং 'পু' এই দুটি মাত্রা এই গানে বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হওয়ায় এই গানের নাম হাপু বলে মনে করা হয়।[১] ‘হা’ শব্দের অর্থ হা-অন্ন, বা হাহাকার এবং ‘পু’ শব্দের অর্থ পূরণ। অর্থাৎ প্রাকৃতিক সম্পদচূত্য মানুষ গান গেয়ে তাঁরা নিজেদের হাহাকার বা কষ্ট পূরণ করত, অর্থাৎ হৃতসর্বস্বের হাহাকারই এই হাপু গান।[২]
বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]
হাপু গানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ড: আশুতোষ মহাশয় বলেছেন[৩]-
সাধারণত দুইজন লোক একসঙ্গে এই গান গাহিয়া থাকে। একজনের হাতে মদিরা বা গোপীযন্ত্র থাকে, আর একজনের হাতে ছোট একখানি লাঠি। লাঠিধারী লোকটি গান গায় এবং তাহার সঙ্গী লোকটি ধুয়া ধরে। গাহিবার পদ্ধতিটি একটু অদ্ভুত। এক পদ করিয়া গান গায়, আর মুখে একপ্রকার শব্দ করিয়া নিজের পিঠেই লাঠি দিয়ে তাল ভাজে। অবিশ্রাম লাঠি চালনার ফলে এনেকের পিঠের কালশিরা দাগ পরিয়া যায়। কতকটা নমস্কারের ভঙ্গিতে লাঠিটাই হাত দিয়া ধরিয়া থাকে।
সমাজজীবন[সম্পাদনা]
হাপু গানের মধ্যে দিয়ে তৎকালীন সমাজজীবনের ছবি ভেসে ওঠে। একই সঙ্গে গ্রামবাংলার অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক পরিকাঠামোর একটি প্রেক্ষাপট পাওয়া যায়।যেমন-
১.
“ | উকলীতে পালকী আঁকা বুলবুলিতে খায়। |
” |
২.
“ | ভারতে আর পাকিস্তানে লড়াই দেখ লেগেছে। |
” |
ছড়ার ঢঙে হাপুগান[সম্পাদনা]
বাংলা ছড়াসাহিত্যের জগতে হাপু গানের বিশেষ ভূমিকা আছে। মুহম্মদ আয়ুব হোসেনের লিপিবদ্ধ গানগুলি থেকে ছড়ার ঢঙে হাপু গানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায়। হাপু গানের গঠনকে পুরোপুরি ছড়ার গঠন বলা যায়।[১] যেমন-
“ | জামাই এলো কামাই করে খেতে দিব কি? |
” |
আবার দেখা যায়,
“ | ইলিক মিলিক শুলুক টি বড় শালুকের ফুল। |
” |
তথ্যচিত্র[সম্পাদনা]
● ইউটিউব: হাপুখেলা
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ লোকসঙ্গীত চর্চা। ৩৭/৫, বেনিয়াটোলা লেন, কলকাতা-০৯: শীতল চৌধুরী। ১৯৯৮। পৃষ্ঠা ১১।
- ↑ "আনন্দবাজার পত্রিকা - মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১৪।
- ↑ প্রথম খণ্ড (১৯৬২)। বাংলার লোক-সাহিত্য। ক্যালকাটা বুক হাউজ
১/১, কলেজ স্কোয়ার, কলিকাতা-১২: শ্রীআশুতোষ ভট্টাচার্য। পৃষ্ঠা ২৭০। line feed character in
|অবস্থান=
at position 20 (সাহায্য)