নীল উইলিয়ামস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নীল উইলিয়ামস
১৯৮৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে নীল উইলিয়ামস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামনীল ফিটজেরাল্ড উইলিয়ামস
জন্ম(১৯৬২-০৭-০২)২ জুলাই ১৯৬২
সেন্ট ভিনসেন্ট, উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস
মৃত্যু২৭ মার্চ ২০০৬(2006-03-27) (বয়স ৪৩)
কিংসটাউন, সেন্ট ভিনসেন্ট
ডাকনামনীলি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৫৪৬)
২৩ আগস্ট ১৯৯০ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৫৫
রানের সংখ্যা ৩৮ ৪,৪৫৭
ব্যাটিং গড় ৩৮.০০ ১৮.৬৪
১০০/৫০ –/– –/১৩
সর্বোচ্চ রান ৩৮ ৭৭
বল করেছে ২৪৬ ৩৭,৪৮৫
উইকেট ৬৭৫
বোলিং গড় ৭৪.০০ ৩০.২৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ২২
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/১৪৮ ৮/৭৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ৬৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

নীল ফিটজেরাল্ড উইলিয়ামস (ইংরেজি: Neil Williams; জন্ম: ২ জুলাই, ১৯৬২ - মৃত্যু: ২৭ মার্চ, ২০০৬) সেন্ট ভিনসেন্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স ও মিডলসেক্স, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে তাসমানিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘নীলি’ ডাকনামে পরিচিত নীল উইলিয়ামস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সেন্ট ভিনসেন্টে নীল উইলিয়ামসের জন্ম। ১৩ বছর বয়সে ব্রিটেনে অভিবাসিত হন। হর্নসি দলের পক্ষে খেলেন। এ পর্যায়ে এমসিসি ইয়ং প্রফেসনাল হিসেবে মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে মিডলসেক্সের পক্ষে যোগ দেন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত নীল উইলিয়ামসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। সতেরো বছরের অধিক প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে ৬৭৫ উইকেট ও ৪,৪৫৭ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি।

১৯৮২ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। চমৎকার নিখুঁততা বজায় রেখে ও দেরীতে বাইরের দিকে সুইংয়ের মাধ্যমে প্রাণবন্তঃ বোলিংকর্মে অগ্রসর হতেন। ১৯৮২, ১৯৮৫, ১৯৯০ ও ১৯৯২ সালে চারবার দলের চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে অংশ নেন। ১৯৯৫ সালে সফলতার সাথে আর্থিক সুবিধে গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন। এরপর তিনি এসেক্সের দিকে ধাবিত হন। এ পর্যায়ে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দলটিতে অবস্থান করেন। এছাড়াও উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের সাথে তিন মৌসুম ও তাসমানিয়ার পক্ষে ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে খেলেন। ১৯৮৩ সালের বেনসন এন্ড হেজেস কাপ ও ১৯৯২ সালের সানডে লীগের শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন নীল উইলিয়ামস। ২৩ আগস্ট, ১৯৯০ তারিখে ওভালে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

ইংল্যান্ড দলের খসড়া তালিকায় ছিলেন। ১৯৯০ সালে ওভালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা পান। এ পর্যায়ে ক্রিস লুইস মাথা ব্যথার কারণে দল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ভারতের পর্বতসম ৬০৬/৯ রানের বিপরীতে বোলিং করে ২/১৪৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। শচীন তেন্ডুলকরমোহাম্মদ আজহারউদ্দীনকে বিদেয় করেছিলেন তিনি। এছাড়াও, দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে দ্বিতীয় উইকেটে গ্রাহাম গুচের সাথে ৭৪ রানের জুটি গড়েন। নিজে করেন ৩৮ রান। বোলিংয়ে বেশ রান খরচ করলেও এ জুটিতে তার ভূমিকা বেশ প্রশংসনীয় ছিল। তবে, আঘাতের কারণে ঐ মৌসুমের শীতকালে অ্যাশেজ সফরে কিংবা ইংল্যান্ড বি দলের সফরের কোনটিতেই তাকে রাখা হয়নি। এছাড়াও ঐ সময়ে তার বয়েস ২৮ হওয়ায় তার দলে ফেরার সম্ভাবনা যথেষ্ট ক্ষীণ হয়ে পড়ে।

অবসর[সম্পাদনা]

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পূর্বে ক্রমাগত আঘাতে জর্জড়িত ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে কর্নওয়াল দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি। এরপর তিনি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রত্যাবর্তন করে বসবাস করতে থাকেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন তিনি। মৃত্যুর পূর্ব-পর্যন্ত সেন্ট ভিনসেন্ট কিডস একাডেমির কোচ হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর তিন সপ্তাহ পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৭ মার্চ, ২০০৬ তারিখে ৪৩ বছর বয়সে লন্ডনের হাসপাতালে নীল উইলিয়ামসের দেহাবসান ঘটে।

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

বেশ ধর্মপ্রাণ ছিলেন। লর্ডসে প্রথম খেলাকালীন রবিবাসরীয় দিনগুলোয় খেলতে তিনি অস্বীকৃতিজ্ঞাপন করেন। খেলাধূলোয় অংশগ্রহণের চেয়ে গীর্জায় গমনকেই অগ্রাধিকার দিতেন। মৃদুভাষী, নিভৃতচারী হলেও দলীয় সঙ্গী ও সমর্থকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৮০-এর দশকে কয়েকজন ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে রোল্যান্ড বুচার, উইল্ফ স্ল্যাকনরম্যান কাউয়ান্সসহ বার্বাডীয় ওয়েন ড্যানিয়েলের সাথে আদুরে নাম ‘জ্যাকসন ফাইভ’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। উইজডেনে তার প্রসঙ্গে মন্তব্য করা হয় যে, তিনি অন্য যে-কোন খেলোয়াড়ের তুলনায় বিপজ্জ্বনকভাবে বলকে অধিক বাঁক খাওয়াতে পারতেন। দর্শনীয়তার সাথে দৌঁড়ে ফিল্ডিং করতেন।

মিডলসেক্সে তার প্রথম দলীয় অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি মন্তব্য করেন যে, সাধারণমানের, অমায়িক ব্যক্তি হিসেবে তিনি নিজেকে সর্বদাই তার সেরা খেলা উপহারে সচেষ্ট ছিলেন। অন্যদিকে, ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনকিন্স তার সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, নীল উইলিয়ামস অতি বিনয়ী, বন্ধুত্বসূলভ ব্যক্তি হিসেবে পরিচ্ছন্ন খেলা প্রদর্শনে নিজেকে যুক্ত রাখতেন। সাবেক দলীয় সঙ্গী অ্যাঙ্গাস ফ্রেজার বলেন যে, তিনি অন্য জগতের খুবই প্রতিভাবান বোলার ছিলেন। তবে, আঘাতের কারণে তিনি খেলার সুযোগ পাননি। এর ব্যতয় ঘটলে হয়তোবা ইংল্যান্ডের পক্ষে আরও খেলতে পারতেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. [১] ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]