ইরন্তম তিরুবন্ততি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইরন্তম তিরুবন্ততি
বিষ্ণুর দর্শন (বৈকুন্ঠ দর্শন)। প্রায় ১৭১০-১৭১৫ শতাব্দীর মাঝে সৃষ্ট, ব্রুকলিন জাদুঘর।
তথ্য
ধর্মহিন্দুধর্ম
রচয়িতাভুটথ আল্বর
ভাষাতামিল
যুগখ্রিষ্টীয় ৯ম-১০ম শতাব্দী
শ্লোক১০০

ইরান্তম তিরুবন্ততি ( তামিল: இரண்டாம் திருவந்தாதி ) [১] শ্রী বৈষ্ণবধর্মের দ্বাদশ আলবরের অন্যতম আলবর ভুতাথ আলবর দ্বারা রচিত একটি তামিল হিন্দু সাহিত্য রচনা। [২] এটি [৩] অন্ততি কাব্যধারা অনুসরণে রচিত ১০০টি শ্লোক সমন্বিত এবং দিব্য প্রবন্ধম নামক স্তোত্রসংকলনের অংশ। [৪] এটি সৃষ্টির পালনকর্তা দেবতা বিষ্ণুর প্রতি উৎসর্গিত।

কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

শ্রী বৈষ্ণব কিংবদন্তি অনুসারে, পোইগায় আল্বর একবার তিরুকোইলুরের উলাগালান্থ পেরুমাল মন্দিরে বিষ্ণুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছিলেন। তিনি অপর দুই আলবর পেভুটথের সাথে দেখা করেন। তাদেরকে তিনি চিনতেন না।কিন্তু তারা একই সময়ে কাকতালীয়ভাবে মন্দিরে যাচ্ছিলেন। যাত্রাকালে ঝড় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পোইগাই একটি মন্ডপমে থাকার জায়গা খুঁজে পান এবং পে তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি তার ঘরে কিছু জায়গা ভাগ করতে পারেন কিনা। মন্ডপমে একটিমাত্র শয্যা ছিল। তা পর্যবেক্ষণ করে পোইগাই মন্তব্য করেন শুধু একজন ব্যক্তিই শয্যায় শয়ন করতে পারবেন এবং তারই সুবিধা হবে বেশি, তবে দুজনকে বসে থাকতে হবে। এই মুহুর্তে ভুটথ এলেন, ও অন্য দুই কবি-সাধকের সাথে মন্ডপম ভাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তখন কবিত্রয় সিদ্ধান্ত নিলেন একজন ব্যক্তির শুয়ে থাকাই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে, দুজন লোক বসবে, কিন্তু তাদের মাঝে তিনজন থাকার মানে হল যে তারা দাঁড়িয়ে থাকলেই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে। এইভাবে তিন কবি-সাধক সারা রাত দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ ভোরের সময় তারা তাদের মধ্যে এক চতুর্থ সত্তার উপস্থিতি অনুভব করলেন। সেই সময় তারা এতটাই অভিভূত হয়েছিলেন যে তাদের প্রত্যেকে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ একটি অন্ততি আকারে স্তোত্র রচনা করেন। সেই সত্তাটি ছিলেন পেরুমলইরন্তম তিরুবন্ততিকে ভুতথ আলবরের রচিত স্তব বলে উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে তিনি তাঁর আরাধ্যকে ঐশ্বরিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে বর্ণনা করেছেন। দেবতার প্রতি তার প্রেমকে তিনি প্রদীপের সাথে তুলনা করেছেন। [৫] [৬]

স্তবগান[সম্পাদনা]

ইরন্তম তিরুবন্ততির প্রথম স্তোত্রটি কবি-সাধকের পেরুমলের উপস্থিতিজনিত আনন্দের বহিঃপ্রকাশের বর্ণনায় পরিপূর্ণ: [৭] [৮]

প্রেম আমাদের দীপক যেখানে উৎসুকতা হলো তেল এবং আমার হৃদয় হলো বাতি।
স্বয়ং নিজেকে দ্রবিত করে দীপক আমাকে প্রজ্বলিত করে তামিল জ্ঞানের এই স্তবমালা অর্পণ করি।

— স্তোত্র ১

কবি এই রচনায় বিষ্ণু- লক্ষ্মীকে তাদের স্বর্গীয় আবাস বৈকুণ্ঠে বসবাসের উল্লেখ করেছেন: [৯]

স্বর্গে(বৈকুন্ঠ) দেবতাগণের নাথ উজ্জ্বল জ্যোতিপুঞ্জ বিকিরণ করেন। সাগরে শয়নকারী প্রভুর অপরূপ চরণারবিন্দ ফুল দিয়ে অর্চনাকারী ভক্তশ্রেণীমধ্যে পরিগণিত হয় এবং বৈকুন্ঠে প্রবেশের যোগ্যতা লাভ করে। বৈকুন্ঠে আপনি মুক্তা, রত্ন ও হীরে জড়িত পুষ্পসজ্জিত ছত্রের নিচে কমলসমন্বিতা লক্ষ্মীকে বামভাগে ধারণ করে বিরাজ করেন। আমি আপনার চরণ পূজা করি।

— স্তোত্র ৩-৪


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nair, Shantha (২০১৪-০১-০৭)। Sri Venkateshwara (ইংরেজি ভাষায়)। Jaico Publishing House। পৃষ্ঠা 70। আইএসবিএন 978-81-8495-445-6 
  2. Rosen, Steven (১৯৯৬)। Vaiṣṇavī: Women and the Worship of Krishna (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publishe। পৃষ্ঠা 219। আইএসবিএন 978-81-208-1437-0 
  3. Pārttacārati, Intirā (২০০২)। Vaisnavisam in Tamil Literature Between the 7th and 9th Centuries (ইংরেজি ভাষায়)। International Institute of Tamil Studies। পৃষ্ঠা 37। 
  4. Kasturi, Geeta; N.V, Kasturi (২০১৩-০২-০৬)। Understanding The Elemental Hindu Works (ইংরেজি ভাষায়)। Lulu.com। পৃষ্ঠা 68। আইএসবিএন 978-1-291-31296-6 
  5. Pillai, M. S. Purnalingam (১৯৯৪)। Tamil Literature (ইংরেজি ভাষায়)। Asian Educational Services। পৃষ্ঠা 185। আইএসবিএন 978-81-206-0955-6 
  6. Nammalwar (২০১৪-০৫-১৫)। A Hundred Measures of Time: Tiruviruttam (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin UK। পৃষ্ঠা 134। আইএসবিএন 978-93-5118-714-1 
  7. Young, Katherine (২০১৮-০৩-১৩)। Her Voice, Her Faith: Women Speak On World Religions (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 978-0-429-97965-1 
  8. Bryant, Edwin F. (২০০৭-০৬-১৮)। Krishna: A Sourcebook (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 204। আইএসবিএন 978-0-19-028756-6 
  9. Makarand Joshi। The Sacred Book Of Four Thousand 01 Nalayira Divya Prabandham Sri Rama Bharati 2000। পৃষ্ঠা 637। 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

Irantam Tiruvantati text and commentary (Tamil and English) - N. Rajagopalan