বিষয়বস্তুতে চলুন

আরব মরুভূমি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(আরবীয় মরুভূমি থেকে পুনর্নির্দেশিত)
আরব মরুভূমি
A satellite image of the Arabian Desert by NASA World Wind
দৈর্ঘ্য২,১০০ কিলোমিটার (১,৩০০ মাইল)
প্রস্থ১,১০০ কিলোমিটার (৬৮০ মাইল)
আয়তন২৩,৩০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৯,০০,০০০ বর্গমাইল)
নামকরণ
স্থানীয় নামٱلصَّحْرَاء ٱلْعَرَبِيَّة (আরবি)
ভূগোল
দেশসমূহ
স্থানাঙ্ক১৮°১৬′০২″ উত্তর ৪২°২২′০৫″ পূর্ব / ১৮.২৬৭২° উত্তর ৪২.৩৬৮১° পূর্ব / 18.2672; 42.3681

আরব মরুভূমি ( আরবি: ٱلصَّحْرَاء ٱلْعَرَبِيَّة ) পশ্চিম এশিয়ার এক বিস্তীর্ণ মরুভূমি । এটি ইয়েমেন থেকে পারস্য উপসাগর এবং ওমান এবং জর্দান এবং ইরাক পর্যন্ত বিস্তৃত। এর আয়তন ২৩,৩০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৯,০০,০০০ মা) যা আরব উপদ্বীপের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে রয়েছে। এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মরুভূমি এবং এশিয়ার বৃহত্তম মরুভূমি। এর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে আর রাব আল খালি মরুভূমি যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মরুভূমি।

এই মরুভূমির কিছু প্রাণী যেমন গ্যাজেল, অরিক্স, স্যান্ড ক্যাট এবং ঘূর্ণায়মান লেজ যুক্ত গিরগিটি মরুভূমির অভিযোজিত প্রজাতি।যা এই চরম পরিবেশে টিকে আছে। এর জলবায়ু হল শুষ্ক ( প্রতি বছর প্রায় ১০০ মিলিমিটার ) বৃষ্টি হয়। কিছু বিরল জায়গায় ৫০ মিলিমিটার হয়। এখানে তাপমাত্রা খুবই বেশি। রাতে তাপমাত্রা খুবই কমে যায় ।এই মরুভূমি জেরিক গুল্মভূমি বায়োম এবং প্যালিয়ার্কটিক রাজ্যের অংশ ।

আরবী মরুভূমির বাস্তু-অঞ্চলে সামান্য জীববৈচিত্র্য রয়েছে, যদিও এখানে স্থানীয় উদ্ভিদ জন্মায়। ডোরাকাটা হায়না, শিয়াল এবং হানি ব্যাজারের মতো অনেক প্রজাতি মানুষের শিকার, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে। কিছু প্রজাতি আরব স্যান্ড গ্যাজেল সংরক্ষিত এলাকায় সফলভাবে পুনরায় এসেছে। গবাদি পশু দ্বারা অতিরিক্ত চারণ, রাস্তার বাইরে গাড়ি চালানো, এই মরুভূমির বাস্তুসংস্থানের জন্য প্রধান হুমকি।

ভূতত্ত্ব এবং ভূগোল

[সম্পাদনা]
আরব মরুভূমির মানচিত্র।হলুদ রেখা দ্বারা "আরব মরুভূমি এবং ছোট দুটি পূর্ব সাহেরো-আরব মরুগুল্ম এলাকা ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত "পারস্য উপসাগর মরুভূমি ও আধা মরুভূমি" "লোহিত সাগর নুবো-সিন্ডিয়ান গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মরুভূমি এবং আধা মরুভূমি "। নাসা থেকে পাওয়া উপগ্রহ চিত্র।

ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:

পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ

[সম্পাদনা]

আরব মরুভূমিতে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ফসফেট এবং সালফার[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

রুবা-আল-খালিতে খুব সীমিত বৈচিত্র্যর উদ্ভিদ রয়েছে । মাত্র ৩৭ টি উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে। ২০টি পাওয়া গেছে বালির মধ্যে। বাকি ১৭টি বাইরে। এই ৩৭ প্রজাতির মধ্যে একটি বা দুটি স্থানীয় উদ্ভিদ। কিছু সাধারণ গাছপালা হ'ল:

  • ক্যালিগনাম ক্রিনিটাম
  • কর্নুলাকা আরবিকা (সল্টবশ)
  • সালসোলা স্টকসেই (সল্টব্যাশ)
  • সাইপ্রাস কংগ্লোমারেটাস

অন্যান্য প্রজাতিগুলি হল:

  • ডিপেটেরিয়াম গ্লুকাম
  • লিমিয়াম আরবিকাম
  • জাইগোফিলুম মান্ডাবিলি (ম্যান্ডাভিল 1986)।

বাইরের প্রান্তে (বাবলা ইহরনবার্জিয়ানা এবং প্রসোপিস সিনারিয়া ) বাদে খুব কম গাছই পাওয়া যায়। অন্যান্য প্রজাতিগুলি হলো বহুবর্ষজীবী ক্যালিগোনাম কমোসাম এবং বর্ষজীবী ড্যানথোনিয়া ফোর্সকলি[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এক সময় এশিয়াটিক চিতা [] এবং সিংহ [] এখানে থাকত।

জলবায়ু

[সম্পাদনা]

আরব মরুভূমির জলবায়ু উপক্রান্তীয় উত্তপ্ত মরুভূমি । যা সাহারা মরুভূমির জলবায়ুর মতো। যেটি বিশ্বের বৃহত্তম গরম মরুভূমি। আরব মরুভূমি আসলে আরব উপদ্বীপের উপরে সাহারা মরুভূমির একটি সম্প্রসারিত অংশ। এখানকার জলবায়ু মূলত গরম ও শুকনো। রোদ সারা বছর জুড়ে থাকে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১০০ মিমি (৩.৯ ইঞ্চি) কাছাকাছি । শুষ্ক অঞ্চলগুলিতে 30 থেকে ৪০ মিমি (১.৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে এই ধরনের শুষ্ক মরুভূমি খুব কমই রয়েছে। সাহারা মরুভূমির বিপরীতে আরব মরুভূমিতে কয়েকটি হাইপারইড অঞ্চল রয়েছে। যেখানে অর্ধেকের বেশি অঞ্চলে (বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫০ মিমি (২.০ ইঞ্চি) নিচে রয়েছে। আরব মরুভূমিতে রৌদ্র কিরণের সময়কাল খুব বেশি। ২,৯০০ ঘণ্টা (দিবালোকের ৬৬.২%) এবং ৩,৬০০ ঘণ্টা (দিবালোকের ২.১%) এর মধ্যে থাকে তবে সাধারণত এটি প্রায় ৩,৪০০ ঘণ্টা (দিনের আলোর সময়ের ৬%)। এখানে পরিষ্কার আকাশ সমস্ত অঞ্চলে বিরাজ করে। সূর্য এবং চাঁদ উজ্জ্বল থাকে। তবে ধূলিকণা এবং আর্দ্রতা স্থল স্তরে কম দৃশ্যমানতা সৃষ্টি করে। সারা বছর জুড়েই তাপমাত্রা বেশি থাকে। গ্রীষ্মে গড় উচ্চ তাপমাত্রা সাধারণত ৪০ °সে (১০৪ °ফা) বেশি হয় , এটি ৪৮ °সে (১১৮ °ফা) পর্যন্ত উঠতে পারে । বিশেষ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিকটে পারস্য উপসাগর বরাবর কম উচ্চতায় গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা ২০ °সে (৬৮ °ফা) থাকে । কখনও কখনও ৩০ °সে (৮৬ °ফা) এরও ৩০ °সে (৮৬ °ফা) দক্ষিণের অঞ্চলগুলিতে। মরুভূমির বেশি অংশে ৫০ °সে (১২২ °ফা) এর উপরে রেকর্ড করা হয়েছে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মরুভূমির বেশিরভাগ সৌদি আরবে অবস্থিত। এটি মিশরের পার্শ্ববর্তী দেশ ( সিনাই ), দক্ষিণ ইরাক এবং দক্ষিণ জর্দান জুড়ে রয়েছে। আরব মরুভূমি ৫টি দেশে রয়েছে। পারস্য উপসাগরের সীমান্তে, কাতারে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং আরও পূর্ব দিকে, এই অঞ্চলটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির প্রায় সমস্ত অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। রুবা-আল-খালি সৌদি আরব থেকে পশ্চিম ওমান এবং পূর্ব ইয়েমেন পর্যন্ত।

জনপদ, ভাষা এবং সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]

এই অঞ্চলটিতে বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্কৃতি, ভাষা এবং গোত্রের বাসভূমি রয়েছে। এখানে ইসলাম প্রধান ধর্ম। এই অঞ্চলের প্রধান গোষ্ঠী হ'ল আরব, যার প্রাথমিক ভাষা আরবি

উপনিবেশ

[সম্পাদনা]

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ মরুভূমির কেন্দ্রে অবস্থিত,যেখানে ৭মিলিয়ন লোক বাস করে । [] অন্যান্য বড় শহর গুলি দুবাই, আবুধাবি বা কুয়েত সিটি পারস্য উপসাগরের উপকূলে অবস্থিত।

পরিবেশগত হুমকি

[সম্পাদনা]

সংরক্ষণ

[সম্পাদনা]

মরুভূমির সংরক্ষণ ব্যবস্থা সমালোচনামূলক । বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী যেমনঃ বালি হরিণ এবং সাদা আফ্রিকার একজাতীয় কৃষ্ণসার মৃগ হুমকির মুখে এবং হানি ব্যাজার, শিয়াল এবং ডোরাকাটা হায়েনা ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কোন সংরক্ষিত অঞ্চল নেই । তবে আবুধাবিতে কিছু অঞ্চল সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

উপসাগরীয় যুদ্ধ

[সম্পাদনা]

১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকি বাহিনী সরাসরি পারস্য উপসাগরে স্টোরেজ ট্যাংক ও ট্যাঙ্কার থেকে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন m³ (১১ মিলিয়ন ব্যারেল) তেল ছেড়ে দেয়। ফেব্রুয়ারি মাসে তারা ১,১৬৪টি কুয়েতি তেল কূপ ধ্বংস করে। এই তেলের আগুন নেভাতে নয় মাস লেগেছে। এই তেল পারস্য উপসাগরীয় উপকূলের 1,000 কিলোমিটার (620 মাইল) এলাকা দূষিত করেছিল। এই দূষণের ফলে হাজার হাজার পাখির মৃত্যু হয় ,এবং পারস্য উপসাগরের জলজ বাস্তুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে চিংড়ি, সামুদ্রিক কচ্ছপ, ডুগং, তিমি, ডলফিন এবং মাছের।এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কূপ হতে মরুভূমিতে 10 মিলিয়ন m² (60 মিলিয়ন ব্যারেল) তেল নিষ্কাষিত হয়। এইসব ক্ষতি কোয়ালিশনকে ফোর্স বাধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছিল।

১৯৯১ সালে জোটের বিমানগুলি কুয়েতের জ্বলন্ত তেলকূপগুলির উপর উড়ছিল।

২০০৩ এর ইরাক যুদ্ধের আগে তারা বিভিন্ন তেলক্ষেত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। [][][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Harrison, D. L. (১৯৬৮)। "Genus Acinonyx Brookes, 1828" (পিডিএফ)The mammals of Arabia. Volume II: Carnivora, Artiodactyla, Hyracoidea। Ernest Benn Limited। পৃষ্ঠা 308–313। 
  2. Heptner, V. G.; Sludskii, A. A. (১৯৯২)। "Lion"Mlekopitajuščie Sovetskogo Soiuza. Moskva: Vysšaia Škola। Smithsonian Institution and the National Science Foundation। পৃষ্ঠা 83–95। আইএসবিএন 978-90-04-08876-4 
  3. "هيئة تطوير مدينة الرياض توافق على طلبات مطورين لإنشاء 4 مشاريع سياحية وترفيهية" (Arabic ভাষায়)। এপ্রিল ৪, ২০১৯। এপ্রিল ৪, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ২৪, ২০১৯ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ এপ্রিল ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  6. https://web.archive.org/web/20150519003256/http://kockw.com/sites/EN/Pages/Profile/History/OilFires.aspx

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]