রাজাহার ইউনিয়ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজাহার
ইউনিয়ন
রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদ
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
জেলাগাইবান্ধা জেলা
উপজেলাগোবিন্দগঞ্জ উপজেলা উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)

রাজাহার ইউনিয়ন বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রাজাহার ইউনিয়নের রাজা বিরাটের ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন

সংরক্ষণ অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মহাভারতে বর্ণিত মত্স্য দেশের রাজধানী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজা বিরাটের বিরাট নগরীর প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন। অন্যদিকে একটি চক্র রাজা বিরাটের ঐতিহাসিক স্থাবর-অস্থাবর স্থাপনাসমূহ দখল করছে। অথচ রাজা বিরাট আজও স্বনামধন্য ও বাত্সরিক তীর্থস্থান হিসাবে পরিচিত। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সকল জেলাসহ সারাদেশ থেকে প্রতিবছর বৈশাখ মাসব্যাপী রাজাবিরাটের তীর্থ মেলায় হিন্দুধর্মের হাজার হাজার লোকজনের সমাগম হয়। তারপরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এসব সংরক্ষণে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। এতে করে ঐতিহাসিক মত্স্য দেশের রাজধানী ও সনাতন (হিন্দু) সমপ্রদায়ের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র "রাজা বিরাট" একসময় শুধু কাগজ-কলমেই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।কিংবদন্তি আছে, হিন্দু পৌরাণিক উপাখ্যান মহাভারতের বর্ণনায় যে রাজা বিরাটের নাম উল্লেখ রয়েছে গোবিন্দগঞ্জের বিরাটই সেই নানা উপাখ্যানের সাক্ষী। পৌরাণিক কাহিনী মতে গাইবান্ধার রাজা বিরাট নেপাল রাজ্যের বৈরাট নগরাধিপতি মহারাজ উত্তরের একমাত্র পুত্র ছিলেন। তিনি মৃগয়ার্থে বৈরাট নগর হতে আলোচ্য বিরাটে আগমন করেন। এই বিরাট বনের এক উচ্চ ভূমিতে রাজবাড়ী ও নগর স্থাপন করেন। মহাভারতে বিরাট রাজাকে বিরাট নামেই অভিহিত করা হয়। তিনি তার রাজ্যে হাজার হাজার দীঘি-পুষ্করিনী খনন করে মত্স্য চাষ করে 'মত্স্যরাজ বিরাট' নামে খ্যাত হয়েছিলেন। ঐতিহাসিকদের সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যায়, উত্তর ও পূর্ব বাংলায় পালরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবার সময়েই অষ্টম শতাব্দীর শেষভাগে (৭৪৩-৮০০ খ্রী.) দক্ষিণ পূর্ব বাংলার সমতটে দেববংশ নামে একটি রাজবংশ প্রবল প্রতাপে রাজত্ব করতেন। রাজা বিরাট এই দেববংশ ও পুন্ডনগরের আওতাভুক্ত।সর্ত্য শিবং পুরাণে রাজা বিরাটের গোশালা-'গাইবান্ধা', অশ্বশালা-'ঘোড়াঘাট' ও হাতীশালা-'হাতিবান্ধা' নামে খ্যাত ছিল। সর্ত্য শিবং সনাতনে আরো আছে যে, রাজা বিরাটের শ্বশুরালয়ের নাম "একশত পঞ্চভবন" ও শাশুড়ীর নাম ছিল 'সুদেষ্ণা"। মহাভারতের বর্ণনামতে গান্ধারীর শত পুত্র কুরুদের সাথে কুন্তিদেবীর ৫ পুত্র পঞ্চপাণ্ডব পাশা খেলায় হেরে গেলে পঞ্চপাণ্ডবকে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছর অজ্ঞাতবাসে পাঠানো হয়। এসময় তারা ঘুরতে ঘুরতে পঞ্চাল রাজ্যে পৌঁছে শূন্য চক্রের কনকের মত্স্য ছেদন করে পঞ্চাল রাজা দ্রৌপদের কন্যা দ্রৌপদীকে বিয়ে করেন। নববিবাহিত দ্রৌপদীকে নিয়ে তারা ঘুরেও বেড়ান। পৌরাণিক যুগে কুরুক্ষেত্রের পাণ্ডবদের যুদ্ধ হয় এখানে। এই যুদ্ধেই রাজা বিরাট নিহত হলে রাজধানী অরক্ষিত হয়ে পড়ে। কালক্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় বিরাট নগরী ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়। যার স্মৃতিচিহ্ন আজও কিছু কিছু বিদ্যমান। এখানে ১৯৭৮ সালে পাওয়া যায় সংস্কৃত অক্ষরে খোদাই করে 'নম: নম: বিরাট' লেখা ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ মহামূল্যবান একটি শিলালিপি। যা মহাস্থান যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণ রঙের শিলা পাথর দ্বারা তৈরি হস্তি মস্তকটি রাজশাহী যাদুঘরে ও সিংহদ্বারের একটি পাথরের খাম্বা মহাস্থান যাদুঘরে রয়েছে। তাছাড়া প্রায় ৫ টন ওজনের একজোড়া পাথরের কপাট যুগ যুগ ধরে পতিত অবস্থায় ছিল। যা পরবর্তীতে খণ্ড খণ্ড করে গ্রামবাসীরা নিয়ে গেছে। [১]

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

  • বরট্র
  • ধনিয়াল
  • ঝিকরাইল
  • কুকরাইল
  • জিনাউত
  • বেউরগ্রাম
  • প্রভুরামপুর
  • নওগাঁ
  • শিহিপুর
  • কচুয়া পানিতলা
  • আনন্দীপুর
  • রাজাহার জিনাউত
  • দুবলাগাড়ী
  • বড়শাও
  • বানেশ্বর
  • গোয়ালকান্দি
  • ধুতুরবাড়ী
  • গোপালপুর
  • দোঘড়িয়া
  • দেওতা+আকিরা

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

ইতিহাস সমৃদ্ধ রাজাহার ইউনিয়ন । গাইবান্ধা জেলার ইতিহাস বইটিতে দেখা যায় ,রাজা বিরাটের রাজ্যের অভিন্ন সীমানা ছিল । মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী রাজা বিরাটে রাজা ভগত ও কামরুপের রাজা ছিলেন । সেই সময় বিরাট রাজার দেশ মৎস্য দেশ বা রাজ্য নামে পরিচিত ছিল । এ রাজ্যের রাজধানী ছিল রাজা বিরাট ।কালের স্বাক্ষী স্বরুপ এখনও রাজপ্রাসাদের চিহ্ন বিরাজমান রয়েছে । যা বর্তমান টিলা আকারে রয়েছে। রাজা বিরাটে অনেক প্রাচীন টিলাও বিদ্যমান রয়েছে । [২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. http://rajaharup.gaibandha.gov.bd/site/page/c47a10d3-18fd-11e7-9461[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]