বিষয়বস্তুতে চলুন

ধর্মেন্দ্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ধর্মেন্দ্র
জন্ম
ধরম সিং দেওল[]

(1935-12-08) ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৫ (বয়স ৮৮)
পেশাঅভিনেতা, প্রযোজক, রাজনীতিবিদ
দাম্পত্য সঙ্গী
  • প্রকাশ কর
    (১৯৫৪–বর্তমান; (৪ সন্তান))
    হেমা মালিনী
    (১৯৮০–বর্তমান; (২ সন্তান))
সন্তানসানি দেওল (অজয় সিং দেওল)
ববি দেওল (বিজয় সিং দেওল)
বিজিতা দেওল
অজীতা দেওল
এশা দেওল
অহনা দেওল
স্বাক্ষর

ধরম সিং দেওল (গুরুমুখী: ਧਰਮਿੰਦਰ ਸਿੰਘ ਦਿਉਲ, জন্ম: ডিসেম্বর ৮ ১৯৩৫),[] ধর্মেন্দ্র নামে পরিচিত, ভারতীয় বিখ্যাত অভিনেতা। ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি সর্বমোট ২৪৭টি হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[]

পূর্ব জীবন

[সম্পাদনা]

ধর্মেন্দ্রর জন্মনাম হচ্ছে ধরম সিং দেওল। ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখ পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানা জেলার নাসরালি গ্রামে তার জন্ম হয়; তার বাবার নাম ছিলো কেওয়াল কিষাণ সিং দেওল এবং মার নাম সত্যবন্ত কর, এই পরিবারটি জাট ছিলো।[] লুধিয়ানা জেলার দাঙ্গোন গ্রামে ছিলো পরিবারটির আদিনিবাস।

সাহনেওয়াল গ্রামে ধর্মেন্দ্র বড় হয়েছিলেন এবং লাল্টন কালান গ্রামের সরকারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়েন, বিদ্যালয়টিতে তাঁর বাবা কেওয়াল শিক্ষক ছিলেন এবং পরে প্রধান-শিক্ষক হন। ১৯৫২ সালে ধর্মেন্দ্র ফাগওয়াড়া মফস্বলের রামগড়িয়া কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন।[] ধর্মেন্দ্র কয়েক বছর পর হঠাৎ ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিন দেখেন, ওখানে তিনি গুরু দত্ত, বিমল রায়, দেব আনন্দ, মধুবালার মত তখনকার সময়ের তারকাদের ছবি দেখে খুব আকর্ষিত হন এবং মালেরকোটলা বাজারে নিজের ছবি তুলতে যান।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

চলচ্চিত্র অভিনেতা

[সম্পাদনা]
ষাটের দশকে ধর্মেন্দ্র

জাতীয়ভাবে ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনে 'নিউ ট্যালেন্ট এ্যাওয়ার্ড' এর আয়োজন করা হয়েছিলো, ধর্মেন্দ্র সেটিতে জিতে পাঞ্জাব থেকে মুম্বাই (তখন বম্বে) শহরে আসেন। বলা হয়েছিলো যে তাঁকে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য নেওয়া হবে, যদিও কোনো চলচ্চিত্রই তৈরি হয়নি। ১৯৬০ সালের চলচ্চিত্র দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে ছিলো ধর্মেন্দ্র অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র।[][] বয়ফ্রেন্ড (১৯৬১) চলচ্চিত্রে তিনি সহ-ভূমিকায় ছিলেন; ১৯৬০ থেকে '৬৭ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রেমমূলক চলচ্চিত্রে কাজ করেন ধর্মেন্দ্র।

তিনি অভিনেত্রী নূতন এর সঙ্গে সুরত অর সিরাত (১৯৬২), বন্দিনী (১৯৬৩), দিল নে ফির ইয়াদ কিয়া (১৯৬৬) এবং দুলহান এক রাত কি (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মালা সিনহার সঙ্গে ধর্মেন্দ্র আনপাড় (১৯৬২), পুজা কে ফুল (১৯৬৪), আঁখে এবং বাহারে ফির আয়েগী (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। ষাটের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নন্দার সঙ্গে ধর্মেন্দ্র আকাশদ্বীপ এবং সায়রা বানুর সঙ্গে শাদী এবং আয়ে মিলান কি বেল (১৯৬৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র। মীনা কুমারীর সঙ্গে ধর্মেন্দ্র একটি সফল চলচ্চিত্র জুটি তৈরি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সাতটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি, এগুলো হলোঃ ম্যাঁ ভি লাড়কি হুঁ (১৯৬৪), কাজল (১৯৬৫), পূর্ণিমা (১৯৬৫), ফুল অর পাত্থার (১৯৬৬), মাঝলি দিদি (১৯৬৭), চন্দন কা পালনা (১৯৬৭) এবং বাহারো কি মানযিল (১৯৬৮)। ফুল অর পাত্থার (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে তিনি একাই নায়ক ছিলেন এবং এটি ছিলো তার জীবনের প্রথম মারামারির চলচ্চিত্র। গুজব রটিয়ে পড়ে যে ধর্মেন্দ্র নাকি মীনা কুমারীর সঙ্গে প্রেম করতেন।[][১০][১১] মীনা কুমারী ধর্মেন্দ্রকে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক সাহায্য করেছিলেন, তিনি ধর্মেন্দ্রর বন্ধুর মত ছিলেন।[১২] ফুল অর পাত্থার চলচ্চিত্রটি ১৯৬৬ সালের সবচেয়ে আয়কারী চলচ্চিত্র ছিলো এবং ধর্মেন্দ্র তাঁর জীবনের প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতা বিষয়শ্রেণিতে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।[১৩] ১৯৬৬ সালেরই চলচ্চিত্র অনুপমাতে ধর্মেন্দ্রর অভিনয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিলো।[১৪] ১৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে (১০ অক্টোবর ১৯৬৭) ধর্মেন্দ্রকে উল্লেখ করে কথা বলা হয়েছিলো তার অনুপমা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য।[১৫] তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করে ভালোই পরিচিতি পান, যেমনঃ আয়ে মিলন কি বেলা, আয়া সাওয়ান ঝুমকে, মেরে হামদাম মেরে দোস্ত, পিয়ার হি পিয়ার এবং জীবন মৃত্যু। বিভিন্ন থ্রিলার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও নাম কামান তিনি যেমনঃ শিকার, ব্ল্যাকমেইল, কাব কিঁউ অর কাহা এবং কিমত। ১৯৭১ সালের চলচ্চিত্র মেরা গাওঁ মেরা দেশ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ধর্মেন্দ্র ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেতা মনোনয়ন পান। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিলো।

ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে হেমা মালিনীর চলচ্চিত্র-জুটি সবচেয়ে সফল ছিলো, হেমা পরে তার স্ত্রী হন[], হেমা আর ধর্মেন্দ্র অনেক চলচ্চিত্রে একসঙ্গে কাজ করেন, যেমনঃ রাজা জানী, সীতা অর গীতা, শরাফত, নয়া জামানা, পাত্থার অর পায়েল, তুম হাসিন ম্যাঁ জাওয়ান, জুগনু, দোস্ত, চরস, মা, চাচা ভাতিজা, আজাদ এবং শোলেঋষিকেশ মুখোপাধ্যায় এর সঙ্গে সত্যকাম চলচ্চিত্র ধর্মেন্দ্রকে অনেক সম্মান দিয়েছিলো।[১৬]

চলচ্চিত্র তালিকা

[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

১৯৫৪ সালে ধর্মেন্দ্রর বাবা-মা ধর্মেন্দ্রর সাথে প্রকাশ কর নামক উনিশ বছর বয়সী এক উঠতি তরুণীর বিয়ে দেন, তখন ধর্মেন্দ্রর বয়সও উনিশ ছিলো, এই প্রকাশ কর এবং ধর্মেন্দ্রর চারজন সন্তান হয়, দুই ছেলে সানি দেওল এবং ববি দেওল হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনেতা হয়েছিলেন এবং দুটি মেয়ে বিজেতা এবং অজিতা কোনো কর্মজীবনে প্রবেশ করেননি।

ধর্মেন্দ্র পরে ১৯৮০ সালে গোপনে হেমা মালিনীকে বিয়ে করেছিলেন, যদিও প্রকাশ করকে তিনি তালাক দিতে চাননি এবং পরে দেনও নি, এসময় গুজব রটে যে ধর্মেন্দ্র নাকি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন,[১৭] যদিও ধর্মেন্দ্র ইসলাম ধর্ম কখনোই গ্রহণ করেননি।[১৮] এষা দেওল এবং অহনা দেওল নামের দুই কন্যার জন্ম হয় ধর্মেন্দ্র-হেমা দম্পতির।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. NDTV Movies: Dharam still Garam at 77[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "Dharmendra or "Dilawar Khan?""Milli Gazete। ১৬–৩০ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ 
  3. Amir, Insiya (জুন ২১, ২০০৯)। "Convert to Islam, bypass bigamy laws?"The Times of India। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ 
  4. "14th Lok Sabha Members Bioprofile"। Lok Sabha। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৪ 
  5. "Watch In Conversation with The Deols"13 November 2012। BBC Asian Network। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১২ 
  6. "Dharmendra nostalgic on visiting Dangon"Ludhiana Tribune। ৬ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৫ 
  7. "Dharmendra – Action King: Romantic hero"The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১০ 
  8. Ranjana Das Gupta (৪ নভেম্বর ২০১০)। "My First Break: Dharmendra"The Hindu। Chennai, India। ৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১১ 
  9. Mishra, Vijay (২০০২)। Bollywood cinema : temples of desire। London: Routledge। পৃষ্ঠা xvi। আইএসবিএন 978-0415930154। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  10. Pal, Chandrima (১৫ আগস্ট ২০১৩)। "Men who loved and left Meena Kumari"। Mumbai Mirror। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  11. Jha, Subhash K (২০০৬)। The essential guide to Bollywood। New Delhi: Lustre Press। পৃষ্ঠা 1966। আইএসবিএন 978-8174363787। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  12. Mehta 2016, পৃ. 1949।
  13. "Dharmendra charms the Big Apple"। Rediff। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬ 
  14. "Hema Malini 35th marriage anniversary" (Post.jagran.com)। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৫ 
  15. "Film awards presented"। The Indian Express। Press Trust of India। ১১ অক্টোবর ১৯৬৭। পৃষ্ঠা 7। 
  16. Dinesh Raheja"Satyakam: Dharmendra's best role of his career"rediff.com। Rediff। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১০ 
  17. "Celebrities who converted to Islam"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৫ 
  18. "Dharmendra or "Dilawar Khan?""Milli Gazette। ৩০ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৬When his political rivals brought the issue to the notice of election authorities and the general public, he denied his conversion to Islam and change of name. 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]