মতি মসজিদ (মেহরাউলি)

স্থানাঙ্ক: ২৮°৩১′০৯″ উত্তর ৭৭°১০′৪৯″ পূর্ব / ২৮.৫১৯১৮° উত্তর ৭৭.১৮০২০° পূর্ব / 28.51918; 77.18020
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মতি মসজিদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
অবস্থান
অবস্থানমেহরাউলি, দিল্লী
দেশভারত
স্থানাঙ্ক২৮°৩১′০৯″ উত্তর ৭৭°১০′৪৯″ পূর্ব / ২৮.৫১৯১৮° উত্তর ৭৭.১৮০২০° পূর্ব / 28.51918; 77.18020
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীমুঘল
সম্পূর্ণ হয়১৭০৯
বিনির্দেশ
গম্বুজসমূহ
উপাদানসমূহমার্বেল পাথর

মতি মসজিদ (আক্ষ. অনু. মুক্তা মসজিদ)[১] ১৮ তম শতাব্দীতে নির্মিত মুঘল সাম্রাজ্যর মসজিদ যা মেহরাউলি, দিল্লীতে অবস্থিত। মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে এর সাদা পাথরের থেকে,[২] মসজিদটি নির্মান করা হয়েছিল প্রথম বাহাদুর শাহ এর আমলে, যা কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকীর দরগাহের কাছে নির্মান করে হয়েছিল। মসজিদটির সকল কাজ উক্ত দরগাহর আওতায় সম্পন্ন করা হতো।

অবস্থান[সম্পাদনা]

মতি মসজিদটি কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকির দরগার পশ্চিমে দিল্লীর মেহরাউলিতে অবস্থিত। মসজিদ সংলগ্ন একটি কবরস্থান রয়েছে যেখানে ১৮ এবং ১৯ শতকের বেশ কয়েকজন সম্রাটের কবর রয়েছে, যেমন প্রথম বাহাদুর শাহ, আহমেদ শাহ বাহাদুর, দ্বিতীয় শাহ আলম, ও দ্বিতীয় আকবরের কবর উল্লেখযোগ্য।[১][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মতি মসজিদ ১৭০৯ সালে মুঘল সম্রাট প্রথম বাহাদুর শাহ এর শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল।[১] প্রাথমিক ভাবে মসজিদটিকে বাহাদুর শাহ নিজেই নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়ে থাকে; কিন্তু, দাদলানি যুক্তি দেন যে, মসজিদটি সম্ভবত সম্রাটের পরিবারের কোন সদস্য বা সম্রাটের ডেপুটি নির্মাণ করেছিলেন।[৪] যা সম্রাটের প্রত্যক্ষ নির্মাণের যুক্তিটিকে সমর্থন করে না। কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকির দরগাহর পাশে প্রথম বাহাদুর শাহ মসজিদটি নির্মান করেন। এই কারণে মনে করা হয়ে থাকে যে মুঘল আমলের সম্রাটগণ দরগাহকে সমর্থন করতেন এবং সবসময় দরগাহ গুলোর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।[৩]

দেশভাগের সময় যখন সাম্প্রদায়িক বিদ্রোহ শুরু হয় তখন বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উপসনালয় এবং স্থাপনায় আক্রমণ চালানো হয়। সেই সময় মতি মসজিদ একটি সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হওয়া সত্ত্বেও মসজিদটিতে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। ফলে মসজিদের মার্বেল মিনারটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। মুসলিম বিরোধী বৃহত্তর সহিংসতার অংশ হিসাবে, দিল্লিতে আরও কয়েকটি ইসলামি ধর্মীয় স্থাপনাতেও অনুরূপ হামলা পরিচালিত হয়েছিল।[৫]

স্থাপত্যকলা[সম্পাদনা]

মতি মসজিদ মেহেরাউলিতে মুঘল সাম্রাজ্যের স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে গৌরবের সাথে দাঁড়িয়ে আছে বছরের পর বছর। মসজিদটি ছোট ছোট মার্বেল পাথর একত্র করে বেশ সময় নিয়ে বানানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মসজিদের মূল প্রার্থনার জায়গাটি মূলত একক করিডোর বিশিষ্ট। যেখানে নামাজ পড়ার জন্য মোট পাঁচটি কাতার রয়েছে।[৬] আগে লাল কেল্লায় যে মতি মসজিদ ছিল সেখানে নামাজের জন্য দুইটি করিডোর বিশিষ্ট স্থাপনা ছিল। যা বর্তমানের মতি মসজিদ থেকে সম্পূর্ণ ভাবে আলাদা স্থাপত্য শৈলীতে তৈরী করা হয়েছিল।[৩] মসজিদের সম্মুখভাগে সর্বমোট তিনটি খিলানপথ রয়েছে,[২] যেগুলোর মাঝে একটি পিশতাক রয়েছে।[৬] স্থাপনাটির শীর্ষে সর্বমোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। উক্ত তিনটি গম্বুজই মসজিদের অগ্রপ্রান্তে অবস্থিত। যা সম্মুখভাগ থেকে খুব পরিষ্কার ভাবে দেখা যায়। পূর্ব-মধ্য পাশের সকল কাতার বেলাস্ট্রেড সদৃশ স্তম্ভের দ্বারা সজ্জিত। যা মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়।[৩]

মসজিদের পুরো সীমানাই মার্বেলের দেয়াল দিয়ে ঘেরা; এই দেয়ালের মধ্যে একটি দেয়াল মসজিদটিকে দরগাহের থেকে আলাদা করে রেখেছে। অন্যদিকে দক্ষিণের দেয়ালটি কবরস্থানের দিকে উন্মুক্ত, এটিও মার্বেল দিয়ে তৈরি। এই কবরস্থানেই ভারতের মুঘল আমলের অনেক সম্রাটের কবর অবস্থিত।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Dadlani, Chanchal B. (২০১৮)। From stone to paper : architecture as history in the late Mughal Empire। New Haven [CT]। পৃষ্ঠা 63। আইএসবিএন 978-0-300-23317-9ওসিএলসি 1024165136 
  2. Alfieri, Bianca Maria (২০০০)। Islamic architecture of the Indian subcontinent। F. Borromeo। London, WC: Laurence King Pub.। পৃষ্ঠা 275–276। আইএসবিএন 81-85822-74-3ওসিএলসি 44536138 
  3. Asher, Catherine B. (১৯৯২-০৯-২৪)। Architecture of Mughal India। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 293–294। আইএসবিএন 978-0-521-26728-1 
  4. Dadlani, Chanchal B. (২০১৮)। From stone to paper : architecture as history in the late Mughal Empire। New Haven [CT]। পৃষ্ঠা 184। আইএসবিএন 978-0-300-23317-9ওসিএলসি 1024165136 
  5. Lahiri, Nayanjot (২০১২)। "Partitioning the Past"। Appropriating the past : philosophical perspectives on the practice of archaeology। Geoffrey Scarre, Robin Coningham। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 296–297। আইএসবিএন 978-1-139-77570-0ওসিএলসি 817224884 
  6. Koch, Ebba (১৯৯১)। Mughal architecture : an outline of its history and development, 1526-1858। München, Federal Republic of Germany: Prestel। পৃষ্ঠা 130–131। আইএসবিএন 3-7913-1070-4ওসিএলসি 26808918