ভারতে বাংলা ভাষা আন্দোলন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বানান সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান)
{{POV}}, {{context}}, {{in-universe}}, {{original research}}, {{অসংলগ্ন}}, {{বিজ্ঞাপন}}, {{বিতর্কিত}}, {{বিভ্রান্তিকর}} ও {{সূত্র উন্নতি}} ট্যাগ ({{...
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{multiple issues|
{{POV|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{context|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{in-universe|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{original research|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{অসংলগ্ন|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{বিজ্ঞাপন|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{বিতর্কিত|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{বিভ্রান্তিকর|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
{{সূত্র উন্নতি|date=ডিসেম্বর ২০১৭}}
}}
{{কাজ চলছে}}
{{কাজ চলছে}}
ভারতের বিভিন্ন অংশে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে [[বাঙালি]] জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন শুরু করে। অবিভক্ত ভারতে ১৯৪০ সালে মানভূমে জেলায় যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সাময়িক ভাবে নতুন জেলা গঠনের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের আন্দোলনকারীদের দাবি মিটে গেলেও ভারতের অন্যান্য প্রদেশে বাংলা ভাষা আন্দোলন আজও বিদ্যমান। ভারতের বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে মানভূম ও আসামের নাম প্রথম উঠে আসে। এছাড়াও [[ঝাড়খন্ড]], [[বিহার]], ছত্রিশগড়, [[কর্ণাটক]] ও দিল্লিতে বাঙালি মাতৃভাষার দাবিতে লড়াই করছে।
ভারতের বিভিন্ন অংশে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে [[বাঙালি]] জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন শুরু করে। অবিভক্ত ভারতে ১৯৪০ সালে মানভূমে জেলায় যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সাময়িক ভাবে নতুন জেলা গঠনের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের আন্দোলনকারীদের দাবি মিটে গেলেও ভারতের অন্যান্য প্রদেশে বাংলা ভাষা আন্দোলন আজও বিদ্যমান। ভারতের বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে মানভূম ও আসামের নাম প্রথম উঠে আসে। এছাড়াও [[ঝাড়খন্ড]], [[বিহার]], ছত্রিশগড়, [[কর্ণাটক]] ও দিল্লিতে বাঙালি মাতৃভাষার দাবিতে লড়াই করছে।

১২:৫৮, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ভারতের বিভিন্ন অংশে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে বাঙালি জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন শুরু করে। অবিভক্ত ভারতে ১৯৪০ সালে মানভূমে জেলায় যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সাময়িক ভাবে নতুন জেলা গঠনের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের আন্দোলনকারীদের দাবি মিটে গেলেও ভারতের অন্যান্য প্রদেশে বাংলা ভাষা আন্দোলন আজও বিদ্যমান। ভারতের বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে মানভূম ও আসামের নাম প্রথম উঠে আসে। এছাড়াও ঝাড়খন্ড, বিহার, ছত্রিশগড়, কর্ণাটক ও দিল্লিতে বাঙালি মাতৃভাষার দাবিতে লড়াই করছে।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি

১৯৪৭ সালে বৃটিশ ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে ভারতপাকিস্তান তৈরি হয়।[১][২] মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ব বাংলা পাকিস্তানে এবং হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিম বাংলা ভারতে যোগ দেয়। পশ্চিম বাংলা থেকে বাঙালি মুসলমানেরা তদানীন্তন পাকিস্তান তথা অধুনা বাংলাদেশে এবং বাঙালি হিন্দু পূর্ব বাংলা থেকে ভারতে চলে আসে। পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তু ও ছিন্নমূল এই সব হিন্দু বাঙালিরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেন। ভারতের বাঙালি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্যান্য অবাঙালী জনজাতি অধ্যুষিত রাজ্যে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়। ছত্রিশগড় ,ওড়িশার দণ্ডকারণ্য, মহারাষ্ট্র কর্ণাটক এই রাজ্য গুলির মধ্যে অন্যতম। পুনর্বাসিত এই সকল হিন্দু বাঙালিরা অবাঙালী অধ্যুষিত এই সকল রাজ্যে বৈষম্যের স্বীকার হয় এবং মাতৃভাষা বাংলার পঠনপাঠন ও সরকারি মর্যাদার দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

আসাম

শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মৃতিসৌধ
শিলচর রেলওয়ে স্টেশন ভাষা শহীদ স্টেশন নামে পরিচিত

আসামের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল আসাম সরকারের অসমীয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, যদিও জনসংখ্যার এক উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল বাংলাভাষী। বরাক উপত্যকায়, বাংলাভাষী জনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠ। প্রধান ঘটনাটি ১৯৬১ সালের ১৯ মে ঘটে, সেদিন ১১ জন প্রতিবাদীকে শিলচরে প্রাদেশিক পুলিশ হত্যা করে।

ছত্রিশগড়

১৯৪৭ এর দেশ ভাগের পর পূর্ব বাংলার হিন্দু উদ্বাস্তুদের দণ্ডকারণ্য প্রজেক্টের মাধ্যমে পাখানজোরের ১৩২ টি গ্রামে ও ৩৩ টি গ্রামে পুনর্বাসন দেওয়া হয়। পরবর্তী কালে বাঙালিদের বাংলায় পঠনপাঠন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু, দণ্ডকারণ্য প্রজেক্ট বন্ধ হলে ছত্রিশগড় সরকার পরে বাংলায় শিক্ষার ব্যবস্থা বন্ধ করে দেন। বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয় গুলিকে হিন্দি মাধ্যমে রূপান্তর করা হয়। সামান্য কিছু বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয় থাকলেও সেখানে বাংলা মাধ্যম পুস্তক সরবরাহ করা হয় নি। বাঙালি পড়ুয়ারা বৈষম্যের মুখোমুখি হয়। পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরে নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমিতির নেতৃত্বে আন্দোলনের রূপ ধারণ করে বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বাংলায় পঠনপাঠন এবং সরকারি কাজে বাংলা ব্যবহারের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে। ছত্রিশগড়ের পাখানজোর থেকে শুরু করে রাজধানী দিল্লিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সাময়িক কিছু সমস্যার সমাধান হলেও বাকি দাবিতে সংগ্রামকারীরা আজও আন্দোলনরত।

কর্ণাটক

পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তু হিন্দুদের এক অংশ দক্ষিণাত্যের কর্ণাটক রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নেয়। সেখানের বাঙালি পড়ুয়াদের বাংলায় পাঠনপাঠনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বাংলা মাধ্যমের দাবিতে ও বাংলা ভাষাকে পাঠ্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কর্ণাটকের বাঙালিরা আন্দোলন করেছিল। তাঁদের আন্দোলনের দাবি মেনে নিয়ে বাঙালি অধ্যুষিত গ্রাম গুলিতে বাংলা পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করে কর্ণাটক সরকার[৩]। বাঙালিদের আন্দোলনে বাংলাকে কর্ণাটকের দ্বিতীয় ভাষার স্বীকৃতি দেয় কর্ণাটক সরকার।[৩]

বিহার

মানভুমের বাংলা ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ভাষা সৈনিকের সাক্ষাৎকার
মানভুমের বাংলা ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়া ভাবিনী মাহাতো।

ভারত সরকার তৎকালীন বিহার রাজ্যের মানভূম জেলায় বসবাসকারী বাংলাভাষী মানুষদের মধ্যে জোর করে হিন্দী ভাষা চাপিয়ে দিতে গেলে তাঁরা বাংলা ভাষার জন্য এই আন্দোলন করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নতুন জেলা তৈরী করতে সরকারকে বাধ্য করেন।

ঝাড়খণ্ড

ঝাড়খন্ড পশ্চিমবঙ্গের শুধু প্রতিবেশী রাজ্যেই নয়, প্রাচীন বঙ্গ এর পশ্চিম অংশ রাঢ় অঞ্চলের অংশ বিশেষ এই রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই রাজ্যের একাধিক জেলায় বাঙালি সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও জেলাগুলি পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয় নি। বর্তমানে ঝাড়খন্ডের জনসংখ্যার ৪২% বাঙালি, যা একক ভাবে ওই রাজ্যের বৃহত্তম জাতি। এছাড়াও বাংলা ঝাড়খন্ডের বাঙালি ও উপজাতিদের (এদের মুলনিবাসী বাঙালি বলা হয়) সংযোগকারী ভাষা। কিন্তু, হিন্দি ইংরেজি ও উর্দু এই রাজ্যের প্রধান সরকারি ভাষার মর্যাদা পেলেও বাংলা আজও প্রধান সরকারি ভাষার মর্যাদা পায় নি। ঝাড়খন্ডের একাধিক বাঙালি সংগঠন ও উপজাতি সংগঠন বাংলাকে প্রধান সরকারি ভাষা ঘোষণার দাবিতে দীর্ঘদিন সাংগ্রামরত। ঝড়খণ্ডে বাঙালিদের আন্দোলনের চাপে ২০১০ সালে বাংলাকে এই রাজ্যের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হলেও, তা কার্যকরী হয় নি। এছাড়াও বাঙ্গালা ভাষী পড়ুয়ারা বঞ্চনার স্বীকার হয়েছে, বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয় গুলিকে হিন্দি মাধ্যমে রূপান্তর করা হয়েছে।[৪][৫][৬]

দিল্লি

১৯৪৭ এর ভারত ভাগ ও ১৯৭১ এর পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তু হিন্দুরা ভারতেও রাজধানী দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছিলো। এই সময় দিল্লিতে তাঁদের মূল বাসভূমি ছিল চিত্তরঞ্জন পার্ক। এছাড়াও বিভিন্ন সময় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও ভারতের অন্যান্য বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য থেকে বাঙালিরা দিল্লিতে আসায় পাঞ্জাবীদের পর বাঙালিই দিল্লির দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যালঘু জাতি। ভারতের জনগণ অনুযায়ী দিল্লিতে আনুমানিক ২৫ লক্ষ বাঙালির বাস[৭]।কিন্তু, সেখানেও বাঙালিরা বৈষম্যের স্বীকার। দিল্লিতে অন্যান্য ভাষার নিজেস্ব একাডেমি থাকলেও বাংলা ভাষা একাডেমি নেই। বাঙালি পড়ুয়াদের জন্য বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয় নগন্য। কাজেই দিল্লির বাঙালিরা ভাষার অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত। বাঙালিদের আন্দোলনের জেরে বর্তমানে দিল্লিতে একটি বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলছে[৭]

আরো পড়ুন

তথ্যসূত্র

  1. "INDIA: Written in Blood"Time (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৪৬-১০-২৮। আইএসএসএন 0040-781X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১ 
  2. Khan, Yasmin (২০০৭)। The Great Partition: The Making of India and Pakistan (ইংরেজি ভাষায়)। Yale University Press। আইএসবিএন 0300120788 
  3. http://www.prothom-alo.com/amp/international/article/3856কর্ণাটকে-রাজ্যভাষার-মর্যাদা-পেল‘বাংলা’
  4. "Bengalis feel ignored by Jharkhand govt - Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১ 
  5. "Make Bengali the second official language: Bangabhasi Samity"News18। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১ 
  6. "Bengali Language & Bengali speaking population in Jharkhand"Anil mandal's blog (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১ 
  7. কাঞ্জিলাল, সুমনা। "দিল্লিতে বাংলা আকাদেমি গঠনে তৎপরতা"