সিমন কেরিগান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Simon Kerrigan থেকে পুনর্নির্দেশিত)
সিমন কেরিগান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামসিমন ক্রিস্টোফার কেরিগান
জন্ম (1989-05-10) ১০ মে ১৯৮৯ (বয়স ৩৪)
প্রিস্টন, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
উচ্চতা৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৬৫৬)
২১ আগস্ট ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০১০–২০১৮ল্যাঙ্কাশায়ার (জার্সি নং ১০)
২০১৭নর্দাম্পটনশায়ার (ধারকৃত)
২০২০–বর্তমাননর্দাম্পটনশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ১০৬ ৩৫ ২৪
রানের সংখ্যা ১,০৫৯ ৩০
ব্যাটিং গড় ১৩.০৭ ৩.৩৩
১০০/৫০ ০/০ ০/৩ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান * ৬২* ১০ ৪*
বল করেছে ৪৮ ২০,৭৮৫ ১,৪৫৬ ৫১৬
উইকেট ৩২৫ ২৮ ২০
বোলিং গড় ৩০.৫৬ ৪৬.৫০ ২৯.৭৫
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৩
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৯/৫১ ৩/২১ ৩/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ৩৭/– ১১/– ১১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সিমন ক্রিস্টোফার কেরিগান (ইংরেজি: Simon Kerrigan; জন্ম: ১০ মে, ১৯৮৯) ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রিস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ২০১০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন সিমন কেরিগান

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রিস্টন এলাকায় সিমন কেরিগানের জন্ম। প্যালেস শীল্ড প্রিমিয়ারশীপ ক্লাব ফুলউড এন্ড ব্রাউটনের পক্ষে ছোটদের ক্রিকেটে অংশ নেন। পরবর্তীতে লিভারপুল ও ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট কম্পিটিশনে অর্মসকার্কে স্থানান্তরিত হন।[১] সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে আরও দশজন তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রথমবারের মতো চুক্তিবদ্ধ হন।[২]

২০০৯ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। এ পর্যায়ে তার দল দ্বিতীয় একাদশ চ্যাম্পিয়নশীপের চূড়ান্ত খেলায় ও দ্বিতীয় একাদশ ট্রফির সেমি-ফাইনালে অবতীর্ণ হয়েছিল।[৩] এপ্রিল, ২০১০ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের অভিজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠিত স্পিনার গ্যারি কিডি মৌসুমের শুরুতে বুকের হাড় ভেঙ্গে ফেললে কয়েক মাস মাঠের বাইরে অবস্থান করেন। ফলশ্রুতিতে, সিমন কেরিগান ও স্টিফেন প্যারি প্রথম একাদশের পক্ষে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান।

এ প্রসঙ্গে ল্যাঙ্কাশায়ারের কোচ পিটার মুরেজ মন্তব্য করেন যে, আমরা ভাগ্যবান যে স্টিফেন প্যারিকে গত মৌসুমে প্রথম একাদশের পক্ষে কয়েকটি খেলায় পেয়েছি। তাছাড়াও, মৌসুমের শুরুতে বার্বাডোসে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে সিমন কেরিগান চমৎকার খেলে ছয় উইকেট দখল করেছিলেন। তাদের সাথে স্টিভেন ক্রফ্টিকেও অফ স্পিনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো।[৪]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

শুরুতে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলেন। সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১০ সাল থেকে সিমন কারিগানের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রয়েছে। মৌসুমের প্রথম খেলায় ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে সিমন কেরিগানের। প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট পান তিনি। সবমিলিয়ে খেলায় সাত উইকেট নিয়ে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে দলের জয়ে সবিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার ইয়ান বেল তার প্রথম উইকেট শিকারে পরিণত হয়েছিলেন।[৫][৬]

২০১০ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড় গ্যারি কিডি’র পরিবর্তে প্রথম একাদশের পক্ষে তার অভিষেক ঘটে। ঐ বছর ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে ১৩টি চ্যাম্পিয়নশীপের প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন।। ৩২.২৩ গড়ে ৩০ উইকেট নিয়ে প্রথমবারের মতো উল্লেখযোগ্য সাফল্য পান। তন্মধ্যে, তিনবার পাঁচ-উইকেট লাভ করেছিলেন।[৭] আরোগ্য লাভের পর কিডি দলে প্রত্যাবর্তন করলে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে তারা কিছুসময় একত্রে বোলিং করতেন। তবে, তাদের মধ্যকার জুটি ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখেনি। তাদের খেলার ধরন ভিন্নতর ছিল। আলোচনার পর তার সিদ্ধান্ত নেন যে যদি তার একত্রে বোলিংয়ে চাপের সৃষ্টি করেন তাহলে হয়তোবা আরও কার্যকর হবে।[৮]

স্বর্ণালী সময়[সম্পাদনা]

২০১০ ও ২০১১ সালে এনবিসি ডেনিস কম্পটন পুরস্কার লাভ করেন। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় মেয়াদে কোচের দায়িত্ব পালনে প্রস্তুতি নেয়া ল্যাঙ্কাশায়ারীয় কোচ পিটার মুরেজ তার ক্রীড়াশৈলীকে বিশ্বমানের বলে উল্লেখ করেন।

২০১১ সালের শুরুতে আবারও সফল হন। এজবাস্টনে ওয়ারউইকশায়ারের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৫/৭ লাভ করেন। দলের ১৪৭ রানের বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। ওয়ারউইকশায়ারের কোচ ও ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার অ্যাশলে জাইলস তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। চার খেলার মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়ে ল্যাঙ্কাশায়ার দল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান দখল করে।[৯] কিডি’র সুন্দর ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের কারণে সিমন কেরিগানকে ২০১১ সালের পূর্ব-পর্যন্ত ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলানো হয়নি। ঐ বছর ল্যাঙ্কাশায়ার দলের পক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের চতুর্থ খেলায় অংশ নেন। দলের ফাস্ট বোলারদের আঘাতের কারণেই তিনি এ সুযোগ পেয়েছিলেন।

ফেব্রুয়ারি ২০১১ সালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) কর্তৃক আয়োজিত স্পিন বোলিং প্রশিক্ষণ শিবিরে ১৬ দিন অতিবাহিত করেন।[১০] আগস্ট, ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড লায়ন্সের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। পরের মাসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ১৯৫৩ সালের পর ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৯/৫১ বোলিং করেছিলেন। ঐ বছর তার দল ১৯৫০ সালের পর প্রথমবারের মতো কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করতে সক্ষম হয়।

২০১১ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় প্রায়শঃই কেরিগানের পরিবর্তে কিডিকে নিয়মিতভাবে খেলানো হয়। তাসত্ত্বেও, তিনি কিডি’র পরামর্শ আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেন।[১১] কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের স্থান নির্ধারণী খেলায় সিমন কেরিগান তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ৯/৫১ নিয়ে ল্যাঙ্কাশায়ার দলকে প্রতিপক্ষ হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ২২২ রানের জয়ে সুবিশাল ভূমিকা পালন করেন। খেলা শেষ হবার চার মিনিট পূর্বে চূড়ান্ত উইকেটের পতন হয় ও ল্যাঙ্কাশায়ার দল শিরোপা জয়ের দিকে এগিয়ে যায়। ১৯৫৩ সালে রয় ট্যাটারসলের পর ল্যাঙ্কাশায়ার দলের পক্ষে তার বোলিং পরিসংখ্যানটি দ্বিতীয় স্থান দখল করে।[১২] সেপ্টেম্বর মাসে মৌসুমের শেষ খেলায় জয় পেয়ে ল্যাঙ্কাশায়ার দল ১৯৫০ সালে যৌথভাবে শিরোপা বিজয়ের পর প্রথমবারের মতো কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপার নাগাল পায়।[১৩][১৪] চ্যাম্পিয়নশীপের চার খেলা থেকে তিনি ২৪ উইকেট দখল করেন ও ঐ প্রতিযোগিতায় ল্যাঙ্কাশায়ারের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত হন।[১৫][১৬]

ইংল্যান্ড লায়ন্সে অন্তর্ভুক্তি[সম্পাদনা]

কিডি’র প্রভাব সত্ত্বেও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সীমিত অংশগ্রহণের সুযোগকে কাজে লাগাতে তৎপর হন। সিবি৪০ প্রতিযোগিতায় দশটি ও ছয়টি টুয়েন্টি২০ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ঐ মৌসুমের শুরুতে তার লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ড লায়ন্স দলের পক্ষে খেলার ক্ষেত্র তৈরী করা।[১১] সতীর্থ বামহাতি স্পিন বোলার ড্যানি ব্রিগসের আঘাতের ফলে তার এ সুযোগ হয়। লায়ন্সের সদস্যরূপে আগস্টে শ্রীলঙ্কা এ দলের বিপক্ষে তিন খেলা নিয়ে গঠিত একদিনের সিরিজে অংশ নেন।[১৭]

ইংল্যান্ড লায়ন্সের পক্ষে একদিনের খেলায় সাফল্য লাভ ও ২০১২ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রথম পছন্দের স্পিনার কিডিকে হটিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার সুযোগ লাভ করেন। গ্যারি কিডি’র পরিবর্তে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রধান স্পিনারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ৩৪.৮১ গড়ে ৪৪টি চ্যাম্পিয়নশীপের উইকেট পান। তন্মধ্যে, আগস্টে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অস্ট্রেলিয়া এ দলের বিপক্ষে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ছয়-উইকেট পান তিনি।

২০১৬ সালে নিজেকে মেলে ধরার প্রয়াস চালান। চ্যাম্পিয়নশীপে প্রায় ৫০০ ওভার বোলিং করেন। তবে, ঐ গ্রীষ্মে স্পিনারদের উপযোগী ছিল না। ৩৮ গড়ে উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সালে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে পাঁচ-উইকেট লাভের পর প্রথম পান।

বাংলাদেশ গমন[সম্পাদনা]

ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে দূর্দান্ত খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ ইংল্যান্ডের ১৭-সদস্যের পারফরম্যান্স প্রোগাম দলে তাকে রাখা হয়। নভেম্বর ও ডিসেম্বর, ২০১১ সালে লাফবোরায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর, শ্রীলঙ্কার পরিবেশের সাথে অভিজ্ঞতা গ্রহণে তাকে পাঠানো হয়।[১৮] জানুয়ারি, ২০১২ সালে বাংলাদেশ গমনার্থে ১৬-সদস্যের ইংল্যান্ড লায়ন্স দলে অন্তর্ভুক্ত হন।[১৯]

বাংলাদেশ এ দলের বিপক্ষে লায়ন্স দল পাঁচ খেলায় নিয়ে গড়া ওডিআই সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে পরাজিত হলে শ্রীলঙ্কা গমনে দলের চার জনের অন্যতম হিসেবে বাদ পড়েন।[২০] অধিকসংখ্যক খেলায় অংশ নিয়ে ৪৪.৬৬ গড়ে তিন উইকেট পান।[২১]

দলের অবনমন[সম্পাদনা]

ল্যাঙ্কাশায়ার দল কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা পুণরুদ্ধারে কিডি’র পরিবর্তে দলের প্রথম পছন্দের স্পিনার হিসেবে তাকে রাখা হয়।[২২] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে প্রাধান্য দেয়ার ফলে তিনি ক্লাইডেসডেল ব্যাংক প্রো প্রতিযোগিতায় মাত্র তিনটি খেলায় অংশ নেন। ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষ টুয়েন্টি২০ খেলার কোনটিতেই অংশ নেননি তিনি।[২৩][২৪] চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি ল্যাঙ্কাশায়ারের শীর্ষস্থানীয় উইকেট শিকারী ছিলেন। ৩৪.৮১ গড়ে ৪৪ উইকেট দখল করেন। ঐ বছরের প্রতিযোগিতায় দুইজন ল্যাঙ্কাশায়ারীয় বোলারের অন্যতম হিসেবে ৩০-এর অধিক উইকেট পেয়েছেন। অন্যজন ছিলেন ক্লাবের অধিনায়ক ও সিম বোলার গ্লেন চ্যাপেল[২৫] ল্যাঙ্কাশায়ার দল চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় বিভাগে অবনমিত হয়।[২৬] কেরিগানের উত্থানের ফলে কিডি মাত্র চারটি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে, ঐ বছর শেষে গ্যারি কিডি দল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।[২৭] ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুম শেষ হলে ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স স্কোয়াড দলে সময় কাটান ও ঐ বছর কিডি ও প্যারিকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে প্রাধান্য দিলে তিনি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বোলিং অনুশীলন কর্ম চালিয়ে যেতে থাকেন।[২৮]

কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় বিভাগে ল্যাঙ্কাশায়ার দল একটিমাত্র মৌসুম অবস্থান করেছিল। ২০১৩ সালের শিরোপা জয় করে দলটি প্রথম প্রচেষ্টাতেই উত্তীর্ণ হয়।[২৯] ইংল্যান্ড লায়ন্সের পক্ষে সিমন কেরিগান নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন সিমন কেরিগান। ২১ আগস্ট, ২০১৩ তারিখে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এছাড়াও, তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

আগস্টে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলার জন্যে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৩ সালে গ্রীষ্মের ওভাল টেস্টে তিনি গ্রেম সোয়ানের সাথে স্পিন বোলিং জুটি গড়ার সুযোগ দেয়া হয়। এ পর্যায়ে তিনি মৌসুমের দশটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশ নিয়ে ৪৭ উইকেট দখল করেছিলেন। ২১ আগস্ট, ২০১৩ তারিখে সিম বোলিং অল-রাউন্ডার ক্রিস উকসের সাথে একযোগে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। প্রথম চার টেস্টের তিনটিতেই জয় পেয়ে ইংল্যান্ড দল সিরিজ নিশ্চিত করে। খেলায় তিনি আট ওভার বোলিং করে ৫৩ রান দেন। ক্রমাগত ফুল টস ও উরু বরাবর বোলিং করে এ রানগুলো গচ্ছা দেন। এ পর্যায়ে শেন ওয়াটসন তার টেস্টের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তুলেন ও তার বোলিংয়ে মারমূখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।[৩০][৩১][৩২] এরফলে, ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা স্পিনারের মর্যাদা লাভের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের পর জানুয়ারি, ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতি সফরে খেলার সুযোগ পান। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্পিনার মন্টি পানেসরের পরিবর্তে তাকে দলে রাখা হয়। এ পর্যায়ে তখনো তিনি ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন।[৩৩] এ সিরিজ চলাকালীন গ্রেইম সোয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন ও সিমন কেরিগানের পীড়াদায়ক অভিষেক ঘটে। অস্পষ্ট থেকে যায় যে, তার পরিবর্তে কাকে টেস্ট দলে রাখা হবে। শুরুতে মঈন আলীকে অগ্রাধিকার দেয়া হলেও ১৩ জুলাই, ২০১৪ তারিখে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে কেরিগানকে দলে রাখা হয়।[৩৪][৩৫]

ইংরেজ অধিনায়ক অ্যালাস্টেয়ার কুক মন্তব্য করেন যে, এক টেস্টে অংশ নিয়ে তিনি প্রকৃত অর্থেই তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি আমাদের আশেপাশেই আছেন ও প্রথম টেস্ট চলাকালীন অনুশীলনকালে চমৎকারভাবে বোলিং করেছেন। সিমন পরীক্ষিত কর্মী; তিনি বিদেশে লায়ন্স দলের সাথে রয়েছেন ও ভালো করছেন। তার অভিজ্ঞতা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ও তিনি ইংল্যান্ডের চমৎকার বোলার।[৩৬] তবে, ভারতের বিপক্ষে তাকে খেলানো হয়নি ও কাউন্টি পর্যায়ের খেলার মানের অবনমন ঘটায় আর তাকে এ পর্যায়ে খেলার জন্যে ইংল্যান্ড দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ২০১৮ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষ তাকে অব্যাহতি প্রদান করে। তবে, ২০২০ সালে পূর্বেকার ধারকৃত দল নর্দাম্পটনশায়ার দলের পক্ষে খেলার জন্যে তাকে চুক্তিতে আনা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Dawber, Tony (১৮ আগস্ট ২০১৩), League's joy at Kerrigan call up, as Penwortham steal march on leaders, Sport North West, ২০ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  2. Staff (১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮), Ten young players sign for Lancashire, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১০ 
  3. Ostick, Chris (৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯), Lancashire seconds on glory hunt, Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১০ 
  4. Edwards, Paul (৯ এপ্রিল ২০০৯), Moores backs Parry and Kerrigan, Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১০ 
  5. Goulding, Neil (১৬ এপ্রিল ২০১০), "Lancashire boosted by debut performance from Simon Kerrigan against Warwickshire", The Daily Telegraph, সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১০ 
  6. f52381 Lancashire v Warwickshire: LV County Championship 2010 (Division 1), CricketArchive, সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১১ 
  7. First-class bowling in each season by Simon Kerrigan, CricketArchive, সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১১ 
  8. McGlashan, Andrew (৮ সেপ্টেম্বর ২০১১), Spinners give Lancashire control, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  9. Dobell, George (৬ মে ২০১১), Warwickshire subside to Lancashire's spinners, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১১ 
  10. Hardcastle, Graham (১০ মে ২০১১), "Kerrigan on Muralitharan mission for Lancashire", Manchester Evening News, ১৮ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১১ 
  11. Lancashire's Simon Kerrigan pleased with season so far, BBC Sport, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  12. McGlashan, Andrew (১০ সেপ্টেম্বর ২০১১), Magical Kerrigan keeps Lancashire in contention, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৭ 
  13. "Lancashire win first county cricket championship in 77 years", Manchester Evening News, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  14. Lancs end wait for Championship, BBC Sport, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  15. First-class matches played by Simon Kerrigan, CricketArchive, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  16. Bowling in LV County Championship 2011 (ordered by wickets), CricketArchive, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  17. Root and Kerrigan added to Lions squad, Cricinfo, ৯ আগস্ট ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১১ 
  18. England youngsters set for busy winter, Cricinfo, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  19. James Taylor to lead England Lions in Bangladesh, BBC Sport, ১৬ ডিসেম্বর ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৭ 
  20. Four added to Lions squad, Cricinfo, ২০ জানুয়ারি ২০১২, সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১২ 
  21. Records/England Lions in Bangladesh unofficial ODI Series, 2011/12/Most wickets, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১২ 
  22. "Defending champions Lancashire in battle to avoid drop from County Championship", Manchester Evening News, ২৫ জুলাই ২০১২, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  23. Twenty20 matches played by Simon Kerrigan, Cricket Archive, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  24. List A matches played by Simon Kerrigan, Cricket Archive, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  25. Bowling LV Count Championship 2012 (ordered by wickets), Cricket Archive, সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  26. Lancashire relegated at Lord's – 12 months on from winning title, BBC Sport, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২, সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৪ 
  27. Ostick, Chris (১২ অক্টোবর ২০১২), "Gary Keedy quits Lancs for Surrey", Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  28. Ostick, Chris (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩), Lancs Lion Kerrigan ready to roar Down Under, Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  29. Gloucestershire v Lancashire: Red Rose county win Division Two, BBC Sport, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩, সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৪ 
  30. Hardcastle, Graham (১৯ আগস্ট ২০১৪), "Kerrigan delighted by England Ashes call-up", Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  31. Selvey, Mike (২১ আগস্ট ২০১৩), "Australia's Shane Watson flays England debutants Woakes and Kerrigan", The Guardian, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  32. Watson takes it firmly in the neck, ESPNcricinfo, ২১ আগস্ট ২০১৩, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  33. Handler, Paul (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩), "England name squad for Australia Ashes tour", Manchester Evening News, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  34. "England recalls spinner Simon Kerrigan for Lord`s test"Patrika Group। ১৫ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  35. Kerrigan recalled to England squad, ESPNcricinfo, ১৩ জুলাই ২০১৪, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 
  36. Sheringham, Sam (১৩ জুলাই ২০১৪), Simon Kerrigan: England recall spinner for India Test at Lord's, BBC Sport, সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]