রকলি উইলসন
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | এভলিন রকলি উইলসন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বলস্টারস্টোন, স্টকসব্রিজ, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২৫ মার্চ ১৮৭৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২১ জুলাই ১৯৫৭ উইনচেস্টার, হ্যাম্পশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭৮)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি স্লো | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | দাদা - আরসি থর্প; ভ্রাতৃদ্বয় - আরএ উইলসন ও সিইএম উইলসন; ভাইপো - ডিসি উইলসন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ১৮৯) | ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ |
এভলিন রকলি উইলসন (ইংরেজি: Rockley Wilson; জন্ম: ২৫ মার্চ, ১৮৭৯ - মৃত্যু: ২১ জুলাই, ১৯৫৭) ইয়র্কশায়ারের বলস্টারস্টোন এলাকার স্টকসব্রিজে জন্মগ্রহণকারী শৌখিন ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২১ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।[১] দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে স্লো বোলিং করতেন রকলি উইলসন।
শৈশবকাল
[সম্পাদনা]স্টকসব্রিজের বোলস্টারস্টোন এলাকায় রকলি উইলসনের জন্ম। বিল্টন গ্রাঞ্জ ও রাগবি স্কুলে পড়াশুনো করেন। এরপর কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ১৯০১ সালে বিএ ও ১৯০৫ সালে এমএ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন।[২]
রাগবিতে পড়াশুনো করেছেন রকলি উইলসন। ১৮৯৫ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছর প্রথম একাদশের সদস্য ছিলেন। ১৮৯৭ সালে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকালে ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই শীর্ষস্থান অধিকার করেন। ৫১.১১ গড়ে রান তুলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ২০৬ রান। বল হাতে নিয়ে ১৪.৯৩ গড়ে ৩১ উইকেট পান। ১৮৯৯ থেকে ১৯০২ সালের মধ্যে কেমব্রিজের সদস্যরূপে অক্সফোর্ডের বিপক্ষে চার খেলায় অংশ নেন। কেমব্রিজ থেকে ব্লুধারী হন। তন্মধ্যে, ১৯০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় ১১৮ ও ২৭ এবং ৫/৭১ ও ২/৩৮ লাভ করেন। ১৮৯৮ সালে কেমব্রিজের অধিনায়ক ও ব্লুধারী জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ক্লেম উইলসন ১১৫ রান তুলেন। কেমব্রিজের পক্ষে দুই ভাইয়ের একত্রে সেঞ্চুরি করার এটিই একমাত্র ঘটনা। অন্যদিকে, অক্সফোর্ডের পক্ষে ১৮৯৫ সালে এইচ. কে. ফস্টার ১২১ রানের ইনিংস খেলার পর ১৯০০ সালে আর. ই. ফস্টার ১৭১ রান তুলেছিলেন।
১৯০২ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকালীন লাইট ব্লুজের সদস্যরূপে দলকে পাঁচ উইকেটে জয় এনে দেন। এ পর্যায়ে তিনি ৫/২৩ ও ৩/৬৬ পান। এ. জে. ওয়েব একাদশের বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে সেঞ্চুরি করেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
[সম্পাদনা]১৮৯৯ সাল থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত রকলি উইলসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তিনি তার সময়কালে অন্যতম সেরা শৌখিন ধীরগতিসম্পন্ন ডানহাতি বোলারের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। শৌখিন খেলোয়াড় ছিলেন রকলি উইলসন। ডানহাতে ধীরলয়ে বোলিং করতেন তিনি।
অভিষেক ঘটা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবার্ষিক খেলায়ও আরেকটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১৮৯৯ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খুব কমই অবদান রেখেছিলেন। তবে, ১৯০২ সালে কেমব্রিজ ত্যাগ করার পর পরবর্তী দশ বছর কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি। দুইটি কাউন্টি খেলা বাদে তিনটি ক্লাবের খেলায় অংশ নেন।
১৯০১ সালে বি. জে. টি. বোসানকুয়েতের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে আমেরিকা গমন করেন। শৌখিন খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া এ দলের সাথে ১৯০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। ১১ রানেরও কম খরচায় ৭৮ উইকেট সংগ্রহ করে বোলিং গড়ে শীর্ষস্থান দখল করেন। এরপর ১৯১২ সালে এমসিসি দলের সদস্যরূপে আর্জেন্টিনা গমন করেন।
১৯১৩ সালে হ্যাম্পশায়ার কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তিনি পুনরায় সজীব হয়ে উঠেন ও নিজ জন্মস্থান ইয়র্কশায়ারে যোগ দেন। ১৯২৩ সাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন।[১] অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগস্টের বিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলোয় তাকে খেলতে দেখা যেতো। ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ৬৬বার খেলেছেন।[১]
১৯১৩ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে একমাত্র সেঞ্চুরির সন্ধান পান। ব্রাডফোর্ডে এসেক্সের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৪ রান করেন তিনি। জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের খেলায় প্রথম হ্যাট্রিক লাভকারী বোলারের সম্মাননা পান। ১৯১৯ সালে স্কারবোরায় এ সাফল্য পান তিনি।
১৯২০ সালে ১৩.৮৪ গড়ে ৬৪ উইকেট পান। ১৯২২ সালে ব্রাডফোর্ডে মিডলসেক্সের বিপক্ষে সেরা খেলা উপহার দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ ওভার বোলিং করে ২২ ওভার মেইডেন দিয়ে ৬২ রান খরচায় ছয় উইকেট পেয়েছিলেন। ইয়র্কশায়ারের পক্ষে এ. ওয়াডিংটনের সাথে শেষ উইকেট জুটিতে ৫৩ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, তার দল মাত্র চার রানের পরাজয়ের মুখোমুখি হয়।
বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ও রাইফেল ব্রিগেডে কমিশন্ড লেফট্যানেন্ট হন। এরপর তাকে গোয়েন্দা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। ১৯১৯ সালে ক্যাপ্টেন পদবী নিয়ে তাকে কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি দেয়া হয়।[২]
বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২০ সালে ৪১ বছর বয়সী রকলি উইলসন অত্যন্ত সফলতার সাথে বোলিং করেছিলেন। জাতীয় গড়ে চতুর্থ স্থান দখল করেন।
টেস্ট ক্রিকেট
[সম্পাদনা]সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন রকলি উইলসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।
উইনচেস্টার থেকে তাকে ছুটি দেয়া হলে ১৯২০-২১ মৌসুমে জনি ডগলাসের নেতৃত্বে এমসিসি দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। বিপর্যয়কর ঐ সিরিজে স্বাগতিক দল পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই জয় পায়। ৪১ বছর ৩৩৭ দিন বয়সে টেস্টে অভিষেক করেন। এরফলে, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বপ্রথম টেস্টে ১৮৭৭ সালে জেমস সাউদার্টনের অভিষেক ঘটার পর দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন। তিনি উভয় ইনিংস মিলিয়ে মাত্র পাঁচ রান তুলতে সমর্থ হন ও তিনটি উইকেট পেয়েছিলেন। ঐ খেলায় তার দল পরাজিত হয়েছিল। এছাড়াও, দেশে ফিরে ডেইলি এক্সপ্রেস সংবাদপত্রে সফর সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে আরও সমস্যায় পড়েন। ফলশ্রুতিতে, লর্ডসে লর্ড হ্যারিসের লং রুমে জেরার মুখোমুখি হন। কেবলমাত্র হাত মেলানোর পর চলে যান ও শুনতে পান যে, ‘আপনার স্পর্শে ধন্য হলাম।’[৩] এরফলে, মে মাসে মেরিলেবোন ক্লাবের বার্ষিক সভায় খেলোয়াড়দেরকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন প্রতিবেদন প্রকাশে বাঁধা দেয়া হয়।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]কেমব্রিজ থেকে চলে আসার পর উইনচেস্টারে শিক্ষকতার পেশা অবলম্বন করে চলে যান। ১৯০৩ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত ৪৩ বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। এ দায়িত্বে তেতাল্লিশ বছর ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলোয় ক্লাব ক্রিকেটে সম্পৃক্ত থাকতেন। তিনি সপ্তাহে দুইটি খেলার চেয়ে তিনটি খেলায় অংশ নিতে পছন্দ করতেন।
উইনচেস্টারের সরকারি বিদ্যালয় থেকে তার সংস্পর্শে বেশ কয়েক প্রজন্মের ছাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে উঠে। তন্মধ্যে, ডগলাস জারদিন অন্যতম ছিলেন। ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে বডিলাইন সিরিজের অল্প কিছুদিন পূর্বে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। জারদিনের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন যে, সম্ভবতঃ অ্যাশেজ জয় করবে। এরফলে হয়তোবা আমাদেরকে প্রভূত্ব ছেড়ে দিতে হতে পারে।
তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ক্লেম উইলসন ইয়র্কশায়ার ও ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। অপর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রোল্যান্ড উইলসন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলতেন ও অধিনায়কত্ব করেছেন।
২১ জুলাই, ১৯৫৭ তারিখে ৭৮ বছর বয়সে হ্যাম্পশায়ারের উইনচেস্টার এলাকায় রকলি উইলসনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 382। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4।
- ↑ ক খ "Wilson, Evelyn Rockley (WL898ER)"। A Cambridge Alumni Database। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।
- ↑ EW Swanton, Sort of a Cricket Person, Collins, 1972, p30.
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- পার্সি ফেন্ডার
- এক টেস্টের বিস্ময়কারী
- অ্যাশেজ সিরিজের তালিকা
- সিডনি স্মিথ (ক্রিকেটার, জন্ম ১৮৮১)
- ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটারদের তালিকা
- নটিংহ্যামশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব
- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী পরিবারের তালিকা
- ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবসমূহের প্রতিযোগিতামূলক সম্মাননা লাভের তালিকা
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রকলি উইলসন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে রকলি উইলসন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- ১৮৭৯-এ জন্ম
- ১৯৫৭-এ মৃত্যু
- ১৯১৯ থেকে ১৯৪৫ সময়কালীন ইংরেজ ক্রিকেটার
- ইংরেজ ক্রিকেটার
- ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটার
- ইয়র্কশায়ারের ক্রিকেটার
- কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেটার
- জেন্টলম্যানের ক্রিকেটার
- মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের ক্রিকেটার
- ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা
- রাইফেল ব্রিগেড কর্মকর্তা
- শেফিল্ডের ক্রীড়াবিদ
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা
- এ. জে. ওয়েব একাদশের ক্রিকেটার