ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দুধর্ম
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
৪৬,৪৬,৩৫৭ (২০১৮) মোট জনসংখ্যার ১.৭৪% | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
বালি | ৩৬,৮২,৪৮৪ |
মধ্য কালিমান্তান | ১,৫৫,৫৯৫ |
পশ্চিম নুসা টেঙ্গারা | ১,২৮,৬০০ |
ল্যাম্পুং | ১,২৭,৯০৩ |
সেন্ট্রাল সুলাওয়েসি | ১,০৯,৩০৪ |
পূর্ব জাভা | ১,০৭,৯৭১ |
উত্তর সুমাত্রা | ৮৮,৩৪৬ |
ধর্ম | |
হিন্দুধর্ম | |
ধর্মগ্রন্থ | |
বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ইতিহাস (প্রধানত রামায়ণ ও মহাভারত) এবং অন্যান্য | |
ভাষা | |
পবিত্র সংস্কৃত কথ্য ভাষা ইন্দোনেশীয়ান (সরকারি), বালীয়, জাভানিজ, টেঙ্গেরিজ, ওসিং এবং অন্যান্য ইন্দোনেশিয়ায় ভাষা |
দেশ অনুযায়ী হিন্দুধর্ম |
---|
পূর্ণাঙ্গ তালিকা |
২০১৮ সালের আদমশুমারি অনুসারে ইন্দোনেশিয়ার মোট জনসংখ্যার ১.৭৪% জনগণ এবং বালি দ্বীপের মোট জনসংখ্যার ৮৭% জনগণ হিন্দু ধর্মাবলম্বী।[১][২] ইন্দোনেশিয়ার ছয়টি আনুষ্ঠানিক ধর্মের মধ্যে হিন্দুধর্ম অন্যতম।[৩] প্রথম শতাব্দীতে হিন্দুরা ব্যবসার মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ায় এসেছিল এবং হিন্দু মহাকাব্য, রামায়ণ ও মহাভারত ছায়া পুতুলের ("চামড়ার পুতুল") মাধ্যমে বিশেষ করে বৃহত্তর ভারতের শ্রীবিজয় এবং মাজপহিত সাম্রাজ্যের সময় জাভার সংস্কৃতি ও বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বদ্ধমূল হয়ে ওঠে।[৪] ২০১৮ সালে আদমশুমারি অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ায় ৪৬,৪৬,৩৫৭ জন হিন্দু ছিল।[২][৫] ইন্দোনেশিয়া হিন্দুধর্ম পরিষদ ইন্দোনেশিয়ার জনগণনার পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক করেছিল এবং তাদের মতে ইন্দোনেশিয়ায় ২০০৫ সালে আনুমানিক ১৮ মিলিয়ন হিন্দুধর্ম অনুসারীর বসবাস ছিল।[৬][৭] ইন্দোনেশিয়া সরকারের ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১০ সালে ঘোষণা করে ৪ মিলিয়ন হিন্দু ইন্দোনেশিয় দ্বীপপুঞ্জে বসবাস করে।[৮]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ইন্দোনেশিয় দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীরা সর্বপ্রাণবাদ এবং গতিশীলতা অনুশীলন করে, অস্ট্রোনেশিয় লোকদের কাছে যা ছিল সাধারণ বিশ্বাস। ইন্দোনেশিয় আদিবাসীরা পৈতৃক আত্মাদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন এবং সম্মান করে; তারা বিশ্বাস করে যে কিছু আত্মা বড় গাছ, বন, পর্বত, অথবা কোন পবিত্র স্থান হিসেবে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে বাস করতে পারে। অতিপ্রাকৃত শক্তির এই অদৃশ্য আধ্যাত্মিক সত্তাটি প্রাচীন জাভানিজ, সুদানী এবং বালি দ্বীপের আদিবাসীদের দ্বারা "হায়ান" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা ঐশ্বরিক বা পূর্বপুরুষ হতে পারে। আধুনিক ইন্দোনেশিয়ায়, "হায়ান"কে ঈশ্বরের সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে।[৯]
হিন্দুধর্মের আগমন
[সম্পাদনা]প্রথম শতাব্দীর প্রথম দিকে হিন্দু প্রভাব ইন্দোনেশীয় দ্বীপমালায় পৌঁছেছিল।[১০] ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়ায় সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ধারণাগুলোর বিস্তার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ঐতিহাসিক প্রমাণ অস্পষ্ট। জাভা কিংবদন্তীতে সাক-যুগ ৭৮ খ্রিস্টাব্দকে চিহ্নিত করে। মহাভারত মহাকাব্যের গল্পে প্রথম শতাব্দীর ইন্দোনেশীয় দ্বীপমালাকে শনাক্ত করা হয়েছে; যার সংস্করণ দক্ষিণ-পূর্ব ভারতীয় উপদ্বীপ অঞ্চলে (এখন তামিলনাড়ু এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ) পাওয়া যায়।[১০] ১৪তম শতাব্দীর জাভানীয় পাণ্ডুলিপি তান্তু পাগেলারন, যা ইন্দোনেশিয়ার প্রাচীন কাহিনী, শিল্প ও কারুশিল্পের সংগ্রহ। এই পাণ্ডুলিপিতে সংস্কৃত শব্দ, ভারতীয় দেবতার নাম এবং ধর্মীয় ধারণাগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। অনুরূপভাবে জাভা ও পশ্চিম ইন্দোনেশিয় দ্বীপপুঞ্জে খননকৃত প্রাচীন চাঁদি (মন্দির) এবং ইন্দোনেশিয়ায় আবিষ্কৃত ৮ম শতাব্দীর প্রাচীন শিলালিপিগুলো, যেমন কাংগল শিলালিপি প্রথম সহস্রাব্দে মূর্তিকল্পে (মূর্তি এঁকে বিষয় ব্যাখ্যা) শিব লিঙ্গ ও তার সঙ্গী দেবী পার্বতী, গণেশ, বিষ্ণু, ব্রহ্মা, অর্জুন, এবং অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীর ব্যাপক গ্রহণ নিশ্চিত করে।[১১]
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]বছর | শতাংশ | হ্রাস |
---|---|---|
১৯৭১ | ১.৯৪% | |
১৯৮৫ | ১.৯৪% | |
১৯৯০ | ১.৮৩% | -০.১১% |
২০০০ | ১.৮১% | -০.০২% |
২০০৫ | ১.৭৩% | -০.০৮% |
২০১০ | ১.৫৯% | -০.০৪% |
২০১০ সালের আদমশুমারি অনুসারে হিন্দুদের সংখ্যা ৪,০১২,১১৬, এদের মধ্যে প্রায় ৮০% বালি হিন্দুভূমিতে বসবাস করছে।[২]
অফিসিয়াল আদমশুমারি (২০১৮)
[সম্পাদনা]২০১৮ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ায় মোট 4,646,357 হিন্দু ছিল, যেখানে ২০১০ সালের আদমশুমারিতে 4,012,116 হিন্দু ছিল। ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দু ধর্মের শতাংশ ২০১০ সালে ১.৬৯% থেকে ৮ বছরে যথাক্রমে ২০১৮-এ ১.৭৪% বেড়েছে।
প্রদেশ (2018 সেন.) | মোট | হিন্দু | % হিন্দু |
---|---|---|---|
ইন্দোনেশিয়া | 266,534,836 | ৪,৬৪৬,৩৫৭ | 1.74% |
উত্তর সুমাত্রা | 14,908,036 | ৮৮,৩৪৬ | 0.70% |
পশ্চিম সুমাত্রা | ৫,৫৪২,৯৯৪ | 93 | 0.002% |
রিয়াউ | ৬,১৪৯,৬৯২ | 739 | 0.012% |
জাম্বি | ৩,৪৯১,৭৬৪ | 510 | ০.০২% |
দক্ষিণ সুমাত্রা | ৮,২৬৭,৭৭৯ | 40,319 | 0.49% |
বেংকুলু | 2,001,578 | 4,184 | 0.21% |
ল্যাম্পুং | 9,044,962 | 127,903 | 1.47% |
ব্যাংকা বেলিটুং দ্বীপপুঞ্জ | 1,394,483 | 1,193 | ০.০৯% |
ডিকেআই জাকার্তা | 11,011,862 | 20,216 | 0.18% |
পশ্চিম জাভা | ৪৫,৬৩২,৭১৪ | 17,017 | ০.০৪% |
জাভার মধ্যভাগ | 36,614,603 | 15,648 | ০.০৪৩% |
ডিআই যোগকার্তা | ৩,৬৪৫,৪৮৭ | ৩,৪১৮ | ০.০৯% |
পূর্ব জাভা | 40,706,075 | 107,971 | 0.27% |
বান্তেন | 10,868,810 | 8,292 | ০.০৮% |
বালি | 4,236,983 | ৩,৬৮২,৪৮৪ | 86.91% |
পশ্চিম নুসা টেঙ্গারা | 3,805,537 | 128,600 | 3.4% |
পূর্ব নুসা টেঙ্গারা | 5,426,418 | 6030 | 0.11% |
পশ্চিম কালীমন্তন | ৫,৪২৭,৪১৮ | 2,998 | ০.০৬% |
কেন্দ্রীয় কালীমন্তন | 2,577,215 | 155,595 | 5.84% |
দক্ষিণ কালীমন্তন | 2,956,784 | 23,252 | 0.79% |
পূর্ব কালীমন্তন | 3,155,252 | 8,311 | 0.26% |
উত্তর সুলাওয়েসি | 2,645,118 | 15,525 | 0.58% |
সেন্ট্রাল সুলাওয়েসি | 2,969,475 | 109,308 | 4.84% |
দক্ষিণ সুলাওয়েসি | 9,117,380 | ৬৩,৬৫২ | 1.02% |
দক্ষিণ-পূর্ব সুলাওয়েসি | 1,755,193 | 50,065 | 2.97% |
গোরোন্টালো | 1,181,531 | 1,049 | ০.০৯% |
পশ্চিম পাপুয়া | 1,148,154 | 1,164 | 0.1% |
পাপুয়া | ৪,৩৪৬,৫৯৩ | ৩,৩৪১ | ০.০৮% |
হিন্দু মন্দির
[সম্পাদনা]- পুর গিরিনাথ মন্দির
- বেসকিহ মন্দির
- ইন্দোনেশিয়ার চন্ডি
- ক্যাংকুয়াং
- গোয়া গাজাহ
- তানাহ লট মন্দির
- পুর গিরিনাথ মন্দির
- পুরা উলুন দানু ব্রাতন
- পুরা লেম্পুয়াং মন্দির কমপ্লেক্স
- প্রাম্বানান মন্দির
- শ্রী মারিয়াম্মান মন্দির, মেদান
- সুকুহ্
উল্লেখযোগ্য হিন্দু
[সম্পাদনা]রাজা
[সম্পাদনা]- কুদুঙ্গা
- মুলবর্মণ
- পূর্ণবর্মন
- আদিত্যবর্মন
- এয়ারলংগা
- আনাক উংসু
- আগুং আনম
- অনুসপতি
- অর্জয়দেংজয়কেতন
- কেন আরক
- বালিটুং
- ডালেম বাতুরেংগং
- ডালেম কেতুত
- ডালেম সাম্প্রাঙ্গন
- ধর্মবংশ
- হায়াম উরুক
- ইসিয়ানা তুংগাউইজায়া
- জয়াবয়া
- জয়কতওয়াং
- জয়নেগারা
- জয়পাঙ্গুস
- সমরা বিজয়তুংগবর্মন
- মাতরমের সঞ্জয়
- সান্না
- শিলিওয়াঙ্গি
- এমপু সিন্দোক
- শ্রী বদুগা মহারাজা
- শ্রী বিজয়া মহাদেবী
- সুহিতা
- ইদে আনক আগুং গদে আগুং
ধর্মীয় গুরু
[সম্পাদনা]- রাতু বাগুস
- ইদা পেদান্ডা গেদে মেড গুনুং
- জয়াবয়া
- ডি কুমারস্বামী
- মাংকু মুরিয়াতি
- দং হায়াং নিরর্থ
- শব্দপালন
- কেতুত ওয়ায়ানা
আধুনিক যুগের হিন্দু
[সম্পাদনা]- শুভ সালমা
- আদে রাই
- মনোজ পাঞ্জাবি
- রাম পাঞ্জাবি
- স্বামী আনন্দ কৃষ্ণ
- শ্রী প্রকাশ লোহিয়া
- আই ওয়ায়ান কোস্টার
- দেওয়া বুজানা
- সুকমাবতী সুকার্নোপুত্রি
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Sensus Penduduk 2010 - Penduduk Menurut Wilayah dan Agama yang Dianut"। sp2010.bps.go.id। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-২৭।
- ↑ ক খ গ "Sensus Penduduk 2010 - Penduduk Menurut Wilayah dan Agama yang Dianut"। sp2010.bps.go.id। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-২৭।
- ↑ "We apologize for the inconvenience..."। United States Department of State (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮।
- ↑ Mark Juergensmeyer and Wade Clark Roof, 2012, Encyclopedia of Global Religion, Volume 1, Page 557.
- ↑ Author, No (২০১২-১২-১৮)। "Table: Religious Composition by Country, in Numbers"। Pew Research Center's Religion & Public Life Project (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮।
- ↑ The United States Department of State Annual Report on International Religious Freedom for 2006 - Indonesia - September 2006, US State Department "Archived copy"। ১৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-০২।
- ↑ Indonesia International Religious Freedom Report 2005 – US State Department, Quote: "The Hindu association Parishada Hindu Dharma Indonesia (PHDI) estimates that 18 million Hindus live in the country, a figure that far exceeds the government estimate of 3.6 million. Hindus account for almost 90 percent of the population in Bali."
- ↑ Indonesia: Religious Freedoms Report 2010, US State Department (2011), Quote: "The Ministry of Religious Affairs estimates that 10 million Hindus live in the country and account for approximately 90 percent of the population in Bali. Hindu minorities also reside in Central and East Kalimantan, the city of Medan (North Sumatra), South and Central Sulawesi, and Lombok (West Nusa Tenggara). Hindu groups such as Hare Krishna and followers of the Indian spiritual leader Sai Baba are present in small numbers. Some indigenous religious groups, including the "Naurus" on Seram Island in Maluku Province, incorporate Hindu and animist beliefs, and many have also adopted some Protestant teachings."
- ↑ Ooi, Keat Gin (editor) (২০০৪)। "Southeast Asia: A historical encyclopedia, from Angkor Wat to East Timor (3 volume set)"। ABC-CLIO। ৮ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ ক খ Jan Gonda, The Indian Religions in Pre-Islamic Indonesia and their survival in Bali, in গুগল বইয়ে Handbook of Oriental Studies. Section 3 Southeast Asia, Religions, পৃ. 1,, pp. 1-54
- ↑ Kenneth Hall (2011), A History of Early Southeast Asia, Rowman & Littlefield, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৪২৫৬৭৬১০, Chapter 4 and 5
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Jan Gonda, গুগল বইয়ে The Indian Religions in Pre-Islamic Indonesia and their survival in Bali, পৃ. 1,
- Martin Ramstedt (2003), Hinduism in Modern Indonesia, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭০০৭১৫৩৩৬
- Ann Kinney (2003), Worshiping Siva and Buddha: The Temple Art of East Java, University of Hawaii Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮২৪৮২৭৭৯৩
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Hinduism in Indonesia ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ মে ২০০৪ তারিখে
- Hindu Council UK: "Great Expectations: Hindu Revival Movements in Java and other parts of Indonesia" by Thomas Reuter
- Agnihoma.org Hindu Resources and Community in Indonesia
- Hindu-raditya.com
- desaadat.com
- Mediahindu.net
- The Hinduization of Indonesia Reconsidered – The Far Eastern Quarterly, Vol. 11, No. 1. (Nov., 1951), pp. 17–30.
- International Religious Freedom Report 2006