আর্জেন্টিনা

স্থানাঙ্ক: ৩৪° দক্ষিণ ৬৪° পশ্চিম / ৩৪° দক্ষিণ ৬৪° পশ্চিম / -34; -64
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Argentina থেকে পুনর্নির্দেশিত)
আর্জেন্টিনীয় প্রজাতন্ত্র

República Argentina (স্পেনীয়)
আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকা
পতাকা
আর্জেন্টিনার জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: 
  • "En unión y libertad"
  • ("এন উনিওন ই লিবের্তাদ" - "ঐক্যে এবং স্বাধীনতায়")
জাতীয় সঙ্গীত: 
  • হিমনো ন্যাচিওনাল আর্জেন্টিনো
  • (আর্জেন্টাইন জাতীয় সংগীত")
সোল দে মায়ো[১]
(মে এর সূর্য)

সোল দে মায়ো (মে'র সূর্য)
আর্জেন্টিনার অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
বুয়েনোস আইরেস
৩৪°৩৬′ দক্ষিণ ৫৮°২৩′ পশ্চিম / ৩৪.৬০০° দক্ষিণ ৫৮.৩৮৩° পশ্চিম / -34.600; -58.383
সরকারি ভাষানেই
জাতীয় ভাষাস্প্যানিশ[a]
নৃগোষ্ঠী
  • ৯৬.৭% শ্বেতাঙ্গ
    (৬২.৫% ইতালিয়ান)[২]
  • ২.৪% এমেরিন্ডিয়ান
  • ০.৫% এশিয়ান[৩][৪][৫][৬]
  • ০.৪% আফ্রিকান[৭]
সরকারফেডারেল প্রেসিডেনশিয়াল সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র
আলবার্তো ফার্নান্দেজ
ক্রিস্তিনা ফের্নান্দেস দে কির্শনার
আইন-সভাকংগ্রেস
সিনেট
ডেপুটি চেম্বার
স্বাধীন 
স্পেন থেকে
• মে বিপ্লব
মে ২৫ ১৮১০
• ঘোষিত
জুলাই ৯ ১৯১৬
• সংবিধান
মে ১ ১৮৫৩
আয়তন
• মোট
২৭,৮০,৪০০ কিমি (১০,৭৩,৫০০ মা)[ক] (৮ম)
• পানি (%)
১.৫৭
জনসংখ্যা
• ২০১০ আদমশুমারি
৪০,১১৭,০৯৬[৮] (৩২তম)
• ঘনত্ব
১৪.৪/কিমি (৩৭.৩/বর্গমাইল)[৮] (২১৪তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০৮ আনুমানিক
• মোট
$919 billion[৯] (২৫তম)
• মাথাপিছু
$২০,৬১০[৯] (৫৬তম)
জিডিপি (মনোনীত)২০১৮ আনুমানিক
• মোট
$৪৭৫ বিলিয়ন[৯] (২১তম)
• মাথাপিছু
$১০,৬৬৭[৯] (৫৩তম)
জিনি (২০১৬)নেতিবাচক বৃদ্ধি ৪২.৪
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৭)হ্রাস ০.৮২৫[১০]
অতি উচ্চ · ৪৭তম
মুদ্রাপেসো ($) (ARS)
সময় অঞ্চলইউটিসি−৩ (এআরটি)
তারিখ বিন্যাসদিন.মাস.বছর
গাড়ী চালনার দিকডান[b]
কলিং কোড+৫৪
আইএসও ৩১৬৬ কোডAR
ইন্টারনেট টিএলডি.ar
  1. ^ যদিও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি, স্প্যানিশই আইন, আদালত, অফিশিয়াল ডকুমেন্টে ব্যবহৃত একমাত্র ভাষা
  2. ^ ট্রেনগুলো বামে চলে
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস প্রদেশের মার দেল প্লাটা সমুদ্র সৈকত এবং শহর

আর্জেন্টিনা (ইংরেজি: Argentina) দক্ষিণ আমেরিকার একটি রাষ্ট্র। বুয়েনোস আইরেস দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। দেশটি দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ অংশের প্রায় পুরোটা জুড়ে অবস্থিত। আয়তনের দিক থেকে এটি দক্ষিণ আমেরিকার ২য় বৃহত্তম এবং বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম রাষ্ট্র।

আর্জেন্টিনায় ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু বিচিত্র। উত্তরের নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে দক্ষিণের মেরু-উপদেশীয় অঞ্চল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার বিস্তার। এর মধ্যেই আছে রুক্ষ আন্দেস পর্বতমালা ও তার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আকোনকাগুয়া। তবে বেশির ভাগ লোক দেশটির মধ্যভাগে অবস্থিত বিশাল উর্বর প্রেইরি সমভূমির (যার নাম পাম্পাস) শহরগুলিতে বাস করেন। পাম্পাসেই দেশটির অধিকাংশ কৃষিসম্পদ উৎপন্ন হয় এবং এখানেই দক্ষিণ আমেরিকার বিখ্যাত কাউবয় "গাউচো"-দের আবাসস্থল। আর্জেন্টিনায় আরও আছে অরণ্যভূমি, মরুভূমি, তুন্দ্রাভূমি, সুউচ্চ সব পর্বতশৃঙ্গ, নদনদী এবং হাজার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ আটলান্টিক মহাসাগরীয় উপকূলভূমি। এছাড়া দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের অনেকগুলি দ্বীপ আর্জেন্টিনা নিজেদের বলে দাবী করে, যার মধ্যে ব্রিটিশ-শাসিত ফকল্যাণ্ড দ্বীপপুঞ্জ অন্যতম (আর্জেন্টিনীয়রা এগুলিকে মালবিনাস দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকে)। এর বাইরে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একটি অংশও আর্জেন্টিনা নিজের বলে দাবী করে।

আর্জেন্টিনাতে আদি প্রস্তর যুগে মানব বসতির নিদর্শন পাওয়া গেছে।[১১] আধুনিক আর্জেন্টিনার ইতিহাস ১৬শ শতকে স্পেনীয় উপনিবেশীকরণের মাধ্যমে সূচিত হয়।[১২] ১৭৭৬ সালে এখানে স্পেনীয় সাম্রাজ্যের অধীনে রিও দে লা প্লাতা উপরাজ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এই উপরাজ্যের উত্তরসূরী রাষ্ট্র হিসেবে আর্জেন্টিনার উত্থান ঘটে।[১৩] প্রায় তিন শতাব্দী ধরে ঔপনিবেশিক শাসনের পর ১৮১০ সালে আর্জেন্টিনা স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং ১৮১৮ সালে স্পেনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধবিজয় শেষ হয়। আর্জেন্টিনার জাতীয়তাবাদী বিপ্লবীরা দক্ষিণ আমেরিকার অন্যত্রও বিপ্লবে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এরপরে দেশটিতে অনেকগুলি গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়। শেষ পর্যন্ত ১৮৬১ সালে অনেকগুলি অঙ্গরাজ্যের একটি ফেডারেশন হিসেবে দেশটি পুনর্গঠিত হয়, যার রাজধানী নির্ধারিত হয় বুয়েনোস আইরেস। এর পরে দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরত আসে এবং ইউরোপ থেকে বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর আগমন ঘটে, যার ফলে সাংস্কৃতিক ও জনসংখ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে দেশটিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ১৯শ শতকের শেষ ভাগ থেকে আর্জেন্টিনা প্রচুর পরিমাণে কৃষিদ্রব্য যেমন মাংস, পশম, গম, ইত্যাদি রপ্তানি করা শুরু করে। দক্ষিণ আমেরিকায় আর্জেন্টিনাতেই প্রথম শিল্পায়ন শুরু হয় এবং এটি বহুদিন ধরে এই মহাদেশের সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল। সে সময় এখানকার অধিবাসীরা ইউরোপীয় দেশগুলির সমমানের জীবনযাত্রা নির্বাহ করত। ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করে দেশটি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বের ৭ম ধনী দেশে পরিণত হয়।[১৪][১৫] তবে ১৯৪০-এর দশকের পর থেকে আর্জেন্টিনা ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চ বেকারত্ব ও বড় আকারের জাতীয় ঋণের সমস্যায় জর্জরিত।

আর্জেন্টিনার রাজনৈতিক ইতিহাস সংঘাতময়। দেশটির সবচেয়ে বিখ্যাত প্রেসিডেন্ট হুয়ান পেরন শ্রমিক শ্রেণী ও দরিদ্রদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিলেন, কিন্তু তিনি ছিলেন একজন একনায়ক এবং সমস্ত বিরোধিতা কঠোর হাতে দমন করতেন। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ১৯৫৫ সালে পেরনের পতন ঘটে। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত কুখ্যাত সামরিক শাসনের সময় বহু আর্জেন্টিনীয়কে বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ১৯৮৩ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছেড়ে দেবার পর আর্জেন্টিনায় আবার গণতন্ত্র স্থাপিত হয় কিন্তু দেশটি অর্থনৈতিক সমস্যায় তখনও হাবুডুবু খেতে থাকে। ২১শ শতকের প্রথম দশকেও আর্জেন্টিনা তার অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পাম্পাস এবং বিস্তীর্ণ ঊষর পাতাগোনীয় ভূপ্রকৃতির রোমান্টিক হাতছানি সত্ত্বেও আর্জেন্টিনা মূলত একটি নগরকেন্দ্রিক রাষ্ট্র। দেশটির রাজধানী বুয়েনোস আইরেসকে ঘিরে থাকা আধুনিক ও ব্যস্ত শহরতলীগুলি পাম্পাসের পূর্ব অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। বুয়েনোস আইরেস দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ ও আন্তর্জাতিক শহরগুলির একটি। উচ্ছল রাত্রিজীবন এবং স্থাপত্যশৈলীর কারণে এটিকে প্রায়ই প্যারিসরোমের সাথে তুলনা করা হয়। ১৯শ শতকের শেষভাগে ও ২০শ শতকের শুরুর দিকে ইতালি, স্পেনইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ অভিবাসী এখানকার শিল্পকারখানাগুলিতে জীবিকা নির্বাহ করার লক্ষ্যে দেশান্তরী হন। বৃহত্তর বুয়েনোস আইরেস এলাকাতে আর্জেন্টিনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জনগণ বাস করে। দেশটির অন্যান্য প্রধান শহরগুলির মধ্যে আছে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলস্থিত মার দেল প্লাতা, লা প্লাতা ও বাইয়া ব্লাঙ্কা এবং দেশের অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত রোসারিও, সান মিগেল দে তুকুমান, কর্দোবা ও নেউকেন।

ভূগোল[সম্পাদনা]

Mountain tops, with clouds shown.
আকোনকাগুয়া এশিয়ার বাইরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত, যা ৬,৯৬০.৮ মিটার (২২,৮৩৭ ফু), এবং দক্ষিণ গোলার্ধের সর্বোচ্চ[১৬]

আর্জেন্টিনার আয়তন ২৭,৮০,৪০০ কিমি (১০,৭৩,৫১৮ মা) দেশটি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণাংশের প্রায় পুরোটা জুড়ে অবস্থিত। আন্দেস পর্বতমালা দেশটির পশ্চিম সীমানা নির্ধারণ করেছে, যার অপর পার্শ্বে চিলি অবস্থিত।[১৭] দেশটি উত্তরে বলিভিয়াপ্যারাগুয়ে, উত্তর-পূর্বে ব্রাজিল, পূর্বে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর[১৮] এবং দক্ষিণে ড্রেক প্রণালী[১৯] সব মিলিয়ে দেশটির স্থলসীমান্তের দৈর্ঘ্য ৯,৩৭৬ কিমি (৫,৮২৬ মা)। রিও দে লা প্লাতা ও দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে দেশটির তটরেখার দৈর্ঘ্য ৫,১১৭ কিমি (৩,১৮০ মা)[১৮]

মেন্দোসা প্রদেশে অবস্থিত আকোনকাগুয়া আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ পর্বত। এটি সমুদ্রতল থেকে (৬,৯৫৯ মি (২২,৮৩১ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত।[২০] এছাড়াও আকোনকাগুয়া দক্ষিণ গোলার্ধপশ্চিম গোলার্ধের সর্বোচ্চ পর্বত।[২১] আর্জেন্টিনার সর্বনিম্ন বিন্দু হচ্ছে সান্তা ক্রুস প্রদেশে অবস্থিত লাগুনা দেল কার্বন, যা সান হুলিয়ান বৃহত্‌ অবনমনের একটি অংশ। এটি সমুদ্র সমতল থেকে (−১০৫ মি (−৩৪৪ ফু) নিচে অবস্থিত[২০]। এছাড়াও এটি দক্ষিণ গোলার্ধ ও পশ্চিম গোলার্ধের সর্বনিম্ন বিন্দু, এবং পৃথিবীর ৭ম সর্বনিম্ন বিন্দু।[২২]

আর্জেন্টিনার উত্তরতম বিন্দুটি রিও গ্রান্দে দে সান হুয়ানরিও মোহিনেতে নদী দুটির সঙ্গমস্থলে, হুহুই প্রদেশে অবস্থিত। দেশটির দক্ষিণতম বিন্দু হল তিয়ের্‌রা দেল ফুয়েগো প্রদেশের সান পিও অন্তরীপ। সর্বপূর্ব বিন্দুটি মিসিওনেস প্রদেশের বেরনার্দো দে ইরিগোইয়েন শহরের উত্তর-পূর্বে এবং সর্বপশ্চিম বিন্দুটি সান্তা ক্রুস প্রদেশের লোস গ্লাসিয়ারেস জাতীয় উদ্যানের মধ্যে পড়েছে।[১৮] উত্তর থেকে দক্ষিণে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য প্রায় ৩,৬৯৪ কিমি (২,২৯৫ মা); এর বিপরীতে পূর্ব থেকে পশ্চিমে দেশটির সর্বোচ্চ প্রশস্ততা প্রায় ১,৪২৩ কিমি (৮৮৪ মা).[১৮]

আর্জেন্টিনার প্রধান প্রধান নদীর মধ্যে রয়েছে পারানা নদীউরুগুয়াই নদী (নদী দুটি একত্র হয়ে রিও দে লা প্লাতা নদী গঠন করেছে), সালাদো নদী, রিও নেগ্রো নদী, সান্তা ক্রুস নদী, পিকোমাইয়ো নদী, বের্মেহো নদীকোলোরাদো নদী[২৩] এই সব নদীর পানি আর্জেন্টিনীয় সাগরে গিয়ে পড়েছে। আটলান্টিক সাগরের যে অগভীর অংশটি আর্জেন্টিনীয় শেলফ বা সমুদ্র-তাকের উপরে অবস্থিত, তাকেই আর্জেন্টিনীয় সাগর নামে ডাকা হয়। এটি একটি অস্বাভাবিকভাবে প্রশস্ত মহাদেশীয় মঞ্চ।[২৪] এই সাগরের পানি দুইটি প্রধান মহাসাগরীয় স্রোতের প্রভাবাধীন: উষ্ণ ব্রাজিল স্রোত এবং শীতল ফকল্যান্ডস স্রোত[২৫]

দক্ষিণে অবস্থিত ইসলা গ্রান্দে দে তিয়েররা দেল ফুয়েগো নামক দ্বীপের পূর্ব অর্ধাংশ আর্জেন্টিনার অন্তর্গত। এছাড়াও পূর্বের বেশ কিছু সামুদ্রিক দ্বীপ যেমন ইসলা দে লোস এস্তাদোস আর্জেন্টিনার অধীন।

আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ীে মোট জনসংখ্যা ৪০,১১৭,০৯৬ জন, যা ২০০১ সাল থেকে ৩৬,২৬০,১৩০ জন বেশি।[২৬][২৭] মোট জনসংখ্যায় আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকায় তৃতীয়, ল্যাটিন আমেরিকায় চতুর্থ এবং বিশ্বব্যাপী ৩৩তম। এর জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটার ভূমি এলাকায় ১৫ জন, যা বিশ্বের গড় ৫০ জনের চেয়ে অনেক কম। ২০১০ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল আনুমানিক ১.০৩%, প্রতি ১,০০০ জন বাসিন্দার মধ্যে জীবিত জন্মের হার ১৭.৭ এবং প্রতি ১,০০০ জন বাসিন্দার মধ্যে মৃত্যুর হার ৭.৪।

ধর্ম[সম্পাদনা]

আর্জেন্টিনা মূলত খ্রিষ্ট প্রধান দেশ। আর্জেন্টিনার ৯১% মানুষ খ্রিস্টান ২% মুসলমান ৪% হিন্দু বাকি সব অন্যান্য ধর্মের লোক সেখানে বসবাস করেন।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সাম্প্রতিক যুগ[সম্পাদনা]

আলফোনসিন সরকার

রাউল আলফোনসিন (Raúl Alfonsín) ১৯৮৩ সালের আর্জেন্টিনার সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি একনায়কতান্ত্রিক প্রোসেসো (Proceso) পর্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের পক্ষে প্রচারণা চালান। এর ফলশ্রুতিতে আলফোনসিনের শাসনামলে সামরিক জান্তা এবং অন্যান্য সামরিক আদালতের বিচার হয়, যাতে সামরিক ক্যু-এর সমস্ত নেতাদের শাস্তি হয়। তবে সামরিক চাপের মুখে আলফোনসিন ১৯৮৬ সালে শেষ বিন্দু বা “পুন্তো ফিনাল” ও ১৯৮৭ সালে প্রাপ্য আনুগত্য বা “ওবেদিয়েন্সিয়া দেবিদা” নামের আইন দুটি প্রবর্তন করেন[২৮][২৯] যার ফলে নিম্নস্তরের কর্মচারীদের বিচার রহিত হয়।

অর্থনৈতিক সংকট খারাপ হতে শুরু করলে ও অতিমুদ্রাস্ফীতি ঘটলে আলফোনসিনের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে পেরনবাদী রাজনীতিবিদ কার্লোস মেনেম জয়লাভ করেন। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে বিক্ষুব্ধ জনগণ দাঙ্গা শুরু করলে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই আলফোনসিন পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।[৩০]

মেনেম সরকার

নির্বাচিত হয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি মেনেম নব্য-উদারবাদী অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রয়োগ করেন:[৩১] সুনির্দিষ্ট মুদ্রা বিনিময় হার, ব্যবসাসমূহের উপর নিয়ন্ত্রণ হ্রাস (deregulation), ব্যক্তিমালিকানাধীনকরণ (privatization) এবং সংরক্ষণবাদী বাধাগুলি দূরীকরণের মাধ্যমে অর্থনীতি কিছুদিনের জন্য স্বাভাবিক হয়ে আসে। আলফোনসিন সরকারের যেসব সামরিক অফিসারদের শাস্তি হয়েছিল, তাদের তিনি ক্ষমা করে দেন। ১৯৯৪ সালে আর্জেন্টিনার সংবিধানের সংশোধনী আনা হয়, যার বদৌলতে ১৯৯৫ সালে মেনেম দ্বিতীয়বারের মত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল থেকে আর্জেন্টিনার অর্থনীতি আবার খারাপের দিকে যেতে শুরু করে, বেকারত্বের হার বাড়তে থাকে এবং দেশটি অর্থনৈতিক মন্দার নিমজ্জিত হয়।[৩২] ১৯৯৯ সালের নির্বাচনে ফের্নান্দো দে লা রুয়ার নেতৃত্বে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আলফোনসিনের রাজনৈতিক দল উনিওন সিবিকা রাদিকাল আবার ক্ষমতায় ফেরত আসে।[৩৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Crow 1992, p. 457; Kopka 2011, p. 5.
  2. Departamento de Derecho y Ciencias Políticas de la Universidad Nacional de La Matanza (১৪ নভেম্বর ২০১১)। "Historias de inmigrantes italianos en Argentina" (Spanish ভাষায়)। infouniversidades.siu.edu.ar। Se estima que en la actualidad, el 90% de la población argentina tiene alguna ascendencia europea y que al menos 25 millones están relacionados con algún inmigrante de Italia. 
  3. "Argentina inicia una nueva etapa en su relación con Japón"www.telam.com.ar 
  4. Clarín.com। "La comunidad china en el país se duplicó en los últimos 5 años" 
  5. "국가지표체계"www.index.go.kr 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৮ 
  7. "The World Factbook — Central Intelligence Agency"www.cia.gov। ১২ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০০৯ 
  8. "Población por sexo e índice de masculinidad. Superficie censada y densidad, según provincia. Total del país. Año 2010"Censo Nacional de Población, Hogares y Viviendas 2010 (Spanish ভাষায়)। Buenos Aires: INDEC – Instituto Nacional de Estadística y Censos। ২০১০। ৮ জুন ২০১৪ তারিখে মূল (XLS) থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "Argentina"World Economic Outlook Database। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৮ 
  10. "2018 Human Development Report" (পিডিএফ)। United Nations Development Programme। ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  11. Abad de Santillán 1971, পৃ. 17।
  12. Crow 1992, পৃ. 128।
  13. Levene 1948, p. 11; Sánchez Viamonte 1948, pp. 196–197; Vanossi 1964, p. 11.
  14. Bolt ও Van Zanden 2013
  15. Díaz Alejandro 1970, পৃ. 1।
  16. "Informe científico que estudia el Aconcagua, el Coloso de América mide 6960,8 metros" [Scientific Report on Aconcagua, the Colossus of America measures 6960,8m] (Spanish ভাষায়)। Universidad Nacional de Cuyo। ২০১২। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  17. Young 2005, পৃ. 52: "The Andes Mountains form the "backbone" of Argentina along the western border with Chile."
  18. Albanese, Rubén (২০০৯)। "Información geográfica de la República Argentina" [Geographic information of the Argentine Republic] (Spanish ভাষায়)। Buenos Aires: Instituto Geográfico Nacional। ৩১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  19. McKinney 1993, p. 6; Fearns & Fearns 2005, p. 31.
  20. Albanese, Rubén (২০০৯)। "Alturas y Depresiones Máximas en la República Argentina" [Maximum peaks and lows in the Argentine Republic] (Spanish ভাষায়)। Buenos Aires: Instituto Geográfico Nacional। ২৩ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  21. Young 2005, পৃ. 52।
  22. Lynch, David K.। "Land Below Sea Level"। Geology – Geoscience News and Information। ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  23. McCloskey ও Burford 2006, পৃ. 5, 7–8, 51, 175।
  24. McCloskey ও Burford 2006, পৃ. 8।
  25. McCloskey ও Burford 2006, পৃ. 18।
  26. "Proyecciones provinciales de población por sexo y grupos de edad 2001–2015" (পিডিএফ)Gustavo Pérez (স্পেনীয় ভাষায়)। INDEC। পৃষ্ঠা 16। ৬ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  27. "Censo 2010: Censo Nacional de Población, Hogares y Viviendas" (স্পেনীয় ভাষায়)। Censo2010.indec.gov.ar। ১৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  28. টেমপ্লেট:Cite Argentine law
  29. টেমপ্লেট:Cite Argentine law
  30. Galasso 2011, পৃ. 533–549, vol. II।
  31. Epstein ও Pion-Berlin 2006, পৃ. 6।
  32. Epstein ও Pion-Berlin 2006, পৃ. 9।
  33. Galasso 2011, পৃ. 551–573, vol. II।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "upper-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="upper-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি