বিষয়বস্তুতে চলুন

সেপ্টিমাস কিনিয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সেপ্টিমাস কিনিয়ার
১৯১২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে সেপ্টিমাস কিনিয়ার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
সেপ্টিমাস পল কিনিয়ার
জন্ম(১৮৭১-০৫-১৩)১৩ মে ১৮৭১
পিকউইক, উইল্টশায়ার, করশ্যাম
মৃত্যু১৬ অক্টোবর ১৯২৮(1928-10-16) (বয়স ৫৭)
বার্মিংহাম, ওয়ারউইকশায়ার
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৭৩)
১৫ ডিসেম্বর ১৯১১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩১২
রানের সংখ্যা ৫২ ১৫৬৪১
ব্যাটিং গড় ২৬.০০ ৩২.৭২
১০০/৫০ -/- ২৬/৮৩
সর্বোচ্চ রান ৩০ ২৬৮*
বল করেছে - ৩৭০৮
উইকেট - ৪৮
বোলিং গড় - ৩১.০৮
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ৩/১৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং -/- ১৮১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ মে ২০১৯

সেপ্টিমাস পল কিনিয়ার (ইংরেজি: Septimus Kinneir; জন্ম: ১৩ মে, ১৮৭১ - মৃত্যু: ১৬ অক্টোবর, ১৯২৮) করশ্যামের উইল্টশায়ার এলাকার পিকউইকে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।[] ১৯১১ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন সেপ কিনিয়ার নামে পরিচিত সেপ্টিমাস কিনিয়ার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

উইল্টশায়ারের করশ্যাম এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও তুলনামূলকভাবে অধিক বয়সে নিজ কাউন্টির বাইরে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। অনেকগুলো বছর ওয়ারউইকশায়ার একাদশের অন্যতম ব্যাটিংস্তম্ভের স্বীকৃতি পান। প্রায়শঃই ডব্লিউ.জি. কুয়েইফের সাথে এ সম্মান ভাগাভাগি করে নিতেন। তবে, তিনি কখনো প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে প্রস্তুত ছিলেন না। আকস্মিকভাবেই এ সুযোগ পান।

১৮৯৮ থেকে ১৯১৪ সময়কাল পর্যন্ত সেপ্টিমাস কিনিয়ারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৯৮ সালে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে পঁচিশ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ১৯০০ সালে ওভালে সারের বিপক্ষে অপরাজিত ৯৮ রান তুলেন। ১৯০৭ সালে লিচেস্টারে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেন। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ৭০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৬৯ রান তুলেন। ১৯১১ সালে এফ. আর. ফস্টারের অধিনায়কত্বে ওয়ারউইকশায়ার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে। এ পর্যায়ে ৪৪ গড়ে ১,৪১৮ রান তুলেন।

১৯১১ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলেন। ব্যাট হাতে ২০ খেলায় অংশ নিয়ে ৪৯.৩৬ গড়ে ১,৬২৯ রান তুলেন। এ পর্যায়ে বার্মিংহামে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৬৮ রান তুলেন। চিচেস্টারে সাসেক্সের বিপক্ষে খেলায় উভয় ইনিংসে শতরান করে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে রেকর্ড গড়েন। ফলশ্রুতিতে ১৯১২ সালের উইজডেন সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন।[]

ওভালে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার খেলাটি মূলতঃ টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে যাচাই-বাছাইয়ের অংশ ছিল। লর্ড হক, জি. এল. জেসপপি. এফ. ওয়ার্নারকে নিয়ে গঠিত নির্বাচকমণ্ডলী প্লেয়ার্স দল থেকে টম হেওয়ার্ডজর্জ হার্স্টকে ইংরেজ দল থেকে বাদ দিয়ে কিনিয়ারকে একাদশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ খেলায় ১৫৮ ও অপরাজিত ৫৩ রান তোলার সুবাদেই এ সুযোগ পান তিনি। তার খেলা সকলকেই বিমোহিত করে রেখেছিল। ধারণা করা হয়েছিল যে, তার শক্তিশালী রক্ষণাত্মক খেলাসহ ক্রিজে টিকে থাকার মানসিকতা ইংল্যান্ড দলকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়ে আসবে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

এমসিসি দল থেকে অস্ট্রেলিয়া গমনের উদ্দেশ্যে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৯১১-১২ মৌসুমে ডগলাস জারদিনের নেতৃত্বে ইংরেজ দলের সদস্যরূপে ৩৮ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিল সেপ্টিমাস কিনিয়ারের। ১৫ ডিসেম্বর, ১৯১১ তারিখে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ঐ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার আরবি মিনেট এবং ইংল্যান্ডের জনি ডগলাস, ফ্রাঙ্ক ফস্টার, জে. ডব্লিউ. হার্ন, এসপি কিনিয়ার ও সিপি মিডের একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল।

প্রথম টেস্টে জ্যাক হবসের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। চার্লস কেলেওয়ের বলে ২২ রান করে বোল্ড হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভিক্টর ট্রাম্পারের কটে রঞ্জী হরডার্নের শিকারে পরিণত হন ৩০ রানে। খেলায় ইংল্যান্ড দল ১৪৬ রানে পরাজিত হয়েছিল। পরবর্তীতে জে. ডব্লিউ. এইচ. টি. ডগলাসের অধিনায়কত্বে পরবর্তী চার টেস্টে তাকে আর খেলানো হয়নি।

এফ. আর. ফস্টার ও বার্নসের বোলিং এবং হবস, রোডস ও ওলির ব্যাটিংয়ের কল্যাণে খেলাগুলোয় জয়ের সন্ধান পায়। ফলশ্রুতিতে ইংরেজ দল অ্যাশেজ করায়ত্ত্ব করে। ওয়ার্নারের ভাষ্য অনুযায়ী জানা যায়, কিনিয়ারকে যদি দলে নিয়মিতভাবে খেলানো হতো তাহলে নিশ্চিতভাবেই তিনি আরও রান তুলতে পারতেন। কিন্তু, সেরা একাদশে রাখার মতো তিনি ছিলেন না। এছাড়াও, তার ফিল্ডিং মাঝারিমানের ছিল।

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থ হলে কি হবে, কাউন্টি খেলোয়াড় হিসেবে ঠিকই সফল ছিলেন। ফ্রাঙ্ক ওলিফিল মিডের আগমনের পূর্বে তার অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তিনি নিজস্ব ঢংয়ে খেলতে পছন্দ করতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে দিতেন অবলীলাক্রমে। কাট ও অফ-ড্রাইভে তিনি দক্ষ ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনে শুরুতে গুরুতর অসুস্থ হবার পরও তার খেলায় ছেদ পড়েনি। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পূর্ব-পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে রান সংগ্রহ করে আসছিলেন। ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলতেই তিনি অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। উনিশ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে প্রায় ৩৩ গড়ে ১৫,৭২১ রান তুলেন।

১৬ অক্টোবর, ১৯২৮ তারিখে ৫৭ বছর বয়সে ওয়ারউইকশায়ারের বার্মিংহাম এলাকায় সেপ্টিমাস কিনিয়ারের দেহাবসান ঘটে। গল্ফ খেলা শেষে মোটর সাইকেলে চড়ে বাড়ী ফেরার পথে তার মৃত্যু হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. [১] ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ২১ নভেম্বর, ২০১৮
  2. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]